"করুণ সুরে হেমন্ত", (বিরহের লেখা)


সোনার গোলা কনক বরণ স্বপ্ন সুখের আঁশ
মাঠের গোঠের ফলার তূণে, ধরণীর ঐ
রাশ।
রজ্জু তলে পরাণ মেলি ডাগর মেলি আঁখ
রইতে চেয়ে তাহার প্রতি, আজ যে বাজে
ঢাক।
ঢাকের তালে নাঁচতে চলে ধন্য ধরাতল
পাদ প্রদীপের তলায় শূলায়, নিকষ
নিশাদল।
খেচর যারা খেলতে জলে, ফেলেই রাখে জাল
হেমন্তের ওই আকাশ কাঁদে, নীহার সে তার
তল।
নবান্নের ঐ খুশির প্লাবন দুঃখ জাগায় গানে
ধন ধান্য ফলিয়ে কৃষাণ; ভুখাই থাকে
প্রাণে।


“ক্ষতি”, (মানবতাবাদী লেখা)


বুলবুলি তুই ক্ষেপলি কেনে উথাল পাথাল হলি
রাগটি রে তোর হলোই কী সে; সে দোল কেনই
দিলি!
তোর শিসের ওই মধুর ধ্বনি রুক্ষ কেনই আজ
রণের সাজে মূর্ত যে তুই; ভ্রু'রুয় কেনই
ভাজ।
চঞ্চলতা বাহার তোর ওই; কোতল কতই প্রাণ
মুখ ফিরিয়ে নে না বুলি; পিছন দে রে
টান।
পিছলে গিয়ে জানি মানব ভ্রান্ত দিশায় আজ
দূষণ অতি করতে ধরায়; মাথায় তাদের
তাজ।
বনাঞ্চলের সাল সমাধি বায়েই ধরা বিষ
তাও রে বলি শোন রে বুল; বাজাস না রে
শিস।
ধন ধনী তো মহল তলে গরিব যারা অতি
কুঁড়ে আর ঝুপড়ি ঘরের; করিস না রে
ক্ষতি।
রক্ষে কী আর করবে মানব আর্ত জনাতেই
তাই জুড়ি হাত তোর ওই পানে; শিসটি থামা
তুই।


“ইতিকথা”, (প্রতিবাদী লেখা)


স্বজন পোষণ নীতির তলে আঁকশি টেনে চলা
হুতুম প্যাচার প্যাচপ্যাচানির নিচেই মিহিন
গলা।
গলি গলি কোণ কোণেতে হর দিশাতেই চলে
বোল্লা কালির কশম বলি; ধন ও বলের
তলে।
ময়রা তেলি কয়লা কালি রাঘব বোয়াল চাঁই
মূর্ত ওদের মূর্তি ধরা; কলের বাতাস
সই।
সই সই সই সই লো; কীসের খবর হইলো!
না হয় নি কিছুই ভায়া; বেকার পিছেই
রইলো।
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে ইস্তেহারের খাতা
জাতার কলে গদির বলে; ইহাই
ইতিকথা।


“গুলাম”,


বহুত সিধা কাব্য লিখা হর দিশাতেই ভাসে
যা খুশি তাই লিখতে কলি; মনের সুখেই
হাসে।
হাসনেহেনার সুবাস ধরে জবার মতই লালি
দিন ও রাতে সাদা কালোয়, জলের মতই
চলি।
উব্ধে আকাশ নিম্নে ভূ তল, গোলক ধাঁধায় প্রাণ
শোষণ আর বঞ্চনাতে; সুর ধরে সে
তান।
তাই কী বাহার ম'লই ওগো কলকলিয়ে চলে
বাচালতা চপলতা, হিংসা দ্বেষের
বোলে।
বলতে গেলে লিখতে গেলেই পাখ সে উড়েই যায়
তেপান্তরের প্রান্তরেতে, শহর নগর
ধায়।
খড়ের গাদায় সুঁই হারালে আর কী তাকে খোঁজা
হৃদয় নীলে মন হারালে, বাঁধন দেওয়া
সোজা?
তাই দরিয়ায় ভাসতে চলি ভাবের ধারাতেই
হিসেব কিতেব সব ভুলে ভাই; তার সে গুলাম
হই।


“বাজ”, (বিরহের লেখা)


টান টানে প্রাণ টন টনেতে
ব্যথার উড়ে বাদ্যি;
ক্ষ্যাম নাই ভাই পথ্য অসুধ
টান কমে না
রদ্দি।
রোদেই চড়া কঠিন অতি
বাজনা বাজায় রোজ ই;
গোলাপ নহে কাঁটার মুকুর
কাব্যি গাঁথে
হাজি।
হাজির তোপে ওড়ায় কেতন
আজ সমাজের রাজ;
আর সাধারণ ভালেই সবার
ঝপাত পরে
বাজ।