কবিতা রচনা বা সৃষ্টি করবার আর একটি সহজ পদ্ধতি সম্বন্ধে বলবো আজ। যদিও সেভাবে আমাকে করতে হয় না কারণ সে কাজটা আমি মনে মনেই করে নিতে পারি। তবে নতুন নতুন এভাবে করতে থাকলে সবারই সে ক্ষমতা এসে যাবে বলেই আমি মনে করি।


এবার আসি সে পদ্ধতি সম্বন্ধে। আপনি কী লিখতে চান বা কী লিখবেন শুরু থেকে শেষ কিভাবে করবেন, প্রথমে সাধারণ কথ্য ভাষায় পুরোটা লিখে ফেলুন। এবার সে লেখাকে এক একটি স্তবক তৈরি করে সেই স্তবক গুলিকে কাব্যিক ঢং এ লিখে ফেলুন। কাব্যিক ভাবে চিন্তা করলে আবেগাসিক্ত হবে মন। কথাগুলিকে সরাসরি না লিখে কিছুটা রূপকে লিখতে চেষ্টা করুন। দেখবেন কখন কবিতা হয়ে গেছে আপনি বুঝতেই পারবেন না। আমি একটা উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বোঝাতে চেষ্টা করছি।


প্রথমে কথ্য ভাষায় লিখে নি।


কী দোষ করলাম মা যে তুমি আমাকে জন্ম দিয়েই আস্তাকুরে ফেলে দিলে। তোমাদের কী বিবেক নেই। তোমরা কী মানুষ না। তোমাদের ফুর্তির বলি আমি। খুন করলে আমায়। তোমরা খুনী। সমাজ যদিও খুজে বার করতে পারবে না, সনাক্ত করতে পারবে না তোমাদের কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে তোমরা কী জয়ী হতে পারবে কখনো। পারবে কী ঈশ্বরের কাছেও লুকোতে তোমাদের এ ন্যাক্কারজনক কাজ। জীবন তো একদিন শেষ হবে আর সেদিন তোমাদের তার বিচারে জাহান্নমে যেতে হবে।


এবার লেখাটিকে কয়েকটি স্তবকে ভাগ করি।


(কী দোষ করলাম মা যে তুমি আমাকে জন্ম দিয়েই আস্তাকুরে ফেলে দিলে। তোমাদের কী বিবেক নেই। তোমরা কী মানুষ না।)


কাব্যে প্রকাশঃ  দুষ্ট আমি কোন দোষেতে দিলেই ফেলে জলে, জন্ম দিয়ে আস্তাকুরে, ও মা, ফেলেই গেলে চলে।
(ও মা, লিখতে গিয়েই দেখুন মন কেমন করে উঠলো আর চোখে জল চলে এল)
মানুষ কী মা করতে এমন, পারলে তুমি মা! এই কী ধরা ভবের ঘরে-এই কী উপমা)


(তোমাদের ফুর্তির বলি আমি। খুন করলে আমায়। তোমরা খুনী)


খুন করেছো মা গো তুমি, করলে আমায় খুন, আমোদ তোমার জীবন আমার, এতই তুমি দীন।


(সমাজ যদিও খুজে বার করতে পারবে না, সনাক্ত করতে পারবে না তোমাদের কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে তোমরা কী জয়ী হতে পারবে কখনো। )

পারবে কী মা কালির সে দাগ, মিটতে মনেতে, কেউ না মাগো নাই বা পারুক, শাস্তি দানেতে


(পারবে কী ঈশ্বরের কাছেও লুকোতে তোমাদের এ ন্যাক্কারজনক কাজ। জীবন তো একদিন শেষ হবে আর সেদিন তোমাদের তার বিচারে জাহান্নমে যেতে হবে।"


তার দ্বারেতে ও পাড় যবে, জীবন দেবে দারি
বিচার সে মা, তোমায় দেবে জাহান্নমের তরী।


এবার পুরোটা লিখে ফেলিঃ


দুষ্ট আমি কোন দোষেতে দিলেই ফেলে জলে
জন্ম দিয়ে আস্তাকুরে, ও মা, ফেলেই গেলে
চলে।
মানুষ কী মা করতে এমন, পারলে তুমি মা!
এই কী ধরা ভবের ঘরে-এই কী
উপমা?
খুন করেছো মা গো তুমি, করলে আমায় খুন,
আমোদ তোমার জীবন আমার, এতই তুমি
দীন।
পারবে কী মা কালির সে দাগ, মিটতে মনেতে
কেউ না মাগো নাই বা পারুক, শাস্তি
দানেতে।
তার দ্বারেতে ও পাড় যবে, জীবন দেবে দারি
বিচার সে মা, তোমায় দেবে জাহান্নমের
তরী।


আন্তরিক শুভকামনা সহ সঞ্জয় কর্মকার।