সেই কোন কাকভোরে মা
বাবার সাথে বেরিয়ে যেতেন, আমার খাবার রান্না করে
প্রাইমারি স্কুলে তাই টিউশন ছিল না
বিলের পাশ থেকে স্কুলের পথে দেখতাম, মাকে জল সেচতে বীচের খেতে।  


আমার যখন সতেরো বছর, স্কুল থেকে ফিরতাম
মায়ের সঙ্গে আমার রাস্তায় প্রায়ই দেখা হত,
জঙ্গল থেকে জ্বালানী কাঠের বোঝা মাথায় নিয়ে ফিরতেন
সাথে পাড়ার কাকিরা, জ্যাঠিরা, দিদিরাও থাকতেন।  


রাস্তায় কত আদর করতেন, আমিও সাথে পথ চলতাম সকলের  
বলতেন বাবা, বড়লোক মেয়েদের দিকে তাকাবিনা,
ওদের গায়ের সুন্দর গন্ধ আর অভিনয়ের চোখ!
সেই চোখে চোখ রেখে কথা বলবিনা, তোকে বড় হতে হবে।


আমি যখন কলেজ থেকে ফিরতাম
তারও অনেক পরে কলের থেকে ফিরে,
মা আমাকে জিজ্ঞাস করতেন  
হাঁড়িতে রাখা ভাত, ঠিক সময়ে খেয়েছিস তো খোকা?


আমি কখনো তোমার রুপোর পানের কৌটা দেখিনি
কিংবা পিতলের পিকদানি,
তোমার কলাপাতা আর আমার নিল-সাদা কালাইয়ের থালা
তোমার সাথে বসে খেয়েছি কত, মিটিয়েছি পেটের জ্বালা।


তুমি তো কখনো অক্ষর চিনতে চাওনি কিংবা কলকাতা,
বলতে-আমার আঁচলেতে মুখমুছে বলিস, বলিস যা ইচ্ছে তা
তাতেই জুরাবে আমার হৃদয় ব্যাথা।
আমি আজ বোস্টন থেকে ফিরেছি, করেছি এ পৃথিবীর ডিগ্রি জড়ো!
আমি তোমার দরজায় এসে দাঁড়িয়ে, এসে একবার জড়িয়ে ধরো,
দাওগো সে শংসাপত্র তোমার সন্তান বলে।
কিছুতো বল মাগো...        
তুমি আজ কোথায় গেছ চলে?