আমি প্রধানমন্ত্রী হলে-ভাবনা দুই


গত দুটি লেখায় শিক্ষা ব্যবস্থা, সর্বশিক্ষা আর দরিদ্রতা দূরীকরণের সমীকরণ বাতলেছিলাম আর তপোবন ও তপনিধি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তপোবন হলো নিখরচায় দরিদ্র লোকেদের সন্তান সন্ততির বাধ্যতামূলক ছয় বছর বয়সের সরকারি খরচায় চালিত রেসিডেন্সিয়াল স্বয়ং সম্পূর্ণ স্কুল। সাথে তপোবন বাণিজ্য শাখার বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম। তপোনিধি হলো আর্থিক প্রতিষ্টান যেখানে তপোবন বাণিজ্য থেকে উদ্বৃত্ত অর্থ জমা হবে। আর সেখান থেকে শিক্ষান্তে যে সকল ছাত্র ছাত্রী ব্যাবসা করতে চাইবে তাদের তিন দিনের মধ্যে দশ লক্ষ টাকার চেক দিয়ে তাদের সকল সার্টিফিকেটে তপোনিধি সিল দেওয়া হবে। এখন প্রশ্ন হলো তপোনিধির তো তাহলে বিপুল পরিমান ধন রাশি প্রয়োজন। তা কিভাবে সঙ্কুলান হবে। এবার সরাসরি লেখাতে চলে যাইঃ-(লেখাটিকে কবিতা না মনে করে একটি ভাবনা বলে ভাবতেই অনুরোধ রইল)


প্রশ্ন হলো তপোনিধি কি করে বিপুল পরিমান অর্থ সঙ্কুলান
করতে সক্ষম হবে। বিভিন্ন ভাবে তপোনিধির খাতায়
অর্থ জমা হবে। একঃ তপোবন বাণিজ্য শাখার উদ্বৃত্ত অর্থ।
দুই; প্রত্যেক তপোনিধি যারা দশ লক্ষ টাকার অনুদান নেবেন
বারো বছর অবধি মাসে এক হাজার টাকা করে তাদের
তপোনিধি খাতে জমা করতে হবে। দশ লক্ষ টাকা ইনভেষ্ট
করে বছরে স্রেফ বারো হাজার টাকা ব্যাবসা করলে
নিতান্তই মামুলি অর্থ যা আর একজন কে তপোনিধি
হতে সাহায্য করবে। একটি উপদেষ্টা মন্ডলী থাকবে
প্রত্যেক তপোনিধিকে ব্যাবসায় সহায়তা করবার জন্য।
কোনও তপোনিধি যেন মুখ থুবড়ে না পড়ে সেজন্য
তপোবন বাণিজ্য শাখা তাদের উৎপাদিত সমস্ত পণ্য
সহায়ক মূল্যে কিনে নেবে আর প্রত্যেকটি শহরেই
থাকবে তপোবন বাণিজ্য শাখার ঝা তকতকে শপিং মল।
সেখান থেকেই তাদের সমস্ত পণ্য সুলভে বাজার জাত করা হবে।
সেক্ষেত্রে পণ্যের গুণমান ও সহায়ক মূল্য তপো-বাণিজ্য
নির্ধারণ করে দেবে। উৎপাদিত পণ্য তপো-বাণিজ্য শাখায়
জমা করে তপোনিধি থেকে তারা পেমেন্ট পেয়ে যাবে।
তপো-বাণিজ্য শাখার তপো-সুলভ যা কিনা সর্বাধুনিক
শপিং মল হবে যেখানে ঝা তকতকে বিশাল বিল্ডিং
মার্কেটিং স্টল, পার্কিং , বিনোদন পার্ক, উদ্যান
বাগ বাগিচা, এসকেলেটর আর লিফট সবই থাকবে।
পণ্যের মূল্য হবে অন্য সব শপিং মলের চেয়ে অনেক কম আর
গুণমানে সেরা। বিভিন্ন রকম মার্কেটিং স্কিম থাকবে, সেজন্য
দক্ষ মার্কেটিং ম্যানেজার নিয়োগ করা হবে।
পণ্য বিক্রি করে যা লাভ হবে সরাসরি তপোনিধি একাউন্টে
চলে আসবে। তিন; তপোটি ট্যাক্স দিতে হবে আপামর
জনসাধারণ কে। সেটি সামান্য হবে। যেমন আপনার
আধুনাতে প্রদেয় ট্যাক্স যদি দু হাজার টাকা হয় তাহলে
ছয় টাকা দিতে লাগে শিক্ষা খাতে। সে টাকার সাথে
আর মাত্র ছয় টাকা দিতে হবে তপোটি। সে টাকা সরাসরি
তপোনিধি একাউন্টে চলে আসবে। এছাড়া থাকবে
তপোনিধি রিলিফ ফান্ড। যে কেউ এখানে ডোনেশন দিতে
পারবেন। ডোনেশানের টাকা ট্যাক্স মুক্ত করা হবে।
এছাড়া বিদেশের নিউট্রাল দেশগুলিতে দেশের মানুষদের
যে পরিমান কালো টাকা জমা আছে, সে দেশগুলিকে
চাপ দেওয়া হবে একাউন্ট হোল্ডারদের নাম আর রাশির
পরিমান। যদি তারা এক্ষেত্রে ঢিলেমি করে তবে সেসব
দেশকে শত্রু দেশ বলে ঘোষণা করা হবে। সেসব দেশের সাথে
সমস্ত রকম কূটনৈতিক, ব্যাবসায়ীক বা রাজনৈতিক যোগাযোগ
বিচ্ছিন্ন করা হবে। তাদের দেশের লোকেদের আমাদের দেশে
আসবার ভিসা প্রর্যন্ত দেওয়া হবে না, সে সেদেশের প্রধানমন্ত্রীই
হোক না কেন। যাদের বিদেশের ব্যাঙ্কে কালো টাকা আছে
তাদের সুজোগ করে দেওয়া হবে, মাত্র পঁচিশ পারসেন্ট
টাকা তপোনিধি রিলিফ ফান্ডে দান করে বাকি পঁচাত্তর
পারসেন্ট টাকা তপোনিধি কারেন্ট একাউন্টে বৈধ হিসাবে
রাখবার জন্য। সরকার এক্ষেত্রে কোনও দখলদারি করবে না।
তাদের নাম ধাম ও গোপন রাখা হবে। যদি তেমন কেহ
এমনটা না করে তবে তাকে দেশের অবাঞ্ছিত নাগরিক
হিসাবে গন্য করা হবে। তার সমস্ত সম্পত্তি সিজ করা
ছাড়াও তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে আর আজীবন
কারাদন্ডে দন্ডিত করা হবে।
মোট কথা দেশের সম্পদ দেশেই রাখতে হবে। এছাড়া
যেহেতু আর অন্য কোনও স্বরোজগার প্রকল্পের প্রয়োজন
রইবে না তাই সে সব খাতে প্রতি বছর যত টাকা
খরচ হয় তা তপোনিধি একাউন্টে সরাসরি ঢুকবে।
প্রতি বছর বাজেট বরাদ্দে তপোনিধি খাতে বাজেট
বরাদ্দ করা হবে। আশা রাখি এর পরেও তপোনিধি
তৈরি করতে বা তাদের দশ লক্ষ টাকার এককালীন
আর্থিক সহায়তা করতে কোনও অসুবিধা রইবে না।
জয় ভারত মাতা কি, জয় হিন্দ , বন্দেমাতরম।


(লেখাটি সরাসরি এখানেই লেখা। সম্পাদনা পরে করে দেবো। আর এর পর প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য হবে দেশের সম্পদ বৃদ্ধি করে টাকার দাম ডলারের তুলনায় বাড়াবার। তাহলেই তেল সহ গ্যাস আর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমবে। সেজন্য ইন্টারনেটে অর্থনীতি পড়াশুনা করে দেখছি। পর্যাপ্ত জ্ঞান আহরণ হলেই সে লেখা লিখবো)


সংযোজনঃ একটি দেশের অভ্যন্তরে এক বছরে চূড়ান্তভাবে উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবার বাজারে সামষ্টিক মূল্যই হচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি বা গ্রোস ডমেস্টিক প্রডাক্ট)।  তপনিধি প্রকল্পে যে লক্ষ কোটি যুবক যুবতিকে ক্ষুদ্র শিল্পে পণ্য উৎপাদন করবার জন্য দশ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে আর তপোবাণিজ্য শাখা তাদের উৎপাদিত সমস্ত পণ্য কিনে নিয়ে তপোসুলভ হতে বাজারজাত করবে এবং প্রয়োজনে রপ্তানি ও করবে। তার মানেই দেশের উৎপাদন ও ভোগ বাড়বে আর দেশের গড় জিডিপি (স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন = ভোগ + বিনিয়োগ + (সরকারী ব্যয়) + (রপ্তানি − আমদানি), এই সূত্র অনুযায়ী অটোমেটিক্যালি বাড়বে, দেশ উন্নত হবে।