ঝড়ের বেগে ষোড়শী এক ছুটে এসে
গুজে দিয়ে হাতের মুঠোয়ে চিরকুট একখানি
একফালি হেসে বিজুরীর মত ছুটে গেল গৃহ কোণে।
কাঁপা হাতে মুঠি খুলে দেখলাম চিরকুটখানি
লেখা তাতে শুধু দুটি শব্দ ‘অপেক্ষা কর’
অদ্ভুত আনন্দে ভরে গেল মন যেন অমূল্য রতন!


গ্রাম ছেড়ে নগর জীবন শুরু উচ্চ শিক্ষা তরে
হিল্লোলিত প্রাণ, ভাসে কিশোরীর মুখ নিভৃতে!


হায় হায় রব উঠিল গ্রামময় এ কী করে হয়!!!


রাবনবেশী তান্ত্রিক এক কিশোরীর অরক্ষিত
হৃদয় করতে হরণ প্রস্তাবিল বধু রূপে করতে বরণ।
গ্রামবাসী পিটিয়ে তান্ত্রিক করিল গাঁ ছাড়া
ছিটালো ঘৃণার থু থু কিশোরীর পরিবার’পর!


দগ্ধিত হৃদয় তরুণী কিশোরী কী করবে আর!!!


আসিল ওড়িয়া চিরকুট আর একখানি লেখা তাতে-
‘ক্ষম মোরে প্রিয়তম,
অপেক্ষা কর আমার
তমাল তরু ছায় পদ্মপুকুর কিনারায়
গভীর রজনীতে আসব ফিরে আমি
ভিন রূপে ভরতে হৃদয় তোমার’!


ভাঙ্গা হৃদয় মোর ভাঙ্গল আরও!!!


সইতে না পেরে হৃদ যন্ত্রণা
নিশুতি রাতে ডুবিল বালা
পদ্মপুকুরের গাঢ় কালো হিম জলে
ওঠল না ভেসে আর কোনো কালে!


না পেয়ে কূল ধরলাম সাধু সঙ্গ!!!


কল্কিসাজায়ে সাধু কহিল ‘মার বেটা দম’!
দমে দমে ওড়লাম কিছুটা সময়
তারপর সাধুর কথায় বাঁধলাম ডেড়া
তমাল তরুর ছায় তার অপেক্ষায়...


কতোটা সময় হয়েগেছে পার
কিছুই জানি না আমি তার
ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে পুকুরের পাড়
চারিদিকে শুধু ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার!


ভীতিহীন হৃদয় পড়ে থাকে ডেড়ায়
জোনাকিরা আসতে পায় ভয়!
এক নিশুতি রাতে কে যেন ওঠল কেদেঁ
বলল- ‘আমাকে টেনে নাও বুকে তোমার’;
খুলে নয়ন বিস্মিত আমি! আলোকময়
সেই কিশোরী শায়িত পাশেই আমার!


কহিল সে ‘অক্ষতযুনি কুমারী আমি
পেয়েছি বর, হয়েছি পদ্মপুকুরের জলপরী
নাও মোর নরম ঠোঁট তোমার ঠোঁটে
জিহ্বা পুরে নাও তোমার মুখে
যত রস পাও মুখে গিলে নাও
লভেছি আমরা অনন্ত যৌবন......
এই আঁধার পুরীতে আসবেনা কেহ আর
বহমান সময়ে খুঁজতে তোমারে আমারে
কাল-কালান্তে তুমি আমি থেকে যাব এখানে
তমাল তরুছায় পদ্মপুকুর কিনারায়’!