হে পুরুষ
তুমি আদম রূপে স্রষ্টার গড়া প্রতিমা হয়ে বিশ্বময় জানিয়েছ তোমার পদধ্বনি
ফেরশতাকূল জ্ঞানের সুধা পিয়ে দু হাত বাড়ায়ে দিয়েছে তোমায় অঞ্জলি
যুগে যুগে সভ্যতার কোল জুড়ে তোমার স্তুতিতে নীল নদ সম কালি ক্ষয়ে
কালা-পাহাড় চমকে উঠে সাইমুম ঝড়ের ঘূর্ণি তব সাহারা মরুভূমে টুটে
তুমি নূহ, তুমি ইশা, ইব্রাহীম, নবী মূসা তুমি মানব শ্রেষ্ঠ নবী মোহাম্মদ
তুমি স্রষ্টার প্রতিচ্ছবি, শত রাজ্যের অধিপতি, স্রষ্টা করেছে মোহাব্বত!
তুমি নরম কোমল আবু বক্কর, লৌহ কঠিন ওমর, তুমি দানবীর ওসমান
তুমিই শেরে আলী, জ্ঞানের দরজা খোলে কাঁপিয়েছ ঐ মরুদ্যান।
হে পুরুষ
তুমি মহাজ্ঞানী সক্রেটিস হয়ে এথেন্সের পথে পথে গিয়েছ হেটে
জ্ঞানের দরজায় ঝড় তোলে তুমি গ্যালিলিও হয়ে চলেছ জেলে
তুমি ওমর খৈয়াম নওরোজেরই প্রথম প্রভাতের গুল বাগিচার ফুল
তুমি রুমি, সাদি, গালিবের গজল, আলাওল হয়ে সুরের দিয়েছ দোল
নজরুলের বীণার বানিতে ডংকা তুমি, রবী ঠাকুরের কুসুম কুসুম প্রেম
তোমায় হেরে লজ্জা লাবণ্যে গোলাপ জলের শুভ্রতায় হেসেছে হেরেম।
হে পুরুষ
কালে কালে এতো আলোর মাঝে তোমায় নিয়ে তবু একি শোনি
পুরুষ হওয়ার লজ্জায় ইতিহাসের প্রতি পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় মাথা কুটি।
যে বুনেছে তব প্রেমের বানি তারি কপোলে তিলক রেখা
আদ সামুদ লজ্জা একেছে এখনো তাদের পাই যে দেখা।


তোমার কৃতকর্মের বেগে নারীরাও যে আজ লজ্জায় লুকায়
মাথাগরম শরীরের জোরে ধরা মাতিয়েছ কলংক লতায়!
হে পুরুষ
তোমার ধমকে বনের পশু চমকে চলে গেছে কোন দূরে
সেই তুমি হায় চলেছ কোথায় বেশ্যালয়ে সরাব চুয়ে
যে পৃথিবীর অংক খাতায় তুমিই সমাধানের মূলমন্ত্র
ধ্বংসের খেলায় হাত রাঙিয়ে খেলেছ আজ এ কোন তন্ত্র?
হে পুরুষ
তুমি পুরুষ হও কল্পনার চুড়ি খোল নারীর ভূষণ বসন ছেড়ে
পৃথিবী আবার দেখুক মজলুমের তরে অত্যাচারীর সিংহদ্বারে
সারা পৃথিবী আলোয় ভরুক, জোয়ার জাগুক শূন্য নদে
নারী জাতি সালাম জানাক ফেরশতাকূল পড়ুক লুটে!