গন্ধ লেগে থাকা টক আমের সকালে
সমুদ্র জেগে উঠছে শহুরে গীতাঞ্জলীতে।
বাইকের পিছনে করোনা রুগী
প্রত্যাখ্যান আর অক্সিজেনের অভিলাষে
স্বপ্ন দেখতে চাইছে বেঁচে থাকার।
মানুষের শীতঘুম নেই পলায়নের মননে।
আছে কেবল কান্নার উপত্যকায়
হাসি খুঁজে নেওয়ার তালা চাবি আর—
একটা লোহার চেন।
এই চেন দিয়ে নিজের মুখ-হাত
বন্ধ না করতে পারলে
হাসপাতালের ছবি
কলকাতার সংক্রমণের ভয়াবহতা
প্রকাশ হয়ে যাবে।


করোনার ভিতরেই লুকিয়ে রোনা
পৃথিবী না কাঁদলে যে সমুদ্র ভরবে না,
সমুদ্রের মেঘ, নিম্নচাপ না হলে যে
বৃষ্টির স্নিগ্ধ ধারায় কাঁদতে পারব না,
সকলে তো সংক্রমণ থেকে বাঁচতে
বিদেশে পালিয়ে যেতে পারে না,
সহ্য করে তৃতীয় বিশ্ব, অসহ্য যন্ত্রণা।
যন্ত্রণার আরেক নামই জীবন।


জীবন মানেটা দয়া করে টিভিতে খুঁজবেন না
ওটা রং মাখা গ্লিসারিনের পৃথিবী,
আমাদের বাজার করতে গিয়ে কম জিনিস কিনে
ফিরে এসে গিন্নির কাছে মিথ্যা বলা নয়।
আইপিএল, কামিন্স এসবের রং চশমা নয়।
পালিয়ে যাওয়ার জন্য পাঁচ বছর আগের পোস্ট
নতুন করে শেয়ার করে ক্ষণিক আনন্দ খুঁজছে
দীর্ঘক্ষণ টিকা দেওয়ার লাইনে থাকা মানুষ জানে
এ কেবলই নষ্ট সময়।
মানুষ নিজেই জানে না
এই শিক্ষা, দর্শন, বিজ্ঞান, উন্নতির সোপান
রবীন্দ্রনাথ নিয়ে সে কী করবে!


কাল রাতে যার মা মারা গ্যাছে
প্লাস্টিকে মুড়ে যে মা এখন ধাপ্পায় জ্বলছে
সেই মানুষটাকে এক বিন্দু সান্তনা না দিয়ে
ভয় পেতে শিখতেই হবে প্রকৃতির কাছে।


লাল-সবুজ-গেরুয়া ঝান্ডার থেকেও বড় মানুষ
আর মানুষকে কমরেড বা চৌত্রিশ বছর বলে
খিল্লি না করে পাশে দাঁড়ান।
হাতে হাত নয়, কাজ করতেই হবে
কাজটাই করতে হবে,
দান করতেই হবে সংক্রমিত সুস্থদের প্লাজমা।
এ সময় দাঙ্গা লাগার থেকেও বড় সময়
এ সময় পরমাণু বিস্ফোরণের চেয়েও বড়
মন্দির, মসজিদ নয় মানুষের অন্তরের ঈশ্বরকে
ডাকছে আজ আল্লা, যীশু, নীলকন্ঠ।


কারণ বাতাসে সব আছে,
শুধু অক্সিজেন নেই।


অক্সিজেন কোন কালেই ছিলো না মানুষের...