বাঙালী জাতিসত্ত্বা ধুলায় মেশাতে
হিংস্র জানোয়ার হায়েনার মত
ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র নিরীহ ঘুমন্ত
মানুষের বুকের উপর, নির্বিচারে
গুলিতে গুলিতে ঝাঁজরা করে মানুষের বুক
কামানের গোলা ছুঁড়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়
মানুষের আবাস;
তাদেরকে কতটা মানুষ ভাবা যায়?
তাহারা আবার নাকি সভ্য জাতি;
চমৎকার! চমৎকার!!


আমরা একটু ইতিহাস দেখে নেই-
দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে জন্ম নেয়া
মুসলমানের দেশ পাকিস্থান;
যেই দেশ গণতন্ত্রের মুখ দেখেছে খুব কম
সামরিক জান্তারা রাষ্ট্র পরিচালনার ভার
নিজেদের হাতে নিয়েছে তুলে বার বার।


৪৭এ পাকিস্থানের জন্ম লগ্ন থেকে
বাঙালী জাতি হ'তে থাকে শোষনের শিকার।
৫২তে মুখের ভাষা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা
প্রতিহত করতে তরুণের তাজা রক্তে
রাজপথ সয়লাব, জেল-জুলুম অব্যাহত
৬৯এর গণ অভ্যুত্থানে আইয়ূব খান
সরে গিয়ে ক্ষমতা তুলে দেন আর এক
সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খানের হাতে;
৭০এর নির্বাচনে বাঙালীর নিরঙ্কুশ জয়
শুরু হলো ষড়যন্ত্র সাংবিধানিক অধিকার
থেকে বাঙালী জাতিকে বঞ্চিত করার।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ
জাগিয়ে তুলল বাঙালীসত্ত্বা
"এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম"!
পাকিস্থানি জান্তারা ২৫শে মার্চের গভীর রাতে
বাঙালী জাতির প্রাণ প্রিয় নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে
পশ্চিমপাকিস্থানে করে কারাবন্দী।


সেই রাত থেকে শুরু ভয়ঙ্কর বরবর গণহত্যা
নিরীহ ঘুমন্ত মানুষের বুকে অতর্কিতে ছোঁড়া
মেশিনগানের গুলি, কামানের গোলা
রাজপথ জুড়ে পাকিস্থানি সামরিক সাঁজোয়া বাহিনী।
শহর থেকে শহরে গ্রাম থেকে গঞ্জে চলে নির্মম
হত্যাযজ্ঞ আর আগুনে পুড়িয়ে দেয় মানুষের আবাস।
বাঙলার জমিনে পড়ে থাকে শিশু কিশোর নারী পুরুষ
বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অগণিত মানুষের লাশ;
বাঙালী জাতির ইতিহাসে আর একটা দিন
যোগ হলো নারকীয় "গণহত্যা দিবস"!



(কবিতাটি নতুন প্রজন্মকে উৎসর্গ করা হলো।
বাঙালা দেশের জন্ম ইতিহাস নিষ্ঠার সাথে জানার এবং নিজেদেরকে
দেশ প্রেমিক সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার অনুরোধ থাকল আগামী প্রজন্মের কাছে)