হ্যা, মানুষের অপরিনামদর্শিতার কারণে প্রকৃতি পরিবেশের যে সকল ক্ষতির কথা এক দুই তিন করে আলোচনা করছিলাম। তিন অবধি গতকাল লিখেছিলাম আর চার নম্বর থেকে লিখছি।


ধারাবাহিকতা বজায় রাখবার কারণে আগের উল্লেখিত তিনটি ক্রম-ও এ লেখায় উল্লেখ করলাম-


১। শহর নগর সম্প্রসারিত করতে যে পরিমাণে গাছপালা অরণ্য দীর্ঘকাল ধরে ধ্বংস করে চলেছে মানবকূল তাতে এ পৃথিবীতে জল স্থল আর অন্তরীক্ষের বাস্তু তন্ত্র প্রায় ধ্বংসের মুখে।
২। কলকারখানার বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস, কার্বন মনোক্সাইড, ক্লোরিন আর ক্লোরোফ্লুরো কার্বন এর দাপটে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে আবহমন্ডল আর পরিণামে ক্যান্সার সহ নানান জটিল রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ক্লোরিন আর ক্লোরোফ্লুরো কার্বন গ্যাস আকাশের উপরিমন্ডলে ওজোন স্তর যা পৃথিবীর মানুষ জনকে সূর্য থেকে নিঃসৃত আল্ট্রাভালোয়েট রে থেকে রক্ষা করে থাকে সে স্তর কে ক্ষয়িত /ছেদ করে চলেছে অবিরত।
৩। নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংস আর কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসে বাতাস আজ বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। মাত্রাধিক কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস গ্রীন হাউজ এফেক্টের মাধ্যমে এ পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ক্রমাগত বৃদ্ধি করে চলেছে আর তার ফলস্বরুপ...


চার নম্বর পয়েন্টে যাবার পূর্বে লেখায় উল্লেখিত বাস্তু তন্ত্র , উব্ধাকাশে ওজোনস্তর ও গ্রীন হাউজ এফেক্ট কী তা সংক্ষিপ্ত আকারে বুঝে নেওয়া যাক।


বাস্তুতন্ত্র (ইংরেজি: Ecosystem) হচ্ছে জৈব, অজৈব পদার্থ ও বিভিন্ন জীবসমন্বিত এমন প্রাকৃতিক একক যেখানে বিভিন্ন জীবসমষ্টি পরস্পরের সাথে এবং তাদের পারিপার্শ্বিক জৈব ও অজৈব উপাদানের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে একটি জীবনধারা গড়ে তোলে।


এটি পৃথিবীতে প্রকৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।বাস্তুতন্ত্রের উদ্ভিদজগৎ ও প্রাণীজগৎ পরস্পরের সঙ্গে এবং তাদের ঘিরে যে ভৌত পরিবেশ তার সঙ্গে নিবিড় ভাবে সম্পর্কযুক্ত থাকে।


এই পৃথিবীতে সমগ্র জীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকবার জন্য জল স্থল আর অন্তরীক্ষের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সহজ উদাহরণে ব্যাপারটি বোঝাতে চেষ্টা করছি।


মানুষ থেকে প্রত্যেক প্রাণীকূল নেহাত দু-একটি গোষ্টি যেমন নীলাভ শৈবাল ও অতি ক্ষুদ্র জীবাণু যারা অবাত শ্বসন করে থাকে বাদ দিলে জীবন ধারনের জন্য অক্সিজেন শ্বাসের মাধ্যমে বায়ু থেকে গ্রহণ করে থাকে আর প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরের কোষে কোষে বিপাকীয় কর্মের কারণে যে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয় তা বাহির করে দেয়। অক্সিজেন ব্যতিরেকে যে কোনও প্রাণী তিন মিনিটের বেশি বেঁচে থাকতে সক্ষম নহে আর এজন্যেই একে প্রাণবায়ু বলা হয়ে থাকে।


তো, এই প্রাণবায়ু যাবৎ প্রাণীকূলকে কে সরবরাহ করে থাকে?? একমাত্র গাছ ওই এই পৃথিবী আর নিজের পুষ্টির জন্য খাদ্য উৎপাদন করে থাকে সালোক সংশ্লেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আর যে প্রক্রিয়ার বজ্য পদার্থ রূপে অক্সিজেন পত্ররন্ধের মাধ্যমে বাতাসে ছেড়ে দেয়। বাতাস অক্সিজেনে সমৃদ্ধ হয়। এহেন আর কোনও দু'টি পন্থা নাই বায়ুমন্ডলে প্রাণ বায়ুর সরবরাহের।


তাহলে বুঝে দেখুন মানুষ যেভাবে নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংস করে প্রাণবায়ু সরবরাহের প্রধান উপাদানটিকে ধ্বংস করে ফেলছে তা কতখানি বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে প্রাণ জীবন আর বাস্তুতন্ত্রে........................


আজ  এটুকুই আর ভাল লাগছে না (চলবে)