আজ
আমার সময় চেয়ে আছে শুধু তোমার পানে,
শ্রাবণের ধারা হয়ে তুমি আসবে কবে কাছে?
কবে তুমি আমার মাঝে ঝরবে অঝোর ধারে
গ্রীষ্মের রাগে ওগো আষাঢ়ের লাজে!
দেখো,
আমি আসব ঠিকই, ঝরবো ওগো তোমার মাঝে
নীল আকাশের মেঘের কোলে, কাশের ফুলের দোলনা লাজে,
আকাশ যবে শান্ত হবে আসব আমি তোমার কাছে,
দুরন্ত হয়ে তখন তুমি ঝড় গুনবে আমার মাঝে।
আজ
আমার হাতের তানপুরাতে অপেক্ষারই ধুলোয় সেজে
সুরগুলো সব ভীষণ ভাবে হচ্ছে বেতাল আনমনা যে,
ওগো আমার সব হারালো প্রতীক্ষারই মাতলামিতে,
বসন্ত আজ মরছে বলে সুখ যে কাঁদে বৃক্ষচূড়ে।
বলো
কান্না ছাড়া করবে কি আর, সুখ যে আমার প্রাণের দোসর,
জেনো আমি হাসব যেদিন তোমার মাঝে, হাসবে দোসর সুখটিও যে ভীষণ লাজে।
আবার যবে ডাকবে তুমি নিজের করে তোমার মাঝে,
আসব তোমার তানপুরাতে সকল চেনা সুর বোনাতে।
শোনো চাঁদ বলেছে "বাটিক এঁকো জোছনা রাতে"
আজব ব্যাপার মোম গলেনি আগুনপাড়ে, পাথরটা যে যাচ্ছে গলে!
কেমন করে আঁকব আমি বাটিক ছবি জোছনা রাতে?
চাঁদ চোঁয়ানো নীল আলোতে রাতখানা ঐ যাচ্ছে ভিজে!
শোনো আমার মন বলছে আঁকবে ছবি পরের চাঁদে,
তারই আবার কদিন বাদে যাচ্ছি আমি তোমার কাছে।
দেখছি তুমি আঁকছ ছবি জোছনা রাতে,
আগুন রঙের দুঃখ জ্বেলে তুলির টানে।
ব্যাস!
শেষ করেছি ছবি আমার, এসো এবার আমার কাছে,
গান বেঁধেছি তোমার রঙে, কিংশুকেরই গন্ধ দিয়ে সাজিয়েছি ঐ দুয়ারটাকে।
তানপুরাটা খাটের পাশে দেখবে চেয়ে
অবাক চোখে তোমার আসা আমার কাছে।
আমি অবাক চোখেই দেখব তোমায়, দেখব তোমার ছবি আঁকা,
কিংশুকেরই গন্ধ মেখে শুনব তোমার গানের ব্যাথা,
পরে যদি আমার চোখে তোমার সুরের ব্যাথা বাজে
দাও কথা দাও জোছনা ছায়ে, সকল ব্যাথা নেবে শুষে।
কথা দিলাম, কথা দিলাম, আমার হৃদয় মরুর মাঝে
ঝরনা ব্যাথা হারিয়ে যাবে, সুখ দুজনার উঠবে কেঁদে, দুঃখ যাবে বৃক্ষচূড়ে।
আসলে তুমি আমার প্রাতে তানপুরাটা উঠবে হেসে,
আসলে তুমি আমার রাতে বাগেশ্রী যে উঠবে গেয়ে।
হাত দুটিকে ছেড়ো না আজ সূর্যি পাটের লালচে রেশে,
রাখো তোমার গানের মাঝে আমার প্রাণের ছন্দটাকে
আজ আমাদের মনের মাঝে জোছনা ছবি উঠুক ভেসে।
হোক তাই হোক এসো পাশে, আরও কাছে,
গান দিয়ে সেই দ্বার খুলে দাও
যেথায় মনের গন্ধ সাজে।