ছল
কবি-মুহাম্ম্দ রহুল আমীন


খাপে ভরা তরোবারি,
শোভায় কত বাহারি!
বাহির দেখিতে কত-
শান্ত যেন অবিরত।
আহ্লাদে নিয়ে হাতে
রোমাঞ্চকর নাড়াতে!
তাকে না দিলে মান,
রাখা দায় যে জান!
দেখায় সে কত ছল!
মনে জ্বালে তুষানল!


তুষের আগুন ধিকিধিকি জ্বলতেই থাকে বাইরে কোমল শান্ত মতি। অপূর্ব সুন্দর রূপক কবিতায় প্রিয় কবি যেন সংসারের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের কথাই বলতে চেয়েছেন। স্ত্রী রূপে মহিলারা অবশ্যই লাস্যময়ী, মন মোহিনী সে রূপ। তাকে ভালবাসতে হয় পূর্ণ মর্যাদা দিতে লাগে। তার সুখ দুখ আশা আকাঙ্খা সখ আহ্লাদ সবই খেয়াল রাখতে হয় স্বামী মহাশয় কে। মহিলারা অবশ্যই কোমল মতি হয়। দুঃখ বেদনা মায়া মমতা অনুভব করেন হৃদয় দিয়ে। স্ত্রী যিনি হন তিনিও এসব কোমল গুনগুলির অধিকারী। তার মনমোহিনী রূপ দেখতে ভাল লাগে, কোমল হয় তার অঙ্গ কন্ঠ কাকলি। তাকে তার পূর্ণ মর্যাদা দিলে সংসার সুখে শান্তিতে ভরে ওঠে। অর্থ প্রতিপত্তির চেয়ে তার দৃষ্টি থাকে সংসারে সুখের তরে। একান্ত দুঃখের দিনে সমস্ত পৃথিবী দূরে চলে গেলেও তিনিই একমাত্র স্বামীকে সাহারা দিয়ে থাকেন। নিজের আভূষণ স্বর্ণালঙ্কার নির্দ্বিধায় স্বামীর হস্তে তুলে দেন বিপদ পরিত্রাণে। এহেন স্ত্রী রূপী দেবীকে সম্মান দিয়ে রাখতে হয় । খেয়াল রাখতে হয় তার মন মেজাজ সুখ দুঃখ গুলিকে। অনেকে আছেন যারা সে সম্মান তাদের দিতে জানে না। পৌরুষতার দম্ভে পায়ের তলায় রাখতে চায় তাদের। কবি তার লেখায় এখানেই সতর্ক করেছেন জগতে সমস্ত পুরুষ জাতিকে। তারা যেন জেনে রাখুন স্ত্রীলোক হলো তুষানলের মতো। তাদের অভ্যন্তরেও সে বিদ্রোহের আগুন চাপা আছে। খাপে ভরা তরোবারির মত। তা যদি একবার ভরকে ওঠে তখন জীবন রাখাই দায় হয়ে পরবে। ঘন অশান্তি আর ভোগান্তিতে জীবন হয়ে উঠবে দুর্বিষহ। সাবধান বাণী দিয়েছেন কবিতায়। প্রিয় কবিকে এত সুন্দর একটি রূপক কবিতা উপহার দেবার জন্যে অনেক অনেক সাধুবাদ জানাই। অভিনন্দন রইল প্রিয় কবি।