Sanjay Karmakar
badge icon
Founding Members
  · JsmuothscfStpa nhoongsorsewd  ·
"অমর গাথা", সপ্তদশ পর্ব


নারীর সে পণ লক্ষ্যে অমোঘ সাবিত্রী বাঈ ফুলে
শিক্ষা নারীর ভূষণ সে তাজ জ্বালতে আলোক কূলে।
নারীর সেবায় নতুন দিশায় তার ঐ পথ চলা
শেষ হবে না তার ও জ্যোতির যতই না
হোক বলা।


প্রলয় বায়ু ঝঞ্ঝা তুফান পায়ের তলায় দলে
আপন বিভায় জ্যোতির্ময়ী; সাবিত্রী বাঈ ফুলে।
আন্দোলনের প্রবল সে ঘাত শ্রেষ্ঠ নারীর গাথা
নয়ন ভরে সুধায় তাদের; মাগো, তোমার
ভূমেই লেখা।


দলিত তিনি মলিন নহে উচ্চ তাহার শির
অমর তাহার শাস্ত্র বিধান মহান তিনি বীর।
তাহার গড়া বিধির বলেই দেশের চলে রাজ
রত্ন তোমার বাবাসাহেব; শোভায়
তোমার তাজ।


এ দেশ ভূম প্রশান্তির ঐ, শান্তি ব্রতেই লীন
রণ সে তাদের শান্তি তরে; সৌরভের ঐ বীণ।
এ দেশ অশোক, বুদ্ধ এদেশ; তপোবনের ছায়
ধন্য তুমি মহান অতি ধন্য
তোমার কায়।


কি অপরূপ রূপ ধন্য তোমারি; জননী ভারত ভূমি
গড় সে তোমায় কায়ায় তোমায় ধন্য যে মা তুমি।
তোমার স্নেহের আঁচল তলে দিব্য সে স্থান মাতা
গর্বিত হই লালায়িত হই লিখতে
অমর গাথা।
____________________________________________
(যাহারা পূর্বের খন্ড গুলি পাঠ করেন নি তারা দু একটা পাঠ করে দখতে পারেন সময় হলে)


"অমর গাথা", প্রথম খণ্ড


কি অপরূপ রূপ সাধিলে জননী অরূপ রতন কায়
পাহাড় ঘেরা ভূম সে শ্যামল; ঝর্ণা মোহিনী বয়।
নদ নদী প্রাণ স্নিগ্ধ বনানী; সাগরের তট ভূমি
মিলন মেলা সে বিবিধ মাঝেতে ধন্য;
হে মা জননী।


তোমারি উদার কোমলো কলিতে প্রশান্তির ঐ ছায়
নীহারিকা গনে গগনো বিছায়ে তোমারি পানেতে ধায়।
হরিত বরণে হরিয়াছো হৃদ বক্ষে তোমারে ধরি
কনকো সে ভূম শস্য রাজিতে মহল
সোনার গড়ি।


অবারিত দ্বার দ্বারকা তোমারি পুণ্য সে ভূম তুমি
তোমারি ধূলিতে রেণুতে রেণুতে আকাশ তোমায় চুমি।
হেথায় পাঠান হেথায় মুঘল সিন্ধু সে বীর গাথা
ধ্বনিত রাহেতে তোমারি বায়েতে ইতিহাস
কতকথা।


শৃঙ্খলে প্রাণ অশ্রু মোচন দুখ সে দিনের পল
শত কত বীর সন্তান সবে গড়িলো স্বরাজ দল।
ফরিয়াদ তাহে গগনো ভেদিলো রাজ সে উঠিলো কাঁপি
অনুনয় নহে পূর্ণ স্বরাজে মেলিতে তাহারি
ঝাঁপি।


শাশ্বত প্রণয়ে হরিয়াছো হৃদ বন্দে তোমারি মাতে
আঁচলো বিছায়ে কমলো কলিতে দিবা কিবা রাত গতে।
সুষমা তোমারি সমাহিত প্রাণ লালায়িত নহি মাতা
ধ্বজা তোমারি জড়ায়ে কায়েতে রচিতে
অমর গাথা।


দেশাত্মবোধক লেখা, "অমর গাথা", দ্বিতীয় পর্ব


তোমারি উদার দানেতে জননী আননেতে সুখ বহে
শক হূন দল পাঠান মুঘোল; হর্ষে হেথায় রহে।
পারসিক জৈন শিখ ও ইসাই হিন্দু মুসলমান
নিজ নিজ জাত বোধ ও বিধায়; সুষমায়
জাজ্জ্বল্যমান।


অপার করুণা সুখো প্রদায়িনী, মহিমা তোমার ই গাহি
দীনতা নাহি গো হৃদ সে অবাধ ভাতৃ প্রতিম রহি।
গঙ্গা যমুনা তিস্তা কাবেরী সরস্বতী করতোয়া
প্রেমের ই সুহৃদ তাজ সে মহল; স্নেহেতে
নিগূঢ় গড়া।


কাঞ্চনে হেম নিহারি তোহারি অখিলে বাহিত ছায়
ভূম সে আকরে জমিনে জড়িপে স্তব্ধ চকিত হায়।
মুখরিত রব রবিরো তেজেতে ভাস্কর চিরায়ত
শান্তি সমীপে নবারুণে দায় ধরিতে
আপনো ব্রত।


ব্রততী হেথায়ে কোমলো কায়েতে নিদাঘে নাহিকো বায়
কোমলো শায়িত স্নিগ্ধ সে প্রাণ হরিতে কামিনী ধায়।
হেথায় জননী জড়ায়ে স্নেহেতে প্রেমের সে নদ বহে
ভায় ও মায়েতে আকরে নিগুঢ়ো ভালোবাসা
প্রেম দোহে।


শ্যামলে কোমলে হরিয়াছো হৃদ বন্দে তোমারি মাতে
আঁচলো বিছায়ে কমলো কলিতে দিবা কিবা রাত গতে।
তোমার ই কৃপার ই সিঞ্চনে প্রাণ সুজলাং রহি মাতা
ধ্বজা তোমারি জড়ায়ে কায়েতে রচিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা", তৃতীয় খণ্ড


নিলয়ে নিলয়ে বহিছে সে স্রোত ভক্তি সুধার রস
দেশ ও জননী প্রণয় কাহিনী তোমারি চরণে দাস।
শিরায় শিরায় বাহিত প্রবাহে গরবিনী ইতিকথা
স্বর্গের সম মহান সে ভূম; প্রশান্তির ওই
গাথা।


কান্ডারি তুমি জগত বিদিত শান্তি তোমার ব্রত
ব্রতচারী রই সন্তান সবে হিংসা অনভিপ্রেত।
শক্তি বলেতে কভূ নহি ক্ষীণ দুরাচারে নহে প্রীতি
অংশুমালীর স্ফুরিত তেজেতে; ধ্বংসের
গাহি গীতি।


প্রলয়ো তুফান ঝঞ্ঝা আদিতে অটল সে হৃদ বাঁধি
শৌর্যের সনে আমরণ রণে জীবন আপনি সাধি।
পর্বত চোটি পিছু নহি হটি দুর্বার দুর্জয়ে
অলকো অমঘো পণেতে টুটিয়া সাধিবারে
রণ জয়ে।


শহীদের দেশ ভুলিবারে ক্লেশ জননী জায়ার ত্যাগ
নমিতে তাদের ই চরণো যুগলে হৃদয়ে জ্বালাতে আগ।
ধন্য সে প্রাণ গাহিতে সে গান অগ্রগামীর রথ
নহি পিছু নই পুকারিলে রণ জুড়িতে সে
দায় ক্ষত।


বীরঙ্গনার কোল সে কোমল বন্দে তোমারি মাতে
আঁচলো বিছায়ে কমলো কলিতে দিবা কিবা রাত গতে।
ধ্বজা তোমারি প্রণয়ো কাহিনী গর্বিত হই মাতা
জড়ায়ে সুরভি হৃদয়ে তাহাতে রচিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা", চতুর্থ খণ্ড


উত্তরে হিম তুষার পুরী সে; গিরিরাজ হিমালয়
ধবলো সে কায় ধন্য ভুবন মোহিনী মণ্ডিত ময়।
দেবের ই দিশারী সুদূর প্রসারী চূড়ায় চূড়ায় তারি
শৈল শিখরে থর থর থর; কম্পে
শীতল ভারি।


পদতলে তারি সুকুমার কায় ধন্য তরাই তার
লুব্ধ সে ঢাল শাল ও তমাল বনাঞ্চলের দ্বার।
বাগিচা হেথায় চা এর বলয় অভিরাম মনোরম
বিশ্ব তাকায়ে দৃষ্টি নন্দিত বন্দনা
গাহে গান।


হেথায় শৈল হেথায় সাগর শ্যামল ও ঊষর ভূমি
নদী নালা খাল টিলায় টিলায় বিশ্ব স্বরূপ তুমি।
মহিমা তোমারি ভুবন মোহিনী উচ্চ তোমার শির
অগণিত প্রাণ জড়ায়ে তোমারে গড়িতে
সাধের নীড়।


তোমার ই দোহনে পুষ্টি পোষণে পুঞ্জে পুঞ্জে রয়
শান্তির নীড় স্নেহ তারি ছায় তোমার ওই গান গায়।
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা ধন্য তোমারি কায়
মমতা আকরে শিকড়ে নিগুঢ়; সম্প্রীতি-
রই ছায়।


শ্যামলে কোমলে হরিয়াছো হৃদ বন্দে তোমারি মাতে
তোমারি স্নেহের আঁচলো তলেতে সুরো লয়ে আঁখি পাতে।
তোমার ই কৃপার ই সিঞ্চনে প্রাণ সুজলাং রহি মাতা
প্রণয়ে তোমারি উড়ায়ে নিশান; রচিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা"-পঞ্চম পর্ব


নয়ন জুড়ায় বিবিধ ধারায় কৃষ্টি কলায় তাহে
আপনো আপন ভাষা ও বোল; স্নিগ্ধতার ওই বাহে।
বাংলা হেথায় হিন্দি তামিল, নানান নানান বুলি
অঙ্গ মাগো সবই তোমার কথ্য
কথাকলি।


দিবাকরের দীপ্ত কিরণ; হেথা শাখায় শাখায় বহে
জ্ঞানের আলোক ছড়িয়ে বিভায় প্রজ্জলিত তাহে।
তীর্থ সে দেশ মানব দেবের সঙ্গমের ওই গান
হেথায় সুখের পরশমণি নাই বেদনা
ম্লান।


দুঃখে মোরা হৃদ সে বাঁধি নই গ্লানিতে মৃত
ঝঞ্ঝা তুফান আসুক আঁধি অযুত নিযুত শত।
দুর্বাদলের দল দলেতে এক সে সুরের গান
সে গান আমার সে গান তোমায়, সে
গান ঐক্যতান।


ঐক্য মোদের অঙ্গ ভূষণ শির সে মণির তাজ
ধন গরিমা নাই গো হেথায় সমানতার রাজ।
প্রাচুর্যতায় পূর্ণ সে দেশ ধন্য সে ভূম তল
শৌর্য মায়ের আশিস মাথায় রই যে
তৃণের দল।


বীরঙ্গনার কোল সে কোমল বন্দে তোমারি মাতে
দুর্বার রই রণ কিবা প্রেম; দিবা কিবা রাত প্রাতে।
সুরভি তোমারি বক্ষে ধরিতে; সদা গর্বিত হই মাতা
সে ঘ্রাণ জড়ায়ে হৃদয়ে তাহাতে রচিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা"-ষষ্ট পর্ব


জলধী হেথায়ে বিছায়ে বারিতে তরঙ্গে উতরোল
ঢেউ সে ভাঙিছে পারেতে তাহারি চুমিতে তোমারি তল।
গগনো ভেরীতে নয়নো হেরিতে নব নব হিল্লোল
জীমূতো বায়েতে অরূপ সে কায় নব
জীবনের কল্লোল।


ত্রিবেণী ধারাতে ধৌত সে ভূম পুরাকাল ইতিকথা
গঙ্গা যমুনা সরস্বতীর ওই; ধারা বহে শত গাথা।
পুণ্যবতীর হৃদয় কমল মিলনে প্রেমেরি গীত
জনমো জনমো সাধনে সে প্রেম অন্তরে
লয় প্রীত।


গরিমা তোমরি গাহিতে সে ভূম মথুরাতে ভগবান
লীলায় তাহারি ধন্য ধরণী প্রেমের শাশ্বত গান।
কি অপরূপ রূপ জননী তোমারি দিব্য তোমারি ভূমি
প্রসূনো প্রহারে দিবা রাত গতে; তোমারি
চরণ চুমি।


এ দেশ প্রেমের, প্রেমের সাগর শাহাজাহান ইতিকথা
সে প্রেম বিধায় কুঞ্জে কুঞ্জে তাজ সে মহল গাথা।
শ্রুভ্র ধবল মর্মরে গীত বয়ে চলে নিরবধি
ধন্য এ প্রাণ জন্মে হেথায় সেলাম
তোমায় নিধি।


নীরবে সহিতে প্রদাহ ক্ষতেরই ধন্য তুমি হে মাতে
অমোঘো অলকো চিত্ত তোমার ই সাধনে আপনি ব্রতে।
দান সে তোমারি প্রেম সে বিধায়ে প্রণমি তোমারে মাতা
সে ঘ্রাণ জড়ায়ে হৃদয়ে তাহাতে রচিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা"-সপ্তম পর্ব


কমলা তাহারি বিছায়ে আঁচল স্থপতি এ দেশ তার
কনকো বরণে সাজায়েছে এ ভূম; অমিত ধনের দ্বার।
মানিকো রতনে হীরে মোতি আর কনক ধান্য রাজি
মানবো ধনেতে জনেতে জনেতে হিংসা
দিয়াছে ত্যাজি।


এ দেশ আমার এ দেশ তোমার ধন্য যে মার কায়
কমলো লোচনে মায়াময়ী মাতে মহিমা অপার তার।
বন্দনা গীত গাহিনু তোহারি চির ভাস্কর তুমি মাতা
তোমারি স্নেহেতে তোমারি কৃপাতে হে
মোর অন্নদ্বাতা।


সৌষ্ঠব তব হেরিয়া জননী কালে কালে যুগে যুগে
হানাদার শত লুটিলো এ ভূম তৈমূর কিবা মগে।
আর্যের দেশ আর্যাবত্ত ঐশী সে ভূম তার
নমিলো তাহারি কায়েতে বিলীন কতো
হলো একাকার।


লালায়িত রবে বিবেক রহিতো ইঙ্গ হানিলো বাণ
শৃঙ্খলে তব বাঁধিতে তোমারে মহিমা করিতে ম্লান।
নিঠুর বিধায়ে তোমারে কাঁদায়ে লুন্ঠনে উঠি মাতি
দোহনে তোমারে লুটিলো সে গড়
করিলো বজ্জাতি।


নীরবে সহিতে প্রদাহ ক্ষতেরই ধন্য তুমি হে মাতে
অমোঘো অলকো চিত্ত তোমার ই সাধনে আপনি ব্রতে।
দেবালয়ে হোম আরতি মূরতে; প্রণমি তোমারে মাতা
সে প্রেম জড়ায়ে হৃদয়ে তাহাতে রচিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা"-অষ্টম পর্ব


সদা জাগ্রত জওয়ান সিপাই দেশের তরেই প্রাণ
সীমায় সীমায় অটল অমোঘ মহান তাদের পণ।
নিখাদ তাদের দেশ-প্রেমের প্রজ্জ্বলিত শিখা
মুষ্টে লয়ে প্রাণ সে বীরের অমর
হেথায় গাথা।


শিরায় শিরায় ভক্তি তাদের বন্দে মাতার সান
দু কর জোড়ে সেলাম তাদের পরাক্রমের গান।
হেথায় সুভাষ হেথায় ভগত হেথায় ক্ষুদির গাথা
ধন্য তোমার ভূম যে মহান সে ভূম
ঠেকাই মাথা।


অহিংসার ঐ অমোঘ নিদান বাপুর নীতের বুলি
স্বরাজ তাহার সাধন তরে তাহার কথাকলি।
জোয়ার উঠে মন্ত্রে তাহার জাতির জাগরণে
মাথায় তুলে মোটা কাপড় মায়ের
দেওয়া দানে।


লক্ষ হাজার অযুত নিযুত সৈন্য তাহার সাজ
কাঁপলো সে ভিত ব্রিটিশ রাজের পড়লো মাথায় বাজ।
কূট সে জাতি ইঙ্গ তাহার ফন্দি ফিকির তাহে
ভাঙতে সে দেশ দ্বিধায় জাতের; বিধায়
খলের রাহে।


বীর সে দেশের নারাজ সিপাই নাথুরামের ব্রত
হৃদ সে ভাঙে ধ্বংস প্রলয় মানতে নারাজ ক্ষতো।
জাতির জনক বাপুর বিধায় হতাশ রহে তাহে
রক্ত তিলক আঁকলো সে বীর
আক্রোশের ঐ রাহে।


বীরঙ্গনার কোল সে কোমল কঠোর বিধায় কভু
দু চোখ ধারায় স্মরণ তাহায় মাগতে দুয়াই প্রভু।
জন্মে হেথায় বক্ষে তোমার; সদা গর্বিত হই মাতা
সে প্রেম জড়ায়ে হৃদয়ে তাহাতে রচিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা", নবম পর্ব
.
আব্রু তোমারি অক্ষয় মাতে জহর ব্রতের প্রথা
হৃদয় ক্ষরিত ব্যথায় ব্যথায় ধন্য সে প্রেম কথা।
পদ্মাবতীর এ দেশ ভূমি আকাশ বাতাস তল
মেদিনী নমিত তাহারি চরণে ধন্য সে
হৃদ বল।


প্রবল প্রতাপ মহীয়সী প্রাণ ঝাসির রানীর ব্রত
যুগে যুগে কাল, গর্ভে তোমারি অযুত নিযুত শত।
মহিমা তাদেরি ধন্য জননী সেলাম তোমায় নমি
বক্ষ স্তলেতে সে দল দলেতে মহান
তোমার ভূমি।


কৃষ্ণা কাবেরী গোদাবরী তুমি বহিছো হেথায় নদেয়
স্খলিত দলিত মানবীয় ক্ষত শোধণে আপনো বোধে।
ওঙ্কারে নাদ প্রশান্তির ওই স্নিগ্ধ শীতল বায়
তোমারি কায়েতে সে দায় বহিতে নীরবে
বাহিত তায়।


ছত্রপতীর সাধের সে ভূম লক্ষ্মী বাঈ এর দেশ
ছত্রে ছত্রে লিখত হেথায়ে বীর গাথা সন্দেশ।
নব রত্নের দেশ শোভিত আঙন সুরোকার তান সেন
মৌর্যের সান অমলিন প্রাণ বীরতা
তোমাতে লীন।


সূর্যের দেশ শূর বীর গণ সুরম্য ইতিকথা
হাজারো নিযুতো ন্যায়ের কাহিনী ও শৃঙ্খলে প্রাণ ব্যথা।
গর্বিত হই জন্মে এ ভূম জড়ায়ে তোমায় মাতা
সাহস ও ন্যায়ের রাহেতে গড়িয়া লিখিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা"-দশম পর্ব।


কৃষ্টি হেথায়ে গগনো চুমিতে কত্থক কথাকলি
বিহুতে তোমারি অমলিন মাতে হৃদয় উঠে যে দুলি।
গগনে ফাগুনে লগনে মাতায়ে ধন্য যে হয় হিয়া
হরষে পুলকে গাথায়ে অলকে নিখিলে
জ্বালায়ে দিয়া।


গগনো ভেরীতে তোমারে হেরিতে প্রশান্তির ওই ছায়
মধুরেন রব শোণিতে বাহিতে স্বর্গের পানে ধায়।
পারিজাত ভূম বৃক্ষ ও দ্রুম কুন্ডলে বট তুমি
অমর অজেয় এ ভূম আলয়ে; স্বর্গীয়
তট ভূমি।


তোমারে হরিতে নিখিলো ভুবনে জালিকা প্রবাহে রত
লুটিতে তোমারে সে ধন তোমারি অযুত নিযুতো শত।
শঠতার বোল বাজিছে ঢোলক চৌদিকে ছলনায়
বন্দি তোমারে জঞ্জিরে প্রাণ বাঁধিতে
তোমারে হায়।


তোমারে জড়ায়ে শত কোটি প্রাণ শপথ আজিকে মাতে
বধিতে সে দায় রুধিতে অনল অমর সে পণ ব্রতে।
শৌর্যে তোমারি রুধিরে বহিবো মুষ্ঠিতে লয় প্রাণ
রণেতে বধিবো ছল সে বাসনা গাহিতে
জয়ের গান।


বৈভবে তব বিশ্ব চকিত অসুরো নাশিনী তুমি
সিংহ বাহিনী, কাত্তায়নী, দেবী দূর্গে; সুখো শান্তি প্রদায়িনী।
বরাভয় তব আশিসে কমলা, ধন্য যে হই মাতা
জড়ায়ে তোমারে হৃদয়ে গহিতে, সে গান
অমর গাথা।


"অমর গাথা", একাদশ পর্ব


পুঞ্জে পুঞ্জে গুঞ্জিত রব শ্রেষ্ট আসন তব
বিস্ময়ে লোক সে তল চাহিতে গাহিতে তোমারি স্তবো।
পুকারিত রব রবির সে দেশ কাব্য গাথায় লীন
বিশ্ব বিজয়ে মুকুরে তোমারি শোধিতে
তোমারি ঋণ।


স্পন্দিত লয় ঝঙ্কারে তার মেদিনী উঠিলো দুলি
নৃত্য ও গীত সুর ও লহর কাব্য ও কথা কলি।
জ্যোর্তিময়ের বিভাতে বসুধা; মোহিনী মূরতো তাহে
দেশ ও প্রবাস দূর হতে দূর বন্দনা
গীত গাহে।


বিদ্রোহী প্রাণ বৈভবে তার ভৈরবের ওই গীতি
দুখু মিয়া তার কাব্য প্রলয় স্বরাজ তার ঐ প্রীতি।
অংশুমালীর তেজ সে ভয়াল রুদ্র তার ওই গতি
প্রমাদে সে ক্ষণ ব্রিটিশ কশেরু; দমনে
উঠিল মাতি।


মেঘনাধ বধ বহিলো তাহারি সুষমা তাহারি বীণ
মদিরাতে মন মান্য সূধন নহে নহে কভূ ক্ষীণ।
নব রূপে রণ, মধুসূধনের; অমর সে গীত গাথা
তোমারি ঝুলিলে তোমারি বুলিতে তোমারি
কোলেতে মাতা।


মহিমা তোমারি অপার মাতায়ে অমর তোমারি গাথা
পারিজাত ভূম মমতার জড় হে মোর অন্ন দ্বাতা।
নন্দিনী তুমি বন্দে তোমারি দু কর জুড়িতে মাতা
লিপিতে গাহিতে কলিতে বহিতে লিখিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা", দ্বাদশ পর্ব


মেঘনা যমুনা শতদ্রু ঝিলম; বিতস্তা তোর্সা ও তিস্তা
অঙ্গে তোমারি জড়ায়ে নিবিড়ে; অজেয় সে গুলদাস্তা।
ত্রিপুরার সান তিতাস সেথায়ে জড়ায়েছে উপকথা
তনয়া সে জন মেঘনা তাহার ধন্য সে
গীত গাথা।


স্বরূপ তোমারি সুকুমার স্থান; বিন্ধ্য ও হিমাচল
স্বর্গ যেথায়ে ছুঁয়েছে ভূ তল, বিছায়েছে অঞ্চল।
গাঙ্গেয় ভূম গঙ্গা তাহারি উর্বরা রাঢ় ভূমি
শস্য শ্যামলা সুফলা সে ভূম; চরণ
তোমারি চুমি।


দিল্লির দান ভঙ্গুর তন; পর্বত ইতিকথা
আঁকিছে যেথায়ে ভূ ত্বকে জোয়ালে আরা-বল্লীর গাথা।
সে প্রাণ বলয় বিস্তারে তায়; হরিয়ানা-রাজস্থান
তপো সে সাধনা সাধিতে তোমারে গাহিতে
তোমারি গান।


সাধু সাধু রব গাহিছে ধরণী তরণী তোমারি বায়
কমলে লোচনে বন্দিত মাতে; পূজ্য তোমারি পায়।
তোমারি সুধাতে লয়েছি সে ঘ্রাণ মসিতে দিও গো শান
গাহিতে তোমারে লিপিতে আকরে রচিতে
তোমারি গান।


কি অপরূপ রূপ সাধিলে জননী অরূপ রতন কায়
পাহাড় ঘেরা ভূম সে শ্যামল; ঝর্ণা মোহিনী বয়।
নদ নদী প্রাণ স্নিগ্ধ বনানী; সাগরের তট ভূমি
মিলন মেলা সে বিবিধ মাঝেতে ধন্য;
হে মা জননী।


বৈদিক ভূম বরাকের দেশ কমলো লোচনে মাতে
নমিতে তোমাতে জননী স্ব-ভূম বহিতে তোমারি খাতে।
হেথায় সুজলা হেথায় উষর হেথায় স্নেহের ঠাঁই
লিখিতে লিপিতে অমর সে গান, বন্দনা
গীত গাই।


"অমর গাথা", ত্রয়োদশ পর্ব


মনীষীর দেশ মান্য সুহৃদ বদান্যতার গাথা
তাদের রাহেই হৃদ সে মহল তাদের, চরণ ঠেকাই মাথা।
হেথায় শরত বঙ্কিম আর বিদ্যা সাগর গীতি
মুখরিত রব আঙন তোমার বন্ধনে
প্রেম প্রীতি।


মন্দিরে রব ঘন্টা বাজে শিষ্ট সে রব শুনি
মসজিদে রয় আল্লা মহান; আজানের গীত ধ্বনি।
গীর্জা হেথা্য় জৈণ ও শিখ; গুরুদ্বার ও মঠ
মিলন সে ভূম মধুর কুজন
দারুন চিত্রপট।


বিলের সে দেশ মহান তাহার আদর্শের ওই ভূমি
বিবেক জাগে তাহার বোধেই প্রেমের সে গান বুনি।
শিকাগোর ওই ধর্ম মেলায়; বিজয় তাহার গাথা
ধন্য সে কোল প্রসব তোমার; ধন্য
তুমি মাতা।


সতী দাহের দগ্ধ সে ক্ষত পরিত্রাণের পণ
বিলয়ে সে ক্ষত, রামমোহনের; গাহিনু মহান গান।
রামের এ ভূম কৃষ্ণ রাধা বৃন্দাবনের প্রেম
এ দেশ আমার এ দেশ তোমার, এ দেশ
কনক হেম।


শিলায় শিলায় লিখিত সে গীত সাম্যবাদের কথা
মধুর সে গীত কল্লোলে ধায় দেশ হতে দেশ যথা।
মা জননী শ্রেষ্ট তুমি ঐশী তোমার ভূমি
দু কর জোড়ে সেলাম তোমায়, পদ সে
তোমার চুমি।


গোকুল ধামের পুণ্য সে ছায় কৃষ্ণ ভগবান
নয়ন জুড়ায় সে কায় তোমার ধন্য যে হয় প্রাণ।
দিব্য তোমায় জন্মে এ দেশ; গর্বিত হই মাতা
বন্দে তোমারি সে কায় নমিতে, লিখিতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা", চর্তুদশ পর্ব


কাশ্মীর হতে কন্যাকুমারী; মিজোরাম অরুণাচল
দিক হতে দিক নানান জাতি; নানান ভাষার ঢল।
দক্ষিণে তার দ্রাবিড় ভাষী; কন্নর-মালয়ালম
তামিল ও তেলেগু বোল সে ধারায়; মাতে
তুমি অম্লান।


বঙ্গে বাঙালি হিন্দি বিহার গুজরাটে গুজরাটি
অসমে আসাম মিজো ও কাছারে কথ্য সে পরিপাটি।
বিবিধ ভাষা সে উৎস হৃদয়; বন্দে তোমারে মাতা
সিন্ধু বারির বিন্দু সে জল; তোমারি
লিখিত গাথা।


হেথায় আর্য হেথা অনার্য হিন্দু ও মুসলিম
তোমারি কনকো ভূমেতে তাহারা এক দেহে হয় লীন।
শৌর্য মিলনে, মিলনের গানে মধুরেন সুর তায়
ঐক্য হেথায় বিভেদতা হীন
একতা ও শূরতায়।


তোমাতে সঁপিনু প্রাণ সে অনল পদতলে দিও স্থান
কাব্য কলিতে দিও গো সুধা সে; মাগি সে করুণা দান।
অঞ্চলে তব দিও গো আসন সে ভিখ মাগিনু আজি
মসিতে দিও গো বল সে প্রবল সাজাতে
ফুলেল সাজি।


জননী তোমারি আশিস মাগিনু ভুজেতে লহ গো তুলি
নিবেদনে গীত বন্দনা গান কাব্য ও কথাকলি।
সুরেতে মজিয়া তোমারে ভজিয়া আঁকিতে তোমারে মাতা
রচিতে সে গীত সুরো তাল লয়, অমর
কাব্য গাথা।


"অমর গাথা", পঞ্চদশ পর্ব


জ্ঞানের রানী তোমায় জানি যুগ হতে যুগ কাল
জ্ঞানের আকর আধার তোমার বিভায় সমুজ্জ্বল।
ব্যাধি পীড়ায় শাস্ত্র প্রাচীন জন্মে এদেশ হেথা
দীপ্তি প্রভায় সেই গরিমা; সোনার
জলে লেখা।


উন্নতির ওই শিখর ধবল; চরক সংহিতা
শাস্ত্র তাহারি বিশ্ব নিখিল জ্বালায়ে আলোক শিখা।
গরিমা তাহারি অনাময প্রাণ নিরাময়ে রোগ ব্যাধি
সূত্র স্থানম শরীর স্থানম, নিদান-
স্থানম আদি।


উদ্ভাবকের দেশ জননী শল্য সে জ্ঞান তায়
অমর সে জ্ঞান জন্মে ধরায় সুশ্রুতের ওই ছায়।
পাতায় পাতায় লিখিত সে জ্ঞান; সুশ্রুত সংহিতা
ধন্য সে জন ধন্য ভূমি ধন্য
তুমি মাতা।


উদার বায়ের দেশ সে কোমল প্রশান্তির ওই গীত
শীর্ষে সে দেশ সকল দেশের; দৃঢ় সে ভূম ভিত।
দুর্বা কোমল শস্য শ্যামল প্রশান্তির ওই ছায়
উদাস বাউল একতারা গান লালন
ফকির গায়।


মানব হিতে তার ওই সেবায় পূজ্য সে জন অতি
দ্রাবিড় নাড়ু তার সে প্রীতি, গাই সে গান গীতি।
দেশের তরে দশের তরে তার সে দান দামি
সেলাম তাহায় সেলাম মাতে, সেলাম
ডাঃ পেরিয়ার রামাস্বামী।


অরূপ রতন কায় সে তোমার জ্ঞানের আকর তুমি
প্রাচীন ভারত শিক্ষা ব্রতে নালন্দার ওই ভূমি।
জন্মে এ দেশ গর্ব অতি জড়ায় সে জ্ঞান মাতা
পল পল পল ধন্য যে হই লিখতে
অমর গাথা।


"অমর গাথা", ষষ্ঠদশ পর্ব


ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম; শৌর্য সুষমা সান
অমর তাহারি বৈভব গাথা চিরকাল চির অম্লান।
স্বরগমে তার দীপ্তি প্রবাহ মধুরতা তার বুলি
জন্মে হেথায় গর্বিত হই; পুণ্য
তাহার ঝুলি।


স্তাপত্যের ওই চিত্র লিপি; বিশ্ব বন্দিত
অজন্তা আর ইলোরাতে; মাতে, তুমি ভাস্কর্য মণ্ডিত।
অনাদি তোমার বৈভব সান; অগ্রগামীর রথ
সরণে বরণে তোমারে ভজিতে নিখিলে
তাকায়ে পথ।


রাম রহিমের এ দেশ ভূ তল; দিব্য সে কায় তায়
পিতার বচন স্কন্ধে এ দেশ সুপুত তাহার বায়।
হোক না যতই কঠিন কঠোর হোক না যতই শট
বাক্য বিনা এ দেশ মাতে; পুত্রে
ছোটায় রথ।


অশ্বমেধের যজ্ঞ সে হোম গৌরবের ওই তরে
সমৃদ্ধির ওই সোপান চূড়ায়; হোম সে দরবারে।
ভুবন মোহিত বীর সে গাথা রামের চরণ ভূমি
পূজ্য সে ভূম দিব্য সে ভূম; সে ভূম
গগন চুমি।


বীর সে আঙন বীরঙ্গনার অযুত নিযুত গাথা
রক্ত তিলক অঙ্কনে মা লক্ষ শহীদ হেথা।
ভগত তোমার সিপাই মাতে সূর্য সেনের পণ
কাঁপিয়ে মাতা ভূ তল দোলক; সাধতে
জীবন রণ।


হেথায় বাঘা প্রফুল্ল ও,'বি বা দি'র ওই বাগ
গগনভেদী হুঙ্কারের ঐ ফরিয়াদের ওই নাদ।
মাগো তোমার আঁচল নীড়ে, লক্ষ হাজার বীর
কোমল অমল হৃদ সে তোমার
জাহ্নবীর ঐ তীর।


মহিমা তোমারি অপার মাতায়ে অমর তোমারি গাথা
পারিজাত ভূম মমতার জড় হে মোর অন্ন দাতা।
নন্দিনী তুমি বন্দে তোমারি দু কর জুড়িতে মাতা
লিপিতে গাহিতে কলিতে বহিতে লিখিতে
অমর গাথা।