"ক্ষণপ্রভা সুখ"-গোপাল চন্দ্র সরকার


সুখ যেন সখের মিঠাই
যতো পাই ততো আরো চাই ,
পেয়েও শান্তি নেই মনে
কি এক আবেশে শুধু মন টানে ;
আলেয়াসম ঘেরা তার মায়ায়
ধীরে-ধীরে ধুল জমে ভাবনায় ।


ক্ষণপ্রভা-বৈদ্যুতিক ঝলক
উদাহ মাত্র দর্শনে সে সুখ আলোক ,
বরং দুঃখ লম্বাকাল সাথে রয়
কত তা সখ্যতা আপনত্ব ময় ;
সুখ , কচুর পাতার জল
মন থাকে ভাবে টলমল ।
বাঁচায় আস্থা-চমক- স্বাদ
সুখ সামনে রেখে সৃষ্টি-আবাদ।


খুবই সহজ সরলে লেখা বুঝতে কারোরই কষ্ট হবার কথা নয়। গোপালবাবুর গত ৫/১১/২০২১ তারিখের আসরে প্রকাশিত কবিতা। তারপর থেকে আজ ২৩/১১/২০২১ তারিখ অবধি তিনি কোনও লেখা পোস্ট করেন নি। তার কবিতার সূত্র ধরেই বলছি যে তার কবিতায় তিনি বলেছেন সুখ ক্ষণস্থায়ী হয় কিন্তু দুঃখ লম্বাকাল অবধি স্থায়ী হয়। তাই ভাবছি যে পাঁচ তারিখ হতে তেইশ তারিখ , কম লম্বা নয়। নিঃশ্চই তিনি কোনও দুঃখ নিয়ে সুখের সুলুক সন্ধানে ব্যস্ত রয়েছেন। কেহ তার সম্বন্ধে কিছু জানলে জানালে বাধিত হব।


এবার আসি কবিতার প্রসঙ্গে। সুখ আর দুঃখ-জীবনে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত সুখ দুঃখের জীবন। কেহই কিন্তু দুঃখ পেতে চান না, চান শুধুই সুখভোগ। অথচ দুঃখ মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখে আজীবন। আসলে সুখ আর দুঃখ দুইটিই মনের একটি বিশেষ অবস্থা মাত্র। যাহার জীবন দর্শন যেরূপ তদনুরূপ হয় তার সুখ দুঃখের পরিমাপ। যিনি অল্পেই সন্তুষ্ট থাকতে পারেন, যার বিষয় আসয়ের প্রতি মোহ নাই, যার চাহিদা খুবই সামান্য তিনি যৎসামান্য আয়েই পরিবার পরিজন নিয়ে সুখেই দিনাতিপাত করে থাকেন। হাসি খুশিতে অতিবাহিত হয় তার জীবনকাল।


বিপরীতে বেশিরভাগ লোকেই কিন্তু অল্পে সন্তুষ্ট থাকতে পারেন না। তাদের শুধু চাই চাই লেগেই থাকে। প্রচুর ধন সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও তারা আরো পেতে চান। এই আকাঙ্ক্ষা থেকে তাদের মনে না পাওয়ার শূন্যতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর না পাওয়ার এই শূন্যতা তাদের মনকে সেই বিশেষ অবস্থা যাকে দুঃখ, কষ্ট বলে সেই রাস্তায় ঠেলে দেয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতায় লিখেছেন,"তার আরো চাই যার আছে ভুঁড়ি ভুঁড়ি, রাজার হস্ত করে গরীবের ধন চুরি"। স্বয়ং রাজাও তার অগাধ সম্পত্তি নিয়েও সুখী হতে পারেন না।


তাই এটা বলাই যেতে পারে যে সুখ দুঃখ আপন আপন জীবন দর্শনের দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। কেউ অল্পেই সুখী হতে পারেন আবার কারুর জীবন অতিবাহিত হয়ে কেবল দুঃখবোধ সঙ্গে নিয়ে।


যাই হোক গোপালবাবু সম্বন্ধে কারুর কিছু জানা থাকলে দয়া করে লিখে জানাবেন।