বেতঝাড়ে ঝুলে আছে ফুলতোলা
পুরানো রুমাল
এইখানে হয়েছিল একদিন
হৃদয়ের বিনিময়!
কোনো এক হেমন্তের ভোরে
শিশিরের ভারে মাদারগাছের
লাল ফুল ঝরেছিল
সবুজ ঘাসের গালিচায়
সেইদিন ডাহুকছানার মত কচি দুটি প্রাণ
বসেছিল সোনালী ভোরের ওমের আশায়,
মাদারের লাল ফুল ঝরেছিল তাদের মাথায়
কুড়ায়ে ঝরাফুল ঘষে নেয় কচি কচি হাত
শিশিরের জলে ধুয়ে করেছে রঙিন
অবাক চোখে একবার তাকায় হাতের পানে
তারপর রাখে চোখ চোখের’পরে
এইভাবে কতোটা সময় হয়ে গেছে পার
কে রাখে হিসেব তার!
পাশের ডোবার থেকে উঠে এসে
ডাহুক যুগল কতোবার করেছে আসাযাওয়া
মৌটুসিরা চুপচাপ ফুলের মধু করে গেছে পান
ভ্রমর গায়নি কোনো গান
রঙিন হাতের কোরকে বাঁধা
কিশোরীর কোমল মুখ স্তব্ধ সময় ভেঙ্গে
বলে- ‘ভুলোনা আমায়’!
চোখের পাপড়িতে জমা অনেক শিশির
গোলাপী ঠোঁট দু’টিও কাঁপা কাঁপা ভেজা ভেজা
শরীর জুড়ে তাদের জীবনের
প্রথম ছোঁয়ার অচেনা অদ্ভুত শিহরণ!
বুকের আড়াল থেকে তুলে এনে
রঙিন রুমাল রাখে কিশোরের হাতে!
কিশোরের পুলকিত হৃদয় অধীর
মেলে ধরে রুমাল আঙ্গুলের মাথায়,
রঙিন সুতায় ফুলতোলা
লেখা সেথা-‘ভু্লোনা আমায়’!
একটা দমকা হাওয়া উড়ায়ে নিয়ে
রুমালখানি ঝুলায়ে দেয় বেতঝাড়ের কাঁটায়
আহা! সে কী পাথর সময়...
বিহ্বল কিশোর কিশোরীর দু’চোখ বেয়ে অশ্রু গড়ায়...



(মাদারগাছ= একপ্রকার কাঁটাযুক্ত গাছ)