“কনিকা সরকার”


(ভূমিকাঃ কনিকা সরকার আমার বন্ধু শ্রীযুক্ত সুব্রত সরকার (শিল্পপতি) মহাশয়ের মা'র নাম। তিনি স্বর্গীয় সুবল কুমার সরকার মহাশয়ের স্ত্রী। তিনি অত্যন্ত বাস্তববাদী, সত্যনিষ্ট, মমতাময়ী ও করুণার আঁকর। সাংসারিক সমস্ত প্রতিকূলতা তিনি দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করবার ক্ষমতা রাখেন। একসময় প্রচুর বৃত্তশালী ছিলেন তারা। কালের প্রবাহে বর্তমানে খুবই সঙ্কটজনক পরিস্তিতির মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত করতে হয়। যদিও সে পরিস্থিতি অচিরেই কেটে যাবে বলেই আশা রাখি। তবুও তিনি কখনই ভেঙে পরেন না। তিনি আমাকে পুত্রস্নেহে অত্যন্ত ভালোবাসেন। আমার বন্ধুর অনুরোধে তা'কে নিয়ে আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস)


বিদুষিনী স্নেহময়ী মমতার সম্ভার,
দম্ভ ও বাসনা যে-কণা সম
নাই তার।
সিধেসাঁধা জীবনেতে মানটুকু দরকার,
মহীয়ান মাতা সে যে;
কনিকা সরকার।
দাবদাহ সম প্রাণ জীবনের সংঘাতে,
দৃঢ় তার বল অতি-মানসিক
প্রতিঘাতে।
সচ্ছল ভরা নদ প্লাবনেতে ভাসে গাঙ,
কাল তার আবর্ত্তে-কেড়ে নিতে
ধন মান।
ভাঙেনি তো ভরা নদী কুলু কুলু স্রোতে বহে,
স্থিতধী সে গুণীজনা-উত্থান
অবরোহে।
দেবী তার মূরতিতে স্বর্গের সীমানায়,
আঁচলেতে বাঁধা তারি-স্নেহময়
রচনায়।
দয়া মায়া স্নেহে ভরা মমতার রানী মাতা,
পূজ্য সে দেবালয়ে-মাতাময়ী
ইতিকথা।


“মা”


মা'গো তামার বিভায় শশী লুকায় বদন তারি,
তুমি আমার স্বপ্নালোকের-সোনার
আলোক পরী।
জন্মে তোমার গর্ভে মা'গো দশ মাস দশ দিন,
কেমন করে শুধব মা'গো-শুধব তোমার
ঋণ।
তোমার পরম স্নেহের পরশ কে দেবে আর মা,
ভব সাগরের উছল নদে-তোমার
নেইকো উপমা।
সংসারেতে দুখ সাগরে অরূপ রতন দিব্য প্রভা,
জড়িয়ে লতায় পাতায় শাখে-স্বর্ণালি রঙ
তোমার বিভা।
দিব্য দেশে বক্ষে তোমার চরণ ধরি মাতা,
তুমিই আমার দেবা-দি-দেব
সাধন পূজন গাঁথা।
আর প্রেমেতে রাণীর দেশে আকাশ ভালোবাসি,
দিব্য চরণ তোমার মাগো-আমার
গয়া কাশী।
যুগ যুগেতে গর্ভে তোমার আমায় দিও স্থান,
মা'গো আমি সঁপছি তোমায়-আমার
মন প্রাণ।


“দংশন”


মাকে বলতে শুনেছিলাম, এত মারি ধরি
ছেলেটার চোখে জল পরে না অথচ
খেতে বসে শুধু কেঁদেই যায়,
এবার ওর দাঁতটা তুলে দেব।
পরদিন মা হাসপাতালে নিয়ে যায়,
কিছু ঔষধ কয়দিন খাবার পর দাঁত তুলতে নিয়ে যায়।
সাহসী ছিলাম, কোনও ভয় না করেই বীরের মত ঢুকে যাই চেম্বারে।
দাঁত তোলা হয়। মায়ের সাথে রিক্সা করে ফিরছিলাম বাড়িতে হটাৎ
রিক্সাতেই ঢলে পরি। পাগলের মত মা আমায় নিয়ে যায় হাসপাতালে।
শীতের দিন ছিল, ডাক্তারবাবু ঘচাঘচ বেশ কয়েকটি ইংজেকশান দেন,
সোয়েটার এর ওপর দিয়েই। কয়েক ঘন্টা পর সুস্থ হয়ে বাড়ি আসি।
আজ বেশ কয়েক দিন হ'ল দাঁতের ব্যথায় ভুগছি,
বিভিন্ন ঔষুধ পাতি খেয়ে যাচ্ছি সপ্তাহ ধরেই আর
খাবার সময় সেই কষ্ট।
আজ আর কেউ বলে না, এবার ওর দাঁতটা তুলেই দিতে হবে।
এখন ব্যথায় আর কাঁদি না, কাঁদি শুধু
সেই কথাগুলি চিন্তা করেই।