আমি যেখানে বসে লিখি, সেটা একটা দক্ষিণ মুখো ঘর,
আমার দক্ষিণে সবই সারিবদ্ধ ছাদ।  
তার ওপরেই বড় ফাঁকা ক্যানভাসে ভাসতে দেখা যায়
নারকেল ঝিরি হাওয়া, কাটা ঘুড়ির মত একচিলতে আকাশ
দোল খায় হাল্কা দমকা হাওয়ায়, তবু সে আকাশ নীল নয়!
কালো মেঘের ভয়ে জানলার টবে রাখা ছোট্ট পাথরকুচি
মুখ লুকালো দেখি এসে আমার ঘড়ের ছায়ায়;
একঝাঁক পায়রার ডানায় বাতাস বইছে জোড়...
হারিয়ে পরিপাটি এলোমেলো চুল আর আমার হা-হুতাশ
এমন একলা দুপুরে গোপনে নিশ্চিন্তে কথা কয়।


ছায়া বেড়ে চলা ঘরে দুপুরও আমার সাথে
গল্পে মেতে রয়, আর নেচে ওঠে শূন্যতা ঘরের দুরন্ত পর্দায় ...  
অচিন গানের সুরে মনের কোণে কোণে
এখন যদিও বৃষ্টি হয়,পাথরকুচি চুপটি করে ভিজবে ঘরের ছায়ায়;
আর বৃষ্টিতে কালো ক্যানভাসে ভিজবে দুপুরটাও।  
একটু দুরে বসে শুধু ছাঁট না লাগা গায়ে,  
দেখবো সারিবদ্ধ ছাদের কোনও একটায়
বৃষ্টিফোঁটায় উঠবে দুলে কুমড়ো ফুলের ডগা...  
এখন কাকস্নান সেরে কাকের বাসায় ফেরার পালা।  
জমাট অন্ধ কোণে শুধু কাদের আনাগোনা!


আজকে এমনি দিনে মন চলে যায় দূর...  
একটা একলা দুপুর, তার ডানহাতে ছোট মাঠ,  
দুটো মোটে তাতে গাছ, এক সজনে, দুই লিচুর।  
আরও গেলে কয় হাত একটা পুকুর ধার,  
তাতে তালগাছ গোটা চার, সবই হারিয়ে যাওয়ার ফাঁদ...  
আমের বনের মাঝে সামনেতে চোখ বাঁধা,  
সুড়ি পথ বাঁহাতে, আঁধার আঁকে ধাঁধা।  
সে চুপে ডেকে নিয়ে যায় দূর হলদে সর্ষে ক্ষেতে...  
যেখানে খেলা করে রোদ্দুর নীল রঙেতে ভেসে;
আমার ছোট্ট গ্রামের ঘড়, আজ আমার কাছেই পর, আর যায়না তাকে ছোঁওয়া।