হঠাৎ সেদিন অপু এল আমার বাড়িতে।
দারুন দেখতে লাগছিল ওকে, চোখ জুড়ানো বটে।
আগের থেকে দেখতে ঢের সুন্দরী লাগছে ওকে,
মোটা করে সিঁদুর টেনেছে ওর সিঁথি জুরে,
দুই ভুরূর মাঝে সিঁদুরের টিপখানা,যেন দিব্য চোখ জ্বলছে,
ভালো থাকার চেহারা ফুটে উঠেছে থরে থরে ওর শরীর জুড়ে।
ডেকে বললাম ‘কি রে অপু, তোর বর তোকে খুব ভালোবাসে?’
মিষ্টি হেসে চটকরে বলে ফেলল,‘আমি রোমান্টিক ভীষণ যে’।
ওর রোমান্টিক হবার চিহ্নটা কানের নিচে ঘাড়ের কাছে
তখন জীবন্ত ছিল, চোখটা সরিয়ে নিলাম দ্রুততার সাথে।
অপু বরাবরই মিষ্টিভাষী,বিয়ের পর ওর মিষ্টতা আরো বেড়েছে।
কৌতূহলে মজা করে জিজ্ঞেস করলাম ওকে, ‘কি খাস, যে
দিনের সাথে পাল্লা দিয়ে তোর মিষ্টতা বেড়েই চলেছে?’
খুনসুটির এক আঁচড় ফেলে মুখে বলল, ‘বলব না তোকে-’
মজা করে বললাম, ‘আমিও খেয়ে দেখতাম একটুআধটু করে’
ফ্যাকাসে হেসে বলল, তুইও যদি খাস,আমার হিংসে হবে যে।
ওর বিয়ের এতগুলো বছর পরে দেখা,ইচ্ছে করছিলনা ছাড়তে।
তবুও, বিকেলের শেষে আমার হাতের এক কাপ চা খেয়ে
অপু বিদায় চাইল আমার কছে দু’এক ফোঁটা চোখের জলে।
ওর বিদায় বেলায় ফেলে যাওয়া চোখের জল,অদ্ভুত লেগেছে মনে।
দিন চারেক পরে আমার নামে একটা চিঠি এল বাইপোষ্টে,
অপুর লেখা চিঠি, পুরটাই চোখের জলে ভিজে
জলে ভেজা লেখা গুলো পড়লাম বহু কষ্টে,
তার পরই নিজের গাড়ি নিয়ে ছুটলাম রাস্তা দিয়ে।
যতক্ষনে আমি পৌঁছেছি, অপু লাশ হয়ে বাইরে শুয়ে;
চাঁদপানা মুখ বীভৎস ঝলসানো,আমায় কি যেন বলছে ;
আমার শাড়ির আঁচল ভিজে গেল চোখের জলে,
জানি না, সে জল দুঃখে এসেছিল, না চরম রাগে ।
ডাকবাক্সে দেরীতে আসা চিঠিখানা দুমড়ে গিয়েছে হাতের ফাঁকে;
কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে ফিরে এলাম শেষে আমার নিজের ঘরে।
অপুর চোখের জলে ভিজে যাওয়া চিঠি খানা হাতের পরে পেতে,
চোখে স্পট হয়ে উঠল সব সত্য ওর মিষ্টতা আর রোমান্টিক চিহ্নে।