(দিন কয়েক প্রায় ১৫০ কিমি দূর শহর আলিপুরদূয়ারে কাটিয়ে এলাম। করোনা পিরিয়ডে সেখানে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা কিছুটা কথায় আর সেখানে লজে বসে লেখা পাঁচ ছয়টি কবিতা এই কথা কাহিনী সিরিজে প্রকাশ পাবে। শুরু করি।


আলিপুরদূয়ার আর কোচবিহার শহরে এখন করোনা ভীষণ তীব্র ভাবে ছড়াচ্ছে। সেখানকার লোকেরা এতটাই শঙ্কিত যে বাহির শহরের লোক বুঝতে পারলেই পঞ্চায়েত প্রধান বা ক্লাবের ছেলেপেলেরা কোয়ারিন্টাইনে পাঠাবার ব্যবস্থা করে। আমি শিলিগুড়ি থেকে গিয়েছি তাহলে আমার কি অবস্থা বুঝতেই পারছেন। সব লজ বন্ধ , খাবার হোটেল বন্ধ। সেখানকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপে একটি বন্ধ লজে অনেক বেশি ভারায় একটি ঘর নিতে হয়। অতবড় লজে স্রেফ আমি আর কেয়ারটেকার। মাঝে মাঝে মালিক আসে।


লজের বিবরণ :- লজের বিবরণ এই কারণে দেওয়া দরকার কারণ এর সাথে আমার প্রথম কবিতাটির সম্পর্ক রয়েছে। লজের আয়তন ৫০ ফুট বাই ১৫০ ফুট। তার এক সাইডে লম্বালম্বিভাবে ১২ টি ঘর। কোনটি ডাবল বেড আর কোনটি চার বেডের। আর একদিকে প্রায় ৩০ ফুট বাই ১৫০ ফুটের বিরাট চাতাল। সামনে বড় লোহার গেট। একটি বাস ঢোকার জন্য আর পাশে ছোট মানুষ ঢোকার জন্য। চাতালের পিছন দিকে একটি ঘয়েরি রঙ এর সুপার ডিলাক্স বাস ঠায় দাঁড়িয়ে। ওটি লজের মালিকের এখন লকডাউনে চলছে না। পিছনে একটি গেট রয়েছে। গেট খুললেই বিরাট ডোবা। কবিতাটির কাহিনী সেখান থেকেই শুরু। গেটটি খুলে ডোবাটি দেখছিলাম।) তারপর কবিতায়;


"কর্ম ব্রত"


ছোট্ট পাখি টুনটুনি; খেলছে ওরা কচুর বনে
ফুরুত ফুরুত উড়ছে শাখে, দেখছি অবাক দু নয়নে।
সামনে আমি স্থির দাঁড়িয়ে, নড়ছি নাকো বিন্দু এক
ওরাও কেমন পাচ্ছে না ভয়; বলছে যেন
আমায় দ্যাখ।


দেখবো কি আর ভাবতে চলি দূর শহরে পেটের টানে
ভীষণ ভয়ে কুঁকড়ে আছি হেথায় লোকের আঁচ আগুনে।
বাহির শহর বুঝতে পেলেই খবর দিয়ে পুলিশ ডাকে
চোরের মতই ভাব যে আমার; এদিক ওদিক
যাচ্ছি ফাঁকে।


ফাঁকি দিতেই ফুরুত করে টুনির মতই লুকিয়ে ঘুরি
টুনটুনি বেশ ভালোই তোরা; ভয় নেই স্রেফ উড়াউড়ি।
বন্ধ হোটেল ম্যানেজ তাই ডাবল ভারায় ঘর টি নেওয়া
শূন্য হোটেল একলা আমি, সেখান থেকেই
গানটি গাওয়া।


ধরলে পরে চোদ্দ দিন টুনটুনি বল কষ্ট কত
ভাবলে পরেই গা টা গুলায়; মনের মাঝে হয় যে ক্ষতো।
টুনটুনি তুই উড়তে থাক আমিও উড়ি আমার মত
চোর পুলিশের খেলায় মাতি; সাধতে চলি
কর্ম ব্রত।