বিজয় দেখিনি, বিজয়ের উল্লাস দেখেছি কয়েক যুগ ধরে।
আতশবাজি রোশনাই, তোপ ধ্বনি,ফুল,শ্রদ্ধার্ঘ্য,ভাল খাবার, কুচকাওয়াজ,ডিসপ্লে,ব্যান্ড দলের ঢাকের বাদ্য ,আলোকসজ্জা সব-সব দেখেছি ।
দেখিনি কেবল একাত্তর,একাত্তরের পঁচিশে মার্চ
ছাব্বিশে মার্চ চৌদ্দই ডিসেম্বর ষোলই ডিসেম্বরের বিজয়-পুরো একাত্তরই দেখিনি।
ইতিহাসের অনেক পাতা হাতড়ে দেখিছি,অনেক দলিল-দস্তাবেজ,গল্প ,কবিতা, মুক্তিযোদ্ধার বর্ণনা-অনেক ,অনেক শুনেছি ও দেখেছি।কিন্তু তাতে মন ভরেনি,আদেখায় রয়ে গেল একাত্তর ।
কেন মা, তুমি আরো আগে জন্ম দিলে না ? কেন, তোমার বিয়ের বয়স হলো না ? না হয় বাল্য বিয়ের তকমা গায়ে মাখতে ,না হয় অপুষ্ট সন্তান হয়ে জন্ম নিতাম,তবুও তো একাত্তর দেখা হতো।
দেখা হতো দেশ মাতার দুঃখ ,দুর্দশা। দেখা হতো নিয়াজি ,রাওফরমান ,রহিম খান , টিক্কা খানের বর্বরতা। কেমন করে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এসেছিল বিজয় , কেমন করে কোলের শিশুকে ফেলে-বাসর ঘরের বিছানা ছেড়ে বীরাঙ্গনা নারী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শত্রু সেনার উপর।
বিজয় এনেছিল সবুজের পতাকায় লাল রক্ত দিয়ে ।
বিজয় দেখিনি, বিজয়ের উল্লাস দেখেছি
উল্লাস দেখেছি শিমুলের ডালে, দোয়েলের গানে,দীঘির জলে, ঝিলের শাপলায়।
বিজয় উল্লাস দেখেছি রাস্তার মোড়ে বাউলের গানে, সন্ধ্যায় জারি গানের আসরে, চৌকাঠে বৃদ্ধ ঠাকুমার গল্পে।
বিজয়ের উল্লাস দেখেছি জনতার মঞ্চে-সাত কোটি বাঙালি হতে ষোল কোটি বাঙালির হৃদয়ে।
বিজয় দেখিনি কেবল একাত্তরে।