সরি বলে
ভদ্রলোকেরা
ভদ্রসমাজে চলে
ময়লা ঢাকতে
কেউ কেউ বলে,
বাকীরা অন্য দলে।
মিথ্যামিথ্যি
হলে কথা নাই,
সত্য সত্য ধরি...
বুকে হাত দিয়ে বলো
শতকরা ক'জন
সত্যি 'সরি'!


'সরি', কিছু মনে করবেন না প্রিয় কবিসকল, এই কবিতাটিকেই বাছলাম কিছু লিখব বলে। আহাম্মক নিন্দুকেরা আমার 'সরি'কে পাত্তা দেবে না তা জানি। কিন্তু আমি কী সত্যি 'সরি'! কেন সরি হ'তে যাব!


হ্যা, যে কথাটি কবি বলতে চাইছেন। এর চেয়ে সস্তা কথা আর কিছু নাই। কথাটি শুধু মুখের কথা, অন্তরের নয়। মন চুটিয়ে অসভ্যতা আগে করে নেয়, আর তার প্রতিবাদ হলেই, যেহেতু জানে সে অসভ্যতা করেছে, তাই মৌখিকভাবে, 'সরি', বলে দোষ কাটিয়ে দেয়।


আমার বাবা ডিফেন্সে ছিলেন। তিনি একটা কথাই বলতেন, "নো এক্সকিউজ", ভুল তো ভুল আর তা স্বীকার করে নিতে হবে। তাই আমি কখনও অজান্তে যদি কিছু ভুল হয়ে যায় আর তা বুঝতে পারি বলি, ভুলটা আমারই, সরি বলি না।


যাই হোক, আজকালকার দিনে কে আর নিজের ভুল স্বীকার করতে চায়। আছেই তো একটা সস্তা কথা, 'সরি'। তাতেই যদি পার পাওয়া যায় তো ক্ষতি কী!


তার মানে এটা বোঝা গেল, 'সরি', কথাটা আধুনা বাঙালি সমজে অসভ্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়, এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে আর কবি সে কথাটাই কবিতার মাধ্যমে প্রচার করতে চাইছেন। হৃদয়ের নয়, ঠোঁটের কথা। একটা 'সরি' বলার পর পার পেয়ে গেলে,  পিছনে কতই না গালিগালাচ করে লোকে। ভুলে যায় সে 'সরি' বলেছিল। এমন হাজারটা ঘটনার সাক্ষী আমি।


এই তো দুদিন আগেও আমি 'সরি' বলেছিলাম। বাইকে উঠছি পা'টা লেগে গেল পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক মহিলার গায়ে। চমকে উঠেছিলাম, অজান্তেই হৃদয় থেকে একটা আওয়াজ বেড়িয়েছিল, 'সরি'। তিনি আমাকে একটি কথাও বলেন নি কিন্তু আমি একটা প্রণাম করে বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে ছিলাম তার নির্লিপ্তভাবে চলে যাওয়ার দিকে আর ভাবছিলাম ব্যাস্ত রাস্তায় অনেক সর্তকভাবে চলতে হবে। এ 'সরি' অন্যরকম সরি ছিল। মহিলাটি কিছু বললে আমি নির্দিধায় আমার ভুল স্বীকার করে নিতাম, বলতাম ক্ষমা করে দেবেন , আমি ইচ্ছা করে করিনি। তবে সে পরিস্থিতি হয়নি।


"সরি", কথাটি আজ বালখিল্যতার সমান। দেখেছি, এমন অভিজ্ঞতাও রয়েছে,  সরি বলায় লোকে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। "কীসের সরি! সরি বললেই কী সব মাফ হয়ে যাবে', সেখান থেকে উত্তরত্তর হাতাহাতিও দেখেছি।


'সরি' নিয়ে এত সুন্দর লেখবার জন্য প্রিয় কবির জন্য রইল আমার আন্তরিক উষ্ণ অভিনন্দন।


নিবেদনে আপনাদের প্রিয় সঞ্জয় কর্মকার।