"ফুটপাথের দোকানদার, (গীতি কবিতা)"
লেখক কবি, "চাঁছাছোলা"


ফুটপাথের ঐ দোকানদার
বুকটা করে সদা হাহাকার
এই চলে তো এই চলেনা
তার জীবন আর সংসার।


ফুটফুটে তার পোলামাইয়া
বাপের দিয়ে থাকে চাইয়া
বৌয়ের বায়না মিটায়ও না
চিকিৎসা চলেনা মাবাবার।


বারেবারে সে হয়ও উদ্যমী
হয় কতনা কঠোর পরিশ্রমী
সহযোগিতা কারোই পায়না
শুধু উছেদই হয় বরংবার।


নিত্যই বেকারত্ব বাড়ে শুধু
নেতার মুখে যত ছড়ায় মধু
তাদের কথা কেউই ভাবেনা
যেই থাকুক দেশের সরকার।


ফুটপাথের ঐ দোকানদার
সস্তায় বাঁচায় কত খরিতদার
ভালোভাবে নিজেই বাঁচে না
স্বাদ আশাও বাঁচেও না তার।


যারা হত দরিদ্র , জীর্ণ যাদের কুটির, বস্তি যাদের বসবাস তাদের প্রায় শতভাগই নির্ভর করে ফুটপাথে এটা সেটা কিছু বিক্রি করে সামান্য দুটি পয়সা রোজগার করে জীবনের অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য আর বস্ত্রের সংস্থান করা।


তেলেভাজা বিক্রি থেকে শুরু করে ফাস্ট ফুড বা ছোট খাট কিছু মনিহারী সামগ্রী বা ফুটেই ডালা সাজিয়ে খাদ্য বা বিভিন্ন পসরার বিক্রি করা আর তার থেকেই কিছু লাভ করে বাল বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে সংসার। সে সামান্য আয়ে অনেক কিছুই পূরণ হয় না বা হতে পারে না। অথচ, চাহিদার কি শেষ আছে। খাদ্য খাবার ছাড়াও দরকার পরে বাড়ির মহিলাদের প্রসাধনী দ্রব্যাদি, অলঙ্কার, হাট বাজারে বা আমন্ত্রণ উৎসবে ভালো বস্ত্রাদি, বয়স্কদের চিকিৎসা, রোগ ভোগে ডাক্তারের ফিস, ঔষধ আরও কত কি! না, তেমন কোনও স্বপ্ন পূরণ তাদের হয় না কোন কালেই। জরা, মৃত্যু আর অপুষ্টি এদের ঘিরে থাকে সব সময়েই।


বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চারা, তারা তো অবুঝ। খেলনা থেকে শুরু করে ভালো কাপড় চোপড় তো তাদের অধিকার। কে দেবে তাদের! তারা তাই মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে তার বাবার দিকে। কষ্টে বুক ফেটে গেলেও তাদের বাবাদের ক্ষমতা হয় না সেসব দাবি পূরণ করবার। যেখানে অন্ন সংস্থান ওই যুদ্ধ সম সেখানে কি আর এসব হতে পারে!


বিশেষ করে শীতের দিনে যেন হাহাকার ওঠে তাদের প্রাণে। বস্তিতে অনেক দেখেছি অনেক রাত অবধি টায়ার জ্বালিয়ে গোল করে তার চারি ধারে তারা বসে থাকে। জীবন যেন বিভীষিকা ময় তাদের কাছে। অনেক পরিশ্রম করতে হয় তাদের দুটো পয়সার জন্য। ফুটপাতে ব্যাবসা তাই প্রতিদিনই দোকান গুটাতে লাগে আবার প্রতিদিন বানাতে হয়। তার উপরে রয়েছে মাঝে মধ্যেই উচ্ছেদ অভিযান। তাদের দুঃখ বোঝবার কেউ নেই। তাদের দেখবার কেউ নেই। যখন উচ্ছেদ হয় সে কয়দিন যতক্ষণ না পর্যন্ত অন্য কোথাও ফুটে জায়গা করে নিতে পারছে, পরিবার গুলি কিভাবে চলে ভাবতে পারেন।


নেতা মন্ত্রী অনেকেই বিপিএল এই পরিবার গুলির জন্য কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন করে থাকেন , কাজের কাজ কিছুই করে্ন না। এই সব বেকার অসহায় মানুষ গুলির কষ্ট দুঃখ দুর্দশা প্রিয় কবি শ্রদ্ধেয় কবি চাঁছাছোলা মহাশয় অত্যন্ত কুশলতার সাথে তার লেখা কবিতায়  অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।


এই চরম শীতের মরসুমে প্রিয় কবি যেন সবার চোখে আঙুল তুলে দেখাতে চাইছেন কত দুঃখ কষ্ট কত দুর্দশা বয়ে চলে এই অসহায় মানুষ জনের উপর দিয়ে। অনুচ্চারিত শব্দে অনুভব করাতে চাইছেন, চেতনা জাগ্রত করতে চাইছেন গণ মানুষ জনের। দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনুচ্চারিত শব্দে যেন আবেদন রাখছেন সবার কাছে তাদের পাশে দাঁড়াবার জন্য। কিছু সহায়তা তাদের জন্য যেন কামনা করছেন কাব্য লেখের মধ্য দিয়ে।


এমন সুন্দর মানবতাবাদী লেখার জন্য তাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।