“কি লিখি তোমায়”


কি লিখি তোমায়! ভ্রমর যেমন কলির সুবাস
সুঘ্রাণেতে মাতে, ঠিক তেমনই হৃদয় আমার
সৌরভেতে ভাসে।
হৃদ দরিয়ার তুফান লহর, নাই দিশা দশ মান,
স্নিগ্ধ বাতাস ঢেউ তুলে যায়
ধন্য দোয়ার গান।
প্রশান্তিরই ক্ষেত্র হরিত লাবন্যেরই ছোঁয়া,
বুক বাঁধি সই হৃদ দরিয়ায়
গান সে জীবন গাওয়া।
আসর পরশ স্নিগ্ধ শীতল সৌহাদ্যের বান,
প্রাণ ভাসি মন উজল ধারায়
মানবতার গান।
আসছি ভবে যাবই চলে রয় কে হেথায় সদা,
তোমরা আসর প্রিয়তম-সদাই
প্রিয়ংবদা।
কি লিখি তোমায়! দুচোখ ধারা-কপোল বেয়ে যায়,
আনন্দেরই বান ডেকে প্রাণ
ঝর্ণাধারায় বায়।
এক দুই তিন, চার পাঁচ ছয়-একান্নটি বছর পার,
ছোট্ট চারা মহীরুহ-আর জড়িয়ে
লতার জড়।
কল কল কল স্রোতস্বীনি যেমন বেগে সাগর ধায়,
কালের স্রোতের চক্রে জীবন
বৈতরণীর সেই কিনারায়।
সাঙ্গ প্রাণের চর্তুদোলায়-কাল চলে যায় বেলা,
যুগান্তরের ঘুর্ণিপাঁকে-ডাক এসে দেয়
ভেলা।
জীবন হ্রদের পঙ্কে কোথাও ফুটলে শতদল,
জুড়িয়ে পরান প্রশান্তিরই-মানব করণ
বল।
সেই দিশা মান বইতে চলি জীবন তারণ ধ্যান,
ধন্য ধরায় গাইতে চলি-মানবতার
গান।
শুদ্ধ কথার ঋদ্ধ বানে ফুটুক শতদল,
হৃদ সোপানে কোমল মতি
রইবে না কল ছল।
একতারেতে সুরের সাগর প্রশান্তেরই বুলি,
ডাক দেবে গান মধুর স্বরে
গাইবে রে বুলবুলি।
রব সে করুণ জাত জালিয়াত বুনতে নারে বাসা,
জন্মদিনে সেলাম সবায়-ধরতে মনের
আশা।
সেই আশাতেই বইতে তরী তরিৎ বেগে ধরি,
কাব্যগাঁথায় মানব নিশান-
সুখের কপোত গড়ি।
আর লিখে যাই উত্তরণের ঊষার আলোক গান,
গাইতে রে বোল-মুষ্টি ধরি
দিতেই যদি প্রাণ।
মা'গো তোমার সুবাস মেতে সাহস ধরি বল,
কৃপাণ হাতে লড়তে জানি
নইকো হীন্যবল।
অস্ত্র হাতে লড়বো মাতে ভয় কী রে তোর বল,
শৌর্য আর বীর্য মাগো-অটুট
মনোবল।
কী লিখি তোমায়, রক্তে আমার, ক্রোধের অনল শিখা,
দূর হতে দূর, দূর বহুদূর-দস্যু দানব
হেথা।
এক কাল আর পক্ষ সে কাল-গাইতে ধরায় মানব গান,
আর মা'গো মা, মারতে প্রাণে-হিংসা ও দ্বেষ;
শয়তান।
কি লিখি তোমায়!ভ্রমর যেমন কলির সুবাস
সুঘ্রাণেতে মাতে, ঠিক তেমনই হৃদয় আমার
সৌরভেতে ভাসে।
হৃদ দরিয়ার তুফান লহর, নাই দিশা দশ মান,
স্নিগ্ধ বাতাস ঢেউ তুলে যায়
ধন্য দোয়ার গান।


“মৃত্যুগীত”


জন্ম মানেই মৃত্যুর গীত-শ্মশানের আমন্ত্রণ,
দাওয়াত দিয়ে যায় দাওয়া'তে রে সই
কালের নিমন্ত্রণ।
জীবন কালেতে স্রোত বহমান-মৃত্যুর পানে যাই,
ছুটিতে সে পল বেদনা রোহিত
মৃত্যুর গান গাই।
কাঁটার মুকুট গনগনে রব-বজ্র আর বিদ্যুৎ,
তাহারি মাঝেতে দিন কয় রাত
দান খয়রাত প্রদ্যুত।
দীপ জ্বেলে যাই পদ্য গাঁথায় হৃদ আকাশে উড়ি,
নাই রে অহং নাই ব্যথা প্রাণ
হিংসা দ্বেষের গুঁড়ি।
রইবে না এই সাধের ধরা-না রবে মোর কায়া,
ঈশ্বরে লীন ভব পারাবার
বৈতরণীর খেয়া।
পার হব দিন অন্ত শেষে অন্তরীপের পার সে দ্বীপে,
লীন হবে প্রাণ কাল সে স্রোতে
ভবসাগরের অন্তরীপে।
কী হবে গান জন্মদিনের কী হবে কাল মৃত্যুরই,
গান বেঁধে যাই রইবে ধরায়
হাজার বরষ রইবে
সই।


“নারদ নারদ”


একে একে একান্নটা বছর কেটে গেল,
সময়গুলি যে কিভাবে পার হয়ে গেল
বুঝতেই পারলাম না।
এই তো সেদিন মা'য়ের হাত ধরে
ক্লাস ওয়েনে ভর্তি হয়েছিলাম।
চার বছর বয়সে আমায় ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করেছিল মা-
কেন জানি না!
রেজাল্ট বের হলে দিদিমুনি কি বলেছিল-বুঝি নাই তাই,
রাস্তায় এক কাকুকে রেজাল্ট দেখিয়ে সতিষ্ণু প্রশ্ন-
কাকু পাশ করেছি তো!
আট বছর বয়সে কোনও স্কুলে আমায় ক্লাস ফাইভে ভর্তি নেবে না।
মা'য়ের হাত ধরে এ স্কুল ও স্কুল ঘুরছিলাম।
আমার জ্যাততুত দাদার কল্যাণে তা ভর্তি হতে পারলাম।
চোদ্দ বছরে মাধ্যমিক-যদিও ফাস্ট ডিভিশনেই পাশ করেছিলাম।
সবই তো মনে হয় এই সেদিনের কথা।
আর কতদিন বাঁচবো জানি না! তবে যতদিনই হোক,
জানি, সময়টা খুবই তাড়াতাড়ি পার হয়ে যাবে-
যেমনভাবে কেটে গেল এই একান্নটা বছর আর তাই
এ অল্প সময়ে দেশ ও দশের জন্য সাধ্যমত
কাজ করে যেতে চাই।
নারদ নারদ!