এ শহরের খোলা আকাশে কেউ ঘুমোয়না।
কেউ না, কেউ না...  
কেউ ঘুমোয়না।
চাঁদ শুঁকে শুঁকে তারা কেঁদে চলে অবিরাম,
দূরের কবরখানায় একটি মৃতদেহও
কেঁদে চলে তাদের সাথে হরদম;
এরা সব জেগে জেগে
আর্দ্র পৃথিবীকে খেতে খেতে
অবিশ্বাস্য বিশ্রামে থাকা স্বপ্ন বুনে চলে।  
শুধুমাত্র মাংসের অস্তিত্বে,
চুম্বনে আমাদের মুখ বেঁধে
গাভী চোখে আশ্রয় নেয় হলুদ পৃথিবীতে।
ক্রুদ্ধ পিঁপড়ের মত ছুঁড়ে ফেলে নিজেকে
তুষার প্রান্তে বিস্মৃতি আরোহণে!
তবুও কিছু শুকনো প্রজাপতি মৃতদেহ থেকে উঠে আসে,
এ শহরের খোলা আকাশের ল্যান্ডস্কেপের নিচে...  
ধূসর নীরব জাহাজগুলির মাস্তুলে বসে দূরের স্বপ্ন দ্যাখে!


এ শহরের খোলা আকাশে কেউ ঘুমোয়না...
কেউ না, কেউ না,
কেউ ঘুমোয়না,
আগুনে তিক্ত, ক্ষত, হিংস্র নীল চিল রাতের বেলা
ভাঙা পোড়ো মন্দিরের দেওয়ালে শ্যাওলা জাপটে ধরে,
এই মঞ্চের ট্র্যাপডোর খুলে নিতে।
কোনও শারীরিক শব্দে নয়
এক ঘড়ি টিক্‌ টিক্‌, এক পিয়ানো সুরে,
ঘুমের মুহূর্তে অবিচ্ছিন্ন ভাবে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে চায়
রাতের পৃথিবী, ফেরেস্তাহীন বিস্ময় ঘুম থেকে...
যেখানে সূর্যের ছায়ায় নদী, বন, শহর এবং ঘাসে
রাস্তাগুলি শূন্যে নামে প্রবাহিত জনতার স্রোতে,
একটি গতিবিহীন স্টেশনের প্রবেশ পথে।
তবুও নীল চিল এ শহরের খোলা আকাশের ল্যান্ডস্কেপের নিচে,
ধূসর নীরব জাহাজগুলির মাস্তুলে বসে দূরের স্বপ্ন দ্যাখে!


এ শহরের খোলা আকাশে
না ঘুমিয়ে পড়ে যারা একান্তে সব স্বপ্ন দেখে চলে,
বসন্তের প্রথম নদী তাদের চুলের মধ্যে লুকোয়...
প্রতিটি নদীর মানচিত্রে অ্যাসিডের স্পষ্ট ফোঁটা
ফুটন্ত নদীর জলে মেঘের মত ধোঁয়ার দেওয়াল বানায়,
আর দেওয়ালের দুই মুখে শহর থেকে শহর জুড়ে যায়;
ফেরেস্তাহীন বিস্ময় ঘুমের ঘোরে
মঞ্চের ট্র্যাপডোর খুলে
ধূসর নীরব জাহাজগুলি ভেসে যায় অজান্তে নিরুদ্দেশে...
তাই এমন যাতে আর না হয়
এ শহরের খোলা আকাশে কেউ ঘুমোয়না...
কেউ না, কেউ না,
কেউ ঘুমোয়না... কোনোদিন।