- সমুদ্র আবার এলাম তোমার কাছে।
- কেন, আমার কাছে কি কাজ তোমার?
- আসি তোমার বিশালতায় নিজেকে হারাতে, নীল আকাশের সাথে তোমার মিতালী দেখতে, জ্যোৎস্না রাতে তোমার টলমল জল দেখতে, নির্জন নিরালায় তোমার ঢেউয়ের গর্জন শোনতে।
- তোমরা মানুষেরা বড্ড নাটুকে,  অভিনয় জান খুব !
- কেন এমন কঠিন কথা শোনালে আজ?
- আমার কথায় কষ্ট পেলে বুঝি? অথচ...
- অথচ কি?
- তোমরা মানুষেরা আমাকে তিলে তিলে মেরে ফেলছ।
- মেরে ফেলেছি!
- আকাশ থেকে পড়লে বড়! তবে শোন। শত শত টন বর্জ্য, লাখো লাখো ব্যারেল তেল, পারমানবিক বিস্ফোরণ, মৎস্য প্রজাতি নিধন, খনির সন্ধান কি না করেছ তোমরা আমার শরীরে? আমার শরীরে এখন অসংখ্য ডেড জোন, আমার পানি এখন এসিড। আমি এখন ঝলসে দেওয়ায় অপেক্ষায়।
- এমন করে বলো না।
- তোমাদের ভাষাই আমি কথা বলছি। তোমরা যে যন্ত্রণার প্লাবন আমার বুকে বইয়ে দিচ্ছ সে ভাষাই আমি কথা বলছি।
- আমাদের ক্ষমা কর হে মহাসমুদ্র।
- ক্ষমা? হাসালে বড়। ক্ষমার যুগ অনেক আগেই অতিক্রান্ত হয়েছে। তোমরা খাল খেয়েছ, বিল খেয়েছ, নদী,  হ্রদ সব খেয়েছ। পৃথিবী করেছ মরুময়। বনভূমি পুড়িয়েছ, পশু পাখি তরুলতা কেউ তোমাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এখন এসেছে ক্ষমা চাইতে। লজ্জা করে না তোমাদের।  ক্ষমার সময় শেষ এখন সময় প্রতিশোধের। সম্মিলিত প্রতিশোধ। প্রকৃতির নির্মম প্রতিশোধ। মানবজাতিকে নিচিহ্ন করার চূড়ান্ত প্রতিশোধ!
- তবে কি আর তোমার কাছে আসব না?
- না আসবে না, চলে যাও এখান থেকে।  এখন থেকে আমার বুকে আর রোমান্টিসিজম দেখবে না। দেখবে মহা প্লাবন, প্রচন্ড সুনামি, দেখবে এক সুবিশাল ধ্বংসযজ্ঞ। হা হা হা।


প্রচন্ড বিদ্রুপের হাসিতে কেঁপে উঠে সমুদ্র আর আমি মানুষের প্রতিনিধি হয়ে অসহায়ের মত তাকিয়ে থাকি।