আমার মন এখন আর কৌতূহলী হয় না
রাতের নিরবতা, সকালের কোমলতা, দুপুরের মৌনতা এখন আর আমাকে ভাবায় না।
সন্ধ্যা নামার আগে বাঁশের ঝাড়ে যে ছায়া পড়ে
তা এখন আর আমার মনে ভয়ের উদ্রেক করে না।
পদ্মা নদীর বিশালতা আমায় এখন আর উন্মনা করে না।
আমি কি দিন দিন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি?
সব কিছুই যুক্তির নিরিখে পরীক্ষা করতে শিখে।
কিন্তু,  যুক্তিই কি সব?
আবেগ, উচ্ছাস,  বিহ্বলতা, বিস্ময় এসব কিছু নয়?
যে শিশুটি একটা ঘাস ফড়িংয়ের দিকে অবাক তাকিয়ে থাকে
আকাশে প্লেন দেখে দৌড়ে ছুটে চলে পিছু
খেঁজুর পাতার চরকি দেখে খুশিতে উৎফুল্ল হয়
রঙিন ঘুড়ি উড়তে দেখে বিস্ময়ে বিস্মিত হয়
মায়ের ক্ষণিক বিয়োগে যে কেঁদে উঠে ক্ষণে ক্ষণে
তার আবেগ, উচ্ছাস, বিস্ময়ের কি কোন মূল্য নেই?
মাঝে মাঝে আমার শিশুদের মত হতে ইচ্ছে করে
কিংবা হতে ইচ্ছে করে হারিয়ে যাওয়া সে দুরন্ত কিশোরের মত
যেখানে কৌতূহল ছিল, আবেগ, ভালোবাসা,  উচ্ছাস ছিল।
যেখানে অদম্য তাড়না ছিল, অপার বিস্ময় ছিল
কাল বৈশাখী  ঝড় দেখে, শরতের আকাশ দেখে, হেমন্তের ধান দেখে
যেথায় মন পুলকিত হত
শীতের কুয়াশা দেখে, বসন্তের পাখি দেখে, চৈত্রের প্রখরতা দেখে
দু চোখে বিস্ময়ে বিস্ফোরিত হত!
এখন আর কৌতূহল জাগে না
পুরো পৃথিবী দু ভাগ হলেও বিস্ময় জাগে না!
বিস্ময় ছাড়া পৃথিবী যেন অর্থহীন বেঁচে থাকা
তবে কি আমি এখন জীবনের বেলাভূমে
দাঁড়িয়ে আছি কৌতূহলবিহীন এক মৃত্যু উপত্যকায়?