হে অন্তর্যামী আরাধ্য পরম করুণাময় !
আমি অখ্যাত,অশ্রুত, ঘর্মাক্ত কর্মময় বান্দা,
নগরে পথচলা নগণ্য ক্লান্ত ক্লিষ্ট পথিক।


গান্ধী-চশমা ওয়ালা আদর্শ পন্ডিতের শিষ্য,
অনটনের কন্টকাকীর্ণ দুর্লঙ্ঘ বৈতরণী বেয়ে
চলছি নিয়ত নিয়ন আলোর মেকি ঔজ্জ্বলে।  
পাঠশালার তৈলাক্ত বেতের ভয়ে মুখস্থ করা    
--"চোরকে সকলে ধিক্কার দেয়",
"দুর্জনের সাহচর্য পরিত্যজ্য",
"লেখাপড়া করে যে,গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে",
" জ্ঞানীর কদর সর্বত্র",  
" সদা সত্য কথা বলিবে".....
--আক্কেল জ্ঞানের এই আপ্তবাক্য আজ বিচূর্ণ, লঙ্ঘিত।  
তোমার নিসৃত বাণীর প্রাঞ্জল উচ্চারণও এই
মৃত্যু উপত্যকায় প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে যায়
অনর্থ শূন্যে
--কেউ ডাকেনা তোমায় নিঃস্বার্থে, মানুষের কল্যাণে,
কেউ শংকিতও নয় তোমার নিগূঢ় সত্যের কথামালায়।
গড্ডালিকার স্রোতস্বিনী ধারায় গা হেলিয়ে
পান করিনি অনিয়মের নিয়ম, তৈলাক্ত বেতের শিক্ষায়,
অচল পয়সার মতো গ্লানি আর তাচ্ছিল্যের প্রহর
পোহালো তাই এই নিন্দিত নরকের নন্দিত প্রকোষ্ঠে।        
প্রেতের নগরীর রূপকল্প গড়ছে আজ বুভুক্ষু পিশাচ
--তরুণীর সতীত্ব ব্যবচ্ছেদ, লাশের কাফেলা, জুয়ারি, দুর্নীতির তান্ডব নৃত্যে
ম্রিয়মাণ তৈলাক্ত বেত আর তোমার প্রাঞ্জল বাণী নির্ঝর।      


এই অবেলার নিরেট পাষাণ বেলায়
চাঁদ জাগে হলুদ জোছনার যৌবনে,
পাখি গায় সুরেলা ছন্দে, শিশু হাসে অকৃপণ,
তবুও মানুষ যে হারলো হৃদয়ের সৌরভ    
উঠলো  কালো ঘূর্ণি বাংলার বৈতালী বাতাসে।