প্রকৃতির লিখন,"কবি লিখে কবিতায়" (দ্বিতীয় খন্ড)
(গঙ্গার ভয়ঙ্কর ভাঙনের চিত্র ফেসবুকে দেখে খুবই ব্যথা অনুভব করেছিলাম। বাড়ি ঘর দালান কোঠা কিভাবে ভেঙে জলে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। সুজোগ পেয়ে সেই চিত্র চোখের সামনে রেখে লিখে গেলাম কবিতায়)


থই থই ভরা জল খলো খলো স্রোত তায়
তীর ভাঙে আঁকে বাঁকে ধারা বহে প্লাবতায়।
জাহ্নবী মাতা তার ক্রোধ ছোঁয় আসমান
ভাঙে বাটি বাসা বাড়ি ক্রোধ তাহে নিবারণ।
ভূমি তারি রোধে বাঁধ দূষণেতে জল ভারি
বিষ জ্বালা জঠরেতে প্রতিশোধে ক্রোধ তারি।


বিষে বিষে একাকার আজি ধারা কলুষিত
খলো মন মানবের ই আচারেতে প্রদূষিত।
থমথমে খরো বারি নাহি সে তো শুচি তার
জহরেতে হলাহলে- অবিজ্ঞ জনতার।
কবি মনে গনগনে আঁচ বহে বোধে তার-ই
নিবৃত্তে মাতা তাহে; দুই কর জোড় ধরি।


প্রকৃতির লিখন,"কবি লিখে কবিতায়"
- সঞ্জয় কর্মকার
(প্রথম খন্ড)


রিনিঝিনি বাদলের টুপ টাপ বর্ষণ
বারি তারি ধারা তাহে উতলা যে হয় মন।
কালো মেঘে বহে বেগে তড়িৎ-এর কিঙ্কিণী
নাদ তারি ভারি ঘন শিহরণে পল গুনি।
টুপ টাপ নূপুরের অবিরাম বারি ধারা
শিশু মনে ঝঙ্কারে মতি হয় গতি হারা।
মোহময়ী চিন্ময়ী মাতা রানী জলদের
স্পর্শেতে প্রাণ জাগে কিশলয়ে তরুদের।
সবুজের বলয়েতে জাগরণে শোভা তায়
মোহ জালে মাতে মন কবি লিখে কবিতায়।


জলে জলে শত বলে গিরিখাতে নদী বয়
ঝর্ণা সে উছলেতে শ্বেত বারি ফেনা তায়।
ব্রজধামে গোকুলেতে গোপী হৃদ মদিরায়
বেণু তারি আরাধনে; মন বায়ু বেগে ধায়।
শতফুলে ঝিলে বিলে মধুকরে গায় গান
রিনিঝিনি রিনিঝিনি বারি তার-ই গুঞ্জন।
শতধায় নদী বায় গরজনে স্ফীত কায়ে
নয়নেতে বারি তারি বানভাসি প্রাণ তাহে।
মেদিনীতে ওই পারে গড়া তারি ভূমি তায়
ত্রাণে আর বানে নাঁয়ে; ছুটে চলে জনতায়।
আঁখি তারা ছলকেতে কবি তার কবিতায়
কপোলেতে বরিষণে চিত্র সে এঁকে যায়।