১৯৯৩ সাল, রাতের নক্ষত্রদের
সাক্ষী রেখে আমি জন্ম নিলাম
যখন মাত্র চার বছরে পা দিয়েছি
স্বাধীনতা, মানবাধিকার এই
শব্দগুলোর অর্থ জানার আগেই
আমায় বলপূর্বক তুলে নিয়ে
গেল কতকগুলো দুষ্কৃতী, ভয়ে
লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছিলাম
মা আমায় নিষেধ করলেন,
খবরদার, এ কথা যেন কেউ
ঘুণাক্ষরেও টের না পায়  !
আমার মস্তিষ্কের চিন্তাস্রোত পাছে
শাসকের গোচরে চলে আসে, না
তা কাকপক্ষীকেও জানতে দিইনি
নয় বছর বয়সে পৌঁছে দেখলাম
আমার প্রিয় বন্ধুর মাকে হত্যা করা
হল, জনসমক্ষে প্রকাশ্য দিবালোকে
একখানি মার্কিনী সিনেমা দেখে
ফেলা ছিল তাঁর জঘন্য অপরাধ !  
তখন আমার ঠিক তের বছর
ভিনদেশে পালিয়ে যাওয়ার দিন
আমার মাকে দেখলাম, ভিনদেশী
এক দালালের হাতে ধর্ষিতা হতে
আসলে তার লক্ষ্য ছিলাম আমি
মা আমাকে প্রাণভরে রক্ষা করতে
চেয়ে সঁপে দিয়েছিলেন নিজেকে
আমার দেশে প্রচলিত কথা আছে,
'নারী দূ্র্বল আর মায়েরা শক্তিশালী'
তাই বুঝি নারীরা বিক্রী হয়ে যান
কেবলমাত্র কয়েকশত উওনে !
যখন আমার বয়স চৌদ্দো হল
সেই ভিনদেশে পালিয়ে আসা
আমার পরম আদরের বাবা
এক বিকেলে, চিরকালের মত
চলে গেলেন আমায় একলা রেখে
পাছে কেউ জেনে ফেলে আমার
পরিচয় আর শরণার্থী বলে, আমায়
তাড়িয়ে দেয় নিজের সে দেশে
প্রিয় বাবাকে কবর দিলাম গোপনে
চোখের জল বহুকষ্টে লুকিয়ে রেখে
মুক্তির সন্ধানে নিজের দেশ থেকে
ভিনদেশে পালানোর পথে, পার
হয়েছিলাম ধূসরতম গোবি মরুভূমি
কাঁটা কম্পাসে দিক বুঝে বুঝে
চলার পথে যখন যন্ত্র বিকল হল
আমি তখন নিঃসঙ্গ শীতল মরুর বুকে
পথ খুঁজে নিতে ভরসা বলতে ছিল
সেই আকাশের নক্ষত্রেরা, আমার
জন্মের সময় ... সাক্ষী ছিল যারা ৷


( উত্তর কোরিয়া থেকে নিরুপায় মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন সুদূর চীন, মঙ্গোলিয়ায় ৷  পরিত্রাণ নেই
তার পরেও ৷ খোঁজ মানবজীবনের মুক্তির ... )