শ্যামল চৌধুরী-এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে শ্যামল চৌধুরী-এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:7d185313-565e-4d50-be79-02a6df9502c9;id=1842024-03-29T09:29:24Zhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/anukabyo/অণুকাব্য 2024-03-15T14:21:09-04:002024-03-15T14:21:09-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আকাশে সেই নীল। <br />পাখি গায় সুকণ্ঠে অনন্তকাল। <br />সবুজ বনানী স্নিগ্ধ শীতল <br />বাতায়নে জুড়ায় তনু মন।<br />সমুদ্রের বিশালত্ব সহে যায়<br />পৃথিবীর মলিন জঞ্জাল। <br />--- শুধু মানুষের হিংসার দাবানলে <br />দহে তাবৎ বিশ্বসংসার।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/poromsatyo/পরমসত্য 2023-12-08T01:11:19-05:002023-12-08T01:11:19-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>৬+৬+৬+২<br />প্রাচীন নগর তক্ষশীলায় পঠনপাঠন শেষে <br />ফিরিল যুবক, গৌরবদীপ্ত খ্যাত ডাক্তার বেশে।<br />রাজ্য ছাড়িয়া নামডাক তার রটে দেশে দেশে ত্বরা,<br />রাজামহারাজা শ্রেষ্ঠী বণিক আসে লয়ে রোগ জরা।<br />আসেন মগধে অপার জ্ঞানের সন্নাসী এক বড়ো,<br />বহুদূর হতে শুনিতে দেশনা বহুজন হলো জড়ো। <br />এতিম ভিষক আকুল হইল শুনিতে ভাষণ সুধা, <br />করুণার স্রোতে ঘুচে মন-পাপ, মৈত্রী জাগে সদা।<br />নৈকট্যলাভে একাগ্র চিতে বসিল গৈরিক পাশে,<br />হাসিমুখে সাধু, বলে অবিরাম, করুণা জাগানো আশে।<br />চকিত দেখিল, কাঁটা বিঁধে আছে শান্ত সাধুর পায়ে, <br />নাহি যেন ক্লেশ, বিলায় অমিয়,মানুষের হিত লয়ে। <br />অনুমতি নিয়ে বিষকাঁটা তুলে ঔষধি লাগায়ে পায়,<br />ভিষক বলিল, এখন কেমন বোধ লাগে মনে, কায়!<br />সবার সকাশে সাধু বলিলেন, শোন! প্রিয়জন সবে, <br />ব্যাধি আরোগ্য পরম প্রাপ্তি, ধন যশ নহে ভবে।<br />সন্তোষ মন অমূল্য ধন, লোভী, সদা দীন রহে, <br />বিশ্বস্তই পরম আপন, বদ পরিজন নহে।<br />মোহ দ্বেষ লোভে, জিঘাংসা ভোগে বাড়ায় তৃষ্ণা অতি,<br />তৃষ্ণা হইতে পূর্ণ মুক্তি, দুখের ঘটায় ইতি।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bighnito-prithibir-khandochitro/বিঘ্নিত পৃথিবীর খণ্ডচিত্র2023-11-25T09:33:25-05:002023-11-26T03:00:19-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>৬+৬+৬+২<br />সাগর ছড়ায় পৃথিবীতে মেঘ, ফসলের বান ডাকে, <br />সূর্য ঝরায় তাপের মহিমা জীবন জিইয়ে রাখে। <br />উদার নীলিমা চাঁদের আলোয় জাগায় আবেগ মোহ,<br />বাতাস জাগায় প্রণোদনা প্রাণে চঞ্চল করে দেহ।<br />সবুজ বনানী সুশীতল ধাম, দানে ফুল-ফল ছায়া,<br />ধরণী মোদের স্নেহ মমতায় ছড়ায় মায়ের মায়া।<br />মানুষের মন ছুটে বহু দূর, ছাড়িয়া সীমানা দেশ,<br />প্রীতিডোরে বাঁধে অচিন অজানা ঘুচাতে মনের ক্লেশ। </p>
<br /><p>কুটিল কতেক অসুরের দল খেলে স্বার্থের খেলা,<br />ক্ষমতার জোরে লুফে ধন মান, দেখিয়ে ধ্বংস লীলা। <br />বিভাজিত করে মানুষে মানুষে ফতোয়া বিধান রটে, <br />দ্বেষ জিঘৎসা রক্তের বান, ছড়ায় পৃথিবী তটে। <br />ধর্ম শাসন প্রচার শিখন, সবই তাদের কলে<br />স্বাধীন কথন লেখা চিন্তন, বন্দী সকলি ছলে।<br />নারী শিশু বুড়া নিরীহ জনতা বোমায় গুলিতে মরে, <br />বাসভূম ছেড়ে অসহায় জন তাবুতে শিবিরে ঘুরে। <br />বিশ্ববিবেক পদতলে দিয়ে প্রভার বাড়ার আশে, <br />প্রিয় নেতা বদে পুতুল শাসক, বসায় স্বাধীন দেশে। <br />দুনিয়া কাঁপানো অস্ত্র কেনায়ে, জুড়ে দেশে দেশে রণ, <br />ধ্বংসযজ্ঞ করে মেরামত, মূল্যে নেবে সে ধন।<br />বাণিজ্য তার অশান্ত রাখা, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলে<br />খণ্ডিত ধরা ঐক্য বিহীন, দ্বন্দ্বে লিপ্ত ছলে।<br />দরিদ্র দেশে দীন শিশু মরে, খাদ্য মজুদ তরে,<br />মানবাধিকার, শান্তির বাণী তারাই প্রচার করে। <br />ধর্মে, জাতিতে বিরোধ বিবাদ যতদিন রবে ভবে,<br />ভণ্ড ভ্রষ্ট অসুর শাসিবে বিশ্বচরাচর তবে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/mukhosh-manus/মুখোশ মানুষ 2023-11-23T04:05:52-05:002023-11-23T06:17:12-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>৪+৪<br />মুখোশ মানুষ, নকল মানুষ<br />নষ্ট মানুষ, ভণ্ড মানুষ,<br />মিষ্টি কথায় ভোলায় সবায়<br />খালি ওড়ায় রঙিন ফানুস। <br />চটকদারী ছলাকলায়<br />সাজে প্রেমিক দেশের দশের<br />পদে বসে চালায় চুরি, <br />রাজা নিজের, ভাবনা কিসের ? </p>
<br /><p>মুখোশ মানুষ, নকল মানুষ <br />সোহাগ করে আলাপ জুড়ে <br />স্বার্থ শেষে আখের গোছে<br />সোজাসাপটা কেটে পড়ে। <br />কত মানুষ আসে আর যায়<br />কেউবা দানে, কেউবা হানে, <br />কেউ এসে যায় বুকের কাছে <br />কেউ চলে যায় সুদূর পানে।</p>
<br /><p>মুখোশ মানুষ, নকল মানুষ <br />স্বপ্ন দেখায় সুখের বাটি,<br />মধুর সুরের কোকিল বনে<br />বসন্ত দিন করে মাটি। <br />অজুহাতের ফর্দ দিয়ে <br />ভেঙে ফেলে সুখের ঘর,<br />সুখ মিলেনা শোকরহীনের<br /> হতাশ হয়ে জীবনটা ভর।</p>
<br /><p>সহজ সরল, আসল মানুষ <br />লোভী তারে এড়িয়ে যায়,<br />ফন্দিফিকির তোষামোদে<br />পড়ে লোভী আছাড় খায়।<br />মনটা যদি লোভ ছাড়া হয়<br />দেশটা হবে সুখের আবাস,<br />মুক্ত মনে চললে সবাই <br />বিশ্বজুড়ে বলবে সাবাস !</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/shishudibos/শিশুদিবস 2023-11-19T14:03:33-05:002023-11-20T15:34:31-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>৪+৪<br />স্বপ্ন ছিল বড় হতে<br />পাঠশালাতে পড়বো পড়া,<br />বাবু হয়ে প্লেনে চড়ে<br />ঘুরবো সারা জগত জোড়া।<br />মায়ের আশা পূর্ণ হবে<br />বাবার হাসি ফুটবে মুখে, <br />ছোটরা সব হবে খুশি <br />আনন্দেতে ভাসবে সুখে।</p>
<br /><p>কারো আছে ভুঁড়ি ভুঁড়ি,<br />কেউবা ভোগে অর্ধাহারে <br />সিণ্ডিকেটে ঘুরায় কাঠি <br />পণ্য লুকায় মজুদ ঘরে। <br />লেখাপড়া শিখলে ওরা<br />কামলা চাকর হবে কারা? <br />--- এই আশাতে স্বাধীন দেশটা <br />করলো তারা রুগ্ন জরা।<br />যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে<br />আনলো সবাই স্বাধীনতা, <br />ছলাকলা অনিয়মে<br />লুটলো ওরা মানবতা।</p>
<br /><p>দাম বেড়ে যায় ফরফরিয়ে<br />বাবার চোখে জোনাক জ্বলে,<br />মায়ের চোখে অশ্রু ঝরে<br />স্বপ্নরা সব ভাসছে জলে।<br />পড়ালেখা গেল টুটে<br />বন্ধুরা সব অচিন পাখি,<br />চেনাজানা হল সব পর<br />ভূবন হলো টাকার রাখি।</p>
<br /><p>যেতে হবে কারখানাতে<br />নয়বা হবো পথ টোকাই,<br />খুঁজে যাবো স্বপ্ন কোথা<br />যন্ত্র চাকায়, নাকি তোকাই।<br />বাবু পড়ে গেঞ্জি টুপি<br />শিশু দিবস ভন্ডের খেল,<br />টাকা উড়ে, বাজনা বাজে<br />পথশিশু দেখে ফ্যাল ফ্যাল।<br /> ---------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/juddho-diner-satkahon/যুদ্ধদিনের সাতকাহন 2023-11-14T01:13:37-05:002024-03-01T19:12:23-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>৮+৮+৬<br />আপনার বাসভূমে বন্দী, বৈষম্যের বেড়াজালে বাংলার বাঙালী,<br />মাতৃভাষা কেড়ে নিয়ে রোধিল মায়ের কণ্ঠ, দিল ভিন্ন বুলি। <br />বুকের শোনিত ঢেলে রুখিল সে জননীর ভাষার হরণ,<br />স্বাধীনতার অঙ্কুর বিকশিত হলো মনে, জাগে স্পন্দন। <br />মৃত্যু, জেল, মিথ্যা মামলা, খেদান্বিত বাংলাদেশ, রোষে ফোঁসে ছাত্র,<br />ঊনসত্তর উদ্বেলিত, মিছিলে পূর্ণ রাজপথ -- ওরা নয় মিত্র। <br />একাত্তরে কালোরাতে পিশাচ হানিল দেশ, ক্রুর অভিলাষে,<br />বুলেট ঝরিল বুকে, বয়ে গেল রক্তগঙ্গা, দেশ রক্তে ভাসে। <br />নিলো বোনের সম্ভ্রম, নারীর সিঁথির চিহ্ন, লক্ষ লক্ষ প্রাণ, <br />দাউদাউ করে জ্বলে, ঘরবাড়ি গ্রামগ্রামান্তর হয়েছে শ্মশান। <br />নৃশংস তাণ্ডবে দহে তরুণের অন্তরাত্মা, দ্রোহের আনলে, <br />অনন্ত শপথ নিলো, প্রতিশোধ নিতে হবে, মিলে মুক্তিদলে।<br />মায়ের চরণ চুমি, কহিল, আসিব ফিরে তোমার চরণে, <br />কঠোর কঠিন তপে, যোদ্ধা বেশ ধরে গেল, যুদ্ধের ময়দানে। <br />ঝড় ঝঞ্ঝা বৃষ্টি শৈত্য, শত্রুর পাপ শিবির পদানত করে<br />বুলেটের স্রোত বেয়ে অনন্ত চলেছে ঝড়ে, শক্ত হাল ধরে।<br />যেথায় রয়েছে মুক্তি, মৃত্যু পরাধীনতার, সুখের আধার, <br />আগামীদের জীবন ঋজু নিষ্কণ্টক চাই, এই পণ তার।<br />ক্লান্তিহীন অভিযাত্রী, বন্ধু প্রিয়জন ভুলি জীবন সপিয়া, <br />শোষণ জঞ্জাল ছিঁড়ে মানুষের তরে মুক্তি আনিবে বহিয়া।<br />গভীর নিশীথে এক, সম্মুখ সমরে গুলি তারে বিঁধে যায়,<br />অনন্ত বলে, থেমোনা!!! স্বাধীনতা আশে কাঁদে কোটি অসহায়। <br />ফিরে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজয়ীর দর্প নিয়ে পুষ্প সম্ভাষণে,<br />ফিরে না বীর অনন্ত, মায়ের অপেক্ষা বাড়ে তৃষিত নয়নে।<br />হাজারো প্রহর কাটে, প্রত্যাশা মায়ের মনে ফিরিবে অনন্ত, <br />জড়িয়ে মায়ের গলে বলিবে এসেছি ফিরে, হবে দুঃখ অন্ত।<br />পোহালো বছর যুগ, না ফেরার বেদনায়, শোকে মুহ্যমান <br />মায়ের নিভিল প্রাণ,জানিলনা কেহ এই, ব্যথার আখ্যান।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/shresthodan/শ্রেষ্ঠদান2023-11-10T10:05:45-05:002023-11-10T19:36:23-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>৮+৮+৬<br />প্রাচীন নগরে এক আসিলেন মহাজ্ঞানী গৈরিক সন্ন্যাসী,<br />রাজা প্রজা মহারাজা পূজিলেন সবে তাঁকে আনন্দে উল্লাসী।<br />একাহারী ব্রহ্মচারী জানিলেন পুরে চলে, দুর্ভিক্ষ সংকট, <br />দানিছে সবাই তাঁরে, তবে কাঁদিছে মানুষ, অভাব প্রকট।<br />লোকে বলে কর্মফলে কেহ রাজা মহারাজা, কেহ দীন দুঃখী<br />ভুগিছে নিঃস্ব মানুষ আপন কপাল দোষে , অন্য সবে সুখী। <br />দয়াময় সাধু কহে, মানুষের অনুদানে দুঃখ হবে নাশ<br />মানব সেবায় পাবে কল্পনার ভগবান, করো তা বিশ্বাস। <br />ডাকিলেন শ্রেষ্ঠী এক, কহিলেন, চাও ত্রাণ দুঃস্থের সেবায়,<br />সোনা রূপা খাদ্য অর্থ দিচ্ছে অকাতরে দান, হুকুম রক্ষায়। <br />দীন ভিখারিনী এক, আছে শুধু নিজ তার মলিন বসন,<br />সম্ভ্রম ঢাকিয়া ঘুরে, দুয়ারে দুয়ারে করে, ভিক্ষা অন্বেষণ।<br />সন্ন্যাসীরে দেখিছে সে, অমৃত তাঁহার বাণী করুণায় সিক্ত, <br />কী এমন আছে তার, দানিয়া হবে সে তৃপ্ত , সে-তো নিঃস্ব রিক্ত ! <br />আছে কেবল সম্বল, সম্ভ্রম ঢাকার মতো মলিন পিন্ধন,<br />ঝোপের আড়াল হতে শ্রদ্ধাভরে দানিল সে অন্তিম বসন।<br />বিপুল ত্রাণ রাখিল সন্ন্যাসীর সমুখেতে, নির্দেশের তরে<br />ত্রিকালজ্ঞ জানিলেন, মহীয়সী নগ্না নারী ঝোপে অগোচরে।<br />দয়াময় কহিলেন, কাপড় পরায়ে আনো নারীদল গিয়া,<br />তোমাদের আছে ঢের, দিয়েছো সামান্য কিছু অঢেল রাখিয়া। <br />এ নারীর নাহি কিছু, আছে সম্বল সম্ভ্রম,<br />ভাবিলনা কিছু <br />দানিতে মহান চিত্তে সম্ভ্রম অবগুণ্ঠন, চাহিলনা পিছু। <br />অর্থ বিত্তে বলিয়ান, দুষ্ট চিত্তে বড় দান হয়নাকো মহান,<br />মুক্ত চিত্তধারী সাধ্যে যা করে অর্পণ, তাহা শ্রেষ্ঠদান।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/vejal/ভেজাল2023-11-08T06:43:43-05:002023-11-08T12:46:10-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>৪+৪+৪+২<br />চালে ভেজাল তেলে ভেজাল ভেজাল শিশুর খাদ্যে,<br />ওষুধ ভেজাল বৈদ্য ভেজাল ভেজাল মাথার মধ্যে। <br />ফলে গরল দুধে পানি চিনি ছাড়া মিষ্টি,<br />ভেজাল খেয়ে রোগী হলে ঝরে টাকার বৃষ্টি। <br />ভেজাল মানুষ ফুলে ফেঁপে হঠাৎ বনে ধনী <br />নেতা সেজে চরকি ঘুরায়, হয়ে উঠে মানী।<br />টাকা দিলে ভেজাল সনদ হাতে চলে আসে <br />আসল মানুষ ভোগে সদা নকল মানুষ হাসে। <br />টাকায় মিলে চাকরি পেশা টাকায় মিলে খ্যাতি<br />বেকার গরীব ধুঁকে মরে রুগ্ন বনে জাতি। <br />স্বাধীন দেশের সোনার মানুষ ভাসে অশ্রু জলে<br />ভেজাল মানুষ সুখী হয়ে থাকে রাজার হালে।<br />এমনি করে ভেজাল যদি গ্রাসে দেশের গর্ব<br />সভ্য জাতি স্বাধীন মতি সবই হবে খর্ব।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/boishamyo/বৈষম্য2023-11-05T04:00:06-05:002023-11-05T07:19:19-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বৃষ্টি পড়ে শৈত্য বহে ফুটপাতে থাকে, <br />অল্পে তৃপ্ত তুষ্ট হয়ে ঈশ্বরকে ডাকে। <br />নদী ভেঙে নিলো ভিটে, গ্রাম গেল ভেসে,<br />কাজ নেই চাষ নেই নগরীতে আসে। <br />চেনা নাই জানা নাই আসমান তলে<br />মায়া দয়া নেই যেন পুরবাসী দলে।<br />নিঠুরতা দিকে দিকে রাশভারি মুখে,<br />খাদ্যভোজ্য অপচয়, গরীবেরা দুঃখে।<br />ছোট-বড় ভেদাভেদে নিত্য দ্বন্দ্ব চলে,<br />অবিশ্বাস ছলাকলা ইমারত তলে।<br />আত্মচিন্তা অহংবোধ লুকোচুরি সনে, <br />অমনুষ্য চিন্তাধারা বিরাজিত মনে।<br />যুদ্ধদিনে দীন-গৃহে হলো যার ঠাঁই, <br />মুক্ত দেশে ভুলে গেল, নিজ কেহ নাই।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/halchal/হালচাল2023-11-03T19:41:20-04:002023-11-05T03:55:56-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আলু চাল ডিম ডাল নূন তেল পেঁয়াজে,<br />চিনি গুড় মাছ দুধ ডুবে থাকে মেজাজে। <br />বড়মিয়া ছোটমিয়া হাহাকার করিয়া<br />বহু ক্লেশে পরিবার বয়ে নেয় টানিয়া। <br />গোঁফে তেল মেজে মেজে সদাগর হাসিয়া,<br />বিয়া করে রাশিরাশি কালোটাকা মারিয়া।<br />ফুলে ফেঁপে উঠে রোজ মজুদের বেপারী,<br />চিরদুঃখী উপোষেতে ধুঁকে মরে বেচারি। <br />কিষাণেরা চাষ করে খেটে মরে অভাবে, <br />চালবাজি করে যারা থাকে তারা নবাবে।<br />দালালেরা হয়ে উঠে সমাজের মাফিয়া, <br />ক্ষমতাতে ঢুকে পড়ে জননেতা সাজিয়া।<br />রসাতলে ডুবে যায় জনতার বাসনা,<br />বণিকেরা লুফে নেয় ক্ষমতার চালনা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/filistin/ফিলিস্তিন2023-11-02T10:05:52-04:002023-11-02T15:03:07-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বোমা ঝরে শিশু মরে নাই কারো মায়া<br />মোড়লের নাচানাচি সাথে তার ছায়া।<br />ছিন্নভিন্ন ইমারত ভূলুণ্ঠিত বাড়ী<br />চাপা পড়ে আছে কত রোগী শিশু নারী।<br />মায়াময় অনুভূতি নেই কারো মনে<br />কূটচাল ধ্বংস লিপ্সা রূপ নেয় রণে। <br />মানবতা সাম্যগাথা সভ্যধারী দেশে<br />শস্ত্রধর মিশে হেতা বাণিজ্যের আশে।<br />খোঁড়াযুক্তি মিথ্যাচারে বিভাজিত বিশ্ব<br />যুক্তিতর্ক লুকোচুরি করে দেবে নিঃস্ব। <br />রক্তগঙ্গা বয়ে যাক দৃষ্টি তাতে নাই <br />আধিপত্য আগ্রাসন চালু থাকা চাই।<br />ধর্মবাক্য সৃষ্টি হল সাম্য শান্তি তরে<br />বণিকেরা লুফে ধর্ম, রক্ত সদা ঝরে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/anukabyo-tin/ অণুকাব্য ৩2023-11-01T03:16:26-04:002023-11-03T19:48:14-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>এক.<br />মুখোশ তলে লুকায় নকল মানুষ<br />স্বার্থ লাভে ওড়ায় ছলনার ফানুস, <br />স্বরূপ তার উন্মোচিত করে সময়<br />ভ্রষ্ট অপাংক্তেয় রূপে হয় পরাজয়।</p>
<br /><p> দুই. <br />ছুটছে মানুষ অর্থ খ্যাতির নেশায়<br />পরহিত ধর্ম ভুলে পরধন চায়,<br />নিষ্ঠুর পাষাণ্ড হয়ে ভুলেছে নিয়ম<br />ব্যর্থ জীবন রেখে আগ্রাসে তারে যম।</p>
<br /><p> তিন.<br />নষ্ট মন নষ্ট নেতা নষ্ট করে দেশ,<br />নিঃস্বজনের স্বার্থ লুটে বাড়ায় ক্লেশ।<br />মহৎপ্রাণ নেতা আজ কূচক্রে বন্দী, <br />পদ লাভে হচ্ছে আজ চোরচোরে সন্ধি।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/biswas-nai/বিশ্বাস নেই2023-10-30T04:21:12-04:002023-11-01T03:09:51-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ছুটছি ছুটছি ছুটছি ভনভন<br />ফিরবো কিনা বিশ্বাস নেই, <br />কাজ করছি করছি হরদম <br />ফল মিলবে বিশ্বাস নেই, <br />পরীক্ষা দিচ্ছি দিচ্ছি দিচ্ছি <br />চাকুরি হবে বিশ্বাস নেই, <br />প্রেম করছি করছি করছি <br />মিলন হবে বিশ্বাস নেই, <br />মোহিত অমৃত ভালোবাসা <br />ঘৃণা হয় পাছে বিশ্বাস নেই, <br />বন্ধু বনছে, খলখল হাসছি <br />বেঈমানী হবেনা বিশ্বাস নেই, <br />ফর্দ করছি বাজারে যাচ্ছি <br />টাকা কুলাবে বিশ্বাস নেই, <br />চাকুরী করছি খাটছি খাটছি<br />সংসার চলবে বিশ্বাস নেই, <br />মেঘ উঠছে দেয়া ডাকছে <br />বৃষ্টি ঝরবে বিশ্বাস নেই, <br />ভোটে সখা বনে জননেতা <br />বিপদে দেখবো বিশ্বাস নেই, <br />শৈশব কৈশোরে মিলে ভাইভাই<br />বিভীষণ হবে পরে বিশ্বাস নেই,<br />নামাবলী গায়ে ধর্ম ঝরে বোলে<br />সাধু ভণ্ড কিনা বিশ্বাস নেই,<br />সুশ্রাব্য বচনে মুগ্ধ হয়ে যাই<br />শয়তান কি-না বিশ্বাস নেই, <br />অনিন্দ্য আশায় গড়ে সংসার <br />ভেঙে যায় কি-না বিশ্বাস নেই,<br />দাতা সেজে দান দিচ্ছে অবিরাম<br />কালোটাকা কিনা বিশ্বাস নেই, <br />বিশ্বাসীতে সয়লাব তাবৎ পৃথিবী<br />উপাস্যে বিশ্বাসীরও বিশ্বাস নেই।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/noshto-diner-songlap/ নষ্ট দিনের সংলাপ 2023-10-26T03:44:01-04:002023-12-16T03:49:40-05:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অবিরাম ঝরছে কবিতার অসার পঙক্তি পঙ্কে ঝরে যাওয়া সুবাসিত শরতের শিউলি মতো জন্মান্ধ বধির জনারণ্যে,<br />শোভিত মঞ্চ থেকে বাতাসের ইথারে ছুটছে ব্যর্থ অগ্নিঝরা কথার কুণ্ডলী কড়ি দিয়ে কেনা বন্ধ্যা শ্রোতামন্ডলে,<br />রাজনৈতিক কোট আর রহস্যময় কালো সানগ্লাস পরে শাসকের পোদ্দার, ধর্মপতি বনে ধর্ষণ করে নিষ্পাপ তরুণী,<br />অন্তবাস ছিন্নভিন্ন করা অর্ধনগ্ন ছবিসহ শিরোনাম করা কাগজ বাণিজ্যিক প্রচারে ক্ষুধার্ত কুকুরদের আহার্য যোগায়, <br />নিঃস্ব নির্লিপ্ত ক্রেতার সম্বল লুফে বণিক রূপকথার প্রাগৈতিহাসিক দৈত্যের মতো ফেঁপে উঠা দম্ভে অক্লান্ত তাণ্ডব চালায় সমাজে শাসনে শোষণে,<br />পঙ্গপালের মতো হাজারে হাজার পাতি রাজনৈতিক চাঁদাবাজ শহরের অলিগলি, গ্রাম্য পাড়ায় পাড়ায় বুকেরপাটা জানান দিতে দাপুটে হিংস্র বর্গী সাজে।<br />খাদির আজানু পাঞ্জাবি, কাঁধে ব্যাগওয়ালা জনতার হিস্যা আদায়ে আপোষহীন ঘর্মাক্ত বুদ্ধিজীবীরা চিরদিনের মতো একাত্তরে গুম হয়ে গেছেন দালালদের ব্যায়নেটের খোঁচায়, <br />এখন পাজেরোধারী পোষ্য নতজানু বুদ্ধি বিকিকিনিজীবী ভ্রমিত করে জাতিকে ডাহা মিথ্যাচারে, <br />কবরে শায়িত নিথর চে গুয়েভারার মতো সত্তোর্দ্ধ মুক্তিযোদ্ধা বড় বেশী ক্লান্ত, অবসন্ন, আশাহত হয়ে নিষ্ক্রিয় নির্জনে,<br />মিথ্যার বর্ণিল ঘূর্ণিতে ত্রস্ত বিপন্ন সত্যবান উড়ে গ্যাছে দিকভ্রান্ত মরালের মতো নিরুদ্দেশের দেশে।</p>
<br /><p>দুঃসাহসিক মুজিবের বজ্রকণ্ঠে ক্ষুরধার পঙক্তির সঞ্জীবনী উচ্চারণে রক্তের শিরায় শিরায় জাগাবেনা আজ আর কেউ শিহরণ, <br />শিহরিত সম্মোহিত অভিযাত্রী তরুণের মতোন ছুটবেনা কেউ একাত্তরের হায়েনাদের মতো এই ছল-বেশ্যার ছেলেদের বুকের পাঁজর ঝাঁঝরা করে নারীর সম্ভ্রম, ঘর্মাক্ত শ্রমজীবীর সহায় সম্বল রক্ষা,<br />অনিয়ম অসঙ্গতি অবিচার শোষণ ছিন্নভিন্ন করে দুদণ্ড শান্তির জন্য।<br />যেন কোথাও কেউ নেই, <br />নেই কেউ এই অনন্ত মধ্যাহ্ন রাতের প্রহর ছিন্ন করতে সকালবেলার পাখি।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/matiur-manush-vote-echche-kore/মাটির মানুষ হতে ইচ্ছে করে 2023-05-23T02:46:21-04:002023-06-26T10:35:58-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>হাল আমলে মনে হয় আমার বক্ষ জুড়ে শুয়ে আছে <br />প্রাগৈতিহাসিক অবচৈতন্যের অচলায়ত কুম্ভকর্ণ,<br />স্কন্ধে আজন্ম ঝুলে আছে <br />কৃষ্ণ গুহার অপবাদের অনড় হিংসুটে বাদুড়, <br />আভিজাত্যপূর্ণ শিরস্ত্রান পরা সচল প্রেত <br />আমার প্রতিবেশী আপন প্রিয়জন।</p>
<br /><p>মানুষের মুখোশের ভেতর কুকুর খেলে নিয়ত,<br />তোষামুদে লেজ নাড়ে, <br />নশ্বর ভোগের উপকরণ ভাগে তীক্ষ্ণ নখরে কাড়াকাড়ি, <br />খাইখাই নির্লজ্জ খাসলতে কর্কশ ঘেউঘেউ অনুরণন দুনিয়াজোড়া, <br />যেন তাবৎ তল্লাট ছেয়ে যাবে কুকুরে কুকুরে।<br />তরতাজা রক্ত ঝরে দাম্ভিক দ্বন্দ্বে, <br />ছিন্নমূল উদ্বাস্তু আশ্রয় ত্রাণ আশে ছুটে দিকবিদিক, <br />অস্থিচর্মসার শিশুর লোনা অশ্রুতে টলেনা ঘাতক মিসাইল, <br />একটুকরো স্বস্তির অভিযাত্রায় <br />ভূমধ্যসাগরে ভাসে ব্যর্থ নিথর প্রাণহীন দেহ, <br />খণ্ডিত পৃথিবীর কাঁটাতারের জাত্যাভিমানী সীমাচিহ্নে <br />ঝুলে অবুঝ অর্বাচীন।<br />স্বাতন্ত্র্যবোধ,ঔদার্যে কুণ্ঠা, যুদ্ধবাজ, নারীর সম্ভ্রম পীড়ন, <br />হিংসিত মিথ্যাচার, ধ্বংসযজ্ঞ আজ ধর্ষিতা পৃথিবীর অলংকার।<br />বর্ণিল পুষ্পিত বাগানে আজ নেই ফুলের সুগন্ধ বিলাস, <br />নেই দিলখোলা আপ্যায়ন চুল-ছেঁড়া দেনাপাওনার চৌহদ্দিতে,<br />বাঁধনহারা উড়ুক্কু লঘু সারস বনে অসহিষ্ণু অতুষ্ট মানুষ <br />ছুটছে নিয়মহীন নিঃসীম বিস্তারে।</p>
<br /><p>এই অসংগতি দুঃসহ বিষবাষ্প হয়ে ঘূর্ণি ছড়ায় <br />তারুণ্যের প্রাণচঞ্চল নিষ্পাপ ফুসফুসে, <br />কোথাও কেউ নেই রুখিতে শানিত অস্ত্রসাজে সজ্জিত <br />এই দুর্বিনীত অশ্বারোহীকে।</p>
<br /><p>নির্জীব নিষ্কর্মা বিরাট শিশু তুমি লাখো আরজি আরাধনা <br />ভ্রুক্ষেপ না করে খেলে চলো প্রতিকারহীন আপন খেয়ালে, <br />এই অনিয়মের নিয়মে মৃত্যুদণ্ডের লিপ্সায় নতজানু হয়েও <br />ব্যর্থ হই তোমার কাছে, হে নিশ্চুপ উপাস্য ঈশ্বর! </p>
<br /><p>আকাশে সেই নীল স্বস্তির, আরণ্যক শীতলতা <br />কেড়ে নিতে পারেনি কোন দুঃসাহসিক দস্যু,<br />পাহাড় শীর্ষে ভোরের আলোর মহত্ত্বও <br />কৃষ্ণতায় আকীর্ণ করেনি কোন দুর্বৃত্ত <br />---- মানুষ শুধু হারালো তার মহত্তম মানবিক উত্তরাধিকার<br />ভিনগ্রহের বাসিন্দার মতো নিশ্চুপ রোবোটিক আত্মকেন্দ্রিকতায়।</p>
<br /><p>আজ বড় বেশি ইচ্ছে করে <br />এই শোভিত কুহক মখমলে আস্তরণে আকীর্ণ <br />নিষ্ঠুরতার লুকোচুরি, হিংসার বাসভূৃম ছেড়ে <br />নামগোত্রহীন আরণ্যক আদিম মাটির মানুষ হয়ে যেতে <br />দুদণ্ড ঈপ্সিত অবারিত নিটোল শান্তির জন্যে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/juddha-kakhono-shes-hoyna/যুদ্ধ কখনো শেষ হয়না 2023-04-23T07:13:40-04:002023-06-26T10:35:53-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>“এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়” <br />--- কবি হেলাল হাফিজের “নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়” কালজয়ী কবিতার অমর একটি পঙক্তি ।</p>
<br /><p>দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে যাওয়ার সুযোগ <br />সব প্রজন্মের হয় না। <br />স্বাধীনতা অর্থবহ করে দেশকে উন্নত বাসযোগ্য করার যুদ্ধ অগুনিত। <br />বহুকাল ধরে অনিয়ম নিয়ম হয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ, নারীর সম্ভ্রম রক্ষার জন্য যুদ্ধ, <br />শিশু ও হীনবল মানুষদের নিগৃহীত করার কুৎসিত কদাকার আচরণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, <br />বৈষম্যের যাঁতাকলে সমাজকে পুঁতিগন্ধময় দোজখ যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, <br />কুসংস্কার ধূর্ততা আত্মকেন্দ্রীক স্বাতন্ত্র্য ভাবনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। <br />অসঙ্গতি,অনিয়ম, অবিচার, মিথ্যাচার, যাকিছু অসুন্দর প্রগতিশীল তরুণের কাছে অসহ্য অসহনীয়। <br />এই নেতিবাচক বিষবৃক্ষ নির্মূল নিশ্চিহ্ন করতে বর্তমান প্রজন্ম যদি নির্জীব দিকভ্রান্ত পথহীন বিহঙ্গ হয় তাহলে বিপন্ন মানুষের ক্রন্দনরোলে আকীর্ণ হয় স্বীয় বাসভূম। অনিয়মে টইটম্বুর প্রিয় জন্মভূমির সুবর্ণিল আগামীর জন্য যৌবনধারী মুক্তমনা যোদ্ধাদের পাপাচারী সব মোহময়ী শৃঙ্খল ছিঁড়ে আসতেই হবে নতুন দিনের আলোর অভিসারে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/sada-mon/সাদা মন2023-04-15T02:20:31-04:002023-06-26T10:36:10-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>মন সবকিছুরই অগ্রগামী, শ্রেষ্ঠ। </p>
<br /><p>ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, ধর্মীয় সম্প্রদায়, রাষ্ট্র বা জাতির মন যদি<br />লুকোচুরি, হিংসা, দ্বন্দ্ব, অন্যায়-অবিচার, অনৈতিক আচরণে আকীর্ণ হয়,<br />তবে অর্থ, বিত্ত, শিক্ষা, সংস্কৃতি, লোকদেখানো অনুষ্ঠানের দাম্ভিকতা, পদবী, আভিজাত্য, প্রতিপত্তি, যশ, খ্যাতি, ক্ষমতা <br />সবই বর্বরের ময়ূরপুচ্ছ সদৃশ অযোগ্য কুহক অলংকার। </p>
<br /><p>সেই ধর্ষিতা কলুষিত দেশ ও পৃথিবীর আরাধ্য ত্রাণকারী সন্তান,<br />সহজ সরল সাদা মনের মানুষ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/swapnabhanga/স্বপ্নভঙ্গ 2022-06-10T04:09:38-04:002023-06-26T10:36:17-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>শৈশবে জ্যাঠাতো দিদির সাথে বাল্যশিক্ষা বগলদাবা করে <br />ছুটতাম মন্দিরের চারপাশের বারান্দায় বসা টোলে। <br />শিক্ষার মিলনমেলার মহানায়ক মনে হতো গুরুজীকে।<br />চলন প্রতিবন্ধী অশীতিপর অবৈতনিক গুরুজী <br />ঝাপসা কাঁচের চশমা চোখে ওয়াকিং ক্রাচে ভর করে <br />বারান্দায় ঘুরে ঘুরে জ্ঞান বিলাতেন সুন্দর আগামীর স্বপ্ন বুকে। <br />বাল্যশিক্ষা'র পঙক্তিমালা আমৃত্যু মজ্জাগত করাতে<br />সুরে সুরে সমবেত আবৃত্তি করাতেন ----<br />চোরকে সকলে ধিক্কার দেয়, <br />লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়ায় চড়ে সে,<br />দুঃশীল সতত দুঃখেতে জড়িত, <br />অসৎ চরিত জগত ঘৃণিত...... <br />গুরুজনকে ভক্তি করো।<br />"শিশুর পণ" তটস্থ করতাম পেন্ডুলামের দোলে---<br />... সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি<br />সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি.....<br />সুখী যেন নাহি হই আর কারো দুঃখে,<br />মিছে কথা কভু যেন নাহি আসে মুখে.....<br />সাবধানে যেন লোভ সামলিয়া থাকি,<br />কিছুতেই কাহারে যেন নাহি দেই ফাঁকি.....। </p>
<br /><p>গুরুজী প্রাণিত করতেন, অন্যায় অসুন্দর অমানবিকতা<br />ছিন্নভিন্ন করে পৃথিবীকে সাজাতে বেহেশতের সুষমায়। <br />পরাধীনতার দীর্ঘ প্রহরে বাল্যশিক্ষা আপ্তবাক্যের মতো <br />মস্তিষ্কের নিউরণে গাঁথা ছিল আবালবৃদ্ধবনিতার,<br />ম্রিয়মান হয়েছিল অনিয়ম নিয়ম করে তোলার আদিম আকাঙ্খা, <br />স্বাধীকার অর্জনে নিমগ্ন সন্ন্যাসীর মতো<br />দেখা দাও ! দেখা দাও! বলে বলে কেটেছে দীর্ঘ প্রস্তর প্রহর,<br />আত্মশক্তির প্রাবল্যে ব্যথিত জঠর ছিঁড়ে ভূমিষ্ট হলো স্বাধীনতা।<br />বাইশ পরিবারের পরিত্যক্ত প্রেতাত্মা হাজার গুণে পশিল<br />রাজনৈতিক নামাবলী পড়া শতবছরের গোলামের দেহে,<br />তারা শনির গ্রহণের মতো গিলছে মানুষের, সুজনের<br />সুখ সৌভাগ্য সমৃদ্ধি অভিলাষ অধিকার মান সম্ভ্রম। <br />চোর দুঃশীল অসৎ চরিত মিথ্যুক প্রতারক <br />এখন রক্তচোখা শাসক, রক্ষক, ধর্ম ধ্বজাধারী।<br />জ্ঞানী গুণী গুরুজন নিষ্কর্মা বৃদ্ধ-অন্ধকারের বাসিন্দা।<br />এই বন্ধ্যা স্বপ্নভঙ্গের দুর্দিনে গুরুজীর আহত স্বপ্নরা <br />উড়ন্ত ডানায় ছড়াবে কি স্বর্গের সুষমা বৈতালী বাতাসে!  <br />ফুল ফুটিয়ে সৌরভ ছুটিয়ে আনবে কি সুপ্রভাত বিপন্ন বাসভূমে!</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/saityo-motaher-dwonwde-prithibir-etihas/ সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্বই পৃথিবীর ইতিহাস2022-01-03T01:49:14-05:002023-06-27T18:54:42-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>সত্য শ্বাশত, চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর গৌরবের। <br />মিথ্যা নশ্বর, ঠুনকো, নিন্দিত গ্লানিময়। <br />তবু্ও নিরেট কার্বোনেডো'র খোলস ছিঁড়ে <br />সত্যকে ভূমিষ্ট করাতে হয় কুহকে আকীর্ণ  পৃথিবীতে। </p>
<br /><p>মিথ্যা, পঙ্গপালের মতোন জ্যামিতিক ঢংয়ে <br />গ্রাস করে ঈপ্সিত স্বপ্নের ফসল সম্ভার, <br />সরল রৈখিক পথিকের স্বপ্ন-নির্যাস আকন্ঠ পান করে মখমলে সিংহাসন গড়ে দাম্ভিক মিথ্যুক, <br />বিপন্ন নারীর লোনা অশ্রুতে তপ্ত হয় হাজারো রজনী,<br />মিথ্যার দোর্দণ্ড বৈতালী ঝড়ে বিপর্যস্ত হয় স্বস্তির অলিন্দ। </p>
<br /><p>আকাশ ভাঙ্গা রুদ্র ঝড়ে সত্যকে পাড়ি দিতে হয়<br />একা দুর্বিনীত গহীন কৃষ্ণ অন্ধ কালোবেলা,<br />ছেঁড়া পালে বাইতে হয় দোদুল্যমান তরী নিশিদিন,<br />আলোর স্বপ্নের বিভোরতায় ম্লান হয়ে যায় ক্লান্তি, <br />নিন্দিত নরকের বৈরী বাতাসে সত্য তবুও নির্ভীক---<br />নিরেট কঠিন ঈপ্সিত দীপ্ত ইতিহাস ছুঁবেই সত্য।  </p>
<br /><p>হেমলকের বিষে নীল হয়ে যাক সক্রেটিসের সুঠাম দেহ,<br />ক্রুশবিদ্ধ যীশুর ক্ষত বেয়ে বয়ে যাক রক্তগঙ্গা<br />---- তবুও উতালপাতাল ঢেউয়ের বৈতরণী পাড়ি দিয়ে <br />সত্য অবিচল অনন্ত প্রহরের স্পন্দিত পৃথিবীর জন্য।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/dharmo-o-adharmo/ ধর্ম ও অধর্ম2021-12-05T17:07:02-05:002023-06-26T10:35:43-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>নব্যপ্রস্তরযুগে প্রায় ১১০০০ বছর আগে পৃথিবীর  পূর্বাঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায় ধর্মের উদ্ভব ঘটে।  তবে অনুমান করা হয়, একই সময়ে অন্যান্য অঞ্চলেও ধর্মের উদ্ভব ঘটেছিল। কৃষিজ ব্যবস্থার আবিষ্কারের ফলে মানব সমাজ যাযাবরের শিকারী জীবন পরিত্যাগ করে চাষাবাদ, বসতি স্থাপন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধাজনক স্থানে জনবসতি গড়ে তুলে স্থিত হতে থাকে। </p>
<br /><p>যুগে যুগে মানবতার চরম সংকটে মানবতাবাদী মহামানবেরা জন্মগ্রহণ করেন। যুগের অশান্ত পরিস্থিতি, অন্যায়, অবিচার, অমানবিক আচরণ নিরসনকল্পে এসব বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন মহাপুরুষেরা ধর্ম প্রবর্তন করেন। তাই কোন ধর্মে কখনো কোন ত্রুটি থাকেনা। ত্রুটি থাকে সেই ধর্ম পালনকারীর নামে সম্প্রদায়ভুক্ত কিছু অতি ধার্মিক সাজা স্বার্থান্বেষী মানুষের মধ্যে। তার জন্য শুধুমাত্র সেই ভণ্ড ধার্মিকরা দায়ী হতে পারে, সমগ্র সম্প্রদায় এবং ধর্মগুলো দায়ী নয় !<br />যুগে যুগে এইরূপ মানুষ ধর্মকে ব্যবহার করে নিজের সম্প্রদায়ের এবং অন্য ধর্মের সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার, সম্পদ, প্রাণ, মানসম্মান প্রভৃতি হরণ করে তাদের নিজেদের সম্পদ, যশ, খ্যাতি, প্রভাব প্রতিপত্তি, ক্ষমতা, প্রভাব বৃদ্ধি করে, সাধারণ মানুষের অর্থে নিজের প্রচারণার মাধ্যমে ইতিহাসে কালজয়ী হতে চায়। তারা সজ্ঞানে নিজেদের স্বার্থে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে, মিথ্যাচার করে, অর্থের বিত্তের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বিশেষত তরুণদের ব্যবহার করে নিজের এবং অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করে, আগ্রাসন, দমন, দখল, নিপীড়ন, নির্যাতন, শ্লীলতাহানি, বিতারণ, ঐক্যের বিভাজন করে। এসব ব্যক্তিরা ধর্মের নামে চালায় অধর্ম। পবিত্র শান্তির ধর্মকে তারা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য করে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ। </p>
<br /><p>অপরপক্ষে, প্রায়সব মানুষ ধর্মের মধ্যে খুঁজে মৈত্রী, সাম্য, শান্তি। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে পৃথিবীর মানুষসহ তাবৎ সৃষ্টি একই ঈশ্বরের। তাই মানুষের প্রতি ও সৃষ্টির প্রতি দয়া করলে ঈশ্বরের সেবা করা হবে। তারা মনে করে এই দয়াময়তার ধর্মই পারলৌকিক শান্তির একমাত্র পথ। পার্থিব অন্যসব বিষয় তাদের কাছে গৌণ। তারা সদা অল্পে তুষ্ট, পরিতৃপ্ত, শান্ত, উদার, নিরহংকারী, বন্ধুভাবাপন্ন, স্বশিক্ষিত, জ্ঞানী এবং প্রচারবিমুখ। অন্যের অধিকার, সম্পদ, সম্মান, প্রাণ হরণ তাদের কাছে গর্হিত অপরাধ, অধর্ম।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/fire-nao-ghatakkanta/ফিরিয়ে নাও ঘাতককাঁটা2021-11-23T14:31:44-05:002023-06-26T10:35:49-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>গ্রামের নৈসর্গিক প্রকৃতি মানুষের মনকে কোমল ও উদার করে। নাগরিক জীবনের চুল-ছেঁড়া হিসাব নিকাশ, রূঢ় বাস্তবতার জীবন নির্বাহের বাধ্যবাধকতা এখানে ছিলনা। ছিলনা লুকোচুরি, আন্তরিকতার বিভ্রাট, নিষ্ঠুরতা, ছিলনা স্বার্থপরতা। কারো ন্যায্য অধিকার হরণ করে নিজের সমৃদ্ধির হীন মানসিকতাও ছিলনা গ্রামবাংলায়। স্বাধীনতার উত্তরকালে কালোবাজারি, মজুদদারি, দুর্নীতি, অনৈতিক কাজ, রাজনৈতিক সংঘাত প্রভৃতি নগরে তীব্রতর হলেও গ্রামে এর ছোঁয়া তখনও লাগেনি। নগরের এক শ্রেণীর মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটলেও গ্রামীণ মানুষ এসব নেতিবাচক বিষয়ের কুফল ভোগ করেছে ঈশ্বরের অভিশাপ বিশ্বাসে। তবে স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ের বিভিন্ন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছে এবং কোন কার্পণ্য ও হিসাবনিকাশ ছাড়া জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে লড়েছিল গ্রামের মানুষ বীরদর্পে। এই দুঃসময়ে পাকসেনাদের ভয়ে পালিয়ে আসা শহরের মানুষদের আশ্রয় দিয়েছিলো নিজের সুখসাচ্ছন্দ্য পরিহার করে। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা লাভের সহজ পরিবেশে অবস্থিত শহর নগরগুলো কোন কালজয়ী তুখোড় রাজনৈতিক নেতৃত্বের, বুদ্ধিজীবীর, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যের ধারক ও বাহকদের জন্ম দিতে পারেনি। মফস্বলের তরুণেরা এসব প্রতিষ্ঠানে জীবনসংগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করে এদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমৃদ্ধির বরমাল্য পরিয়েছে। <br />গ্রামের সাধারণ মানুষ কোন বাকবিতণ্ডা ও দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছে। তবে জাতীয় নির্বাচনে মাঝে মধ্যে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভোটের বাক্স চিনতাই, স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা প্রদান এবং অন্যান্য অনৈতিক কর্মকাণ্ড তারা দেখেছে।<br />কিন্তু গ্রামের মানুষের মধ্যে দলগতভাবে মতপার্থক্যের জন্য দাঙ্গা ও খুনাখুনির মতো ঘটনা খুবই সামান্যই হয়েছে। তারা গ্রামের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে শিশুর মতো বিরোধ ভুলে আবার হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছে গ্রামীণ জনপদে। বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে স্কুলজীবন থেকে এবং তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা নিবেদিতপ্রাণ কেউ নেই। সাধারণ মানুষের দুঃখে ও সন্তাপে পাশে থাকা ঔদার্য লালনকারী মানুষেরা উপেক্ষিত হচ্ছে নেতৃত্বে। বিপন্ন মানুষের সৃষ্ট লোনা অশ্রুপাতের উপ্তাপ হৃদয়ে স্পর্শ করা মানুষ হতে সৃষ্টি হচ্ছে না নেতৃত্ব। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে ক্ষমতা দখলের জন্য অনৈতিক নির্লজ্জ নির্বাচনী টিকিট বিক্রির আলু-মাংস নীতির কালাকানুন। এই গর্হিত অনিয়মের নিয়মে নিশ্চুপ পালিত বুদ্ধিজীবীরা, বণিক প্রচার মাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তির কুফল সেবনকারী নির্জীব তারুণ্য। চলছে মাৎস্যন্যায়। মধ্যবয়সী শেয়ার চোর শেয়াল, ড্রাগ কারবারি, দুর্নীতিবাজ আমলা, মজুদদার, সন্ত্রাসের গডফাদার, চোরাকারবারিরা আর্থিক ও পেশী শক্তির দাপটে আমজনতার মমতায় নির্বাচিত প্রতিনিধির আসন চিনতাই করছে। হাজার বছরের মুক্তির মন্দিরের সোপান তলে নিবেদিত প্রাণে অর্জিত স্বাধীনতার ফসল সম্ভার লুটছে বণিক আর নীতিভ্রষ্ট মানুষেরা। এইসব পঙ্গপাল সাংসদের আসন অলংকৃত করবে। গনবিরোধী আইন প্রণয়ন করবে। বণিকী স্বার্থ হাসিল করবে। প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে করায়ত্ত করবে। মানুষ হবে তাদের গোলাম। দেশের স্বাধীনতার, প্রগতির, চিন্তাচেতনার, উন্নয়নের এবং শিল্প সাহিত্যের পুরোধাদের সূতিকাগার গ্রামকেও তাদের গোলামির রাজত্বে পরিণত করার লক্ষ্যে দলীয় দ্বন্দ্বের বিষবৃক্ষের বীজ বপন করেছে গ্রামে। এই উপ্ত বীজ বিষফল ও বিষবৃক্ষ ছড়াবে অনন্তকাল। জাতীয় নির্বাচন থেকে তৃণমূল পর্যায়ের ক্ষুদ্র গ্রামে প্রসারিত হবে তাদের এই দ্বান্দ্বিক চরিত্রের বিষাক্ত নখরযুক্ত কালো হাত।<br />প্রতিবাদ করার কোথাও কেউ নেই। দেশপ্রেম ও দেশপ্রেমিকদের নিষ্ক্রিয় নির্জনতায় কবরস্থ করা হয়েছে। তরুণেরা মগ্ন আত্মকেন্দ্রীক মন্ত্রমুগ্ধ আপন বলয়ে। তাই অবাধে বিঁধবে ঘাতককাঁটা বাংলার চির বঞ্চিত মানুষের প্রাণের স্পন্দনে। <br />প্রগতির রথচক্র গতিময় করতে ফিরিয়ে নাও নৃশংস ঘাতককাঁটা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/danoshresto-o-danobeer-ramyokathan/দানশ্রেষ্ঠ ও দানবীর (রম্যকথন)2021-11-15T07:51:12-05:002023-06-26T10:35:41-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>এক ধর্মীয় মহাদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হইল, এক শিল্পপতির বিস্তৃত উঠান জুড়িয়া। শুনিয়াছি, ইদানীং শিল্পপতির সুপ্ত খায়েশ জাগিয়াছে রাজনীতি করিবেক। আমিও এই মহতি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হইলাম সখ্যতার খাতিরে নহে, তাহাকে ভবিষ্যতে সহায়তা না করিলেও, আবোল তাবোল যেন কিছুু না বলি বা না লিখি, তাহা ভাবিয়া বোধহয় আমন্ত্রণ জানাইয়াছেক। </p>
<br /><p>পূর্বেকার সময়ে ছাত্রাবস্থায় দেশের মানুষের দুঃখ দুর্দশার বিষয় ভাবিয়া অন্যায় অবিচার রুখিবার দৃঢ় প্রত্যয় লইয়া তরুণ বয়স হইতে মেধাবী, সাহসী ও তুখোর বক্তা এবং ক্ষুরধার লেখায় পাকা ছাত্রদের রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু হইত। এখন রাজনীতি মধ্যবয়সী বণিক, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, চোরাকারবারি, মজুদদার, ড্রাগ ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হইয়াছে। </p>
<br /><p>অগণিত সংখ্যক পুরোহিতগণ সারিবদ্ধভাবে সুরম্য আসনে উপবেশন করিলেক। প্রথমে দানকর্ম সংগঠিত হইল। পুরোহিতবৃন্দের সম্মুখে উনাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীসহ সংবৎসরকালের পরিধেয় বস্ত্র ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী স্থাপন করা হইল। অনুমিত হইল, পুরোহিতগণ এবং সাধারণ মানুষ্যগণের মধ্যকার স্থানে স্বর্গের কল্পতরুর শাখায় শাখায় ফলস্বরূপ নানাবিধ কল্পিত, ঈপ্সিত দ্রব্যরাজি ঝুলিতেছে এবং এই নান্দনিক কল্পিত বৃক্ষরাজিতে পরিপূর্ণ দীর্ঘ সুরম্য পর্বতশ্রেণী রচিত হইয়াছে। গুরুগম্ভীর পুরোহিতগণ অত্যধিক সামগ্রী প্রপ্তি নিশ্চিত হইয়াও বিচলিতভাব প্রদর্শন না করিয়া ভরাট ও দর্পিত কণ্ঠে বলিতে লাগিলেক, এই দানবীর পূর্বজন্মে পুণ্যবান, নীতিবান এইরূপ যোগ্য এবং সুপাত্র পুরোহিতগণদের দান করিয়াছেক বিধায় তিনি বর্তমান জন্মে অঢেল সম্পত্তির অধিকারী হইয়াছেক। পুরোহিতগণ দৃঢ়কণ্ঠে দানের অসীম ও অত্যাশ্চর্য গুণ বর্ণনা করিয়া চলিলেক। কোন নারী যদি শ্রদ্ধাচিত্তে অঢেল ধনসম্পদ এইরূপ সুপাত্রে দান করে, তাহারা অবশ্যই আগামী জন্মে পুরুষ হইবেক। এই বক্তব্য শ্রবণ করিয়া কতিপয় পুরুষ অতিথি শঙ্কিত হইয়া উঠিল মনে হইয়াছে। তাহারা অস্ফুট স্বরে বলাবলি করিলেক, যদি এইভাবে সব নারী স্বামীদেবের ঘর্মাক্ত দেহে উপার্জিত অর্থের বারোটা বাজাইয়া সমুদয় অর্থ পুরোহিতগণের চরণ সমীপে জলাঞ্জলি দেয়, তাহা হইলে অচিরেই এই পৃথিবী পুরুষ শূণ্য হইয়া মহা মানবিক সংকট সৃজিত হইবেক। তাহাহইলে পুরুষদেরকে বৈজ্ঞানিক পন্থায় প্রজনন অঙ্গ সৃজন করিয়া সন্তান প্রসব করিতে হইবেক, রান্নাবান্নাসহ যাবতীয় গৃহস্থালি কর্ম পুরুষদের সম্পন্ন করিতে হইবেক। </p>
<br /><p>পুরোহিতবৃন্দ বক্তব্যে দানবীরের এই অভাবনীয় ও অভূতপূর্ব দানের ফলশ্রুতিতে বর্তমান জন্মে এবং ভবিষ্যৎ জন্মের কোটি কল্প কালের দিনগুলি কী অভানয়ীয় মসৃণ এবং সুখময় হইবেক তাহা ভাষিত হইল। এই মহা দানবীরের দানবীরত্বের মহিমা আমরা নাখান্দা আমজনতা যাহাতে অনুধাবন করিতে সচেষ্ট হইয়া আমাদের কৃপণ মনে দানচিত্ত জাগরিত করিয়া বিশ্বকে দানের একছত্র সাম্রাজ্যে পরিণত করিয়া সবাই কল্প কল্প কাল যাবৎ সুখশান্তি ভোগ করিতে থাকি তাহার লাগিয়া পুরোহিতগণ বারংবার দৃঢ় কণ্ঠে বয়ান করিলেক।<br />পুরোহিতগণের উচ্ছ্বসিত, প্রশংসিত বক্তব্যে আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ নিজেদেরকে কৃপণ, স্বার্থপর, হীনজীব ভাবিয়া মনে মনে নিজেদেরকে ধিক্কার প্রদান করিয়া, বাকরুদ্ধ হইয়া জলজ মৎস্যের বিষফল ভক্ষণ করিবার ফলস্বরূপ হা করিয়া যেইরূপ অর্ধমৃত হইয়া পানিতে ভাসমান অবস্থায় চিৎ হইয়া থাকে, সেইরূপ উপস্থিত অতিথিবৃন্ধের সিংহভাগ মধুর ধর্মসুধা পান করিয়া কিংকর্তব্য বিমূঢ় হইয়া পড়িলেক। </p>
<br /><p>বাঙালীর সহজাত পরশ্রীকাতরতা প্রবৃত্তি ধারণ করতঃ কিছু বাঁকা মনের অতিথি কানাঘুষা করিতে লাগিলেক। উনারা ফিসফাস করিয়া বলিতে লাগিলেক, এই মহাশ্রেষ্ঠ দানে গলদ বিরাজমান। আজিকার এই মহা দানবীর নাকি বাংলাদেশের শেয়ার ব্যবসা লইয়া শেয়ালবাজি কাণ্ডের সময়কালে অন্যতম মহা খলনায়কও বটে। সেই সময়কালে শিল্পপতিগণ স্টক এক্সচেঞ্জ এর ধূর্ত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহিত গোপন সলাপরামর্শ করিয়া জনগণের পকেট কাটিবার নিমিত্তে ফন্দি আঁটিয়া তাহাদের কোম্পানীর শেয়ার নাই নাই রব তুলিয়া ১০০ টাকার শেয়ারের মূল্য পাঁচ হাজার হইতে সাত হাজার টাকায় মূল্য উত্তোলন করিয়া তাহাদের সকল অচল শেয়ার অকল্পনীয় উচ্চমূল্যে বিক্রয় করিয়া জনগণের সর্বস্ব হরণ করিয়াছেক। ইহার ফলশ্রুতিতে কত মানুষ সর্বস্ব হারাইয়া আত্মহত্যা করিয়াছেক, কত মানুষ শোকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া স্তব্ধ হইয়া পটল তুলিয়াছেক, কতশত মানুষ পাগল হইয়া রাস্তায় নগ্ন হইয়া বিরবির করিয়া দিন নিপাত করিয়াছেক, কত মানুষের সংসার ভঙ্গুর কাঁচের মতোন শতছিন্ন হইয়া ঝরঝরে হইয়া পৃথিবীর জনারণ্যে বিলীন হইয়াছে, কত শিশু আর তরুণ তরুণীর অধ্যায়ন অকালে পরিসমাপ্তি ঘটাইতে হইয়াছে ---- তাহার ইয়ত্তা নাহি। </p>
<br /><p>এই শেয়ালেমি পন্থায় শেয়ার বিক্রয় করিয়া রাতারাতি আঙুল ফুলিয়া কলাগাছ বনিয়া যাওয়া দেশদ্রোহীরূপ স্বার্থপর, ঘৃণিত এইরূপ নরকের কীটদিগকে মহা দানবীর রূপে কতিপয় জ্ঞানপাপী কর্তৃক বিশেষিত করিয়া, প্রতিষ্ঠিত করিয়া, রাজনৈতিক দলের টিকেট কারবারিদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করিয়া জঘন্য অমানবিক কর্ম করিতেছেক। এই বলিয়া বলিয়া ঐসব বাঁকাচোখা মানুষগুলি গোখরোর লাহান ফোঁসফাঁস করিলেক। তাহারা ক্ষোভে চাপাকণ্ঠে বলিয়া চলিলেক, অন্তঃসারশূন্য উচ্চবিলাসী ফিটফাট পরিচ্ছদ সর্বস্ব এবং বাকপটু কতিপয় ধান্ধাবাজ মানুষের দ্বারা চালিত এই সমাজ চলিতেছে উন্মাদ কুকুরের মতো অর্থের পিছনে পিছনে ধাবমান হইয়া, তোষামোদি করিয়া, মিথ্যাকে সত্য বলিয়া প্রতিষ্ঠিত করিয়া, সত্যকে টুঁটি চাপাইয়া দিয়া কবরস্থ করিয়া নির্বিঘ্নে সমগ্র সমাজের কর্তৃত্ব করায়ত্ত করিয়া নিয়াছেক ঐসব ধান্ধাবাজ কাউয়াগুলি। </p>
<br /><p>পাশ্ববর্তী অতিথিবৃন্দ পুরোহিতবৃন্দের বয়ান ছাড়াও বাঁকাচোখা মনুষ্যদের এই বাঁকা কথাও শুনিয়া বিশ্বাস করিল বলিয়া মনে হইল। আমার অনুমিত হইল, সাধারণ মানুষ সকল পক্ষের কথা নিয়মিত শুনিতেছে। তাহারা নির্জীব জড় নহে, বোবাকালাও নহে, অজ্ঞানীও নহে। কিন্তু বাংলাদেশের অজ্ঞানী ভুঁইফোড় এইরূপ দানবীয় দানবীর রাজনৈতিক নেতারা, আমলারা এবং উহাদের ক্রয়কৃত চামচবৃন্দরা জনগণকে তাদের পৈতৃক ছাপোষা মূর্খ চাকর জ্ঞান করিয়া থাকে। যদি আমজনতা সন্ত্রাসমুক্ত ও বাধাহীন পরিবেশে গোপনে ভোট প্রক্ষেপণের সুযোগ পায় তাহাহইলে তাহারা তখনই এইসব গজাইয়া উঠা অজ্ঞানী, স্বার্থপর নেতা কর্তৃক সৃজিত মানুষের শুভ্র দুধেল অধিকার খেকো গণেশ উল্টাইয়া কৃষ্ণকায় পয়ঃ নর্দমায় নিক্ষেপ করিবেক। এই আমজনতাকে অতিব গোবেচারি বোধ হইলেও তাহারা একদা ভয়ংকর রূপ পরিগ্রহ করিয়া বৃটিশ আর পাকিস্তানিদের দশা ঘটাইতে দ্বিধা করিবেকনা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/amaya-vassyaily-re-amaya-dubayaily-re/আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে..... 2021-11-01T02:55:12-04:002023-06-26T22:31:46-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে..... <br /> (রম্যকথা --- দুই) <br /> ____/// শ্যামল চৌধুরী </p>
<br /><p>মাস সমাপনের প্রাক্কালে মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবীদিগের মানসপটে শতসহস্র বাসনা উঁকি মারিয়া যায়। মাহিনা হস্তগত হইবার পর সেই অর্থের কিয়দংশ ব্যয় করিয়া মনপ্রাণে সন্তোষ সৃজন করে এইরূপ নান্দনিক হরেক রকমের কার্য সমাধা করিতে হইবেক, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের সহিত সাক্ষাৎ করিতে হইবেক --- এইরূপ কত মনোবাঞ্ছা ঘুরপাক খাইতে থাকে। </p>
<br /><p>মাস সমাপ্ত হইল, মাহিনায় পকেট ভারী হইয়া উঠিল। কার্যালয় হইতে গৃহে প্রবেশ করিয়া গৃহদেবীর সকাশে সমুদয় মাহিনা অঞ্জলি স্বরূপ নিবেদন করিলাম। গৃহদেবী যশস্বী গণিতবিদের সদৃশ হিসাবে নিমগ্ন হইয়া জানালা দিয়া আকাশের পানে বারংবার তাকাইয়া হিসাব কষিয়া সমুদয় মাহিনার নিটোল দেহ দক্ষ শল্য চিকিৎসকের ন্যায় সাংসারিক খরচের বিভিন্ন খাত মোতাবেক সুনিপুণভাবে ব্যবচ্ছেদ করিয়া বিভিন্ন অংশে বিভাজিত করিলেক। </p>
<br /><p>অতঃপর গৃহিণী গৃহের ঘটিবাটি ঘাটিয়া, নাড়িয়া চাড়িয়া, ঝাঁকাইয়া ইহাদের ভিতরেরকার দ্রব্যসামগ্রী আন্দাজ কষিয়া, ললাটে চিন্তার ভাজ ফেলিয়া লেখনী ও পত্র লইয়া কি যেন ধার্যকরণে আবিষ্ট হইলেক। ধার্যকরণ প্রক্রিয়া সম্পাদনের অব্যবহিত পরেই একদা স্মিত হাস্যে নিকটে আসিয়া লিখিত একটি দীর্ঘ শ্বেত পত্র আমার হস্তে প্রদান করিলেক। <br />জিজ্ঞাসা করিলাম, ইহা কি ? <br />গৃহিণী উত্তর প্রদান করিলেক, মাসিক প্রেমপত্র ! </p>
<br /><p>খুলিয়া দেখিলাম যৌবনে শেষ বৈকালিক প্রহরের ডাকপিয়ন হইতে প্রাপ্ত সেই বহু আকাঙ্খিত মধুময় প্রেমপত্র ইহা নহে ! ইহা বিষফল সদৃশ গাত্রদাহ উদ্রেককারী তাবৎ মাসের সাংসারিক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করিবার ফর্দ। </p>
<br /><p>আমার মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে ঝিঁঝি পোকার ক্রন্দনের ন্যায় ঝিনঝিন করিয়া উঠিল, বুকের খাঁচায় সুরক্ষিত হৃদপিণ্ড ধপ্ ধপ্ করিয়া বিকট গতিতে নাচিয়া উঠিল --- কারণ আজিকার এই দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধমুখী প্রবণতা হেতু নাভিশ্বাস উঠা পরিস্থিতিতে সমগ্র মাহিনার বৃহৎ অংশ আজিকেই তিরোহিত হইবে। এই কলিযুগে মধ্যবিত্তের জীবনটি মধ্যযুগীয় ক্রীতদাসদের জীবন সদৃশ অনুমিত হইল। এই উদরে অন্নে (পেটে ভাতে) চালিত মনুষ্যের মনে সন্তোষ জাগরণ ঘটাইবার অর্থ কোথা হইতে আসিবেক ? সৃষ্টিশীলতাহীন, বিনোদনহীন, আনন্দহীন টানাপোড়েনের মধ্যবিত্তের এই জীবনকে ধিক্কার জানাই। </p>
<br /><p>কয়েক কিসিমে’র বস্তা এবং গৃহিণী কর্তৃক নির্ধারিত এবং প্রদেয় অর্থ লইয়া বাজারে গমন করিলাম। মুদির দোকানীকে শৈশবের ধারাপাত পঠনের মতোন ফর্দ দেখিয়া সুরে সুরে পণ্যসামগ্রীর নাম সমূহ জ্ঞাত করিলাম। মুদিও অনুরূপ ফর্দ তৈরী করিয়া আমাকে অর্থের অঙ্ক জ্ঞাত করিলে বিগত মাসের তুলনায় বর্তমান মূল্যের অঙ্কে বিস্তর ব্যবধান লক্ষ্য করিয়া উচ্চস্বরে উষ্মা প্রকাশ করিলে মুদি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ফিরিস্তি শুনাইতে লাগিলঃ<br />মহামারীর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারে সবকিছুর মূল্য ঊর্ধমুখী, জ্বালানীর মূল্য তথা পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, পণ্য পরিবহনে রাজনৈতিক দলীয় লোকজন, বিভিন্ন সমিতি এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী দ্বারা চাঁদাবাজি, মধ্যস্বত্বভোগীদিগের দৌরাত্ম, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সরকারী পণ্যকর অটুট রাখা, মজুদদার ব্যবসায়ী সিণ্ডিকেটের সহিত রক্ষকদের সখ্যতা, সড়কের বেহাল অবস্থা প্রভৃতি কারণে পণ্যমূল্যের দিনদিন উর্ধগতি ঘটিতেছে জানাইল মুদি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেঝেতে মুদির পদযুগল স্পর্শ না করিলেও উহার দ্রব্যমূল্যে সার্বিক নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণের ধরণ শুনিয়া আমি মন্ত্রমুগ্ধ শ্রোতা হইয়া অস্ফুট স্বরে বলিলাম ---- উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে। </p>
<br /><p>বাজারে আসিবার প্রাক্কালে গৃহিণী আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করিলেক, একটি বৃহদাকার ইলিশের অমৃতরূপ স্বাদ এবং সামুদ্রিক লাক্ষা মৎস্য ভক্ষণ করিবার তাহার বাসনা উদয় হইয়াছে। </p>
<br /><p>দ্রব্যমূল্যের দৈত্য-দেহ সদৃশ স্ফীতির কারণে বাজারে আনীত প্রায় সমূদয় অর্থ এখনই মুদিকে প্রদান করিতে হইবেক। গৃহিণীর কথিত প্রেমপত্রের উল্লেখিত দ্রব্যাদি কর্তন করিয়া আপন গৃহকে কুরুক্ষেত্র পরিণত করিবার দুঃসাহস আমি অবদমিত করিয়া মৎস্য ক্রয় করিবার আকাঙ্খা পরিত্যাগ করিলাম। ভাবিলাম, গৃহদেবী রুষ্ট হইলে পুনরায় বাজারে ফিরিয়া সেই উপাদেয় মৎস্য ক্রয় করিয়া তাহার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিব। </p>
<br /><p>মুদির দোকান হইতে সাধারণ মধ্যবিত্তের বাহন রিকশা করিয়া গৃহ অভিমুখে রওনা হইলাম। নগরীর রাজপথের দুইধারে সুউচ্চ অট্টালিকারাশি, রাজপথের পাশে ও মধ্যে মনুষ্য ও যান্ত্রিক যানে পরিপূর্ণ। তবু আমার মনে হইলেক, আমি মহাসমুদ্রে ভাসিতেছি আর ডুবিয়া ডুবিয়া লোনাজল গলাধঃকরণ করিতেছি ---- কোন কূল কিনারা নাহি। হাজারো দুঃখের মধ্যেও যেমন মানুষ্য নিজের জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হইয়া হাসিয়া উঠে, আমিও তদ্রূপ গাহিয়া উঠিলাম, আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে, অকুল দরিয়ার মাঝে কূল নাই রে........।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/visbrikhsmo/বিষবৃক্ষ 2021-10-28T03:13:12-04:002023-06-26T10:36:20-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বৃটিশ হটাতে শত বছরের বেশি সময় ধরে কতো ত্যাগ, কত রক্ত ঝরেছে। কতো সম্ভাবনার তরুণেরা যশ খ্যাতি প্রতিপত্তির আকাঙ্খা ছেড়ে উৎসর্গ করেছেন নিজেকে দেশের স্বাধীনতার জন্যে। </p>
<br /><p>মাতৃভাষা রক্ষার  জন্যে বায়ান্নএ ঝাঁক ঝাঁক বুলেটে প্রাণ দিলো তরুণেরা অকাতরে। স্বাধীনতা লাভের জন্য বোনের সম্ভ্রম গেলো, লক্ষ লক্ষ প্রাণ ঝরলো, ঘরবাড়ি পুড়ে খাক হলো, উদ্বাস্তু হয়ে গেলো কোটি জনতা। স্বাধীনতা সংগ্রামের দুঃসহ অবস্থায় মুক্তিকামী সহযোদ্ধাদের আর মানুষের ছিলনা কোন শ্রেণী, ছিলনা কোন সাম্প্রদায়িক পরিচয়। </p>
<br /><p>স্বাধীনতার উত্তরকালে ক্ষমতালিপ্সু, মদ্যপ, নারীলিপ্সুক লম্পট শাসকদের অনৈতিক চরিত্রের কালিমা আড়াল করতে ধর্মকে ব্যবহার করছে তাদের সুরক্ষার ঢাল রূপে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের অদূরদর্শীতার জন্য, নৈতিকতার সংকটের কারণে তারা আমলাতান্ত্রিক এবং বণিক শ্রেণীর অনৈতিক অন্যায় আবদার গ্রহণ করছে বারবার। গর্বিত অকুতোভয় পূর্বসূরিদের দোদুল্যমান চরিত্রের অযোগ্য উত্তরসূরীরা রাষ্ট্রীয়ভাবে ও সামাজিকভাবে সাম্প্রদায়িক নিশানা, সীমাচিহ্ন চুরমার করে দিতে পারেনি নিজেদের ক্ষমতাকে দৃঢ় করার অভিলাষে। </p>
<br /><p>তাই আজ বৃটিশদের বুনে যাওয়া বিভাজনের সাম্প্রদায়িক বীজ বিশাল বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। স্বাধীন রাষ্ট্রযন্ত্র এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব মদ্যপ ও লম্পটের মতো নতজানু হয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে খেলছে সেই আদিম বিষবিষ খেলা, নিজেদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির জন্যে। দেশ চলছে প্রগতির বিপরীতে বিদিশার অন্ধকার অচলায়তের সমীপে। </p>
<br /><p>ধিক্ !  ধিক্ !!  ধিক্ !!!</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/rukhe-dao-dabanol/রুখে দাও দাবানল 2021-10-23T10:28:16-04:002023-06-26T10:36:10-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>জ্বলছে আগুন নিরবধি মন্দির মসজিদে<br />জ্বলছে দাবানল যুগযুগ মনের অতলে,<br />পোহায় প্রহর, পোহায় যৌবন জীবন অন্তঃদাহে,<br />ঝরে পড়ে সময়ের শিশির নিঃশব্দে অগোচরে <br />আকাশে নেই ঔজ্জ্বল্য, সমুদ্রেও নেই বিশালতা,<br />পয়গম্বর, অবতার পাথুরে পৃথিবীর জঠর ছিঁড়ে<br />ভূমিষ্ট করালো কাঙ্ক্ষিত  মৃন্ময়ী পৃথিবী,<br />মানুষ নিলোনা প্রেমের অমিয় ফসল তার <br />কুড়ালো কদর্য বিষাক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক ফসিল সব<br />কণ্ঠে মাদুলি বানিয়ে ফিরে যায় প্রেতের নগরে, <br />ব্যবচ্ছেদ করে মানবতার নাড়িভুড়ি হাড়গোড়, <br />নামাবলি গায়ে উড়ায় বিষবাষ্প আদিম উল্লসে। </p>
<br /><p>রাবণের চিতার স্ফুলিঙ্গ ছড়ায় আঙ্গিনায় <br />বৈতালী বাতাসে দানবীয় লেলিহান শিখা<br />ছড়িয়ে যায় সীমাচিহ্ন ছিঁড়ে পৃথিবীর বিস্তারে।<br />মহাসিন্ধুর অপর তীরে বইছে আলোর মিছিল, <br />রুখে দাও দাবনল অন্তরে ভুলে কৃষ্ণ উপাখ্যান<br />যেতে হবে অনাগত আগামী'র সুখে সুপ্রভাত প্রহরে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nodi-o-bhalobasha/নদী ও ভালোবাসা 2021-10-17T13:55:11-04:002023-06-26T10:36:05-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ছুটছে ! ছুটছে বহতা নদী নিরবধি,<br />ঘুরছে ! ঘুরছে ভালোবাসা মৃত্যু অবধি। <br />কেউ বলে, ভাঙে নদী রুদ্র অভিমানে, <br />ভালোবাসাও ভাঙে ভঙ্গুর কাঁচের মতোন।<br />সৃষ্টির তনুময় নদী আর অতনু ভালোবাসা <br />ধর্ষিতা কলঙ্কিতা করে রূঢ় মাংসাশী মানুষ<br />-- ক্ষীণ হতশ্রী হয় দানময় অঞ্জলির কোমল নদী,<br />হায়নার আঁচড়ে ক্ষত জাগে নিটোল ভালোবাসায়,<br />নীলাভ বিষবাষ্পে ছেয়ে যায় মনের এপাশ ওপাশ <br />---অনিবার্য বৈপরীত্যে নদী ও ভালোবাসা হারায় ছন্দিত চলন, পৃথিবীর স্পর্ধিত অপরূপ সৌকুমার্য্য<br />ম্রিয়মাণ, নতজানু হয়ে যায় কদর্য গ্লানিতে। </p>
<br /><p>নদী নিভৃতে বয়ে যায় বিশালের একাগ্র অভিসারে,<br />মুছে নেয় পৃথিবীর তাবৎ পঙ্কিলতা বুকের অলিন্দে, <br />অতৃপ্ত  বুভুক্ষুকের জন্যে সাজায় ফসল সম্ভার,<br />বহে অবিরাম দ্বিরুক্তিহীন সহিষ্ণু নারীর লাহান, নদী। </p>
<br /><p>ভালোবাসাও দিনে দিনে অগোচরে বসতি গড়ে,<br />ঘুচায় ক্লেদাক্ত কৃষ্ণতা -- মর্মর মানুষ হয় মৃন্ময় মানুষ, <br />আকাশের বিরাটত্ব, সমুদ্রের ঔদার্যে ঋদ্ধ  ভালোবাসা <br />নৈকট্য জুড়ে দেয় দেখা অদেখা মানুষে মানুষে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/ami-kobi-hote-asini/আমি কবি হতে আসিনি 2021-09-30T01:48:06-04:002023-06-26T10:35:33-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আমি ভূমিপুত্র! <br />কল্পলোকের বাসিন্দা স্বর্গের সুষমায় ঋদ্ধ হয়ে ভূমিষ্ঠ হইনি আমি রূঢ বাস্তবতার মৃন্ময়ী পৃথিবীতে, <br />ছন্দময় ব্যাকরণের নাড়িনক্ষত্র হিসাব কষতে কষতে<br />অনিয়মের নিয়মগুলো আড়ালে আবডালে লুকিয়ে রাখিনা আমার অপাংক্তেয় কবিতায়,<br />নির্ঝরের মতো অকৃপণ কলকল রবে সোজাসাপটা <br />গেয়ে চলি বিরুদ্ধ পাথরের আঘাতের মর্মর  ধ্বনি,<br />যাকিছু সত্য শাশ্বত নিভুনিভু জ্বলে বৈপরীত্যে, <br />অন্যায় অবিচার ছুঁয়ে যায় অলিন্দ হেমলকের মতো পিঙ্গল বিষে <br />---- ছন্দহীন ভাষায় এই দহন-তাপ আমার ছড়িয়ে দেবো পৃথিবীর বিষাক্ত বাতাসে। </p>
<br /><p>আমি নিয়ন আলোর ঔজ্জ্বল্যে রাজপোষাকে সজ্জিত নট নই! <br />নগরবধূর চাকচিক্যের আস্তরণে প্রলুব্ধ করবোনা কারো সাবলীল সত্তাকে,<br />নেবোনা তোমায় গল্পকথার সুরম্য কাহিনীর দেশে আজগুবি চিন্তার মসৃণ সংলাপে,<br />মহাদ্রোহীর নতজানু সেবাদাস হয়ে নির্জলা <br />সত্য-বয়ান শোনাবো তোমায় আমার কবিতায়। </p>
<br /><p>ভেদবুদ্ধির নিন্দিত জিঘংসায় ঝরছে অঢেল প্রাণ,<br />জ্বলেছে বসতি একই নদীর স্তনে বেড়ে ওঠা স্বজনের,<br />ভেঙেছে বিশ্বাসের প্রতিমা, ভেঙেছে মসজিদ মন্দির প্যাগোডা,<br />উঠেছে অতনু প্রাচীর মানুষে মানুষে, স্বজনে স্বজনে<br />--- নৈকট্যের মানবতা বিদীর্ণ হয়েছে ধর্মের নামাবলি পরা সুকন্ঠী বণিকের কূটচালে।<br />সময়ের মেঘকন্যা উড়ে যায় বারংবার নিরুদ্দেশের দেশে, <br />ফিরিয়ে দেয়না সময় চৈতন্যময় মন ইতিহাসের হৃদয় হতে।<br />সমুদ্র ও পাহাড়ের ওপারে চলছে আলোর মিছিল,<br />হাজারো বছর পিছায় তবু প্রগতির রথচক্র প্রিয় বাসভূমে <br />--- এই অবরুদ্ধ অচলায়তে আমি কবি হয়ে উঠতে পারিনা ছন্দবদ্ধ পঙক্তির অলংকরণে,<br />অপাঠ্য অশ্রাব্য রূঢ় উচ্চারণে জাগতে চাই বীর কুম্ভকর্ণকে<br />--- তোলবো মহাপ্রলয় মহাঘূর্ণী অসুন্দরের কৃষ্ণকায় প্রতাপে,<br />জাগুক নবীন কিশলয় হাজার বছর ধরে বিঘ্নিত বাংলায়, <br />অতনু অনবদ্য বাঁধনে ঋদ্ধ হোক তামাটে মানুষ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/okothito-kotha/অকথিত কথা 2021-07-31T13:32:13-04:002023-06-26T10:36:07-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>স্বপ্নরা আমার শুধুই উড়াল দিতো চৈতালী ঘূর্ণির মতো আলোময় সাতসমুদ্রের ওপারে <br />--- হাজার বছর ধরে বয়ে চলা বৃদ্ধ অন্ধকার <br />এক চিলতে রঙিন আলোয় যদি রাঙানো যেতো! <br />লাজুক নিশীথচারী চাঁদও আমায় ডাকতো<br />ছায়ালোকের বিস্তীর্ণ আলোর অভিসারে, <br />ইচ্ছে হতো ব্রহ্মাণ্ডের বিশাল ঔদার্য এনে ছড়াই আত্মকেন্দ্রীক মানুষের মনে মনে, <br />বটের তলার আড্ডার পাশ কেটে মহুয়া যখন যেতো শেষ বিকেলে সান্ধ্য আরতিতে<br />তখন তার রজনীগন্ধার মতো স্নিগ্ধতায়<br />স্নাত হয়ে যেতাম শুদ্ধতার ঝর ঝর নির্ঝরে,<br />ইচ্ছে হতো সবুজের নিভৃতে হারিয়ে যাই<br />জীবনের অলিগলি বেয়ে দু'জন অনিবার্য অস্তাচলে।</p>
<br /><p>একদিন মায়ের গর্ভতন্তু ছিন্ন করার মতো উড্ডীন চিলের মতো ছুটে যাই দূরে আলোভুক তারুণ্যে স্বপ্নময় রূপকথার রাজপুরে,<br />রাজকুমারীর নূপুর নিক্কন, গোলাবি ঠোঁটে পরিমিত বাঁকা হাসি, কাঁচের কৌটোয় পোষা কৃত্রিম সুগন্ধ বিলাসে তার আমি হয়ে যাই বিমুগ্ধ ক্রীতদাস, <br />আমি বিজয়লিপ্সু সাঁতারুর মতো সমর্পিত হয়ে যাই স্ফটিক স্বচ্ছ জলকেলিতে,<br />আমি হারিয়ে ফেলি মস্তিষ্কের লক্ষকোটি নিউরন থেকে চাঁদ আর মহুয়ার অনাবিল লাবণ্য।</p>
<br /><p>ছায়ার মতো শেষবিকেলে দীর্ঘ হয় বোধ<br />---কি লাভ বৈভব, খ্যাতি, বিদ্যা, দাম্ভিক দর্পে আর রাজকুমারীর হীরক খচিত মুকুট দেখে! <br />পাহাড় শীর্ষে দাঁড়িয়ে দেখি এখন সবই তুচ্ছ, সবই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র স্বার্থান্ধ নরকের নগণ্য কীট! <br />আমাকে বিপন্ন রাতে দু'দণ্ড শান্তি দিয়েছিল ঐ রূপোলী চাঁদ, <br />মন্দাকিনীর তীরের দেবীর মতো নিষ্কলুষ মহুয়া <br />অবারিত সৌম্য যার হারিয়ে দিতো কুহক প্রমত্ততা, জীবনের লোলুপ লেনদেন, বৈপরীত্য, <br />উঁকি দিতো সরল জীবনে নির্লোভ মনুষ্যত্ব।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nastic-basona/নাস্তিক বাসনা2021-07-25T10:38:11-04:002023-06-26T10:36:01-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>শৈশবে টোলে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে পড়া<br />বাল্যশিক্ষা'র পঙক্তিগুলো মজ্জাগত করে দিলো গুরু, <br />এখন মিলেনা তার ছিটেফোঁটও অনিয়মের নিয়মে হাঁটা কুহক বন্ধ্যা পৃথিবীর এইসব দিনরাত্রিতে,<br />বোধহয় ঈশ্বরের এখন নিশ্চিন্ত নাকডাকা ঘুমের শতবছরের নিদ্রাপক্ষ,<br />আমার ইচ্ছে করে কূট শরে ফুটো করে দিই <br />তার সৃষ্টির নামে কলঙ্কিত সব অনাসৃষ্টি <br />---- গুরুর সত্যবান ঈশ্বর যদি আচমকা জেগে উঠে, পাছে কিছু বলে ! <br />এভাবে ভাবতে ভাবতে পোহায় যৌবন, হলদে সকালের আকাশ বেয়ে নামে পিঙ্গল বিবর্ণ বিকেল, <br />আমার সাজানো বাগানের টসটসে ফল চুষে আগ্রাসী দাঁতাল বানর<br />আর হাজারো কষ্টের বৈতরণী বেয়ে তুমি চলে গেলে, গুরু, ঐ মহাসিন্ধুর ওপারে তোমার প্রিয় নিদ্রিত ঈশ্বরের কাছে।</p>
<br /><p>ইচ্ছে জাগে নিবিষ্ট নিমগ্ন আরতির ঘোলাটে ধোঁয়ায় ডুবে থাকা পূজারীর জীর্ণ শীর্ণ ঘরদোর দুমড়ে মুচড়ে গড়ে তুলি অট্টালিকা,<br />বাসনা জাগে অভাবে অনটনে শঠের প্রলোভনে হয়ে উঠা নগরবধু হয়ে যাক নগরীর মুক্ত কর্মমুখর নারী,<br />ইচ্ছে করে কিশোরীর সখের ভঙ্গুর কাঁচের চুড়ির মতো চুরমার করে দিই তাবৎ প্রেতের সুরম্য বসতি <br />--- গড়ে তুলি নতুন দিনের পূতপবিত্র মানুষের সৌকর্য সম্ভার, <br />বাসনা জাগে গামারশ্মির তীব্র দহনে পুড়ে খাক হয়ে যাক মিথ্যা, লুকোচুরি, শোষণের নিয়ন ঔজ্জ্বল্যের প্রাসাদবাসী<br />--- তারপরে ভোরের বিহঙ্গের মতো নিষ্পাপ জনারণ্যে সয়লাব হয়ে যাক শুদ্ধাচারী পৃথিবী।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/fera/ফেরা2021-06-27T02:37:06-04:002023-06-26T10:35:49-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>শেষ বিকেলের ফিকে হলদে আলোয় মনে উথাল পাথাল ঢেউ দোলে<br />--- তাবৎ মোহ, দ্বন্দ্ব, লুকোচুরি, দাম্ভিক শৃঙ্খল ছিঁড়ে ছুটে যাই <br />শৈশবের ধুলাময় গায়ে বাঁধনহীন উচ্ছলতায়,<br />বিলের শাপলার বন বেয়ে উদোম তনুতে<br />নদীর জলকেলিতে পোহাতে প্রসন্ন বেলা,<br />পাঠশালায় ধারাপাতের সুরেলা ছন্দে মাথা দুলিয়ে হারিয়ে যেতে,<br />সতীর্থের হাতে হাত রেখে কৃষ্ণাচূড়ার আরক্ত মাদুরে বসে <br />দিলখোলা অনর্গল কথার ফুলঝুরিতে মগ্ন হতে,<br />বরষার বর্ষণে প্রাঞ্জল তারুণ্যের কর্দমাক্ত খেলায়,<br />মায়ের চুলের আঘ্রাণ শুঁকে শুঁকে <br />চন্দ্রালোকিত মায়াবী কাহিনীর দেশে যেতে চাই, <br />বোনের পুতুল, ভাইয়ের লাটিম লাটাই, বালির নশ্বর ইমারত, দিগন্ত ছোঁয়া মাঠ---<br />আমি সব ফিরে পেতে চাই অনন্ত আরাধ্য<br />সুখের স্বর্গের মতোন,<br />নদী ভাঙ্গানে মানুষের বুকভাঙা কান্নার অশ্রু মুছে দিতে, <br />বানভাসি মানুষ গলাজল ভেঙে পোষা পশু মাথায়<br />বয়ে নিয়ে যাওয়ার অনাবিল মমত্ব দেখতে <br />আমি ফিরতে চাই আমার হারানো একবুক ভালোবাসার সাম্রাজ্যে, <br />পাতার বাঁশির মোহিত সুরের পিছে পিছে হেমিলনের শিশুর মতোন ছুটতে চাই প্রাণান্ত, <br />ফিরে যেতে চাই বিভ্রান্ত যৌবনে কুহক নিয়ন আলোর অভিসারে যেতে, ফেলে আসা অবারিত জোছনায় আকীর্ণ শেকড়ে, চির শান্তির প্রিয় বাসভূমে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/shringkhol/শৃঙ্খল 2021-06-07T14:24:36-04:002023-06-26T19:22:56-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আমি উড়ুক্কু মেঘের মতো পারিনা যেতে <br />প্রকাণ্ড হৃদয়ের পর্বত অভিসারে, <br />বৃষ্টির মতো ছড়াতে পারিনা ঔদার্য মাঠে মাঠে <br />ফসলের প্লাবন ডেকে আনতে, <br />আমি পাখির মতোন অন্তরের গহীন হতে তুলতে পারিনা অকপট সুর ঝংকার, <br />আমি নদীর মতো সব সহে সহে বুকে নিতে পারিনা<br />স্বার্থপর পৃথিবীর মনের ক্লেদাক্ত জঞ্জাল, <br />আকাশের বিশালতায় ভাসতে পারিনা নিরন্তর<br />মুক্ত বিহঙ্গের মতো নরম কোমল ডানায় ডানায়,<br />আমি সমুদ্রের মতো অতলান্ত গভীরতায় নৈকট্যে আনতে পারিনা প্রিয় আর অপ্রিয়কে,<br />বনানীর মতোন ঝিরিঝিরি শীতলতা ছড়াতে পারিনা <br />ক্ষুব্ধ জিঘাংসায় উন্মত্ত তপ্ত পৃথিবীর বিস্তারে।</p>
<br /><p>পরিযায়ী পাখির মতোন ঝাঁক বেঁধে ছুটছি <br />পৃথিবীর এপাশ ওপাশ ছন্দময় কল্পিত সুখের জন্য <br />-- লুকোচুরি ছদ্মবেশ লোভ দম্ভ দ্বেষ সৃজিত দুর্লঙ্ঘ শৃঙ্খলে বন্দী বিক্ষত সুখ তবু নাহি ফিরে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/abar-dekhs-hobe/আবার দেখা হবে 2021-04-23T01:47:36-04:002023-06-26T10:35:31-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>পৃথিবীর এই বিষণ্ণ অমানিশার দুর্বিষহ সময়ের তন্তুজাল ছিন্নভিন্ন করে আমি দাঁড়াবো ঝলমলে উঠোনে সকালের সোনাঝরা বর্ণিল রোদে। <br />আমি আসবো ফিরে তোমাদের একাগ্র নিমগ্ন ভালোবাসার প্রতিশ্রুতির জন্য। <br />অবরুদ্ধ দণ্ডিত বন্দীর প্রাচীরের মতো কঠোর শৃঙ্খল ছিঁড়ে আমাকে ফিরতেই হবে শিশিরে শিশিরে ভেজা নরম কঁচি ঘাসের পথ বেয়ে, চেনা অচেনা ফুলের মৌ মৌ সুরভিত মায়াবী বাতাসের আঁচল ছুঁয়ে ছুঁয়ে পাখিদের গীতের আসরে। <br />মৃত্যুর মিছিল ঠেলে, অতিমারীর কষ্টের পাথুরে রাজপথ বেয়ে আমি আবার ছুঁতে চাই উচ্ছ্বসিত বন্ধুর ব্যাকুল হৃদয়ের কার্ণিশ।<br />ভরা জোছনায় লুকোচুরি খেলায় শিশুদের উচ্ছ্বসিত আনন্দে আমি আবার বিমোহিত হয়ে যেতে চাই।<br />সরিষার হলুদ মাঠের প্রান্তে যেখানে ছুঁয়েছে আকাশের নীল,<br />মৌ আর প্রজাপতির মিলন মেলায় আমি অনর্গল কাব্যিক পঙক্তিমালা ছড়িয়ে দেবো সুবাসিত বাতাসে।</p>
<br /><p>মান অভিমান, দ্বিধা দ্বন্দ্ব, লুকোচুরি, ছদ্মবেশ মুছে পৃথিবীর এই কদর্য কৃষ্ণকায় মৃত্যু-ঝড়ের ঘূর্ণিতে কণ্টকাকীর্ণ সীমাচিহ্ন, দুর্ভেদ্য দেওয়াল আর মনের ভেতর জমানো সাইবেরিয়ান বরফের মতো হিংসা দ্বেষ স্বার্থ গলে এই একই আকাশ হোক আমাদের মিলনের সামিয়ানা।</p>
<br /><p>আবার দেখা হবে।<br />দুঃস্বপ্নের রাতে আকীর্ণ আমাদের এই বেদনাবিধুর সবুজ প্রাণের গ্রহে জাগবে আবার প্রাণের কোলাহল, বিঘ্নহীন সুন্দর সকালে বলবে হেসে নতুন সূর্য, সুপ্রভাত!</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bhumiputra/ভূমিপুত্র 2021-03-03T00:50:33-05:002023-06-26T10:35:38-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আমি অকস্মাৎ আসমান ছিঁড়ে দেবপুত্র সাজে <br />ইনকিউবেটরের নিয়ন্ত্রিত তাপে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাইনি,<br />কুলকাঠের প্রলম্বিত তাপে আমাকে সুরক্ষিত করেছিল জননী পরম ভালোবাসায়, <br />স্নেহময় নির্ঘুম নিমগ্নতায় কাটালো বেদনাক্লিষ্ট প্রহর তার, শুধু আমার জন্যে<br />---- চাতুর্যহীন ভালোবাসা আমার জন্মজাত অনুষঙ্গ, <br />ছেঁড়া পালে জীবনের উত্তাল বৈতরণী পাড়ি দিতে শিখেছি আমি জন্মাবধি, <br />কবেকার উড়াল স্বপ্নগুলো লালন করতে করতে<br />পাথর মানবের মতো নির্বাক হয়ে ছুটছি কাকভোর হতে পৃথিবীর পথে পথে,<br />ক্ষুধাকে করেছি জয় নিমগ্ন তপস্বীর মতো<br />দুদণ্ড শান্তির জন্য মায়ামৃগ সুখের তন্নতন্ন খোঁজে।</p>
<br /><p>ঘোর অমানিশার বিদিশার অন্ধকারে আমি শঙ্কিত নই,<br />ঘর্মাক্ত শরীরের দৃঢ় পেশির প্রাবল্যে আমি মাটি থেকে <br />তুলে আনতে পারি ফসলের প্লাবন,<br />ইটের পাঁজরে গড়তে পারি দিগন্তস্পর্ষী সুউচ্চ সৌকর্যময় নগরী,<br />দুর্বিনীত প্রহরের প্রচণ্ড বন্যা ঝড় ঘূর্ণিপাক আমি পদানত করি,<br />শঙ্কার মহামারী ব্যাধির করোটি চুরমার করে<br />শিল্পের চাকার নিরন্তর ঘূর্ণনে আমি এনে দিতে পারি <br />তোমাদের আকাশ ছোঁয়া সাফল্যের রাজমুকুট।</p>
<br /><p>অনুকম্পা অবিচার অন্যায় দহে আমায় রাবনের চিতার মতো আমৃত্যু,<br />আমার উড্ডীন আকাঙ্ক্ষার স্বপ্নের পালকগুলো তবুও<br />ক্রমাগত ঝরে যায় শক্তিমান বৈরী ঝড়ে, <br />রূপকথার রাক্ষসের মতো গ্রাস করে আমার নন্দিত সব অর্জন,<br />আমার ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ মূক পাষাণ সমাজে জমে জমে<br />প্রত্নতাত্ত্বিক ফসিল হয়ে উঠেছে পৃথিবীর বিস্তারে, <br />দোর্দণ্ড প্রতাপশালী শোষণের সাম্রাজ্যের পৃথিবীতে<br />কেউ কাছে নেই --- আসতেও চায় না কেউ অলীক অজুহাতে, <br />কর্মের বিন্দু বিন্দু ঘর্মাশ্রু আমার নিশিত শিশিরের মতোন<br />ঝরে যায় অগোচরে অনাদরে অবহেলায়,<br />কারো হৃদয়ের অলিন্দে বাজেনা করুণার অনিন্দ্য ঝংকার ,<br />বর্ণিল হৃদয়হীন পাথর মানুষ ভ্রুক্ষেপহীন কৃতঘ্ন আত্মকেন্দ্রীক, <br />তোমরা উড়াও নিশান কুহক সাম্যের প্রগতির ভালোবাসার,<br />আমার দুর্বিপাকে কোনদিন চলেনি জ্বলন্ত মোমের মিছিল, <br />প্রকম্পিত হয়না রাজপথ বৈষম্যের নিগড় ছেঁড়ার দাবির স্লোগানে স্লোগানে। </p>
<br /><p>দুর্বিনীত বিপদে রক্ষা করো, দুঃখের প্রহরে <br />ব্যথিত চিত্তে সান্তনার পরশ ঢালো <br />----- এই কাপুরুষোচিত নতজানু প্রত্যাশা স্পর্শ করেনা আমায়,<br />অন্ধরাতের অশ্বারোহীর মতো আমি গৌরব দীপ্ত <br />তীব্রতায় সমর্পিত হতে চাই আমৃত্যুকাল,<br />আমি ভূমিপুত্র, আাসিব বারংবার পৃথিবীতে সাজাতে সৌকর্য সম্ভার, চির ঋণী করে তোমাদের।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nastik-songlap/নাস্তিক সংলাপ 2021-02-19T07:58:31-05:002023-06-26T10:36:03-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>এমন যদি হতো, হে ঈশ্বর ! <br />কর্মীর নিষ্কলুষ পবিত্র ঘর্মাশ্রু, <br />হীরকের অনাবিল ঔজ্জ্বল্যের মতো<br />শোষকের মনের গভীরে এক চিলতে করুণাময় দীপ্ত আলোক ছড়াতো ----<br />আমি তোমার নতজানু সেবাদাস হয়ে আমৃত্যু পোহাতাম জীবনের তাবৎ প্রহর।</p>
<br /><p>এমন যদি হতো, তোমার যাদুকরী লীলায়<br />জিঘাংসার উড়নচণ্ডী যুদ্ধ থেমে গিয়ে<br />নিষ্প্রভ হাসির শিশু আর অকাল বৈধব্যের তরুণীর অশ্রুপাত; গঙ্গা মিসিসিপি ইউফ্রেটিসে রক্তের প্লাবন থেমে যেতো -----<br />আমি তোমার নাম জপে জপে আঙুলি চালাতাম জপমালায় অহরাতদিন। </p>
<br /><p>এমন যদি হতো, তোমার অভিশাপে বোবা হয়ে যেতো<br />গেরুয়া নামাবলির আড়ালে আবডালে লুকে থাকা ঠকবাজ পবিত্র শয়তানের সুরেলা কন্ঠ,<br />হেমিলনের বাঁশিওয়ালার মতো ভণ্ড নেতার সুমধুর সুরে বিমোহিত হতোনা তরুণদল ----<br />আমি ভক্তির নৈবেদ্য সাজিয়ে নিমগ্ন আরতিতে মসগুল হয়ে যেতাম জন্মজন্মান্তর। </p>
<br /><p>এমন যদি হতো, হে ঈশ্বর ! <br />নিষ্পাপ তরুণীর দেহখানি ব্যাবচ্ছেদ করতোনা হায়নার পাল, মানুষের ন্যায্যতা ছিন্নভিন্ন হতোনা বুভুক্ষু রাক্ষসের আগ্রাসনে,<br />ভালোবাসার নান্দনিক নির্ঝরে স্নাত হতো জনারণ্য----<br />আমি তোমার নতজানু সেবাদাস হয়ে আমৃত্যু পোহাতাম জীবনের তাবৎ প্রহর।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nari-o-nadi/নদী ও নারী 2021-02-05T07:18:11-05:002023-06-26T10:36:01-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বহতা জীবন রূপ নদী বয়ে যায়<br />ভাদরের স্বচ্ছ তরঙ্গায়িত ধারায়, <br />শীতের ম্রিয়মাণ শ্লথ নিস্তব্ধতায়,<br />বরষার উচ্ছল উচ্ছ্বসিত কলেবরে<br />বয়ে নিয়ে সংসারের তাবৎ জঞ্জাল। <br />নারীও নদীর মতোন আজন্মকাল নিয়মের শৃঙ্খলে বহে যায় বেদনার টলমল জল বুকে,<br />সারল্যের সৌরভে চারদিক আতরের মোহমত্ততায়।<br />পুরুষ পাখির মতো ডানা ঝাপটিয়ে নীড় ছেড়ে, মলিনতা ঝেড়ে ফেলে<br />সুনির্মল নীল নীলিমার অসীম পবিত্রতায়<br />নদী ও নারী উড়তে পারেনা কোনদিন।<br />স্বরূপ হারিয়ে মেঘের মতো ছুটে যেতে পারেনা <br />হিলালয় থেকে আল্পস পর্বতমালার হৃদয়ের অলিন্দে। <br />এপাশ-ওপাশ স্বস্তির ঝিরিঝিরি বাতাস ঢেলে<br />ফসলের পূর্ণতার স্নিগ্ধ পোট্রের্ট এঁকে <br />অনন্ত মহাসিন্ধুে মিলায় নারী ও নদী <br />একাগ্র তপস্বীর মতো অনন্তকাল।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/jibon/জীবন 2021-01-29T04:26:00-05:002023-06-26T10:35:51-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>জীবন রঙ বদলায়, <br />দুটো মুহূর্ত এক নয় জীবনের, <br />পরিবর্তনের খোলস পাল্টায় বারংবার,<br />জীবনে আসে বসন্তের ফুলেল রঙিন পোট্রের্ট, আসে শীতের বিবর্ণতা রিক্ততা, <br />আসে অশ্রুসিক্ত বিরহী বরষা,<br />তবু বহে চলে জীবন পাওয়া না-পাওয়ার <br />আনন্দ বেদনার দোলাচালে, <br />আশার স্বপ্নের জাল বুনে বুনে,<br />মিলায় অনন্ত অসীমতায়<br />মৃত্যু জরাহীন ঐ মহাসিন্ধুর ওপারে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/mrityupureer-khandachitra/মৃত্যুপুরীর খণ্ডচিত্র2021-01-09T00:41:08-05:002023-06-26T10:36:00-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>একে একে যায় অলিন্দের স্বজনেরা<br />--- দূরে চলে যায়, বহুদূরে অচিন নিরুদ্দেশে, <br />মানুষের আজন্ম লালিত মুখোশও খসে পড়ে <br />করোনাকালের নিরেট বাস্তবতার আঁচড়ে, <br />ফ্লোরেন্সের মৃন্ময় কোমল ভালোবাসায় কেউ জ্বালায় আলোময় সেঁজুতি মানবতার অনন্ত অমানিশায়,<br />কবি রচে সময়ের রোদ আর আঁধারের বয়ান, <br />দুর্বিনীত অনটনে অনুশাসন ছিন্ন করে <br />ঢল নামে শ্রমজীবী তামাটে মানুষের, <br />স্বপ্নের চাষ করে অবরুদ্ধ তরুণ সৃষ্টির উল্লাসে, <br />ভেঙে পড়ে মানুষে মানুষে যোজন দীর্ঘ প্রচীর, <br />বিচূর্ণ হয় পুষে রাখা অদম্য কুহক অহমিকা<br />---- যেন অন্য এক নভোমণ্ডের অচেনা নিবাস এই পৃথিবী।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/protyasha/প্রত্যাশা 2020-12-21T01:01:57-05:002023-06-26T10:36:08-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>তরুণ ! তুমি চাইলে পুরোনো প্রোজ্জ্বল ইতিহাসের কৃষ্ণ হরফের হলদে পাতা, <br />শুনতে চাইলে রক্তঝরা দিনগুলোর অসহায়ত্ব আর বীরত্বের গল্লকথা, <br />চাইলে স্বাধীন জন্মভূমির গর্বিত ফসলে তোমার উত্তরাধিকার। </p>
<br /><p>আমি আমার পুরু কাপড়ের সার্টের নীচে <br />বুকের অলিন্দে লাগোয়া হুলিয়ার বিপ্লবীর মতো সংগোপনে রেখেছি আমার বাবার কালো ফ্রেমের চশমা, বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া রক্তমাখা সার্ট,<br />সম্ভ্রম হারানোর অন্তদহনে স্বেচ্ছামৃত বোনের সোনালী নোলক,<br />হত্যা লুন্ঠন ধর্ষণ আর বৈষম্য রোধে সংক্ষুব্ধ যোদ্ধা, মিছিলে মিছিলে রাজপথ কাঁপানো সুন্দর সকালের স্বপ্নচারী <br />দাদার দেওয়া তার ফায়ার করা বুলেটের খোসা, <br />যা দিয়ে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিলো হানাদার ও দোসরের বুকের পাঁজর<br />আর তার বীরত্বের গৌরবগাথার ঝকঝকে ধাতব স্মারক। <br />আমি অমূল্য গুপ্তধনের মতো লালন করেছি এসব<br />হাজারো বিরুদ্ধ বাতাসে <br />--একদিন গর্বিত বুকের ফুসফুস ফুলিয়ে তোমাকে দেখাবো বলে।</p>
<br /><p>তোমায় আরো দেখাতে পারি<br />আমার ছেঁড়া সুইটকেসে ফাইলবন্দী খণ্ডিত পেপার কাটিংএ আছে,<br />দাদার দর্পিত স্বপ্ন সম্ভার কিরূপে শত্রুর দখলে যাওয়া যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদের দেহে শকুনের ভোজন উৎসবের মতো লণ্ডভণ্ড করে দিল।<br />কামার কুমার কিষাণ জেলে--যারা সহযোদ্ধা হয়ে খাদ্য আশ্রয় আর দিয়েছিলো পথের দিশা---<br />তাদের অনন্ত সংকটের বেদনাহত উপাখ্যান।<br />কালো টাকায় গড়ে ওঠা বৈষম্যের <br />সুউচ্চ ইমারতের সমান্তরালে স্রোতস্বিনী ফারাক-নদী কারা টেনে দিল মানুষে মানুষে, মনে মনে। <br />বিপন্ন নষ্টপ্রহরে হাতে হাত রেখে করা অঙ্গিকার কিভাবে <br />নির্বাসনে দিলো লোভাতুর শেয়ালের পাল।<br />হাজার বছরের বাংলায় দুর্ভাগ্যের শৃঙ্খল ছিঁড়তে আমলার মারপ্যাঁচে উপ্ত করতে নাদেওয়া, নিবিষ্ট গবেষণায় লব্ধ বীজও রেখেছি তোমার জন্যে।</p>
<br /><p>ইদানিংকার নিয়ন আলোর ঔজ্জ্বল্যে এসব তোমার প্রত্যাশার যুতসই উপজীব্য কিনা জানিনা। <br />তুমি চাইলে নিতে পারো আমার এই প্রিয় সংগ্রহ হার্দিক মমতায় বা ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারো পুঁতিগন্ধময় ডাস্টবিনে ঘৃণাভরা তাচ্ছিল্যে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/songlap-pnach/সংলাপ--পাঁচ 2020-12-18T02:52:16-05:002023-06-26T10:36:15-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ঃ লাবণ্য ! </p>
<br /><p>___ বলো, অনন্ত।</p>
<br /><p>ঃ ধরো, হঠাৎ অপ্রতিরোধ্য ঘূর্ণিতে খানখান হয়ে যাওয়া রঙিন প্রজাপতির ডানার মতো আমাদের বুকের অলিন্দে পোষা স্বপ্নগুলো ছিন্নভিন্ন হলো। </p>
<br /><p>___ হঠাৎ ঝড় তুফান উঠবে কেন ? </p>
<br /><p>ঃ তুমি দেখেছ সাধারণ মধ্যবিত্তের মেধা, পরিপাটি বেশ, আত্মমর্যাদাবোধ, নান্দনিক কর্ম আর সুবাসিত কথামালার ইন্দ্রজাল। তুমি দেখনি তাদের অন্তর্দাহ, দেখনি টানাপোড়েনে<br />লোনা অশ্রুতে আদ্র মায়ের আঁচলখানি, বাবার উদাসী দীর্ঘশ্বাস। </p>
<br /><p>___ আমিও দেখেছি নিয়ন আলোর ঔজ্জ্বল্যে দর্পিত জীবনের ঔদ্ধত্য জীবনাচরণ। অতৃপ্ত মনের চির ভিখারির তৃষ্ণার্ত আকাঙ্ক্ষারা দাহ করে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার।মেকি আস্তরণের মুখোশের অড়ালে বিভৎস মানুষেরা অনবদ্য হৃদয়কে ব্যবচ্ছেদে ছিন্নভিন্ন করে ক্ষুরধার কুটিল শস্ত্রে। কিনে নিতে চায় গৌরব গাথা কদর্য কৃষ্ণ মুদ্রায়। প্রেতের মতো আকন্ঠ পান করতে চায় মানুষের তাবৎ সুখ নির্যাস। <br />তুমি কি আমৃত্যু নির্বাসনে রেখে দেবে আমায় সেই শোভিত কারুকার্যময় নরকে ? </p>
<br /><p>ঃ লাবণ্য ! আমরা প্রখর স্রোতস্বিনীর দুই তটের, দুই মেরুর, দুই জীবনধারার বাসিন্দা। আমাদের ভালোবাসতে নেই, স্রোতের প্রচণ্ডতায় হারিয়ে যেতে হয় সমুদ্রের অসীমে। </p>
<br /><p>___ অনন্ত ! আমরা হৃদয়কে করবো প্রসারিত। ছুঁয়ে হাতে হাতা গড়বো নিরেট বিশ্বাসের সেতুবন্ধন। হিংসাদ্বেষ, অহমিকা, শোষণ, অনিয়মের স্রোতে একদিন জাগবে সবুজের দ্বীপ। থরেবিথরে কিশলয়ে ছেয়ে যাবে আমাদের স্বপ্নের দ্বীপখানি, আমরা মুঠোমুঠো আকাশের ঔদার্য বিলাবো জনারণ্যে। এক নন্দিত পৃথিবীর রূপকল্প জেগে উঠবে তোমার আমার বিচিন্তায়।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/songlap-char/সংলাপ--চার2020-12-16T01:46:29-05:002023-06-26T10:36:13-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>পাহাড় শীর্ষে দাঁড়িয়ে দেখছে অনন্ত। নৈসর্গিক অপরূপ রূপ আর মানুষের খণ্ডিত জমি,<br />অসাম্যের উঁচুনিচু নিবাস, নগণ্য ক্ষুদ্র অবয়বে সংকীর্ণ পথে চলছে মানুষ। <br />যেন দূরবীনে দেখা অচেনা দূর কোন পৃথিবী।</p>
<br /><p>শুধালো<br />ঃ হে সমুদ্র ! <br />শান্ত সৌম্য অপার নীলে মুগ্ধতা ছড়াও তুমি, <br />কখনোবা আনন্দে প্রাণচাঞ্চল্যে কোলাহলে উচ্ছল। <br />প্রাণের অবারিত সম্ভার বুকে নিয়ে তাবৎ পৃথিবীর জঞ্জাল সহে নিচ্ছো হাজার বছর ধরে। </p>
<br /><p>ঃ ওহে অরণ্য ! <br />নিটোল সবুজের প্রশান্তির ছায়া আর নাম না জানা বুনো ফুলের আচমকা সুগন্ধ বিলাস তোমার, আমাকে নিয়ে যায় বারংবার কোন কাহিনীর দেশে ----<br />যেখানে নেই ছদ্মবেশ, হিংসাদ্বেষ, নেই জিঘাংসার রূঢ়তা, সীমাচিহ্নে খণ্ডিত আত্মিক বাঁধন, নেই অপমৃত্যু আর লাঞ্ছনার কদর্যতা। </p>
<br /><p>ঃ হে অনন্ত আকাশ ! <br />উন্মুক্ত নীল সামিয়ানার বিশালতায় ওড়াও মুক্তমনের বিহঙ্গ। <br />নিঃসীম ঔদার্য তোমার কেন দাওনা তুমি বিভাজিত, হিপোক্রেট মানুষকে? </p>
<br /><p>সমুদ্র বলে <br />---- খণ্ডিত পৃথিবীর মাঝে আমি মিলনের তরী নিয়ে যাই দেশদেশান্তরে, <br />মেঘমালায় আদ্র করি উষর মৃত্তিকা, আহার্য বিলাই, <br />মুছে নিই মেঘের ধারায় মলিন কদর্যতা অখণ্ড ধরণীর। </p>
<br /><p>অরণ্য বলে <br />---- আমাতে বিলীন হয় জাগতিক তৃষ্ণা, হিংসার অধরা অনল। <br />স্বস্তির মিলন মেলায় পাখি গায় সুমধুর। ঝিঁঝির তানে, শান্তির ছায়ায় ছায়ায় মন ছুঁতে চায় আকাশের উদারতা, পরমার্থ জীবনের সোপান। </p>
<br /><p>আকাশ কয় <br />---- আমি অতন্দ্র নিশ্চুপ সাক্ষী তোমাদের দিবসরজনীর। <br />আমি সাক্ষী আনন্দ আর বেদনার, মিলন বিরহের, উত্তান পতনের, সৃষ্টি প্রলয়ের, যুদ্ধ সন্ধির, সংকট আর প্রাপ্তির, মহাত্মা দুরাত্মার, হিংসা ও মমতার। </p>
<br /><p>ঃ মানুষের সংকীর্ণ প্রবৃত্তির বেড়াজালে দ্বিচারিণী পৃথিবী দুলছে, আলো আর অন্ধকারের দোলাচালে অনন্তকাল। <br />সৃষ্টির কপোতেরা ছুটে যায় নিষ্ক্রিয় নির্জনে, সীমানায় খণ্ডিত ধর্ম বর্ণ জাতি আর <br />অন্তরাত্মা, <br />লভেনা দর্পিত মানুষ প্রকৃতির ত্যাগের ধর্ম,<br />মানবতা অধর্মে সংকটে পোহায় বিষন্ন প্রহর, হিপোক্রেসির কৃত্রিম আতর ছড়ায় ধূর্ত<br />ধর্ষিতা পৃথিবীর ম্রিয়মাণ বাতাসে। <br />হৃদয় দহে, স্বপ্নিল ইচ্ছেরা বিচূর্ণ হয় বারংবার।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/songlap-tin/সংলাপ--তিন2020-12-14T01:51:18-05:002023-06-26T10:36:15-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অনন্তঃ-- লাবণ্য ! কি ভাবছো? <br /> আবার হাসছো কেন ! </p>
<br /><p>লাবণ্যঃ-- আচ্ছা, প্রেম কি ? </p>
<br /><p>অনন্তঃ-- আমি কি দার্শনিক ? আমার জন্য কঠিন প্রশ্ন নয় কি? </p>
<br /><p>লাবণ্যঃ-- তোমার অনুভবটাতো বলতে পারো ! </p>
<br /><p>অনন্তঃ-- তোমার আসাটা অন্ধকার বিদীর্ণ করে ভোরের সূর্যের উঁকিতে আলো ছড়িয়ে সবকিছু বর্ণিল করার মতো চঞ্চল আনন্দের। <br />প্রেমও তোমার মতো মনের কবেকার অনন্ত অমাবস্যার কৃষ্ণতাকে ছিন্নভিন্ন করে বর্ণালীতে দীপ্ত করে, তাবৎ পৃথিবীর সবাইকে ভালোবাসতে শেখায়। সবকিছুর মায়া অলিন্দে বসতি গড়ে। </p>
<br /><p>লাবণ্যঃ-- আর অপ্রেম কি? </p>
<br /><p>অনন্তঃ-- মিথ্যাচার, কুহক মুখোশে আবৃত নির্দয় স্বরূপ নিয়ে নিন্দিত লুকোচুরি। ছলাকলা, মখমলে সুরভিত আশ্বাস, অনর্থ কথার ফুলঝুরি আর রূঢ়তার তন্তুজালে অবরুদ্ধ ম্রিয়মাণ বিশ্বাসের অপমৃত্যু। </p>
<br /><p>লাবণ্যঃ-- প্রেম অপ্রেম বহে সমান্তরাল। মানবতার অতনু দেহ ক্ষতবিক্ষত হয় নিরেট নিষ্ঠুর অপ্রেমে। প্রেম বৈরী বাতাসের স্রোতে আলো ছড়ায় সাঁঝেরবাতির মতো মিটমিট জীবনের স্পন্দনে। <br />আর বিরহ? </p>
<br /><p>অনন্তঃ-- বঞ্চনার অন্তর্দাহে কৃষ্ণ মেঘমালায় আকীর্ণ আকাশে বর্ষার ধারার মতো হৃদয় হতে উৎসারিত নির্ঝর বেয়ে চোখে নামে বৃষ্টি। ছলাৎছলাৎ জলে নদীর মতো হৃদয়ে ভাঙ্গনের শব্দ বাজে নিরন্তর। দুর্বিনীত কালোবেলায় গতায়ু পথিক চাঁদের মতো নিষ্প্রভ হয়ে যায় তিলে তিলে গড়ে তোলা বিশ্বাস। মন ভাবে, চাঁদ আর নক্ষত্রহীন সায়াহ্নের কৃষ্ণ অন্ধকারে কোথাও কেউ নেই।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/songlap-dui/সংলাপ-দুই2020-12-11T01:51:31-05:002023-06-26T10:36:13-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ঃ আমার আগে কাউকে ভালোবেসেছো কি? </p>
<br /><p>___ বেসেছিতো। </p>
<br /><p>ঃ কই, কোনোদিনতো ভুলেও বলোনি সেটা।<br />মানুষ খুবই জটিল জীব। মৃত্যুর আগেও স্বরূপ বুঝা দায় ! </p>
<br /><p>___ সেই ভালোবাসা পৃথিবীতে জাগাতে পারে মানুষের কল্পিত স্বস্তি, স্বর্গের অনবদ্য অপরূপ রূপের মতোন অপার সৌন্দর্য, আকাশের ঔদার্য, শিশুর সারল্য, পূর্ণিমার মতো স্নিগ্ধ রাত, নিষ্পাপ কর্মচঞ্চল সোনালী দিবসের সম্ভার। </p>
<br /><p>ঃ আমি কি তবে হেরে গেলাম ব্যর্থতার পঙ্কিলতায়? </p>
<br /><p>___ না।<br />আমি হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি তোমাকে। মনের আকাশে তোমার ক্ষণিকের কৃষ্ণ মেঘমালা জমেছে মাত্র। খণ্ডিত হয়েছে তাই তোমার নিঃসীম আকাশের ঔদার্যের বিশালতা। <br />তোমার অলিন্দেও ছড়াতে পারে অনন্ত মমতার সেই প্রেম।<br /> <br />ঃ কেমনতরো ছিলো তোমার সেই ভালোবাসা? </p>
<br /><p>___ নবীন ফসলের মাঠে সবুজের উর্মিমালা, হেমন্তের সোনালী শষ্যের আঘ্রাণ, বেগুনী কলমি ফুলের বনে ডাহুকের তান, কিষাণ শ্রমজীবীর বিন্দু বিন্দু নিষ্কলুষ ঘর্মাশ্রু, কিষাণীর গুণগুণ ফসল তোলার গান, স্পন্দিত রূপোলী নদীতে ভাটিয়ালি সুরমূর্ছনা আর বৈষম্যের চোরাবালি পার করে সংকটের তীক্ষ্ণতায় বয়ে চলা নিশ্চুপ দুর্ভাগা কৃষ্ণ প্রহরের মানুষকে আমি ভালোবেসেছি আকৈশোর।</p>
<br /><p>ঃ অনন্ত! আমি আবার প্রেমিকা হবো৷ এই নন্দিত অবিনশ্বর প্রেমে পড়তে চাই তোমর বন্ধু হয়ে। </p>
<br /><p>___ তাহলে তোমার ভোগতৃষ্ণা, দর্প দম্ভ, আত্মমায়া উবে যাবে নিমেষেই। সম্বলহীন বৈরাগীও হয়ে যেতে পারো সেই ভালোবাসার অতনু বাঁধনে। </p>
<br /><p>ঃ আমি মানুষ! লোভ, রাক্ষুসে লিপ্সা, হিংস্রতায় কদর্য করে দিতে পারি পৃথিবীকে। আবার ত্যাগে গড়তে পারি অনিন্দ্য সুন্দর নন্দিত বেহেশত, স্বীয় বাসভূমে।</p>
<br /><p> ___ এসো লাবণ্য ! <br />কত বধু কাঁদছে দুঃসহ অনটনে, শীর্ণতায় আকীর্ণ শিশু, এক চিলতে আশ্রয়ের খোঁজে তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো অসহায় বৃদ্ধা।<br />পৃথিবীতে বইছে আত্মকেন্দ্রীক অনিয়মের ঘূর্ণি। আমাদের একাগ্র অঙ্গিকারে হয়ে যাবে পৃথিবী সাম্যের, ভালোবাসার আরাধ্য নিবাস আবাস।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/songlap-ek/সংলাপ-এক2020-12-07T00:57:57-05:002023-06-26T10:36:15-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ঃ দ্যাখো! অপূর্ব সূর্যাস্ত! পাখিরা উড়ছে আনন্দে, সমুদ্র রঙে টইটম্বুর, অনাবিল উচ্ছ্বাসে নাচে ঢেউ। অপার অনন্ত প্রেম খেলছে বিশ্বচরাচরে।<br /> <br />---- আমার মনে হয়, যেন সূর্যটা সব রঙ ঢেলে দিবসকে বলছে, বিদায়, বন্ধু ! আর হবেনা কথা। হাতটা ছুঁয়ে ধীর লয়ে ডুবছে সমুদ্রে --- টাইটেনিকের বিয়োগাত্মক দৃশ্যপট যেন।</p>
<br /><p>ঃ গোধূলির আবীর রঙা আকাশ বেয়ে এখুনি নামবে স্নিগ্ধ সন্ধ্যা, তারারা মিটমিট করে উঠবে জ্বলে, অমাবস্যাভূক চাঁদের সাথে লুকোচুরি খেলে রাত হারাবে তাবৎ অন্ধকার, আমাদের জীবনও এমন চাই। আকাশের ঔদার্য, সমুদ্রের বিশালতা, চাঁদের অপার স্নিগ্ধ অর্ঘে পূর্ণ হোক আমাদের জীবন। </p>
<br /><p>---- মানুষের সৌকর্য সম্ভার লুটে মানুষ। হিংসার অগ্নিদাহে ছাই হয় মনুষ্যত্ব। কদর্য অতীত নিয়ে মানুষ সহজে গড়ে সুখের মসনদ। বন্ধুর পথের পথিক সারল্যে নিবিষ্ট জন। সহজ সরল পথে সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন, তোমার কষ্ট কল্পনা মাত্র।</p>
<br /><p>ঃ তবে কি আমরা বিভাজিত হয়ে পড়ছি জনে জনে, দলে দলে, দেশে দেশে ? এবং তুমি ও আমি?<br /> <br />---- মানুষের অদম্য তৃষ্ণা, সন্তোষহীন মন ছুটছে আকাশচুম্বী উচ্চাভিলাষী অভিযানে। লোভের খরতাপে দাহ হচ্ছে মানবতার ম্রিয়মাণ তনু। হিপোক্রেসি, আত্মকেন্দ্রিকতার ঘূর্ণিতে ঘুরে ঘুরে আমরা ক্রমাগত ছিটকে যাচ্ছি দূরে, বহুদূরে। এক নিরেট নিষ্ঠুরতায় দংশিত এখন মানুষ। </p>
<br /><p>ঃ কবেকার অন্ধকারাচ্ছন্ন এই অনন্ত মধ্যাহ্ন রাতের কৃষ্ণতায় ছেড়ে দেবে নাতো আমার হাত ?<br /> <br />---- দুখের রাতে এখনো কিছু কিছু তারা, অপূর্ব চাঁদ আর জোনাকিরা স্পর্ধিত আলো ছড়ায়, সুপ্রভাতের স্বপ্নে বিভোর করে। তারা বন্ধু, তারা অনিন্দ্য মনের পথের সাথী। হালভাঙ্গা দিশাহারা নাবিকের পথের দিশা তারা। </p>
<br /><p>ঃ আমি আমৃত্যু বন্ধু হতে চাই তোমার, আমি সুখের স্পন্দন ছড়াবো অলিন্দে, দুঃখের নিশীথের একান্ত সঙ্গী হবো শিশিরের মতোন। </p>
<br /><p>---- ভুলে গেছি আতরের সুগন্ধ বিলাস, ভুলে গেছি মায়ের অকৃপণ উদার মমতা, আমি ভুলে গেছি বাবার ক্লান্ত দেহের মুখখানি জুড়ে অপার আনন্দের ছটা, ভুলে গেছি পাখির অনিন্দ্য সুন্দর কন্ঠ, বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে ভোরের শিশিরের ঔজ্জ্বল্য কেমন। আজ আমি সব ফিরে পেলাম--- এক উদার আকাশ আমার সামিয়ানা হয়ে আসলো। আমরা হাঁটবো পৃথিবীর পথে ভ্রুক্ষেপহীন আত্মমর্যাদার দীপ্ত অহংকারে। তাবৎ হিংসা, লোভ, কুৎসা, জিঘাংসার কদর্যতা দাহ হবে আমাদের আত্মিক বিশ্বাসী বন্ধনে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bare-bare-asibo-banglaya/বারে বারে আসিব বাংলায়2020-11-29T05:52:53-05:002023-06-26T10:35:38-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বারে বারে আসিব বাংলায়<br /> ---- শ্যামল চৌধুরী </p>
<br /><p>আমার মায়ের অপার সমুদ্র সমান<br />ভালোবাসার অতনু নিরেট বাঁধন ছিঁড়ে <br />আমি কেন যাব দূরদেশে মরণের পরে?<br />উর্বর মৃন্ময় জমিন তার অকৃপণ অর্ঘ<br />অবারিত রেখেছে --আমৃত্যু আমার জন্য, <br />শিশিরে ভেজা পাতার ভাজে ভাজে<br />রূপোলী জোছনার মায়াবী যৌবন<br />আমি দেখবোনা কোনকালে, কোন বিভূঁই বিদেশে,<br />আমি দেখবোনা আরক্ত সূর্যাস্ত কেলি <br />নদী আর সমুদ্রের তরঙ্গায়িত অলিন্দে, <br />সরষের হলুদ উর্মিমালায় মৌমাছির গুণগুণ গান,<br />প্রজাপতির আবীর রঙা বর্ণিল ডানা,<br />পাখির প্রাঞ্জল সুরেলা কণ্ঠ, কে দেবে আমায়? <br />মায়ের কন্ঠের আকুল করা ভাষার জন্য,<br />বোনের সম্ভ্রম কলঙ্কিত করার প্রতিবাদে আর স্বাধীনতার জন্য <br />রণসজ্জায় সজ্জিত হয়ে বুলেটে ছিন্নভিন্ন করতে বুক<br />--এমন অদম্য অসম সাহস কোথায় পাবো, আমি? <br />আমি বাংলার শাপলার বর্ণিল মায়ায়<br />কাটাতে পারি হাজার বছর, জন্মজন্মান্তর, <br />আমি ধানের স্বর্ণালি ঢেউয়ে কিষাণীর অনাবিল আনন্দে মোহিত হয়ে যাই, <br />বহতা নদীতে ডানপিটে কিশোরের ঝাঁপ<br />আমার অলিন্দে নিঃসীম সাহস ছড়িয়ে দেয়, <br />সহস্র বৈরী ঝড়ে বাবাকে ছেড়ে<br />না যাওয়ার মায়ের গল্পকথা আমার ভেতরের পশুত্বকে চুরমার করে দিয়ে,<br />আমাকে মানুষ করে তোলে, <br />টানাপোড়েনে বয়ে চলা বেদনার <br />এই দুর্দিন<br />আমি মুছে ফেলি মাটির সোঁদা <br />আনন্দে। </p>
<br /><p>আমি ফিরিবো আবার বাংলায়,<br />ধবল বক হয়ে উড়ে উড়ে আঘ্রাণে জুড়াবো মন, <br />পাখি হয়ে অপার মুগ্ধতায় গাইব সুরেলা গান, <br />প্রজাপতি হয়ে দোলব ফুলে ফুলে বাংলায়<br />---- হয়তো চিনবে না কেই তোমরা আমায়, <br />আমি রবিঠাকুর নজরুল জীবনানন্দের কবিতার ভাজে ভাজে জীবন্ত ফুল পাখি প্রজাপতি হয়ে রয়ে যাবো অনন্তকাল এই বাংলায়।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/aronya-bilas/অরণ্য বিলাস 2020-11-27T03:16:02-05:002023-06-26T10:35:36-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আমার এক মৃন্ময় দ্বীপ ছিল।<br />সবুজ দীপ্তি দোলতো পাতায় পাতায়, <br />ফসল, রঙ্গিলা নটবর সাজে নাচতো মাঠে মাঠে, <br />ফুল পাখি প্রজাপতির প্রহর পোহাতো আনন্দে অনুরাগে,<br />হংস যুগল ক্লান্ত ঢেউ রেখে চলেতো অক্লান্ত, <br />মায়ের অনন্ত সোহাগ-সৌরভ ছড়াত হৃদয় জুড়ে, <br />----- আমি জেনে গেছি ভালোবাসার অতনু স্পন্দনে <br />অপরূপ রূপের এই দ্বীপ আমার প্রাঞ্জল সাম্রাজ্য।</p>
<br /><p>একদিন ময়ূরপঙ্খী বজরায় চড়ে সৌভাগ্য দেবী এসে ডাকে,<br />---- চলো, আলোকিত মর্মর নগরী তোমার বাসভূম, <br />না চাইতেই এসে যায় স্বপ্নের অপ্সরা, <br />স্বর্গের সুষমায় পূর্ণ, মানুষের এপাশ ওপাশ।<br />আমি চলে গেলাম কুহক নিশির ডাকের মতো<br />পিছু পিছু গোধুলির আরক্ত মোহিত প্রহরে। </p>
<br /><p>তরঙ্গায়িত সুখেরা ঝুলে এখানে অতৃপ্ত মনের দেহে, <br />লুকোচুরি খেলতে খেলতে চেনারা হারিয়ে যায় দূরে অচেনায়, <br />ভালোবাসার মেকি রঙধনু রঙ আস্তরণে আকীর্ণ <br />মুখোশ-মানুষের অলিন্দ ক্ষতবিক্ষত হয় নিয়ত, <br />ফুলেরা ছড়ায়না সৌরভ, পাখি গায় যান্ত্রিক তানে<br />----- আমি এখানে হেমলক নির্যাস মেশানো রঙের <br />সুরম্য দীর্ঘ পোট্রের্টে জীবনকে সেঁটে দিলাম,<br />শুনেছি, আমার দ্বীপখানিও লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে<br />আগ্রাসী ঘূর্ণিতে, ফসলে ধরেছে পঙ্গপাল।</p>
<br /><p>এই নিরেট শৃঙ্খল ছিঁড়তে জানে নির্জন অরণ্য, <br />যেখানে আমার কোন পরিচয় নেই, দম্ভ নেই, <br />নেই অন্তর বাহির তফাতের সুবচন স্বজন, যোগবিয়োগের কদর্য প্রেতের জীবন নেই, <br />নেই পাওয়ার দর্পিত আভিজাত্য, না পাওয়ার দংশিত যন্ত্রণা, <br />আকাশের ঔদার্য খণ্ডিত করতে পারেনা কেউ,<br />নেই হেমলক মিশানো রঙ, আগ্রাসী ঘূর্ণি, নেই আমার ফসল সংহারী নিষ্ঠুর পঙ্গপালও <br />---- এই নির্জন অরণ্যে ফিরে যেতে চাই আমি অবারিত শান্তির জন্য অনন্ত প্রহর ধরে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bibhed/বিভেদ (সনেট,শেক্সপীয়রিয়ান রীতি)2020-11-23T04:25:29-05:002023-06-26T10:35:40-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>দুই ভাই চলে সাথে, অপার সোহাগ,<br />আনিল শীতের পিঠা, আকারে বিশাল,<br />সমান সমান হলো পিঠার বিভাগ,<br />লোলুপ বানর দেখে, গাছে ধরে ডাল।</p>
<br /><p>বলিল দুষ্ট বানর, কমিল ছোটর,<br />বড়'র বিশাল ভাগ, কৃপণ আপন।<br />খাইল কিঞ্চিৎ রেখে, বিভাগে বড়'র, <br />বড় বলে ক্ষুব্ধ স্বরে, ভুল বিভাজন! </p>
<br /><p>খাইয়া ছোটর ভাগ, আনিল সমানে।<br />বানরকে গুরু মানে, নিজ দুই ভ্রাতা,<br />করিল সম্পর্ক ছেদ, তিক্ত অভিমানে,<br />ভাইয়ের শক্তি নাশ, দুষ্ট যদি ত্রাতা। </p>
<br /><p>একতা হারালে জন, নির্বোধ বিবাদে, <br />ধন, মান, স্বাধীনতা হারায় বিষাদে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/apon/আপন2020-11-21T07:02:30-05:002023-06-26T10:35:36-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বুকের লাগোয়া স্বজন, যাকে দিলাম স্বেচ্ছায় <br />আমার তিলে তিলে গড়া পৃথিবীর রাজত্ব, <br />---- নক্ষত্রের মতো অযুত আলোকবর্ষী দূরের হয়ে যেতে পারে সে। <br />জীবনের স্বপ্ন-প্রজাপতির ডানায় ছড়াতে পারে কৃষ্ণতা,<br />শীতের পত্রহীন বৃক্ষের মায়া ছেড়ে যোজন যোজন <br />দূরে যাওয়া পরিযায়ী পাখির মতো, ঘোর অবেলায়<br />নিরুদ্দেশী হয়ে যেতে পারে সুখের উষ্ণতার সন্ধানে।<br />হতে পারে তারা, কন্যা জায়া পতি পুত্র<br />বা হৃদয়ের অলিন্দে যার স্মৃতি অনুরতি হয় বারংবার <br />---- রূপালী চাঁদের মতো প্রিয়, তারা কেউ আপন নয়। </p>
<br /><p>যারা,<br />নিরবধি নষ্টপ্রহরের গহীন কালোরাতে, <br />জীবনকে ছিন্নভিন্ন করা বৈরী ঝঞ্ঝাবায়ে, <br />বিপন্ন কালোবেলায়, বিরহে, সংকটে ---- কাছে থাকে,<br />জীবন জীবনের জন্য বোধে তাড়িত <br /> --- তারাই আত্মার নৈকট্যের আত্মীয়, পরম জ্ঞাতি । <br />হতে পারে তারা রবি ঠাকুরের "পুরাতন ভৃত্য " সকলের চোর ভাবা, কেষ্ট, <br />কোন অনাত্মীয় প্রতিবেশী, দূরের অখ্যাত নগণ্য মানুষ, <br />কোন বিধর্মী জন বা একটি পোষা কুকুর।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/dan/দান (সনেট, শেক্সপীয়রিয়ান রীতি) 2020-11-19T02:31:23-05:002023-06-26T10:35:41-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>পুরাতন জনপদে দীন ব্রাহ্মণের<br />সততা, নির্লোভ শ্রমে পরিবার চলে,<br />যুদ্ধ শেষে বহে দেশে মনন্তর ঢের,<br />অন্ন লাভে ভিক্ষা করে, কিছু পাবে বলে। </p>
<br /><p>দেবরাজ ছদ্মবেশে আহার চাহিল,<br />সাধু পরিবার ভুলি সবকিছু দানে।<br />রাজা দানে খাদ্য অর্থ, ভাণ্ডার খুলিল, <br />সুনামে আপ্লূত রাজা, দম্ভ বাড়ে মানে।</p>
<br /><p>দেবতা ব্রাহ্মণ বেশে আসিল প্রাসাদে।<br />রক্তঝরা যুদ্ধ জয়ে লাভে ধনরত্ন, <br />দানিছে সামান্য মাত্র দর্পিত প্রমাদে, <br />খ্যাতির আশায় রাজা, করিছেন যত্ন। </p>
<br /><p>সবার প্রশস্তি শেষে বলে দেবরাজ,<br />শ্রমে লব্ধ অল্প দানে, পূণ্যে মহারাজ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/kosta/কষ্ট 2020-11-17T01:03:45-05:002023-06-26T10:35:56-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>রাতে কষ্টরা শিশিরের মতো জমে জমে <br />প্রহর গুণে আলোকিত ভোরের জন্যে, <br />না-পাওয়ার ক্লেশে অন্ধ অলিগলি ঘুরে <br />আলোর শুভ্রতার প্রাঞ্জল বর্ণিল বিচ্ছূরণ<br />তনুতে ছড়াতে চায় কষ্ট, একপল শান্তির জন্য। <br />পরিযায়ী পাখির মতো অচেনা হওয়া মানুষ <br />রেখে যায় কষ্টের বেদনা বিধুর প্রত্নতাত্ত্বিক ফসিল।<br />বৈষম্যের নিয়ন উজ্জ্বল প্রাসাদ হতে<br />ভেসে আসা দর্পিত হাসি কষ্টে আকীর্ণ করে।<br />শ্রমের স্বপ্নিল ফসল চোরাবালিতে লীন হওয়ার কষ্ট <br />বুকে বিঁধে, দ্রোহের উত্তাল আগুন জ্বালায়।<br />স্বর্ণালি স্বপ্নিল ভবিষ্যৎ ঘূণো পোকার দংশনে <br />নষ্ট হওয়ার কষ্ট নিথর করে মানুষকে আমৃত্যু। <br />দূর নক্ষত্রে মিশে যাওয়া প্রাণাধিক প্রিয়ের <br />অনাবিল স্মৃতিরা কষ্ট হয়ে ফিরে বারংবার।<br />নিঃশব্দে নিরবে বয়ে চলা নদীর মতো কষ্ট <br />বিভাজিত করে পার্থিব মানবতা, দুই তীরে,<br />মনকে নিয়ে যায় কষ্ট, আপন থেকে দূরে, নিরুদ্দেশের দেশে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/porinoti/পরিণতি (সনেট, শেক্সপীয়রিয়ান রীতি) 2020-11-15T00:49:05-05:002023-06-26T10:36:07-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>সামন্ত রাজন এক পুষেন বানর, <br />ছলা কলা দেখে তার, পুলকিত রাজা, <br />রাজ্যজুড়ে ক্লেশ বয়, নাই চিন্তা ওর,<br />বানরে মোহিত রাজা, কষ্টে ভাসে প্রজা। </p>
<br /><p>জুলুম দুর্নীতি চৌর্য, রাজ্যের নিয়ম, <br />গুণীজন নির্বাসনে, দুরাত্মা রাজন্য, <br />খর্বিত মানীর মান, নারীর সম্ভ্রম, <br />অভাবে সংকটে চলে, দেশ জনারণ্য। </p>
<br /><p>একদা রাজের পিঠে মশা কামড়ালো,<br />বানরকে বলিলেন, মশক মারিতে, <br />বানর মুগুর এনে মশারে পিটালো, <br />মরিল উদ্ভট রাজা, প্রচন্ড আঘাতে। </p>
<br /><p>জ্ঞানীগুণী পরিহারি, অজ্ঞ যার সাথী, <br />সকলি আঁধার তার ---- এই পরিণতি।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/tomake/তোমাকে 2020-11-12T01:59:18-05:002023-06-26T10:36:18-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>তুমি চলে গেলে বড় বেশি অভিমানে,<br />তারারা অপলক চোখে দেখেছে বিদায়, <br />আমার মধ্যাহ্ন রাতের প্রহরের কৃষ্ণতার<br />অংশক করিনি তোমায় --- ভরা জোছনায়<br />যেন তুমি চলো জীবনের রথচক্রে অবিরাম, <br />একই নিয়ন আলোয় স্নাত শহরের বাসিন্দা <br />তবু অচেনা নভোমণ্ডলের অতিথি যেন আমরা,<br />কৃষ্ণ একাদশীর চাঁদের হাসির মতো নিষ্প্রাণ <br />এখন আমাদের প্রত্যাশার ঝলমলে স্বপ্নগুলো, <br />পোহালো সমগ্র প্রহর --- ফিরলোনা উড্ডীন গাংচিল স্বপ্নরা সুখ হয়ে। </p>
<br /><p>সুখের লাগি পরিযায়ী পাখির মতো <br />প্রেম খুঁজি হৃদয় থেকে হৃদয়ে, দেশদেশান্তরে,<br />তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো মোরা সুখের অক্লান্ত স্বপ্নবাজ, <br />তবুও সুখ চলে যায় বহুদূর অচেনা অচিনপুরে,<br />প্রেমের ফসিলগুলো বেদনার আবীর ছড়ায়, <br />জীবনটা হয়ে উঠে রৌদ্রময় কৃষ্ণ রাতের বাসিন্দা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/lobh/লোভ (সনেট, শেক্সপীয়রিয়ান রীতি) 2020-11-10T02:14:30-05:002023-06-26T10:35:58-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অতৃপ্ত প্রমত্ত দস্যু কাড়ে রত্নধন, <br />ভয়ে তার গ্রামবাসী রয় নিজ ঘরে, <br />ঋষি বনে জপে সদা ঈশ্বর আপন,<br />আগ্রাসন জাগে ক্রোধে সাধূর উপরে। </p>
<br /><p>বলিল কদর্য বাক্যে, ভাগ দিবি ধনে, <br />সাধু কহে, নিঃস্ব আমি জীবনের ঘাটে, <br />গুপ্তধন রত্নরাজি অঢেল এ'বনে,<br />হিরা মণি লহে দস্যু পোশাকের গাঁটে।</p>
<br /><p>জলপাত্র কেড়ে নিল, নিতে মণি বেশি, <br />ভরেনা সামান্য পাত্র, ঢালে অবিরত, <br />বিস্মিত ডাকাত ফিরে, মৃদু হাসে ঋষি,<br />লোভাতুর দস্যু বলে, নিব রত্ন যত। </p>
<br /><p>সাধু বলে শান্ত স্বরে, ওহে! লোভীমনা, <br />জীবনে লোভোর পাত্র কখনো ভরেনা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/mon/মন2020-11-07T15:10:27-05:002023-06-26T10:35:58-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>জীবনের সহযাত্রী মন ব্রহ্মাণ্ডের পোট্রের্ট <br />ছুঁয়ে ছুৃঁয়ে বহমান অনন্ত কালের বিস্তারে,<br />অবারিত অসীম আকাশ, সমুদ্রের ঔদার্য, মনকে ডাকে বারংবার স্বর্গের সুষমায়, <br />ঘূর্ণির মতো লণ্ডভণ্ড করতে শান্তি-- ডাকে রুদ্র, <br />নিকষকালো অন্ধকারও ডাকে মনকে নিন্দিত নরকে,<br />মানুষের নৈকট্যে, ভালোবাসায়, করুণায়<br />নিঃসীম নীলাদ্রির বিশালতা স্পর্শ করে মনকে,<br />অপ্রমত্ত মন জীবনকে নিয়ে যায় বহুদূর <br />অনাবিল আনন্দের রূপকথার দেশে, <br />লুকোচুরি, হিংসা, জিঘৎসা, ছলনায়<br />মৃন্ময় কোমল পৃথিবী হয়ে উঠে পাষাণ কারা,<br />চূর্ণবিচূর্ণ হয় মন, চেনা মানুষ অচেনা হলে,<br />হৃদয় ক্ষত বেয়ে বেদনার নির্ঝর বয়ে যায়,<br />অযুত নিউরনের মর্মর প্রাসাদ, মন <br />এনে দিতে পারে স্বস্তির আরাধ্য নিবাস, <br />আর<br />মনের বৈপরীত্যে হয়ে যায় নন্দিত জনপদ<br />অনন্ত রাতের বাসিন্দা প্রেতের কুৎসিত নগরী।</p>
<br /><p>মন ভাবায় মানুষকে, মানুষ ভাবেনা মনকে, <br />আত্মকেন্দ্রিক উত্তাল ঢেউয়ে সময়ের নদে<br />ডুবে যায় সুরভিত বর্ণিল স্বপ্ন-শতদল, <br />বন্ধ্যা পৃথিবী ভূমিষ্ঠ করেনা মহাত্মা ভূমিপুত্র, <br />দিন যায়, যুগ যায়, সহস্রাব্দ বিলীন হয়, <br />ফিরেনা তবু্ও অবারিত শান্তির বাতায়ন পৃথিবীতে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nari/নারী 2020-10-27T14:29:36-04:002023-06-26T10:36:01-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অযুত প্রহর বিলীন হলো পৃথিবীর পথে, <br />চলছি অবিরাম নক্ষত্রের মতো গতিময়<br />ছকে বাঁধা বেদনায় আকীর্ণ কক্ষপথে,<br />গাঙচিলের মতোন ত্রস্ত সময় পোহায়<br />সবার সুখের নীলাভ আসমান খোঁজে, <br />আমি জানি পশুত্বকে ছিন্নভিন্ন করতে, <br />আমি জানি স্বর্ণালি সুপ্রভাত জাগাতে <br />মনের গহীন অচল কুহক অন্ধকারে।<br />আমি পারি জোয়ান অব আর্কের নিবিষ্ট ভালোবাসায় ছিঁড়ে দিতে দাসত্বের শৃঙ্খল, <br />আমি হৃদয়ের অতলান্ত থেকে দিতে পারি<br />ফ্লোরেন্সের মতো অপার মমত্বের স্নিগ্ধতা, অতন্দ্র পার করে দিতে পারি সহস্র রজনী <br />ক্রীতদাসের মতো সেবার নির্লিপ্ত নিমগ্নতায়, <br />প্রজাপতির রঙিন ডানা হয়ে আঁকতে পারি রঙধনু রঙ দীর্ঘ পোট্রের্ট বিবর্ণ ধূসর পৃথিবীতে।</p>
<br /><p>বারংবার আমাকে যেতে হয় নিষ্ঠুর যুপকাষ্ঠে,<br />ক্ষতবিক্ষত হয় আমার স্বপ্ন, আমার সম্ভ্রম,<br />চৌচির জমিনে খুঁজি অপার শান্তির স্নিগ্ধ জল---<br />উষর-মরুতে একখানি ফুলেল সবুজ বাগান।<br />ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই এই নির্দয় বিস্তীর্ণ বিস্তারে, <br />পাথর মানব দেশে, যেন কোথাও কেউ নেই।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/mrityur-kachakachi-ekdin/মৃত্যুর কাছাকাছি একদিন2020-10-25T14:48:23-04:002023-06-27T18:16:26-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>মৃত্যুকে জেনেছি, দেখেছি কাছ থেকে, <br />তার হৃৎস্পন্দন শুনেছি আমি নির্জনে,<br />তখন ছিলনা আসক্তি, প্রেম, মোহ, <br />রাগ-রিরাগ, হিংসা-দ্বেষ, লোভ, শটতা, <br />কবিতার প্রাঞ্জল ব্যঞ্জনা, সুরের মূর্ছনা,<br />যেন এই গ্রহের কেউ নই আমি, <br />মাধ্যাকর্ষণহীন মুক্ত উড্ডীন বিহঙ্গ,<br />প্রশান্ত আকাশে নীল সমুদ্রে ভাসছি, <br />চলছি রিক্ত, নিঃস্ব, পিছুটানহীন ভবঘুরে<br />অযুত যোজন দূরে, নিরুদ্দেশের দেশে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/valo-nai/ ভালো নেই 2020-10-19T13:58:54-04:002023-06-26T10:36:20-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>নির্জলা মিথ্যাচারে বারংবার বলে যাই, <br />ভালো আছি, ভালো আছি, ভালো আছি, <br />বুকের ভেতর দুখের নীল আসমান নিয়েও<br />স্মিত হেসে ব্যাকুল প্রাণে বলি হৃদয়ের কথা, <br />সাঁজের বৈরী বাতাসে ম্রিয়মাণ প্রদীপ হয়ে <br />ছড়াই আলো, নিকষ কালো অচল অন্ধকারে। </p>
<br /><p>পৃথিবীতে বাাড়ছে এখন প্রেতের বসতি, <br />ক্ষুধার্ত প্রেতের মতো মানুষের ন্যায্যতা গ্রাসে মানুষ, <br />গঙ্গা, নীল, মিসিসিপিতে বইছে রক্তাভ ধারা, <br />উদ্বাস্তু শিশুর ক্ষুধার্ত শীর্ণ দেহ, সারি সারি লাশ,<br />স্বজন হারানোর ক্রন্দনরোলে টলেনা পাষাণ, <br />প্রেম নয়, করুণা নয়, পৃথিবীর জমিনে খেলে<br />বর্বর জিঘাংসক রুদ্র বিষাক্ত বাতায়ন, <br />নারীর সম্ভ্রম ছিন্নভিন্ন করে বুভুক্ষু শকুনের পাল, <br />আসমান ছোঁয়ার অভিলাষে শকুন পুষে যত্রতত্র <br />সভ্য নামাবলীর মিষ্টভাষী আগ্রাসী জানোয়ার, <br />লুকোচুরি, বঞ্চনার শস্ত্রে বিদ্ধ হয় হৃদয়ের বিস্তার, <br />তপ্ত অশ্রু আদ্র করে অবিরত, নিঃসহায় রাতকে।</p>
<br /><p>ভালো নেই, ভালো নেই, ভালো নেই, <br />নিয়ত ইথার তরঙ্গে ভেসে আসে বেদনার উপাখ্যান, <br />কুহক মুখোশের আড়ালে আদিম হিংস্রতায়<br />হৃদয়ের ভাঙ্গনের শব্দে অনুরণিত পৃথিবীর চৌপাশ, <br />অবরুদ্ধ চিন্তায়, আহত ডানায় ভেসে ভেসে<br />মনের অনন্ত অবিরাম অব্যক্ত দহনে<br />ভালো নেই, ভালো নেই।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/amader-sukh-gulo/আমাদের সুখগুলো2020-10-15T06:38:09-04:002023-06-26T10:35:31-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>তুমি চলে গেলে বড় বেশি অভিমানে,<br />তারারা অপলক চোখে দেখেছে বিদায়, <br />আমার মধ্যাহ্ন রাতের প্রহরের কৃষ্ণতার<br />ভাগীদার করিনি তোমায় আমৃত্যু---<br />জীবনভর ঠাঁই যেন হয় তোমার, সুখের রথচক্রে,<br />একই নিয়ন আলোর শহরের বাসিন্দা আমরা<br />তবু যেন অচেনা নভোমণ্ডলের অতিথি দুজন, <br />কৃষ্ণ একাদশীর চাঁদের মতো নিষ্প্রাণ এখন<br />তোমার সেই স্ফটিক নির্ঝর কলকল হাসি, <br />তোমার তাবৎ সুখের সুকুমার দীর্ঘ পোট্রের্ট সাঁঝের আঁধারে আকীর্ণ হলো ক্রমাগত দুঃখবোধে, <br />সুখের জন্যে, শুধু সুখের লাগি বেদনার <br />নীল অপরাজিতারা ছেয়ে যায় অহর্নিশ, <br />আকাঙ্খারা তীর বিদ্ধ সারসের মতো রক্ত ঝরায়, <br />কফিনে মোড়ানো সুখেরা তোমার হারালো<br />মায়াবী চাঁদের আলোর নির্মল প্রশান্তি। </p>
<br /><p>নক্ষত্রহীন আকাশের সামিয়ানার নীচে <br />অসুখী অনন্ত কৃষ্ণতায় নিবাস আমার,<br />আমারা কেউ সুখী নই অতৃপ্ত অভিলাষে,<br />আমাদের সীমান্তের দৃশ্যমান এপার ওপারে<br />অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষারা ব্যবচ্ছেদ করে সুখ,<br />বিভৎস বিকৃত করে প্রমের নিটোল তনু,<br />আমাদের সুখগুলো যায় মৃত্যুর মতো দূরে যোজন যোজন দূরে অনন্ত নির্বাসনে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/tomake-astai-hobe/তোমাকে আসতেই হবে 2020-10-11T01:48:00-04:002023-06-26T10:36:18-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>শতাব্দী শতাব্দী ধরে কেটেছে বেদনার প্রহর<br />জিঞ্জিরে অবরুদ্ধ ম্রিয়মাণ নতজানু জীবনে, <br />আনন্দ বেদনা মিলন বিরহ সংকটের আয়তে<br />মমতা মায়ের অশ্রু সজল অপলক চোখে<br />প্রার্থনায় তপস্যায় ঝরে গেছে হাজারো রজনী, <br />বর্গী বৃটিশ পাক হানাদার নাজেহাল হলো<br />ভাইয়ের দোর্দণ্ড প্রতাপে, রক্তের প্লাবনে, <br />বোনের সম্ভ্রম লোলুপতায় ব্যবচ্ছেদ হলো, <br />বাবার বুকের পাঁজর ছিঁড়লো প্রতিবাদে, <br />সবুজ জমিনে রক্তের আলপনায় আঁকলো<br />দুরন্ত যৌবন, স্বাধীনতার টকটকে লাল সূর্য। </p>
<br /><p>আজ এই দীপ্ত গৌরব গাথায় আকীর্ণ দেশে <br />ধর্মের নামাবলী, নেতার কোর্তা, চশমা পড়ে <br />শিশু আর যুবতীর অবল নিষ্পাপ দেহ নিয়ে খেলছিস<br />পাক জারজ সন্তানের হায়না হায়না খেলা, <br />অসুর ঘাতক বীরের মাটিতে উদয় হলি<br />কদর্য বর্বর দানবের ঘৃণিত প্রেতাত্মা। <br />রম্য সাধুর সাজে ধূর্ত লুটে স্বাধীনতার নির্জাস, মিথ্যার লুকোচুরি খেলায় সত্য যায় নির্বাসনে। </p>
<br /><p>যারা এনেছিল অনাগত আগামীর জন্য মুক্তি<br />তারা আজ বিবর্ণ বিকালে বিকল বাসিন্দা, <br />সৃজনের কপোতেরা ছুটে গেছে নিষ্ক্রিয় নির্জনে, <br />অসহায় চোখের বারান্দায় জমেছে প্লাবন।<br />এই দুর্বিনীত কালোবেলায় যে বাজাবে অগ্নিবীণা, <br />যে জাগাবে বিস্মৃত মনে প্রণের স্পন্দন<br />-- তোমাকে এই বাংলার প্রোজ্জ্বল সত্তা রূপে একাগ্র তপস্বী মাতৃ জরায়ু ছিঁড়ে আসতেই হবে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bhangon/ভাঙ্গন2020-10-07T01:41:52-04:002023-06-26T10:35:38-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অবিরত বৃষ্টিধারায় স্রোতস্বিনী নদী<br />ভেঙে যায় ছলাৎছলাৎ বেদনাবিধুর শব্দে, <br />বৈপরীত্যের বতায়নে ভেঙে যায় <br />গড়ে তোলা ফসলের দিগন্ত জোড়া মাঠ, <br />ফুলে ফুলে সাজানো সুরভিত তীর, <br />দুই অলিন্দে গড়ে তোলা স্বপ্নিল বসতি।</p>
<br /><p>স্বপ্ন বিভোর মানুষ সুখের জন্য, প্রেমের জন্য<br />পোহায় কণ্টকাকীর্ণ অপার বিবর্ণ বেলা, <br />আনন্দ বেদনার প্রজাপতি ওড়ে অবিরাম, <br />ম্রিয়মান শিশিরের মতো ঝরে যায় <br />মানুষের অনাবিল ইচ্ছেরা নীরবে নিভৃতে, <br />প্রচন্ড স্রোতের অতলে হারিয়ে যায় ভালোবাসা <br />পথহীন অনন্ত গহীন কালো কুচকুচে অন্ধকারে, <br />মনের বিস্তীর্ণ বেলাভূমে সাফেন জমে ক্রমাগত, <br />ভাঙ্গন ধরে স্বপ্নের সৌকর্যময় প্রাসাদ জুড়ে, <br />হারিয়ে যায় চেনারা, অচেনা অচিন দেশে, <br />থাকে শুধু অগোছালো স্মৃতির ফসিল <br />আমৃত্য, জীবনের এপাশ ওপাশ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bonsai/বনসাই 2020-09-30T02:21:04-04:002023-06-27T14:20:23-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>পৃথিবীর বর্ণিল বিচ্ছুরণ আমায় তাড়িত করে, <br />আমি ছুঁতে চাই অনন্ত নীলিমার সৌকর্য, <br />আমি চাই পাখিরা আমার প্রসারিত বাহুতে হৃদয়ের কথা বলুক আকুলতায়, <br />চাঁদের হলুদ যৌবন আমার বুকের ভেতর<br />লুকোচুরি খেলুক চঞ্চল শিশুর মতোন, ছলাৎছলাৎ সবুজ ছুটুক শাখায় শাখায়, <br />আসুক পৃথিবীর অনন্য আনন্দ আয়োজন বুকের ভেতর, <br />মনের জানালার ফাঁক গলে<br />অন্ধ বিদিশায় ঝরুক আলোর প্রস্রবণ। </p>
<br /><p>তুমি বারংবার আমার নন্দিত অভিলাষ<br />কাটাকুটি করে রুদ্ধ করো শৃঙ্খলিত আয়তে, <br />তোমার শোভিত জীবনের জন্য, দর্পের জন্য <br />আমৃত্যু ঘুরপাক খাই তোমার সৃজিত দুষ্টচক্রে,<br />আমার বসন্তরা লীন হয় রূঢ় খরতাপে, <br />আমার ইচ্ছেরা পালক ঝরায় অকাল প্রহরে,<br />শেষ বিকেলে নির্বাসিত আলোর মতো<br />স্বপ্নরা আমার ছুটে যায় অন্ধকার কুহকে, <br />ফুরায় ব্যর্থ জীবনের স্পন্দন নিভৃতে নির্জনে। <br />ঈশ্বর অবিচল পাথর হয়ে সহে যায় <br />অনিয়মের নিয়ন নিয়ম খেলা, <br />লোনা অশ্রুপাতের উত্তাপ জাগায়না <br />পঙ্গু মানবতায় প্রাণের চাঞ্চল্য <br />---- আমি আজন্ম একই বৃত্তে বন্দী বনসাই।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/samoy/সময়2020-09-12T01:51:33-04:002023-06-27T12:47:02-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>সময় বয়ে যায় স্বচ্ছ নির্ঝর বেগে <br />ক্ষণ থেকে দিনে, সপ্তাহে, মাসে, বছরে ---- <br />বছর থেকে শতাব্দীতে, মহাকালের যোজন যোজন পথে। <br />হারিয়ে যায় সময়ের অবাধ স্রোতে<br />প্রাপ্তি, আশা, আনন্দ-বেদনার মূর্ছনা জীবন থেকে।<br />মুছে যায় হৃদয় থেকে, স্মৃতির অগোচরে <br />--- যারা ছিল অলিন্দের লাগোয়া বাসিন্দা।<br />অবিশ্বাসের প্রাচীর চিড়ে ভূমিষ্ট করায় সময় দেবদূত---<br />অদেখা, অচেনা হয়ে উঠে বিশ্বাসী--কর্মের সুষমায়।<br />চিনিয়ে দেয়, জানিয়ে দেয় সময়<br />একে একে প্রিয় আর পর, কে! <br />পিছুটান ঠেলে সমুখে ডাকে সময়<br />আলোর বর্ণিল হিরন্ময় রাজপুরে<br />স্বপ্নের ফসলের হৈমন্তিক আঘ্রাণে।<br />জীবন ছুটে বিরহীর -- বন্ধুর পথের ক্লান্তি ভেঙে, <br />বিভ্রান্ত বিচ্যুত হতাশ তারুণ্যে উৎকন্ঠিত সময়<br />ভেসে যায় পাথর প্রহরের মতো শম্বুক চলনে,<br /> নীল বেদনার অশ্রুর তপ্ত-দাহ<br />ছুঁয়ে যায় বিদীর্ণ হিয়া ব্যর্থ জীবনের।</p>
<br /><p>তবুও সময়ের সমান্তরালে <br />তাচ্ছিল্যের বাঁকা চোখ হয় ম্রিয়মাণ,<br />নীলাভ আকাশ জুড়ে কৃষ্ণ মেঘমালা<br />সরে যায় অনিবার্য নিয়মে,<br />বেদনা বিধুর বিরহের রোদন, <br />রাগিণী হয়ে সৌরভ ছড়ায় সময়ের প্রস্রবণে। <br />কুহকের কৃষ্ণতা গলে যায় <br />স্ফটিক স্বচ্ছ আলোকিত সময়ের উষ্ণতায়,<br />সময় জাগায় স্পন্দন অযুত প্রাণে প্রাণে,<br />অনন্ত মধ্যাহ্ন রাতের আঁধার মুছে দেয় সময় <br />আশা আর আলোর গানে গানে।<br /> -------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/katha-chhilona/কথা ছিলনা2020-08-28T04:15:37-04:002023-06-26T10:35:54-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>স্বপ্ন ছিল ----<br />গ্রীষ্মের তৃষিত চাতকের মতোন <br />স্বাধীকার তৃষ্ণায় ছুঁয়ে যাবে <br />আরাধ্য শীতল শান্তির বাতায়ন, <br />উড়বো ঝাঁক ঝাঁক গাঙচিল হয়ে সবাই <br />সুবাসিত বাতাসে অনন্তকাল, <br />কিষাণী গুনগুন কন্ঠে গাইবে নবান্নের গীত, <br />তরুণ বাঁশিতে তুলবে সুর সুমধুর, <br />কিশোরীর নুপুর ধ্বনির মূর্ছনায় মুখরিত হবে নির্জন রোদেলা দুপুর, <br />বাবার ঘর্মাক্ত দেহখানি জিরিয়ে নেবে <br />গাঙের ঝিরিঝিরি বাতাসে, <br />মায়ের টানাপোড়েনের বেদনার অশ্রুতে আর ভিজবেনা উদাসী আঁচল, <br />বোনের আলতা পায়ের রঙে রাঙা হবে<br />বিবর্ণ গ্রামখানি। </p>
<br /><p>একাত্তরে রক্তঝরা দুঃসহ দিনে ---- <br />বেয়নেটের তীক্ষ্ণ খোঁচায় ভাইয়ের সুঠাম দেহের রক্ত, বীরাঙ্গনা বোনের সবুজ শাড়ির জমিন ছুঁয়ে আলোর শুভ্রতায়<br />ভূমিষ্ট হলো দর্পিত পতাকার। <br />জনম জনমের দাসত্বের জিঞ্জির ছিঁড়ে<br />মুক্ত বিহঙ্গের আকাশ ছোঁয়ার স্বাধীনতা <br />আনলো রক্তের প্লাবনে <br />আর<br />কুমারিত্ব হারানোর আমৃত্যু নীলাভ বেদনার অশ্রুতে। </p>
<br /><p>এমনতো কথা ছিলনা ---- <br />অক্টোপাসের অনিবার্য গ্রাসে বিলীন হবে <br />আজন্ম লালিত নন্দিত আয়োজন, <br />ঔপনিবেশিক আদিমতায় বুভুক্ষু <br />আকন্ঠ পান করবে মানুষের স্বপ্নিল ফসল, <br />দাবীর মিছিলে মুখর রাজপথে ঝরবে<br />রক্তকরবীর বেদনার পাপড়িগুলো, <br />বাবার দীর্ঘশ্বাস আর মায়ের স্বপ্নময় চোখে তপ্ত অশ্রুপাত ফুরাবেনা রাক্ষসপুরে, <br />তরুণীর সম্ভ্রম ব্যবচ্ছেদ করবে ক্ষুধার্ত শকুন, <br />বণিকের লুটেরা তৃষ্ণার জল হবে<br />অগ্নিঝরা তরুণ কন্ঠে রাজপথ কাঁপানো শোষণের শৃঙ্খল ছেঁড়ার রাজনীতি।</p>
<br /><p>এমনতো কথা ছিলনা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nari-o-prakriti/ নারী ও প্রকৃতি 2020-08-14T01:42:37-04:002023-06-27T03:07:48-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>প্রজাপতির ডনায় আঁকা রংধনু রং <br />আলপনা দেখে হৃদয়ের অলিন্দে ছড়াও আবীর,<br />ছুঁয়ো না প্রজাপতিকে <br />----- উবে যাবে অপার সৌন্দর্য, নিমেষেই। </p>
<br /><p>স্নিগ্ধ সকালের ফুল, সৌরভ ছড়াবেই, <br />বর্ণিল দলে মৌমিতা ছুটবে অহর্নিশ,<br />এমন পাষাণ কঠোর হাতের ছোঁয়ায় তোমার,<br />ক্ষতবিক্ষত করোনা পাপড়ি<br />---- বর্ণিল রং, সুগন্ধ বিলাস, রূপ তার, বিলীন হবে মৃত্তিকায়। </p>
<br /><p>করোনা সংহার নির্মোহ, উদার অকৃপণ দাতা বৃক্ষকে, <br />ফলে, ছায়ায়, নির্মল নিশ্বাসে বাঁচায় প্রাণ বৃক্ষ, তাবৎ পৃথিবীর <br />----- বিদীর্ণ হবে তোমার জন্যে প্রাণের কোলাহল, <br />মরুময় হবে সবুজের স্নিগ্ধ বনভূমি, তোমারই জন্যে । </p>
<br /><p>পাখি গায় সুকন্ঠে, এক চিলতে সুখ ছড়ায় বিষন্ন মনের সাহারায়,<br />অনাবিল প্রেম তার বিচূর্ণ করো, হত্যা করো তুমি ভোগের লিপ্সায় <br />---- পৃথিবীর চৌপাশ প্রেমহীন, ছন্দহীন করোনা, বুভুক্ষুর ক্ষুধার্ত আগ্রাসনে।</p>
<br /><p>কলকল বয়ে চলা নদী, একবুক মমতার অশ্রুতে ফলায় ফসল, আমাদের জীবনের জন্যে <br />---- নদীকে করো তুমি ধর্ষিতা, কলঙ্কিতা, বন্ধ্যা, বর্জ্যের কৃষ্ণতায়। </p>
<br /><p>নারীও নদীর মতোন, ফুল পাখি প্রজাপতি আর ফলদ ছায়াবৃক্ষের মতোন, <br />অপার চাঁদ জোছনার মতো আরক্ত করে মন, নারী, <br />অতনু স্নিগ্ধ ছোঁয়ায় থামায় সে রুদ্র বৈশাখী ঝড়, জিঘাংসুর হিংস্র দাবানল<br />----- তাকে ছিন্নভিন্ন করো, কলুষিত করো, পণ্য করে গড়ো বৈভব সম্ভার, <br />সীতার অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়<br />তাকে বারংবার,<br />অদৃশ্য তন্তুয় বন্দী নারী অনন্ত প্রহর জুড়ে। </p>
<br /><p>প্রকৃতি অতন্দ্র, মায়ের মমতায় ছড়ায় প্রাণের স্পন্দন। <br />নারীও মায়াবী ভালোবাসার উষ্ণতায় জাগায় জীবনের চাঞ্চল্য।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/sukh/ সুখ (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি) 2020-08-11T03:06:23-04:002023-06-26T10:36:17-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বিহঙ্গ মন উড়িছে, সুখের বিহনে, <br />সুখের ঠিকানাহীন, সারাটি জীবন, <br />মায়াবী জোছনা নিয়ে, সুখ রহে স্বপ্নে <br />---- দেখায় অলীক মায়া, পোহায় যৌবন। </p>
<br /><p>সুখের অতনু দেহ, ভাসে তৃষ্ণা নদে, <br />সন্তোষ হারায় ধনী, দূর অজানায়, <br />সমুদ্রে মিলায় সুখ, বেদনার বোধে, <br />সন্ধ্যা নামায় আঁধার, জীবন ফুরায়। </p>
<br /><p>দরিদ্র নির্লোভ মনে, সেবিছে ঈশ্বর, <br />কৃতজ্ঞতা চিত্তে সদা, যা দিয়েছে তারে, <br />সন্তোষে আকীর্ণ মন, চৈতন্য নশ্বর, <br />নীরবে নিভৃতে কাটে, সুখের প্রহরে। </p>
<br /><p>লোভাতুর মনে নাহি সুখের বিশ্বাস,<br />তুষ্টের প্রাসাদে সদা, স্বস্তির নিশ্বাস।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/okal-prosthan/ অকাল প্রস্থান (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি)2020-08-08T13:50:11-04:002023-06-26T10:36:05-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ব্যথাকে শিশির করে, ছড়ায়ে অলিন্দে, <br />পাথর সময়ে ফেলে, গেলে অবেলায়, <br />তুমুল ঝড়ের তোড়ে , ভাঙনের ছন্দে<br />নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে, দূর অজানায়। </p>
<br /><p>তারা রূপে আচমকা, ছায়াপথ ছিঁড়ে, <br />প্রিয় নিবাস আবাস, সবি গেলে ভুলে, <br />কর্মের প্রাঞ্জল কীর্তি, ভাসে অশ্রু নীরে, <br />ডায়েরির পাতাগুলো, একা কথা বলে। </p>
<br /><p>অনিবার্য সত্য তুমি, করিলে বরণ, <br />নির্মম নিষ্ঠুর সত্য, অন্ধ অবিচল, <br />মানেনা নক্ষত্র তিথি, বয়স, বারণ , <br />অসীমে বিরাজ তার --- ব্রহ্মাণ্ড ভূতল। </p>
<br /><p>নির্মল কর্মের ভেলা, নির্ভীক বাহন, <br />শির নত করে সব ---- সত্য ও মরণ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/ovishap/অভিশাপ (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি) 2020-08-06T02:32:12-04:002023-06-26T10:36:06-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>হাজার বছর ধরে, চলেছি বাংলায়, <br />ঘর্মাক্ত দেহে চষেছি, মাঠে ফসলের, <br />যান্ত্রিক চাকায় মন, কর্মের বেলায়, <br />গড়ে চলি রম্য সৌধ, তোমার বাসের। </p>
<br /><p>নির্লোভ আকাঙ্খা শুধু, নির্মল জীবন, <br />শান্তির লিপ্সায় সদা, পোহায় গোধূলি,<br />জোটেনা শ্রমের মূল্য, ক্ষোভে ভরে মন, <br />উনুনে চড়েনা হাঁড়ি, তুমি খেলো হোলি। </p>
<br /><p>আর কতকাল নেবে, অধিকার কেড়ে, <br />গড়েছো অঢেল বিত্ত, নিয়ম বিকিয়ে,<br />শাসনে শোষণে দর্পে, লোলুপ আঁচড়ে,<br />ভেঙেছো নির্মল শান্তি, পাষাণ হৃদয়ে। </p>
<br /><p>অভিশাপ দিচ্ছি জ্বলো, অনন্ত দহনে,<br />অনিবার্য পরকালে, নির্জলা নির্জনে ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/preter-nogori/ প্রেতের নগরী (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি)2020-08-03T02:08:16-04:002023-06-26T10:36:08-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>দিনে দিনে বেড়ে চলে, প্রেতের নগরী, <br />প্রেতেরা চলিছে সদা, শোভিত বসনে, <br />বুভুক্ষুর গ্রাসে হয় , সর্ব অধিকারী ,<br />অতৃপ্ত তৃষ্ণা তাদের, অর্থ খ্যাতি মানে। </p>
<br /><p>তরুণ মোহিত হয়, মধুময় বোলে, <br />প্রতিবাদী কেউ নেই, নীরব দাসত্ব, <br />তরুণী হারায় মান, কূটিল শৃৃঙ্খলে,<br />জ্ঞানী গুণী অগোচরে---- ত্রাসের রাজত্ব। </p>
<br /><p>রোগীর ঔষধ লুটে, সেবা নাহি জোটে,<br />প্রতারণা লুকোচুরি, নিত্যকার খেলা, <br />মানুষের ভাগ্য লুফে, হাসি তার ঠোঁটে, <br />দীনের দুখের দিনে, ক্লেশে কাটে বেলা। </p>
<br /><p>একতার রঙে রঙে, সাজালে অন্তর, <br />ভয়ে প্রেত দূর হবে, ছাড়িয়া নগর।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nadi/নদী (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি)2020-08-01T14:37:12-04:002023-06-26T10:36:00-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>স্বচ্ছ নির্ঝর মায়ের, মায়াবী তনয়া, <br />সমুদ্রের অভিসারে, ছুটে চলো দূরে,<br />বুকের অলিন্দে নাও, কৃষ্ণ বর্জ্য কায়া,<br />পৃথিবী নির্মল করো --- আপনার নীরে। </p>
<br /><p>সবুজে আকীর্ণ ক্ষেতে, বিমুগ্ধ কিষাণী,<br />তীরের শ্যাম ছায়ায়, মাছ ধরে জেলে, <br />ভাটিয়ালি সুরে চলে, পালের তরণী, <br />দু'কূলে স্বর্ণ ফসলে, মাঠ ভরে দিলে। </p>
<br /><p>নীরবে দুষ্কর্ম সব, নদী সহে যায়, <br />লোভাতুর গ্রাসে করে, পলি-বর্জ্য-দেহী, <br />ক্রোধে ফুঁসে ভাঙে কূল, প্লাবনে ভাসায়,<br />মানুষের দোষ ঢেকে, বানায় বিদ্রোহী । </p>
<br /><p>নদীর মতো জীবন, দেশ প্রেমিকের, <br />দানে প্রাণ, আনে মুক্তি, দ্রোহী অন্যায়ের।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bandhu/বন্ধু 2020-07-30T18:30:03-04:002023-06-26T10:35:36-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>বন্ধু মানে, দুরন্ত কৈশোরের অনাবিল আনন্দ আর<br />হৃদয়ের উচ্ছ্বাসের ভাগিদার।<br />বন্ধু মানে, মানঅভিমাননের লুকোচুরি<br />খেলতে খেলতে অনন্ত আঁধারে <br />কাছে পাওয়া। <br />বন্ধু মানে, অনাবিল হলুূদ জোছনায়<br />সুখগুলো দিয়ে অলিন্দ রাঙানোর উৎসবে আপ্লূত প্রিয়জন। </p>
<br /><p>বয়সের সীমা চিহ্নহীন কর্মে বিভোর মানুষের ভীড়ে ---<br />বন্ধু মানে, কণ্টকাকীর্ণ পথের মাঝে <br />হাতে হাত ছুঁয়ে বিশ্বাসের বর্ম নিয়ে<br />ঝাঁক ঝাঁক বুলেটের স্রোতে নির্ভয় সহযাত্রী।<br />বন্ধু মানে, সহায়হীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার আমৃত্যু ছায়াতরু। <br />বন্ধু মানে, দানবের নখরে রুদ্ধ সম্ভ্রম রক্ষায় তরুণীর সহযোদ্ধা। <br />বন্ধু মানে, নিরন্ন অবুঝ শিশুর অশ্রুসজল মায়ের আলোর দিশা। <br />বন্ধু মানে, অনন্ত রাতের প্রহরে যেখানে খেলা করে অর্থের অতৃপ্ত প্রেতাত্মা,<br />খুঁড়ে খুঁড়ে খায় মানুষের অধিকার ----<br />মানুষের পাশে নির্ভীক যে। <br />বন্ধু মানে --- তৃপ্ত, তুষ্ট, নির্লোভী, <br />সমুদ্রের মতোন মনের বিশালতায় আবিষ্ট, <br />আকাশের ঔদার্য ছুঁয়েছে যারে, <br />সংকটে, নক্ষত্রহীন রাতে হাতটা ছুঁয়ে<br />শঙ্কাহীন করবে জীবন যেজন<br />---- বন্ধু বন্ধু বন্ধু, সে-ই তো বন্ধু।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/socrates/সক্রেটিস (সনেট, পেত্রার্কীয় রীতি)2020-07-29T15:15:47-04:002023-06-26T10:36:13-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অনিয়মে বিদ্ধ হয়ে রুদ্ধ পৃথিবীর <br />যুগে যুগে,দেশে দেশে,সত্যের সংকটে,<br />নীলাভ বেদনা মাখা, দুখের প্রকটে,<br />সক্রেটিস বয়ে আনে আলোর শিশির। কুহকে ক্লিষ্ট মানুষ, দুখের বিধির, <br />অনন্ত মধ্যাহ্ন রাত,তাই নাহি কাটে।<br />দিশারীর আশে বসে, জীবনের ঘাটে,<br />ভাঙতে বিভোর মানুষ, শৃঙ্খল প্রাচীর। </p>
<br /><p>দুঃশীল দুরাত্মা লভে, শাসনের দণ্ড,<br />হেমলকে পূর্ণ করে, সবুজ অরণ্য, <br />সক্রেটিস অবরুদ্ধ, নিষ্ক্রিয় নির্জনে, <br />অন্যায় নিয়ম হয়,সাধু রূপে ভণ্ড।<br />পৃথিবী উঠুক মেতে, বোধে হোক ধন্য, <br />মিথ্যারে করো বন্দী, দাও নির্বাসনেে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/darpochurno/দর্পচূর্ণ (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি)2020-07-24T02:16:59-04:002023-06-26T10:35:43-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>চলেছি অযুত বর্ষ, হয়ে সব সাথী, <br />জীবনের বৈরী ঝড়ে, অস্তিত্বের রণে।<br />স্বার্থে লোভে মত্ত জন, ত্রাতা বিশ্বপতি<br />পারেনি সাম্যকে দিতে, মানব জীবনে। </p>
<br /><p>সৌকর্য সম্ভারে হলো, জগত অনন্যা,<br />নির্বাসিতা প্রেম মায়া -- রয় দম্ভ দ্বেষ, <br />নিগৃহীত নারী, শিশু, বহে রক্ত বন্যা, <br />লুকোচুরি খেলা চলে, সত্যযুগ শেষ । </p>
<br /><p>মৃত্যুর মিছিল বহে জগত বিস্তারি,<br />করোনা অদৃশ্য শক্তি, বিশ্বময় ত্রাসে,<br />পরাশক্তি, প্রমত্তও, জীবন ভিখারি <br />--- পাপিষ্ঠের দর্পচূর্ণ হলো অবশেষে।<br /> <br />হৃদয় প্রসার করি, জাগাও ভরসা, <br />স্বার্থের শেকল ছিঁড়ে, দাও ভালোবাসা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/jibon-o-dukkho/জীবন ও দুঃখ (সনেট, পেত্রার্কীয় রীতি)2020-07-22T02:53:20-04:002023-06-26T10:35:51-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>নীলাভ বেদনা উড়ে মনের আকাশে,<br />আসেনি আপন হয়ে পাথর বেলায়। <br />রোদন মূর্ছনা ঝরে বিবর্ণ সন্ধ্যায়, <br />আঁধার নেমেছে ধীরে হিমেল বাতাসে। রাতের অমানিশায় জোনাকিরা পাশে <br />এনেছে শান্তি মায়ায়, আলোর শিখায়।<br />চাঁদ জোছনায় দিল সুবাসিত বায়, <br />নক্ষত্র-ছায়ায় কাটে, সূর্যের নিঃশেষে। </p>
<br /><p>দুখের গহীন বনে, অসহ রোদনে<br />আসেনা সুখের পাখি---বিমোহিত প্রাণ। <br />দুঃখরে করোরে জয় জ্ঞানের সৌরভে, <br />মিলবে গৌরব গাথা, সহায় বিহনে।<br />পৃথিবীতে রটে যাবে দীপ্ত জয়গান,<br />এ জীবন পূর্ণ হবে বিজয় গৌরবে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/amanus/ অমানুষ (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি) 2020-07-20T02:54:26-04:002023-06-26T10:35:33-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>রম্যসাজে ছদ্মবেশ, খোলস তোমার, <br />মিথ্যারে সত্যের রূপে প্রচারো সমাজে,<br />স্বার্থের শৃঙ্খলে বাঁধো জন-অধিকার<br />নিঃস্ব হয়যে মানুষ তোমার কুকাজে। </p>
<br /><p>নারীর সম্ভ্রম হরো, নির্মম নির্দয় ! <br />নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ, হয় বলিদান,<br />গরীবের ত্রাণ লুটো, গ্রাসিলে আশ্রয়, <br />মজুদ বাড়িয়ে করো উচ্চ মূল্যমান। </p>
<br /><p>যুদ্ধ-দামামা বাজাও, শান্তির ভূতলে , <br />রক্তগঙ্গা বয়ে চলে স্বদেশে বিদেশে, <br />উদ্বাস্তু মানুষ কাঁদে আকাশের তলে,<br />ভ্রুক্ষেপ নাই তোমার, ক্ষমতার আশে। </p>
<br /><p>ফিরিয়ে নাও তোমার মুক্ত তরবারি, <br />মানুষেরে ভালোবাসো, বর্ষো শান্তি বারি।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/chor-chor/ চোর চোর (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি) 2020-07-18T06:02:06-04:002023-06-26T10:35:41-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অনটনে কাটে বেলা, নাই কোন কাজ,<br />ক্ষুধার দহনে জ্বলে, পুড়ে যায় মন,<br />চুরির দায়েতে তারে দিলে শত লাজ,<br />মুণ্ডিত মাথায় ঘুরে --- নিন্দিত জীবন। </p>
<br /><p>দেশের সম্পদ লুটে সবার পুজিত , <br />ফুলেল আসনে বসে করে মিথ্যাচার,<br />গরীবের ধনে তার প্রাসাদ সৃজিত, <br />শোষণে শোষণে বাড়ে নিত্য অবিচার। </p>
<br /><p>দরিদ্র ভিখারি হয়ে ঘুরে দ্বারে দ্বারে,<br />জনতা নীরব রয় রক্তচক্ষু ভয়ে, <br />লুকোচুরি ছলাকলা চলে নির্বিচারে, <br />কঠিন পাথর বেলা দেশে যায় বয়ে। <br /> <br />রঙিন মুখোশে ঢাকা, চিনেনাতো চোর,<br />ছিন্নমূল ছিন্নবেশে খুঁজতে বিভোর।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/brikhma-o-manus/বৃক্ষ ও মানুষ (সনেট, শেক্সপীয়রীয়ান রীতি)2020-07-16T05:08:34-04:002023-06-26T10:35:40-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>প্রকৃতি তনয়া বৃক্ষ, আলো অভিসারী, <br />মৃন্ময় পূত নির্যাস পান করে যায়<br />পঙ্কিল কদর্য রস পরিহার করি,<br />অবারিত প্রেম তার জগত রক্ষায়। </p>
<br /><p>বাতাস নির্মল করে বাঁচায় জীবন, <br />প্রাণের প্রবাহ বয় অনন্ত প্রহরে,<br />ফুল ফল ছায়া দিয়ে বিলায় মোহন,<br />অশ্রুহীন রবহীন যবে ছিন্ন করে। </p>
<br /><p>পশু পাখি প্রাণী সব আনন্দমেলাতে<br />পোহায় প্রসন্ন বেলা মাতৃময় স্নেহে,<br />রুদ্র তাপে, বন্যা ঝড়ে অতন্দ্র সেবাতে<br />ধর্ম তার নিবেদনে, নির্লোভ নির্মোহে। </p>
<br /><p>মানুষ হারায় ধর্ম স্বার্থের আবেশে, <br />লোভ তারে নিয়ে যায় পাপের মুখোশে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/rupkather-rajkumer-asbe/রূপকথার রাজকুমার আসবে (সনেট, শেক্সপীরীয় রীতি) 2020-07-14T02:31:21-04:002023-06-26T10:36:10-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ফসলে আকীর্ণ দেশ রাক্ষস কবলে, <br />নীরব হলো মানুষ --- নির্বাক পুতুল,<br />বুভুক্ষুর গ্রাসে সব তৃষ্ণার অনলে,<br />প্রাসাদ নিস্তব্ধ হল, নিদ্রায় শীতল। </p>
<br /><p>রাজকন্যা জেগে রয় উৎকন্ঠা মনে,<br />কখন জাগবে সব বীরত্বের বেশে,<br />রাজপুত্র দেবে বল ভয়ময় প্রাণে,<br />মুক্ত হবে সর্বজন অবরুদ্ধ দেশে। </p>
<br /><p>সোনায় মোড়ানো দেশ অনিয়মে বিদ্ধ, <br />মানুষের অধিকার লুটে নেয় চোর,<br />মৃন্ময় কোমল মন বেদনায় দগ্ধ, <br />অনন্ত মধ্যাহ্ন রাত হয়নাকো ভোর। </p>
<br /><p>তেজস্বী রাজকুমার রাক্ষস বধিবে,<br />শৃঙ্খল খুলবে সব, সুষমা ছড়াবে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/mukhosh/মুখোশ (সনেট, শেক্সপীরীয় রীতি) 2020-07-11T14:31:53-04:002023-06-26T10:36:00-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>অমানুষ ঢাকে মন লুকোচুরি ফাঁদে,<br />সুরম্য মুখোশ তলে রূঢ় রূপ তার।<br />অর্থের তৃষ্ণার শরে দীন দুস্থ কাঁদে,<br />অলীক ভাষণ বেয়ে নামে হাহাকার। </p>
<br /><p>নটের কুহক রূপে, অর্থের দাপটে <br />অমূল্য আসন পায় লোক শাসনের।<br />অযোগ্য অথর্ব যারা, গড়ে অর্থ লুটে,<br />ছিনিমিনি খেলে যায় ভাগ্যে মানুষের। </p>
<br /><p>দিন যায় যুগ যায় ঘুচেনা অভাব, <br />অর্থ দিয়ে কিনে নেয় পদ অবিরাম।<br />দেশদ্রোহী হয়ে যায়, না থাকিলে ভাব, <br />প্রাণ যায় মান যায় প্রতিবাদ পরিনাম। </p>
<br /><p>আছে শুরু আছে শেষ, উল্টায় গণেশ, <br />বিবর্তন হয়ে গেলে খেল তবে শেষ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/prokritir-protishodh/প্রকৃতির প্রতিশোধ (সনেট, শেক্সপীরীয় রীতি)2020-07-10T07:30:15-04:002023-06-26T10:36:08-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>তোমার আরাধ্য ধর্ম, বৃক্ষ-ধর্ম রূপ<br />---পরধনে তৃষ্ণাহীন, ত্যাগই জীবন।<br />উজাড় করলে বন, প্রাণীরা বিরূপ, <br />বাস্তুহারা অসহায়ে ছড়ালে ক্রন্দন। </p>
<br /><p>নির্দয় আগ্রাসী তরে কলুষিত ধরা<br />বৃক্ষ প্রাণী মাটি জল করলে ধ্বংস, <br />হলে তুমি স্বৈরাচারী প্রকৃতির খরা,<br />শ্রেষ্ঠ তাই ছলে বলে বনলে কংস। </p>
<br /><p>হিরোশিমা নাগাসাকি দুঃস্বপ্নে মানুষ, <br />রক্তগঙ্গা বয়ে চলে এপাশ ওপাশ।<br />ক্ষুধা যুদ্ধ খুন গুমে করেছো কলুষ,<br />পৃথিবীকে করে দিলে চলমান লাশ। </p>
<br /><p>ঝড় বন্যা মহামারী প্রকাশিল ক্ষোভ,<br />রাজা তুমি শ্রেষ্ঠ তুমি, পাপ হল লোভ।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/jibon-boyan/জীবন বয়ান (সনেট) 2020-07-07T03:01:09-04:002023-06-26T10:35:51-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আমি মনে মনে যাই দূরে বহু দূরে<br />কৈশোরের চমকিত বর্ণিল পাতায়, <br />যৌবনে আপোষহীন দুর্বিনীত বায়,<br />সৃষ্টির উদয়রাগে, ছন্দময় সুরে। <br />নিঃস্বের ক্রন্দনরোলে অশ্রু ঝরে পড়ে <br />যেন অনন্ত জীবনে ছিলাম মায়ায়।<br />সাদা আর কালো, নিঃস্ব দীন অসহায়<br />সাম্যের বাঁধনে রাখি মমতার নীড়ে। </p>
<br /><p>প্রহর পোহায়, নামে জীর্ণতা জীবনে, <br />দিনে দিনে রুদ্ধ হয় কঠোর শৃঙ্খলে, <br />উড্ডীন চিলের ডানা ক্লান্ত অবসাদে, <br />সাঁঝের বেলায় ফিরে দিন অবসানে, <br />অপূর্ণ বেদনা বিঁধে স্মৃতির অতলে <br /> মন ভুবে অস্তরাগে অন্তিম প্রাসাদে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/swapnara/স্বপ্নরা (সনেট, পেত্রার্কীয় রীতি) 2020-07-04T19:09:26-04:002023-06-26T10:36:17-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আমাদের স্বপ্নগুলো শুভ্র মেঘ হয়ে<br />উড়ে মনে বৃষ্টিহীন আহরাত দিন,<br />উষর-মরুর তাপে মন করে ক্ষীণ,<br />বুভুক্ষু গ্রাসে নির্যাস, অভাব আলয়ে,<br />মেধা সামর্থ্য সম্ভার ব্যর্থ হয় জয়ে,<br />অকর্মা লভিল পদ কাজে অর্বাচীন, <br />উদ্ভট পশুর পিঠে কাটে সব দিন,<br />নারী, শিশু, দীন, মানি কাঁপে ত্রাসে ভয়ে। </p>
<br /><p>স্বপ্নের ফেরিওয়ালা রুদ্ধ কারাগৃহে,<br />অন্যায় নিয়ম হয়ে গর্জে অবিরাম। <br />ভাঙরে পাষাণ কারা, মুক্ত করো বীর,<br />বাজাবে ঐক্যের বীণ, বল দেবে দেহে,<br />শৃঙ্খল ছিঁড়বে বীর দেশ হবে ধাম,<br />স্বপ্নরা সত্যি হবেই, শান্তি পাবে নীড়।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nirlipto-joubonke/নির্লিপ্ত যৌবনকে (সনেট)2020-07-03T04:36:04-04:002023-06-26T10:36:03-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>নিঃস্ব জন অনটন ঘুচাতে কাহিল, <br />কেউ নেই জনারণ্যে অভাব ঘুচার।<br />নির্দয় রূঢ় মানব সর্বস্ব লভিল,<br />ধর্ম, কৃষ্টি, যশ, অর্থ সব গ্রাসে তার৷ <br />ঈঙ্গিতে তার নিষ্পাপ ভোগে পাপ কারা, <br />লুটে ভাগ্য দরিদ্রের, দেশ হয় জীর্ণ, <br />স্বাধীনতার স্বপ্নরা সব দিশেহার, <br />অনন্ত মধ্যাহ্ন রাতে জীবন আকীর্ণ। </p>
<br /><p>কুহকে কুহকে ভরা সুবচন তার,<br />বিমোহিত জনগণ ভোগে আজীবন,<br />লুটে বারবার ধন রতন সবার,<br />তবু কেন শঙ্কা এত, নির্লিপ্ত যৌবন ! <br />যেমনি উড়ালো দর্প ধ্বজা স্বাধীকার,<br />অনিয়ম অসুন্দর করোরে নিধন।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/karunamoy-samipe/করুণাময় সমীপে (সনেট) 2020-06-28T15:37:41-04:002023-06-26T10:35:53-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>হে করুণাময় ! তোমার মানসকন্যা <br />পৃথিবী জুড়ে আজ বোবা বেদন-বন্যা।<br />বোনের বৈধব্যের শুভ্র শ্বেত আঁচলে<br />আদ্র হয়ে যায় শোকের চোখের জলে।<br />মানুষ শিহরি উঠে আতঙ্কে শঙ্কায়, <br />মৃত্যুর মিছিল বয়ে চলে মৃত্তিকায়। <br />চঞ্চল ত্রস্ত নগরী নির্লিপ্ত নির্জীব,<br />রুদ্ধ হলো কবি কন্ঠ, নিরুদ্ধ সজীব। </p>
<br /><p>তুমি উড়ন্ত মেঘে সুখের বৃষ্টি দাও,<br />হাসি আনন্দ বিলিয়ে দুঃখ তুলে নাও।<br />তুমি শৃঙ্খল ছিন্ন করো বন্দী শিশুর,<br />ধুয়ে দাও আদ্র তপ্ত অশ্রু পৃথিবীর।<br />জাগাও আবার তুমি কর্মের চাঞ্চল্য, <br />মানুষের মাঝে জাগাও শিশু-সারল্য।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/apon-nibas/আপন নিবাস2020-06-23T18:40:38-04:002023-06-27T06:20:05-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>কারো দেহের ধোঁয়া শূন্যে মিলায়,<br />কারো কারো দেহ মিশে মৃত্তিকায়।<br />পৃথিবীটা ক্ষণিকের পান্থশালা, <br />আমার আমার মিছে মায়াখেলা।<br />থাকে স্মৃতি স্বজন হৃদয় জুড়ে,<br />আপন নিবাস দূরে বহুদূরে।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/karona-gatha/করোনা গাথা2020-06-05T15:53:04-04:002023-06-26T10:35:53-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>করোনা মানুষের মূল্যবোধের বিস্তারে জাগিয়ে তুলছে নবীন কিশলয়,<br />মানুষের দাম্ভিকতা, মনের কৃষ্ণ অচলায়তন,<br />প্রচলিত জীর্ণ বৃদ্ধ বিশ্বাসকে চূর্ণবিচূর্ণ করছে।<br />দুঃস্থ দুঃসহ মানুষের কল্যাণবিমুখ শাসক পারমাণবিক শক্তিমত্তায় লিপ্ত উন্মাদদের রূঢ়তাকে অসার, অর্থহীন করেছে করোনা৷ <br />করোনা মনুষ্য সৃষ্ট সীমাচিহ্ন, কাঁটাতার ছিন্নভিন্ন করে বিশ্ববোধের নন্দিত পরাগে আকীর্ণ করেছে নিরেট পাষাণ মন। <br />করোনা শিখিয়েছে নিয়ম <br />--- অনিয়মকে যে মানুষ করেছে নিয়ম। </p>
<br /><p>বিজ্ঞানের অব্যর্থ শরে বিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত দেহে অন্তর্ধান হবে করোনা। <br />তবু্ও চেতনার রঙে রঙে সাজিয়ে যাবে পৃথিবীতে মানবতার দীর্ঘ পোট্রের্ট। <br />করোনার ঈঙ্গিতে পদ্ম ফোটবে বন্ধ্যা সরোবরে,<br />রঙিন ডলফিন খেলবে নিঃশঙ্ক, <br />পাখি প্রজাপতি হরিণ চিল পোহাবে প্রসন্ন বেলা,<br />মানুষের কাছে লাঞ্ছিতা ধর্ষিতা প্রকৃতির<br />জরায়ু ছিঁড়ে প্রসব করাবে নতুন এক পৃথিবী।</p>
<br /><p>মানুষ আবার কলুষিত করবে সেই আরাধ্য পৃথিবী। <br />নারীর সম্ভ্রম হারানোর বেদনার তপ্ত অশ্রুতে<br />লোনা হবে মৃন্ময় মৃত্তিকার কোমলতা,<br />মিসিসিপি ইউফ্রেটিস নীলনদ গঙ্গা হবে রক্তগঙ্গা,<br />নির্দয় মানুষ আবার বোমা ফাটিয়ে হত্যা করবে গর্ভবতী পশুকে। <br />মানুষের দুর্নিবার চাওয়ায় বিপর্যস্ত প্রকৃতি<br />জন্ম দেবে অসংখ্যবার মহামারী, <br />তবুও মানুষ, মানুষ হবে না। <br />দাম্ভিকতায় লোভে লালসায় মশগুল মানুষ ভুলে যায় সব, ভুলে যাওয়ার ইতিহাস তার।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/shironamheen/শিরোনামহীন 2020-05-23T13:47:30-04:002023-06-26T10:36:12-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>লেখকেরা সমাজের স্বপ্নদ্রষ্টা, <br />অসুন্দর পঙ্কে নিমগ্ন তপস্যায় শতদল ফোটায়,<br />নিজেকে ক্ষয়ে ক্ষয়ে আগরের মতোন <br />সৌরভ ছড়ায় পুঁতিগন্ধময় বিস্তারে। <br />হোক না পথ তাদের কণ্টকাকীর্ণ,<br />দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে বন্দী<br />তবু তারা স্পার্টাকাসের মতো নিরেট শৃঙ্খল ছিঁড়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়াল দিতে স্বপ্ন দেখায় মানুষকে। </p>
<br /><p>তোমরা জানু নত করো না, হে কালেরকন্ঠ!<br />তোমরা অন্ধ অন্ধকার ছিন্নভিন্ন করে পথচলা পথিক, <br />হালভাঙা পথহারা নাবিকের দিশাতারা।<br />তোমরা নতুন দিনের সুপ্রভাতের ফেরিওয়ালা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/bhrasta-prithibir-galpo/ভ্রষ্টা পৃথিবীর গল্প2020-01-24T14:47:31-05:002023-06-26T10:35:38-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>এ কোন পৃথিবীতে নির্বাসিত করলে আমায়, <br />হে আমার ঈশ্বর!<br />নীল আসমানে ছড়ালে মেঘমালায় আবীর, <br />কৃষ্ণ মেঘবালিকারে দিলে প্রাঞ্জল বারিধারা,<br />বর্ণিল ফুলে জুড়ে দিলে ভালোলাগার সৌরভ,<br />বিহঙ্গেরে দিলে অবারিত মুক্ত কন্ঠ গাহিবার, <br />নদী নিলো তৃষ্ণার জল আর মাটির প্রাণ,<br />মৃন্ময় জমিন পেলো ফল-ফসল সম্ভার,<br />পাহাড়ে দিলে ঝর্ণার স্ফটিক স্বচ্ছ জল, <br />নীলাভ সমুদ্রের বুকে বিশাল ঔদার্য।</p>
<br /><p>বিমাতার মতো মানুষকে কেন দিলে<br />জিঘাংসা, দ্বেষ, লোভ, আগ্রাসী যুদ্ধবাজ মন।<br />দিলে দর্প, ছলাকলা, লুকোচুরি, আদিমতা<br />আর<br />আত্মকেন্দ্রিকতার বিধ্বংসী ঘূর্ণি হৃদয়ে।</p>
<br /><p>মানুষের শোণিত বয়ে যায় বহতা নদীতে, <br />বারুদ আর বুলেটের স্ফুলিঙ্গে শঙ্কিত পৃথিবী,<br />হায়নার কাছে ধর্ষিতা হয় কন্যা জায়া জননী, <br />শোষণের আদিমতায় বাড়ে ব্যবধান মানুষে মানুষে,<br />শক্তির প্রমত্ত শর বিদ্ধ করে অতনু মানবতা,<br />বেদনার নীলাভ আবীর আরক্ত করে মন,<br />নিঃসহায় মানুষ মোমের আলোয় প্রদীপ্ত করতে চায় হাজার বছরের অন্ধকার অচলায়ত ---<br />ঝড়ের তান্ডবে বিলীন হয় নিমগ্ন আরতির শিখা।</p>
<br /><p>এ কোন পাপ গ্রহে সমর্পিত করলে আমায়, হে আমার ঈশ্বর! <br />আর কতকাল পোহাবো অনন্ত কৃষ্ণ প্রহর <br />এই নিষ্ঠুর নির্দয় মায়াবী জমিনে,<br />আর কতকাল বাইব জীবন-তরী এই ভ্রষ্টা পৃথিবীতে।<br /> ------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/keouto-apon-halona/কেউতো আপন হলোনা 2019-12-27T12:02:03-05:002023-06-26T10:35:54-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>কত পড়ন্ত বিকেল পোহালাম আকুলতায়<br />সমুদ্রের বালুচরে উজান বাতাসে,<br />জোছনার কত প্রহর ফুরালো কলকাকলীতে <br />--- তবুও আপন হলোনা নিরুদ্দেশী।<br />বন্ধু হয়ে এলো কেউ, অখন্ড বেলায় সঁপেছি ভালোবাসা, তাবৎ অবসর জলাঞ্জলি<br />--- তবুও হলোনা আপন নিষ্ক্রিয় বাসিন্দারা। <br />কাটলো স্বর্ণালী যৌবন জাগাতে সুপ্রভাত,<br />ফোটাতে স্বপ্নের সুরভিত বর্ণিল শতদল<br />--- তবুও আপন হলোনা আলোর অভিসারী।<br />হেঁয়ালি সায়াহ্নে দিলাম যাদের পথের দিশা<br />নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য লুটে হলো কৃপণ <br />--- তবুও আপন হলোনা অকৃতজ্ঞ পথিক। </p>
<br /><p>কেউতো আপন হলোনা, হয়না কখনো,<br />আপন করি নতুনেরে আবার সুখের সন্ধানে, <br />তারার মতো যায় তবু দূরে, বহুদূরে। <br />ভেবে ভেবে দুঃখ পাইনা আর, <br />নষ্টচাঁদের বেদনার মতো ঝরে অবিরাম আক্ষেপ, <br />নীরব ক্লান্ত যোদ্ধার মতোন স্পন্দিত হয় বুক,<br />পার হয় বেলা-অবেলায় দিন<br />পার হয় অলস বিকেল, সন্ধ্যা নামে ধীরে।<br /> -----------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/dusamoyer-galpokatha/দুঃসময়ের গল্পকথা2019-12-25T15:38:03-05:002023-06-26T10:35:43-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>একাত্তরে পোহালো প্রহর শকুনের উল্লাসে, <br />বাংলায় ফুটেছিল জলরঙে রাঙা লাল রক্তকরবী, <br />কিষাণ, শ্রমিক, ছাত্র, মজুর, চাকুরে---<br />হত্যা, সম্ভ্রমহানী,পরাধীনতার আঘ্রাণে<br />দ্রোহী হয়ে ভাইয়ের মতো যুদ্ধে গেলো,<br />শব্ধযোদ্ধা বাবার নীরব কৃষ্ণ পঙক্তিমালা<br />দুঃসহ তীর হয়ে বিঁধেছিলো শাসকের মর্মমূলে,<br />দোসরদের ঈঙ্গিতে উর্দি পড়া হানাদারের<br />বুলেটে ঝাঁঝরা হলো তাই বাবার বুকের পাঁজর, <br />পাষাণ মূর্তির মতো নিষ্পলক দেখলো নিঃসহায় কিশোর অনন্ত ও অনুজা।<br />মা বৈধব্যের পাথর বেলায় সন্তানের <br />আশ্রয়ে ছুটলেন স্বজনের দ্বারে দ্বারে,<br />--- জুটলোনা ঠাঁই নিরেট এই পাথর নগরে।</p>
<br /><p>যেতে হবে নৌকায় দূর গাঁয়ে স্বস্তির ছায়ায়,<br />লাশের গন্ধে ভারী হলো নদীর বাতাস, <br />মাঝির কন্ঠে আসেনা আর ভাটিয়ালি অবিরাম,<br />সুরহীন বাঁশি হাতে নিশ্চুপ বসে ভাবছে রাখাল,<br />দু'তীরে নীরব পাখিরা, হিন্দোলহীন কাশবন--<br />যেন নিস্তব্ধ রৌদ্রময় রাতে চলছে নিশ্চুপ ভয়ার্ত তরী<br />যাবে যমুনার তীরে দীন এক কৃষকের কাছে।<br />বেদনার রক্তাভ রঙ ঢেলে সূর্য গেল অস্তাচলে,<br />অফুরান আনন্দে বরণ করলো কিষাণ কিষাণী, <br />যেন নিমগ্ন আরাধনায় দেবীর আবির্ভাব<br />হজার বছরের একাগ্র তপস্যায়।</p>
<br /><p>নয়টি মাস পোহালো বিঘ্নহীন উদার আতিথ্যে।<br />ডিসেম্বরে বিজয়ের উল্লাসে ফিরলো অনন্তরা,<br />মিলনের আনন্দে উদ্বেলিত বাংলাদেশ, <br />ফিরলো অগ্রজ বিজয়ী বীরের গৌরবে,<br />আনন্দ-বেদনার অবিমিশ্র বাতায়ন<br />বয়েছিল মুক্ত জমিনে নীল সামিয়ানার নীচে, <br />স্বজনহারা মানুষ অতৃপ্ত আকাঙ্খায়<br />পথ চেয়ে পোহায় অপেক্ষার অন্তিম প্রহর। </p>
<br /><p>শহীদের তেপায়া মিনারে আজ ফুলেল শোভা, <br />নগরীর উচু ইমারত মেকি কথামালায় টইটম্বুর, <br />হুলিয়া নেই, নেই আত্মগোপন, নেই বুলেটের শঙ্কা<br />---শুধুই ভাঙছে নদী, বিলীন হয় কিষাণের বসতি,<br />গাঁয়ের হাট, মসজিদ, মন্দির, ফসলের মাঠ,<br />শুধুই যাচ্ছে নেকাব পড়া তরুণীরা হায়নার নগরে<br />কঠোর দুঃসহ সংকটে দিশার সন্ধানে, <br />শুধুই ভাঙছে অগ্রজের, বাবার লেখা স্বপ্নের ডানা,<br />বাড়ছেই বৈষম্য, লুটপাট,অবিচার, শোষণ<br />আর<br />নিরেট আত্মকেন্দ্রিক প্রেতাত্মা এই<br />বেদনা বিরহ সংকট দুঃসময়ের অচলায়তে।<br /> ---------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/nirlipto-ishwarer-proti/নির্লিপ্ত ঈশ্বরের প্রতি2019-12-17T06:38:49-05:002023-06-26T10:36:03-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>তুমি সৃষ্টি করলে ফুল, সৌরভ, ব্যাকুল প্রজাপতি <br />--- মানুষকে দিলেনা ফুলের মতো মন, <br />পাগল করা সুগন্ধ বিলাস, সুন্দর-পিয়াসী প্রবৃত্তি। <br />নীলাভ পাহাড় নিমগ্ন ভালোবাসায় বুক চিরে <br />জাগায় নির্মল স্ফটিক ঝর্ণা, বহতা নদী<br />ফুল ফসলের ঔদার্যে জুড়ায় মন পৃথিবীর <br />--- মানুষকে দিলেনা মুখোশহীন মানবতা,<br />দেওয়ার মতো স্বার্থহীন প্রকাণ্ড হৃদয়।<br />সমুদ্রকন্যা মেঘ, আদ্র বৃষ্টির ছন্দে <br />সবুজে সবুজে আকীর্ণ করে তপ্ত জনারণ্য,<br />আকাশ ঢেলে দেয় অঢেল নীল, সমুদ্রের বিশালতায়<br />মানুষ স্বস্তির বাতায়ন খোঁজে আকাশের কাছে, সমুদ্রের বেলাভূমিতে,মেঘ বৃষ্টি, পাহাড়, ফুলের কাছে <br />নিঃসহায় ভিখিরির মতোন। </p>
<br /><p>লুকোচুরি, মিথ্যা, কামুকতা, দ্বেষ, ছদ্মবেশ আর <br />জিঘাংসার আলপনায় সাজিয়েছো যুদ্ধংদেহী মানুষকে,<br />চিতা, সিংহ, নেকড়ের চেয়েও বেশি হিংস্রতায়<br />পৃথিবীর তাবৎ জীব আর স্বজাতকে করছে ছিন্নভিন্ন, লাঞ্ছিত, শোষিত, বিভাজিত, কলুষিত।<br />অহমিকার চোরাবালিতে অসহায় বন্দীর মতো<br />পোহায় বেলা, গোধূলিতে বাড়ে পাপের দীর্ঘ ছায়া, <br />ফুরায় জীবনের ব্যর্থ লেনদেন, ভষ্ম বিদীর্ণ করে<br />মৃন্ময় বুকের গভীরে বিলীন করো তার দাম্ভিক দেহখানি। <br /> ----------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/drohee/দ্রোহী2019-12-15T09:36:27-05:002023-06-26T10:35:43-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>তখন জোছনার স্নিগ্ধ যৌবনে প্রেমের বাতায়ন ছিলোনা,<br />আকাশের সন্ধ্যাতারার গোধূলি সঙ্গীতে<br />জুড়ালো না মন তরুণের, <br />ভালোবাসার গুণগুণ গুঞ্জন নিষ্ক্রিয় নিথর হলো<br />-- তখন ছিল মহাপ্রলয়, রক্তকরবীর পাপড়িতে আকীর্ণ এপাশ ওপাশ, <br />রক্তগঙ্গায় ভাসছিল বাংলাদেশ।</p>
<br /><p>মায়ের মমতার আজন্মের নিরেট শৃঙ্খল, <br />প্রেয়সীর দুর্লঙ্ঘ অনুরাগ তীর বিদ্ধ মরালের পালকের মতোন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে উড়লো নিঃসীম শূন্যতায়।<br />কবিতার পঙক্তিমালায় বারুদের গন্ধ, উদ্দীপ্ত সুর মূর্ছনায় উদ্বেলিত যুবক বাঁধনহীন বিহঙ্গের মতো উড়ন্ত ডানা ছড়াতে উদগ্রীব <br />হাজার বছরের আরাধ্য মুক্তির জন্যে।<br />মমতা, প্রেম, উর্দি পড়া শাসকের রক্তাভ চোখ, <br />ঝাঁক ঝাঁক বুলেটের স্রোত-- কোন জিঞ্জির তাকে রুদ্ধ করতে পারেনি।<br />বৈষম্য, শোষণ, তাচ্ছিল্য, বহতা নদীর দু'ধারে অবরুদ্ধ এই মানচিত্রে মানুষের ক্রন্দনরোল,<br />মৃন্ময় উঠোন বেয়ে বয়ে যাওয়া বাবার রক্তের উষ্ণ উত্তাপ,<br />অনুজার সম্ভ্রম বাঁচাতে নিঃসহায় আর্তনাদ <br />-- তাকে হিংস্র সিংহের মতো উন্মাদ বানালো।</p>
<br /><p>তখন তার দ্রোহী হওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়,<br />সবুজে সবুজে আচ্ছন্ন বিস্তৃত ময়দানে<br />নতুন অরুণোদয়ের স্বপ্নময় সুপ্রভাতের স্বপ্নে, <br />রুদ্ধ কপাট ভেঙে মৃত্তিকায় গর্বিত কিশলয়ে<br />নিমগ্ন শ্রমে আগামীর জন্যে ফুল ফোটাতে, <br />রঙধনু রঙ মনের অবারিত আকাশের জন্য, <br />বজ্রকঠোর অঙ্গিকারে দ্রোহের স্ফুলিঙ্গে বিস্ফোরিত হয়েছিলো দ্রোহী নন্দিত প্রচন্ডতায়। <br /> --------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/lajja/লজ্জা2019-12-13T13:38:43-05:002023-06-26T10:35:56-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>জিউসের নিষ্পাপ রূপবতী তনয়া হেলেনের<br />বুকের গভীরের বেদনা বিধুর হিমেল মূর্ছনা<br />বুঝলো না পৌরাণিক দেবতাও, ধ্বংস করলো ট্রয়,<br />রক্তের ফোয়ারা ছড়ালো অকাল বৈধব্য।<br />ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক্ ! </p>
<br /><p>বৈশালীর সুশীলা অপরূপা আম্রপালির অস্ফুট স্বপ্নেকে ভ্রুক্ষেপ করলে না কেউ<br />রাজা মহারাজার উদ্ভট হায়না-লিপ্সা <br />ভাঙলে স্বপ্ন তার, কৃষ্ণ টিপ পড়ালে কলঙ্কের।<br />ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক্ ! </p>
<br /><p>প্রমোদ প্রাসাদে সরলা নারীকে করেছো বন্দিনী, <br />আদিম সামন্ত উল্লাসে টইটম্বুর হলে আর গড়ালে<br />নিঃস্ব শিল্পীকে দিয়ে কালজয়ী পর্ণ ভাস্কর্য <br />ইতিহাসের পাতায় পাতায় মহত্ত্বের অভিলাসে। <br />ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক্ ! </p>
<br /><p>যে অবুঝ বালিকা পালকিতে পুতুলের সাথে<br />এসেছিল সব ছেড়ে, স্পন্দিত করেছিলো তোমার নিবাস, <br />নির্দয় পাথর হৃদয়ের তোমরা তুলে দিলে তারে<br />সতীর অভিধায় জলন্ত লেলিহান চিতাগ্নিতে। <br />ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক্ ! </p>
<br /><p>আজ কল্পনার অন্ধকার বৃত্ত ছিঁড়ে বিজ্ঞান <br />নিয়েছে তোমায় বহুদূর নক্ষত্রালোকে। <br />তুমি তবু ডারউইন তত্ত্বের আদিমতার খোলস<br />ভেঙে মানুষ হতে পারনি, পড়েছ ছদ্মবেশ মানুষের।<br />ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক্ ! <br /> <br />জীবনকে মসৃণ করে সাজাতে নারীকে করেছো পসরা,<br />আকাশ ছোঁয়ার সোপান, পশুত্বের আহার্য, হিপক্রেসির মখমলে নেকাব।<br />নগ্ন ছবি আর বিজ্ঞাপনে অপরিহার্য করেছো নারী।<br />ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক্ !</p>
<br /><p>পূর্বে পশ্চিমে বইছে আজ আনন্দধারা প্রগতির।<br />লালসার লেলিহান দাবানলে জ্বালাচ্ছো নারীত্ব, <br />আর কতকাল দাহ করবে নারীকে রাবণের চিতায়?<br />আর কতকাল ঝরাবে অশ্রু গঙ্গা মেঘনা যমুনার তীরে?<br />---মৃন্ময় কোমলতায় জাগলে পাষাণ্ড বিষবৃক্ষ, তুমি।<br />ধিক্ ! ধিক্ ! ধিক ! <br /> ------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/godhuli-geet/গোধূলি গীত 2019-12-07T07:08:54-05:002023-06-26T10:35:49-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ফুল আর পরাগে আকীর্ণ তোমার চৌপাশ,<br />তবুও জানি রোদন ভরা বসন্ত বুকে <br />দৃশ্যমান সুখের এই শহরেই আছো। <br />আমাদের উচ্ছলিত দিনগুলোর প্রজাপতিরা <br />আজ তোমার স্মৃতির জানালায় উড়ে এসে <br />বেদনার নীল আবীর ছড়ায়। <br />স্পর্ধিত আকাশও আজ আদ্র কৃষ্ণ মেঘমালায় <br />আচ্ছন্ন করে তোমার দীঘল কালো চোখ। </p>
<br /><p>ক্লেদাক্ত অচলায়ত বিধৌত করতে আমার<br />স্ফটিক জলের স্বপ্ন খোঁজার অঙ্গিকারে<br />পোহালো প্রকান্ড রৌদ্রময় প্রহর আর যৌবন। <br />জানি অবিশ্বাসের প্রেতাত্মা শূন্য তোমার আত্মা,<br />হঠাৎ ঘূর্ণিতে তবু উবে গেল লালিত সব বিশ্বাস, <br />আজ দুজনের দুটি পথ অচেনা দুই নক্ষত্রের<br />দুই পৃথিবীর বাতায়নে চলছে অবিরাম, <br />নিয়তির অনিবার্যতা নাকি অকাট্য আবেগ<br />করেছে রুদ্ধ জানালার নিথর কপাট <br />---- তবু নিরবধি বয়ে যায় বেদনার নীল নদ<br />বুকের অলিন্দ জুড়ে, <br />তবু মৃত্যুঞ্জয়ী সুবাসিত ভালোবাসার শতদল<br />সুগন্ধ বিলায় ম্লান আলোয় এই গোধূলির বাতাসে। <br /> -------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/aboguntita/ অবগুণ্ঠিতা 2019-12-04T03:16:12-05:002023-06-26T10:35:31-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আনন্দ-জোছনারা উড়ছে পৃথিবীর উড্ডীন বাতাসে<br />আর<br />হাজার বছর পোহালে তুমি কৃষ্ণ প্রহর, <br />নীরব লক্ষী পেঁচার মতো বসে আছো <br />বাসনার সব কপাট রুদ্ধ করে, ভোগের সব<br />অভিলাষগুলি ভাসিয়ে বহতা নদীর জলে।যেন তুমি প্রাগৈতিহাসিক নির্লোভ সন্ন্যাসীনি <br />সবার কল্যাণ তপস্যায় নিমগ্ন নিবেদিতা। <br />আমরা কেউ মননে মানিনা প্রাচীন বিধি পান্ডুলিপি, <br />তুমি শুধু সমর্পিতা সেই নিয়মের বিধানে। <br />শৃঙ্খলিত নিবাস ছেড়ে দু'পা বাড়ালেই<br />সহস্র বছরের ক্ষুধার্ত বর্ণচোরা হায়নারা <br />বিধ্বস্ত করে তোমার সৌকর্যময় স্বপ্নগুলি,<br />তোমার নিথর ধর্ষিত দেহখানি নিরুত্তাপ <br />বরফের মতো হিম করে দেয় সভ্যতা,<br />চিতাগ্নির সর্পিল শিখায় দাহ করে তারা<br />তোমার ভেতর লুকিয়ে থাকা ত্রস্ত মানবতাকে।</p>
<br /><p>আর কতকাল জ্বলবে রূপকানোয়ার হয়ে <br />সতিদাহের শ্মশানের মতো হিংস্র দাবানলে?<br />দেখ, ঐ সাত সমুদ্র তের নদীর পাড়ে <br />অবগুণ্ঠিতা বন্দীরা ভেঙেছিল রুদ্ধ লৌহকপাট, <br />এনেছে আরাধ্য সাম্যতা, এনেছে নবীন সূর্যোদয়।<br />বইছে বসন্ত বাতায়ন পৃথিবীর পূর্বে পশ্চিমে, <br />অবরুদ্ধ কপাট খুলে আলোর মিছিলে মিশে<br />হয়ে যাও দিগ্বিজয়ের অদম্য অশ্বারোহী। <br />জোয়ান অব আর্কের মতো উদ্যত তরবারি হাতে <br />আঘাতের পর আঘাত করো শৃঙ্খলের <br />মর্মমূলে, <br />ছিন্নভিন্ন করো অসুন্দরের দাম্ভিক প্রাসাদ,<br />ধর্ষক, শোষকের রক্তের প্লাবনে ভাসিয়ে দাও<br />এই নির্লিপ্ত আত্মকেন্দ্রীক কাপুরুষের জনারণ্য। <br />জাগাও নতুন যুগের সুন্দর সকালের পূর্বরাগ,<br />জাগাও আবার তোমার জঠর হতে নন্দিত পৃথিবী। <br /> -------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/prem/প্রেম 2019-12-01T04:20:39-05:002023-06-26T10:36:06-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>হৃদয়ের নিমগ্ন অনবদ্য অভিলাষে<br />যাকে বারংবার খোঁজে যায় মন,<br />সে-ই তো প্রেমের অর্ঘের উপাস্য <br />--- হয়তো দূরদেশের অদেখা কল্যাণকামী বন্ধু, <br />বা বুকের পাঁজরের লাগোয়া জীবনের সহযাত্রী, <br />কিংবা শৈশবের আকাশচুম্বী স্বপ্নের সাথী<br />--- যাদের অনন্ত প্রহর জুড়ে বলা যায় <br />আনন্দ-বেদনার উপাখ্যান। <br />আবার<br />হতে পারে গাঙচিলে ভরা সমুদ্র সৈকত<br />যেখানে বেদনার নীল অপরাজিতাগুলো<br />একে একে ভাসিয়ে দেওয়া যায়,<br />হতে পারে প্রিয় গ্রামটি<br />যেখানে কঁচি ফসলের মাঠে বিহঙ্গ উড়ছে অবিরাম<br />মাঝে তার বয়ে গেছে পথ দূর কোন গ্রামে<br />যেখানে হেঁটেছি বারংবার আশৈশব,<br />বা নিবিড় ছায়ার বিস্তৃত পড়শী বটগাছ<br />যেখানে শুনেছি বন্ধুর বেদনার মহাকাব্য<br />--- এগুলো নিশির মতো ডাকে পেছনে শেকড়ে , <br />অনুরণিত হয় মনে নির্জনে, প্রতিক্ষণে <br />--- এসব প্রেমের সৌকর্যময় বসতবাড়ি, <br />যাদের জন্যে বয়ে যেতে পারি<br />বহতা নদীর মতো নিঃসীম দূরে,<br />ভাসতে পারি বিরাহীন চিল হয়ে আনন্দে, <br />তাদের হারনোর শংকায় ঢেলে দিতে পারি <br />বুকের উষ্ণতায় বাসিন্দা গোলাবি শোণিত<br />--- অগ্রজ যেমন দিয়েছিল একাত্তরে<br />মৃন্ময় প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে এই মাটি, মা,<br />নদীর তীরের স্বপ্নের দেশটির জন্যে। </p>
<br /><p>নিয়ন আলোয় মখমলে ফুলেল গালিচায় <br />হৃদয়হীন অলীক গুঞ্জনে ফেরারি হয় প্রেম <br />--- লুকোচুরির বুদবুদে উবে যায় সে নিরুদ্দেশে, <br />গন্ধহীন ফুলের মতোন ঝরে যায় ব্যর্থ দিন,<br />বন্দী খাঁচার পাখির বিন্দু-ভালোবাসার <br />অহমিকায় রুদ্ধ হয় কাব্যিক ছন্দময় প্রগতি। <br />মুক্ত পাখি সুরেলা কাকলিতে বলে,<br />এসো সবুজের সুবাসিত বন্দনহীন বনে<br />এসো মেঘের শুভ্রতায় উদার আকাশের কোলে<br />---- এখানে নেই হিংসা ছলনা ঘৃণার তন্তুজাল,<br />আছে শুধু ভালোবাসাবাসি, আছে অবারিত প্রেমের মূর্ছনা। <br /> ----------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/valobasa-ache/ভালোবাসা আছে 2019-11-29T02:56:27-05:002023-06-26T10:36:20-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>নীল নীলাদ্রির বুকে ভেসে মেঘ ছুটে  <br />দূরে পাহাড়ের আলিঙ্গনে আকুল  অভিসারে,<br />প্রজাপতি ফুলের বনে রঙধনুর আবীর ছড়ায়<br />বর্ণিল পেখম মেলে অনাবিল ভালোবাসায়,<br />গহীন কৃষ্ণ অন্ধকারে অমাবস্যাভুক জোনাকিরা<br />প্রেমময়ী নারীর মতো আলোর আলপনা আঁকে,<br />বিষন্ন অবেলায় পোহানো জীবন ভুলে<br />নবান্ন উৎসবে গাঁয়ের কিষাণী গায় প্রেমগীত,<br />অবরুদ্ধ প্রেয়সী বরষায় মেঘদূত পাঠায়  <br />দূর প্রিয়জনে হৃদয়ের গভীর আকুলতায়,<br />নির্ঘুম রাতে রুগ্ন শয্যায় উৎকন্ঠিত জায়ার<br />নিমগ্ন আরাধনায় কাটে নিরেট কঠোর প্রহর<br />---- এসব অনাবিল অনন্ত ভালোবাসা আর ভালোবাসার জন্য।  </p>
<br /><p>তোমরা যারা হিংস্র হায়নার মতো<br />স্বপ্ন বিভোর তরুণীর সম্ভ্রম লুটে বলো,<br />ভালোবাসাকে ফেরারি করেছো দূর নিরুদ্দেশে, <br />কখনো জাগতে দেবেনা সুপ্রভাত এই ঘোর অমানিশায়,<br />তোমরা যারা যুদ্ধবাজ, ঘাতক, সন্ত্রাসী  <br />শক্তির উন্মাদনায় প্রমত্ত হয়ে বলো, <br />মানুষের করোটির উপর সাজাবে দম্ভের মসনদ,<br />তোমরা যারা কূট শরে বিদীর্ণ করো অলিন্দ, <br />-- প্রগতির অদম্য ক্ষিপ্র অশ্বারোহীর বীরত্বে <br />তোমাদের আসুরিক মাংসাল দেহ নুইয়ে যাবে,<br />উদ্যত ঘাতক কাঁটা বিচূর্ণ হয়ে পড়বে ধূলায়, <br />আত্মকেন্দ্রীকতার রূঢ় কদর্যতা ছিন্নভিন্ন হবে, <br />পাপের প্রাসাদ ভষ্ম আর ধোঁয়ায় উবে যাবে,    <br />বিষন্ন গ্লানির কৃষ্ণতায় আচ্ছাদিত হবে<br />দম্ভ,কূটকৌশল,জিঘাংসা <br />আর তোমাদের নিষ্ঠুরতা।    </p>
<br /><p>আবারো তপ্ত জমিন ভিজে যাবে আরাধ্য বৃষ্টিতে,   <br />জাগবে সবুজের শীষ কোমল মৃন্ময় বিস্তারে,<br />ফুটবে ফুল, গাইবে পাখি, প্রজাপতি ছড়াবে রঙ, <br />মানবতার জয়গানে ধ্বনিত হবে ---<br />পৃথিবীর সহস্র যোজন পথের বিস্তারে<br />ভালোবাসা ছিল, আছে, থাকবে অনন্তকাল।        --------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/swapnora/স্বপ্নরা 2019-11-22T13:11:54-05:002023-06-26T10:36:18-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>স্বপ্নরা পেখম মেলে হৃদয়ে <br />নন্দিত অনুরাগে মনকে বিস্তৃত করে অসীমে। <br />স্বপ্নরা ভালোবাসতে শেখায় নিজেকে<br />আর<br />পৃথিবীর কর্মচঞ্চল তাবৎ জনারণ্যকে। <br />স্বপ্নরা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের অলিন্দ,<br />মনের স্বচ্ছ সরোবরে ফোটায়<br />বর্ণিল আবীরের আরক্ত শতদল। <br />শৈশবে স্বপ্নরা নিয়ে যায়<br />তেপান্তরের মাঠের পরে নির্জন রাজপুরে অবরুদ্ধ রাজকন্যার শৃঙ্খল ছেঁড়ার বীরত্ব গাথায়।<br />কৈশোরের দুরন্ত প্রহরে স্বপ্নরা নিশি হয়ে<br />ডাকে সাত সমুদ্দুর তের নদী পার হয়ে<br />দিগ্বিজয়ের প্রমত্ত নেশার অভিযাত্রায়।<br />বসন্ত যৌবনে উড্ডীন গাঙচিলের মতো স্বপ্নরা নেয় ভাসিয়ে হলুদ জোছনায় <br />সমুদ্র মন্থনে দুর্লভ নীলপদ্ম তুলে<br />নিমগ্ন আরতির অর্চনায়<br />ভালোবাসার নৈবেদ্যে জুড়াতে প্রিয়ার প্রাণ। <br />আমাদের এসব দিনরাত্রি উড়ে চলে<br />স্বপ্নের ডানায় চড়ে নিঃসীম নীলে<br />মহাকালের অনন্তলোকে। </p>
<br /><p>মনের মুকুরে লালিত আমাদের স্বপ্নরা<br />আবার বৈরী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়,<br />ঈশান কোণের মেঘের তান্ডবের মতো<br />ক্ষতবিক্ষত হয়ে ম্রিয়মাণ হয়ে যায়, <br />সুরাহীন সাকির মতো কাঁপে থরোথরো<br />মদ্যপ দুর্বিনীত উন্মত্ত শক্তির হিংস্রতায়।</p>
<br /><p>দূর পাহাড় আর মহাসমুদ্রের ওপার হতে<br />ভেসে আসা আলোর বর্ণালী <br />আর সুরের মূর্চ্ছনায়<br />আকুল অবরুদ্ধ তরুণ পোহায় অলস প্রহর, <br />বিঘ্নিত প্রতিশ্রুতি বিভাজিত করে প্রেম, <br />শিশু আর কিশোরের আকাশচুম্বী উল্লাস<br />অতৃপ্ত কলির মতো ঝড়ে যায় দাবদাহে, <br />তরুণীর নিটোল তনু ব্যবচ্ছেদ করে হায়না,<br />ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয় আমাদের স্বপ্নরা <br />বিষন্ন অনন্ত মধ্যাহ্ন রাত পোহায় অনন্তকাল। <br /> --------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/emonto-katha-chhilona/এমনতো কথা ছিলোনা 2019-11-15T16:59:27-05:002023-06-26T10:35:45-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>যখন উর্দি পড়া হায়নার লোলুপতায় বোনের আকাশচুম্বী স্বপ্নরা খসে পড়লো<br />বিধ্বস্ত নক্ষত্রের মতো, <br />বুলেটে বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া<br />বাবার বুকের পাঁজরের আগ্নেয়গিরির শোণিতের লাভায় মায়ের সিঁথির সিঁদুর পুড়ে খাক হয়ে গেলো জীবনের তরে, <br />পাড়ার টগবগে তরুণদের ব্রাশফায়ারে যন্ত্রণাকাতর তৃষ্ণার্ত ক্ষণে গণকবরে ছুঁড়লো বেয়নেটের নৃশংস খোঁচায়, <br />যখন দাউদাউ করে জ্বলছিলো গ্রাম গ্রামান্তর <br />--- তখন কারফিউ গুলি উপেক্ষা করা <br />মিছিলে মিছিলে রাজপথ কাঁপানো স্বাধীনতার স্বপ্ন বিভোর যুবকেরা <br />অলিন্দে অলিন্দ মিলিয়ে <br />নজরুলের অগ্নিবীণার সুরে শিহরিত করলো<br />হজার বছরের অচলায়তের বাসিন্দাকে।<br />দ্রোহের অগ্নিঝরা গানের দুর্বার মূর্ছনায়<br />কিষাণ, ছাত্র, শ্রমিক, নেকাব পড়া তরুণী,<br />বারবনিতা, বস্তিতে থাকা রনবী'র টোকাই<br />সাদা কফিনে আচ্ছাদিত হয়ে বজ্রের মতো<br />আগ্রাসীকে আঘাত হেনে বেদনাক্লিষ্ট<br />জরায়ু ছিঁড়ে ভূমিষ্ঠ করালো স্বাধীনতাকে। </p>
<br /><p>ওরা বলে ছিল,<br />সামরিক জান্তার স্পর্ধা টুটে যাবে,<br />বাইশ পরিবার প্রেতাত্মা হয়ে ফিরবেনা কোনদিন রক্ত বিধৌত বাংলাদেশে, <br />আর দাবীর মিছিলে তপ্ত হবেনা রাজপথ, <br />শ্রমিকেরা পোহাবে শোষণহীন তৃপ্ত প্রহর,<br />তরুণীর উচ্ছলতায় বিদ্ধ হবেনা বিষ কণ্টক, <br />শ্রমহীন শিশু মুখরিত করবে পাঠশালা, <br />বাবার স্বপ্নের কল্পতরু মঞ্জরিত হবে,<br />মায়ের অশ্রুরা মুছে যাবে আনন্দ বর্ষায়।</p>
<br /><p>আজ বিষন্ন কালবেলা,<br />শহীদের মিনারমূল, রাজনৈতিক মঞ্চ এখন<br />গাল কাটা গুন্ডা, মজুদদার, টেন্ডারবাজ, <br />ড্রাগ কারবারি, ব্যাংক ও শেয়ার চোর, <br />দলছুট, ধর্ষকের নির্বিঘ্ন চারণভূমি। <br />গণতন্ত্রের মানবঢাল নূরহোসেন যায় <br />নিরুদ্দেশের দেশে,<br />বাইশ হাজার লুটেরা ভূমিষ্ট হলো<br />ভ্রষ্টা নটিনীর বিষময় জঠর হতে, <br />নিথর দেহ নুইয়ে পড়ে পিচঢালা পথে<br />অনিয়ম নিয়ম হওয়ার বজ্রকঠোর প্রতিবাদে, <br />তরুণীর হিরণময় অনাবিল সৌকর্য সম্ভার ক্ষতবিক্ষত করে শকুনেরা আদিম উল্লাসে,<br />নিরেট পাথরে হাতুড়ি পিটিয়ে, ডাস্টবিন ঘেটে <br />শিশু খুঁজে তার চুরি হয়ে যাওয়া স্বপ্ন, <br />বাবার কল্পতরু কল্পলোকের বাসিন্দা,<br />মা'র অবারিত অশ্রধারা শুকায়না কোনদিন।<br />--- এমনতো কথা ছিলোনা।</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/feere-jao-kadorjyo-ranodeb/ফিরে যাও কদর্য রণদেব 2019-11-09T07:50:15-05:002023-06-26T10:35:45-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>পৃথিবীর দীর্ঘ বিস্তার আকীর্ণ করলে<br />রক্তকরবীর আলপনায়। <br />বুভুক্ষু পিশাচের উন্মত্ত উল্লাসে <br />কেটেছে বিলম্বিত প্রহর তোমার<br />করোটিতে আকীর্ণ জমিনে তান্ডব নৃত্যে। <br />অর্থ খ্যাতি আর দোর্দণ্ড প্রতাপ চিরঞ্জীব করতে খন্ডন-প্রাচীরে বিভাজিত করছো মানবতার মৃন্ময় কোমল দেহখানি।<br />বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছো পৃথিবীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে। <br />রাতের গহীন কৃষ্ণতায় অসহায় নক্ষত্রময় আকাশ নিস্তব্ধ নিশ্চুপ <br />তোমার অগ্নিময় তপ্ত নিষ্ঠুরতায়। </p>
<br /><p>তুমি ইতিহাসের পংক্তিমালায় আত্মঘাতী <br />হিটলারের কৃষ্ণ হরফের করুণ আর্তনাদ দেখনি? <br />অসহায় ভূবনজয়ী আলেকজান্ডার কফিন হতে শূন্য হাত প্রসারিত করে<br />নিয়তির কাছে নতজানু হয়ে বলতে দেখনি? <br />---- আমি কিছুই নিতে পারছিনা --<br />ছিনিয়ে নেওয়া রাজমুকুট রাজ্য বিত্ত কিংবা বৈভব! </p>
<br /><p>তরুণ-তরুণী তানপুরায় তুলছে সুমধুর---<br />আকাশের নীল অপরাজিতার বাগানে <br />গায় জীবনের প্রাঞ্জল সুরেলা জয়গান। <br />নিষ্পাপ নির্মল শিশু খেলে পুতুলের মেলায় মিলন মিলন খেলা, <br />পাখি গায় অনন্ত বেলায় অবিকল শাশ্বত প্রহর ধরে। <br />দিনান্ত শ্রম সপে মানুষ ফিরে<br />আরক্ত গোধুলিতে নীড়ে ফেরা পাখির মতো একরাশ শান্তির স্নিগ্ধ বাতায়নে। <br />তাবৎ পৃথিবী তাকায় চাতকের একাগ্র নিমগ্নতায়<br />শান্তির পেখম ছড়ানো শতদলে। </p>
<br /><p>তুমি বড্ড বেমানান, ঘৃণিত, উপেক্ষিত, অস্পৃশ্য এই পৃথিবীতে। <br />তুমি হবেনা জয়ী কোনদিন কিছুরই। <br />বিভ্রান্ত উন্মাদ ঘাতকের মতো <br />রণকেলিতে লিপ্ত বলে শঙ্কিত সবাই <br />--- এটা ভালোবেসে মৃত্তিকায় নুইয়ে পড়া<br />শেফালীর নতো অনাবিল সমর্পণ নয়। <br />তুমি ফিরে যাও দূর নিরুদ্দেশের দেশে <br />মানুষ ও মানবতার দৃষ্টির অগোচরে, অচিনপুরে। <br /> --------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/tobu-jabei-nagore/তবু যাবেই নগরে2019-11-04T06:21:13-05:002023-06-26T10:36:18-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>ইস্টিশনে রেলগাড়ীটি গুম্ গুম্ আওয়াজে, <br />উঠছে মানুষ হরেক রকম, ভিন্নতর সাজে।<br />কেউ পড়ে পত্রিকা বই, কেউবা ঘুমের ঘোরে, <br />হতাশ হয়ে বলছে কেউ, ঘটলো যা নগরে। <br />আড়চোখে শুনে সবাই কি হয়েছে আবার,<br />-- অহরহ ঘটছে যেসব ঘটনার সমাহার।<br /> <br />বাবার অসুখ, ভাইয়ের পড়া, চিন্তা তরুণীর, <br />চাকরি খোঁজে যাচ্ছে নগর, ছেড়ে শান্তি নীড়। <br />মায়ের অশ্রু, ভাইয়ের আশা, বাবা অসমর্থ,<br />হাজার বাঁধা ভেঙ্গে তবে আনতে হবে অর্থ।<br />হায়না ঘুরে নগর জুড়ে লোলুপ তাদের দৃষ্টি,<br />চেনা জনও হয়না আপন, নগরে অনাসৃষ্টি। <br />আঁধার নামে দুচোখ জুড়ে, বুক কাঁপে থরোথরো,<br />ফেরার উপায় নাই যে আর জীবন জড়োসড়ো। </p>
<br /><p>প্রৌঢ় এক যাচ্ছে শহর বিষন্নতা মুখ জুড়ে,<br />জমি সব বন্ধক রেখে দিলো ক্লিনিক ডাক্তারে। <br />ফিস থেকে পরীক্ষায় বেশি অর্থের সংহার, <br />বলছে ওরা, এসব খেলা ক্লিনিক আর ডাক্তার। <br />আরো লাগবে টাকা কড়ি, যদিও নাই আরোগ্য, <br />এই বয়সে বুঝেনা সে, যোগ্য না অযোগ্য। </p>
<br /><p>পাশ করে যাচ্ছে তরুণ, উচ্চশিক্ষার আশায়, <br />বিদ্যাপীঠে বিদ্বান নয়,নেতা চরকা ঘুরায়।<br />বিবাহিত ছাত্রনেতা বউ সংসার তার হলে,<br />মতের অমিলে নেয় সবারে রুদ্ধ টর্চার সেলে। <br />বছর যায় বয়স যায়, যুদ্ধ ময়দান যেন,<br />টেন্ডার আর চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য হেন। <br />স্বাধীনতার স্বপ্নচারী, আজ যে স্বপ্নহীন, <br />অবরুদ্ধ জীবন পোহায়, আশা হয় যে লীন। </p>
<br /><p>স্বপ্নের সেই জীবন গড়তে তবু যাবেই <br />নগরে, <br />বর্গী বৃটিশ পাক তাড়ালো, মরবে নাকি ডরে?<br />ভূবনেতে বইছে হাওয়া, অবারিত সব আজ, <br />চলতে হবে তাল মিলিয়ে পড়বে শিরে তাজ। <br />দস্যু দানব রুখলো আগে যাদের পূর্বসুরী, <br />ঘুঘু খাবে স্বপ্নের ধান, তা যে সইতে নারি। <br />ঐক্য তনে বাজাবে তরুণ ঘুম ভাঙানো সুর, <br />নুতন রঙে রাঙাবে তারা, দেশ হবে শান্তিপুর। <br /> ------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/juger-podaboli/যুগের পদাবলী 2019-11-01T16:35:48-04:002023-06-26T12:40:40-04:00শ্যামল চৌধুরীhttps://www.bangla-kobita.com/shyamal1959/<p>আকাশেতে সেই নীল, বনানী নিটোল সবুজ<br />কিছু মানুষ উল্টো পথে, যেন তারা অবুঝ। <br />রাজনীতিতে ত্যাগী নাই,বণিক গুন্ডা বাটপার, <br />দুর্নীতি, দখল, খুনে হলো যে সব একাকার। <br />গণতন্ত্র বন্ধ্যা এখন, সমাজতন্ত্র গেল কবরে, <br />মানুষ পোহায় অনন্ত রাত, ত্যাগীরা সব ঘরে। <br />পাঠশালায় পাঠ নেই, আছে টিউশন ব্যাবসা, <br />ছাত্রের হাতে বই নেই, পদ অর্থের লিপ্সা। <br />মজুদদার ফন্দি আঁটে, দাম বাড়ে ফরফর, <br />কালোবাজারি নেতা বনে, দেশের মাতবর। <br />ঘুষ বিনা চাকরি নাই, হয়না কোন কাজ,<br />যোগ্যরা সব বেকার বসে, অযোগ্য পায় তাজ। <br />চোর বনায় ধর্ম প্রাসাদ, ভেজাল পুরোহিত, <br />টাকা ছিটে হয় দানবীর, ধার্মিক হয় ভীত। <br />লাঞ্ছিত হয় নারী, শিশু --- মানুষ হলো পাষাণ, <br />রাজনীতি আর টাকার জোরে তারা বলীয়ান। </p>
<br /><p>এমনতরো অনিয়ম যদি নিয়ম হয়ে যায়, <br />যুদ্ধ করে স্বাধীন করার ছিল কার দায়? শহীদেরা রক্ত ঢেলে আনলো স্বাধীনতা, <br />ভুলে গেল মানুষ কেন এসব ইতিকথা? <br />আমরা যদি চুপটি করে ঘরের কোণে থাকি, <br />দস্যু দানব চোর বাটপার দেবে সবায় ফাঁকি। <br />শত শত বছর গেল মু্ক্ত হওয়ার তরে, <br />ভিনদেশীদের ছিঁড়লে টুটি, ভয় কেন ছিঁচকেরে? <br />জাগো সবাই তেজদীপ্ত, জাগো একই সুরে, <br />আঁধার চিরে জাগবে সকাল, সবার মাতৃ নীড়ে।<br /> . -------------------</p>@ 2024 - শ্যামল চৌধুরী