পাহাড় থেকে সবুজ ক্ষেত
সাগর তটভূমি,
সবার সেরা ভালোবাসা
মাগো আমার তুমি।
গঙ্গা-পদ্মা-মেঘনা-অজয়
যমুনা-সরস্বতী,
পুরাণে কথিত হিমালয় বালা
গঙ্গাই ভাগীরথী।
বারো মাসে মা ছয় ঋতু
এমন কোথায় আছে?
বাবুই এমন বাসা বোনে
কোন সে দেশের গাছে!
কোথায় এমন কুহু স্বরে
ডাকে কৃষ্ণ কলি,
ফুলে-ফুলে গুন গুনিয়ে
ওড়ে মধুপ ওলি।
কোথায় এমন শীত ঋতুতে
মিঠে নলেন গুড়,
এমন স্বাদের পিঠে পুলি
মুড়কি ক্ষীরের পুর।
কোথায় এমন ঘোমটা টানা
লজ্জা রাঙা কণে,
কোথায় এমন ভালোবাসা
সবার প্রাণে-মনে!
নৌকা কোথায় ভাসিয়ে ভাটায়
ভাটিয়ালি সুরে গায়,
ছলাৎ ছলাৎ শব্দ তুলে
মাঝি বৈঠা বায়।
কোথায় এমন বাজিয়ে বাঁশি
রাখাল গোঠে যায়?
উড়িয়ে ধূলো কালবোশেখী
বাদল মেঘে ছায়!
তাইতো মাগো কোনও দেশই
তোমার মতো নয়।
জন্ম যদি হয় মা যেন
এই মাটিতেই হয়।
একটা ব্যাথাই বাজে বুকে
নিত্য অশ্রু ঝরে,
একই ভাষার মানুষ কেনো
ভিন্ন পথের পরে?
এক মাইকেল সত্যেন্দ্রনাথ
এক লালনের গান,
কবি সুকান্ত-জীবনানন্দ
সামসুর রহমান।
এক নজরুল- রবীন্দ্রনাথ
একই বর্ণবোধ,
তবুও পথে ভরছে আঁধার
পথ করছে রোধ।
একই ছড়া এক কবিতা
এক পল্লী গীতি,
ভাই-বোনেদের ভালোবাসায়
একই স্নেহ প্রীতি।
একই নদী এক সে স্রোত
একই জোয়ার ভাটা,
এক ফসল একই সে মাঠ
তবু কেন তারকাঁটা?
এক সূর্য একই তারা
একই মেঘে বৃষ্টি,
তবুও বিভেদ রাত্রি হানে
এ কি অনাসৃষ্টি!
পড়াশোনায় নেইকো তফাত
নেই বিভেদের সুর,
সীমানার বেড়ায় শুধু
করছে ঠেলে দূর।
একই সে মেঘ এক রোদ্দুর
এক শ্রাবণের ঢল,
বিভেদ রেখার বাঁধ মানেনা
জল ছোটে কল কল।
এপার ওপার একটা সময়
ছিলো একই দেশ,
আবার যদি এক হয়ে যায়
হয় না কি তা বেশ?
সবায় মিলে গাইব সাথে
বাজবে মিলন সুর,
রাত্রি সরে হাসবে সকাল
ঘুচবে সকল দূর।
সেই বাংলার স্বপ্ন আমি
নিত্য চোখে আঁকি,
সবাই যেনো রোদ ছড়িয়ে
সূর্য হয়ে থাকি।