"কান্না"


(লেখাটি রূপকে লেখা। লেখাটিতে দলিত বা গরিব লোকের ঘরের সুন্দরী তনয়াদের করুণ পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে কান্না বয়ে চলে মানে দুঃখ। "দিবা রাতি বাজে সুর আকাশের হাতছানি", মানে, দালাল চক্র এখানে কাজ করে, ভালো কাজের মুনাফার প্রলভন দেখিয়ে ছলে বলে কৌশলে তাদেরকে তুলে নিয়ে গিয়ে দেশে বা বিদেশে বিক্রি করে দেওয়া হয়)


কলি শত ফুটে হ্রদে সরোবরে পান্না
দলিতের কোকোনদে, বয়ে চলে
কান্না।
দিবা রাতি বাজে সুর আকাশের হাতছানি
কেড়ে নিতে কমলেতে, লুট মার রাহা-
জানি।"
কলি তায় বোঝে নায় ভন্ড কী মেকি ওরা
স্বপ্নের দেশে মন, করে তারি ঘোরা
ফেরা।
লাবন্যে ভরপুর দলে দলে দোলা তোলে
পালকিতে দিশা তারি, দরিয়াতে পাল
মেলে।
সরোবরে দ্যুতি খেলে হীরকের দেশে রাজ
হীনতার পরিশেষে, মুকুরেতে পেতে
সাজ।
পরিণয়ে মিলে কী গো ক্রুরতার রোশনাই
নির্ঝরে ঝরে চলে কমলে সে
বাসনাই।
বিকিকিনি হাটে চলে শতদলে দরাদরি
আমি কবি লিখি আজি, বিষাদেতে হৃদ
মেলি।


(সরোবরে দ্যুতি খেলে হীরকের দেশে রাজ/ হীনতার পরিশেষে, মুকুরেতে পেতে সাজ", সরোবর বলতে এখানে পরিবার পিতা মাতার কথা বলা হয়েছে। তাদের যখন লোভ দেখানো হয়েছে তাদের মেয়েকে তারা ফিল্ম ইন্ড্রাস্টি বা অন্য কোথাও কাজে লাগাবে ও সে অনেক টাকা কামাতে পারবে তখন সে গরিব পিতামাতা এটাই ভেবেছিল যে হয়তো তাদের দুঃখের দিন শেষ হবে, এরপর থেকে তারাও সুখে স্বচ্ছন্দে থাকতে পারবে সমাজে আর কলি মানে তনয়া সে তো, "লাবন্যে ভরপুর দলে দলে দোলা তোলে/ পালকিতে দিশা তারি, দরিয়াতে পাল মেলে", সে তো তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠে। শেষে, "পরিণয়ে মিলে কী গো ক্রুরতার রোশনাই/ নির্ঝরে ঝরে চলে কমলে সে বাসনাই", তারপর তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে তার সে সব কামনা বাসনা কান্নায় পরিনত হয় আর, "বিকিকিনি হাটে চলে শতদলে দরাদরি", মানে সে বিক্রি হয়ে যায় কোনও পতিতালয়ে।)