সারারাত অঝোর ধারায় কাঁদল শ্রাবণী
আমার বুকে মাথা রেখে, সে কী কান্না!
তার অবিন্যাস্ত চুলে চিরুনির দাঁতের মতন
আমার আঙ্গুল ডুবিয়ে পুষি আদরে মত্ত,
ওর কান্না থামছে না বরং বেড়ে যাচ্ছে;
বুকের সবটুকু উষ্ণতা ঢেলে দিয়ে
মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে আছি দুজনেই
নিবিড় অরবতায়!
জড়ানো গলায় বললাম- তুমি সত্যিই চলে যাবে?
‘ কালের রথের চাকায় বাঁধা, যেতে যে হবেই!
তোমার বেশি মন খারাপ হলে চলে যেও
মরা নদীর কিনারে, কাশবনের দিকে
তাকিয়ে থেক ওর শুভ্রতায় মন ভালো হয়ে যাবে!
শেফালিকে বলে দিয়েছি – ওর স্নিগ্ধ সুবাস নিয়ে
তোমার কাছে এসে থাকতে, গাঢ় মমতায় কিছুকাল
ওকে ধরে রেখ! ভুলেও তালগাছের নীচে যাবে না
ওখানে বসে থাকা শয়তানীটা তোমার মাথায়
তাল ভেঙ্গে খাবে! এবারে আমনের ফলনটা বেশ ভালো
নবান্নের উৎসবটা ভালোভাবে করেনিও,
শীতের বুড়ী আসলে কম্বলটা ভালো করে মুড়ে ঘুমিও!
বসন্তমেলায় গিয়ে কারো হাতধরে হারিয়ে গেলে
ভীষণ কষ্ট পাবো! খররোদে খুব ঘোরাঘুরি করো না,
কালবৈশাখীর কাছ থেকে নিরাপদে থেকো!
মধুমাসে মধুর রসে রাঙানো তোমার মুখটা আমি এসে
আমার নরম আঁচলে মুছিয়ে দেবো!
তোমাকে সেই আগের মতন পেতে চাই!’
ওর অধরে একটা গভীর চুম্বন এঁকে দিয়ে দুফোটা জল ঝরিয়ে
বললাম পাগলী! জীবন আর সময় কী কোনোও ফ্রেমে বেঁধে রাখা যায়...