তোমরা বেশ মজার, কত্তকিছু পারো
রাঁধুনির সুস্বাদু হাত, কেউ টাকা রোজগারের কারিগর
কেউ বা ভালো অর্থনীতির মাপক
কেউ প্রযুক্তি বিদ্যা
কত আর বলবো।
তোমরা হিসেবহীন সাধনার অঙ্গুরি স্পর্শ করছ
না বোঝার এই সংসারে।
তাগিদের মূলে টাকা
গীটারে সিম্ফোনি বাজাতে চাইছো অছিলায়...
তোমরা তো সব পারো
তাহলে গাছকে ঘৃণা করে শহর করছো কেন!
ও আরও আধুনিক হবে
আধুনিকতম
গবেষণার ইথারে চমক লাগিয়ে চাঁদ, মঙ্গল, সূর্যে যাবে!
জন্মগত অভীপ্সিত ক্ষণকে স্পর্শ করবে।
ইচ্ছাতেই করো।
ঠিকই তো আমার রবীন্দ্রনাথই জানা হলো না
আর তোমাদের কীর্তি কেমন করে বুঝবো,
ঐ প্রকৃতি ঘেষা কাব্য সৃষ্টি করো
রাস্তার ঐ গরীবকে নিয়ে,
ধর্ষিতদের নিয়ে জমিয়ে লিখে নাম করো
বুদ্ধিজীবীর দুটো দল হয় রাজনীতির মোড়কে ফাইভস্টার হোটেলে...
যাক্ ওসব কথা।
আমি অবশ্য তোমাদের এসবের মাঝে
রবিবার মাংস ভাত খাই।
আর তেমন কিছুই পারি না,
অনেক কাল একটা ভালো কবিতা লিখতে চেয়েছিলাম
তারপর বুঝলাম
আমি তো নারী। আমিও তো প্রকৃতি
প্রকৃতিকে মেরে তোমরা আরও আধুনিক হবে
গাছের মতো আমরাও অবলুপ্তির পথে হারিয়ে যাবো
নারীর কোমলতা বড্ড ক্লিশে ঐ দৃষ্টিভ্রমে
ধুলোবালির মতো আর ছায়া দিতে পারবো না—
কবিতা তো দূর অস্ত।
অনেক না জমিয়ে রেখেছি বুকে
ছোটবেলার কাকা যখন চেষ্টা করেছিল
বা বড়বেলায় মায়ের দ্বিতীয় স্বামী
পাড়ার ধনঞ্জয় দা
সবাই আমায়...
তোমরা তো বলবে এবার ‘বেশ্যার আবার বড় বড় কথা’
কিন্তু সত্যই বলছি আমি বেশ্যা নই
আমি একজন নারী।
আমারও মনে মেঘ জমে অজস্র কান্না নেমে আসে
তোমরা শুধু শুনতে পাও না।
সব স্থানেই তাই পিছনে ফেলে নিজেদের অগ্রগতি
নিজেদের সবটুকু নিয়ে এগিয়ে যেতে চাও।
জীবন এখানেই শুরু,
পিছনে থেকেও আমরাই তোমাদের রক্ষা করি।
এই বিশ্ব সংসারকে সামলে রাখি।
একঘেয়ে কথারা কালি কলমে প্রতিমার রূপ পায়
প্রকৃতি আবার জেগে ওঠে নীল আকাশে
পেজা মেঘের স্বপ্ন শরতে। ঢাকের আওয়াজ ও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ
সব কেমন মিলে মিশে ঐ নগ্ন কন্যার থেকে মিস ওয়ার্ল্ড হয়ে ওঠে।
ঐ টুকুই
ঐ টুকুই
তারপর আর কিচ্ছুটি নেই
কবিতা নেই
গাছ নেই
অরণ্যের পাখি পশুরাও নেই
রয়েছে কেবল লালসা
বজ্রবিদ্যুতের ঝিলিক আক্রোশ।
তাচ্ছিল্য
বন্ধুহীন এক নীল গ্রহে কেবল দুদিনের প্রেম কাম ক্রিয়া
তারপর নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝোনি পুরুষ।
রে রে করে মারতে এসে ফিরেছো
কেন জানো!
মেরুদন্ড নেই তোমাদের।
নিজের স্ত্রীয়ের কান্নাই তোমরা মোছাতে পারোনি
কী ভাবে দেশের ও পৃথিবীর বাকি প্রাণীকে বুঝতে।
ঐ যে নিজের মৃত মায়ের শ্রাদ্ধ করলে ঘটা করে
একবারও ভাবলে না যখন উনি বেঁচে ছিলেন
কী করেছ ঐ এক আকাশ পৃথিবীর জন্য।
তখন তাচ্ছিল্য করেছো। সন্তান হলে অন্যকথা
তুমি তো পুরুষ।
হ্যাঁ, পুরুষ মানুষ ছিলেন আমার বাবা
হয়তো অনেক মানুষ পুরুষ এমন হন,
সে জন্যই পৃথিবীটা এখন বেঁচে আছে
বেঁচে থাকবে
ডাইনোসারের মতো তোমাদের প্রযুক্তির উন্নতি
মিলিয়ে যাবে।
আমরা নারীরা, প্রকৃতির মাঝেই বাঁচবো
বাঁচবোই। কারণ আমরা ধাত্রী। ধারণ করছি তোমাদের বিষ
সেই বিষের থেকেই বিশ্ব উষ্ণণায়ন পৌঁছে যাচ্ছে অন্তরীক্ষে
অন্য গ্রহে পৃথিবীবাসিরা ডাক দিচ্ছে,
পাঠিয়ে দিচ্ছে হাজার ফিনিক্স পাখিদের এই নীল গ্রহে
আমরাও  ফিনিক্স হয়ে উঠবো প্রতিদিন।
প্রতিদিন একটি করে নারী আগুনপাখি হচ্ছে বলেই
তোমরাও মানুষ হয়ে উঠছো ব্যালেন্স করে
তীব্র এই অন্ধকারের উন্নতিতে
আলো একদিন তোমরা দেখবেই।
প্রজ্জ্বলিত আলোক শিখা তোমাদের স্পর্শ করবেই
ঘুমন্ত আত্মশ্লাঘায়।
মিলিত হবেই পুরুষ-প্রকৃতি,
বীরেন্দ্রকৃষ্ণের মতো এক কণ্ঠ বলে উঠবে
‘অসুর মিশে যাচ্ছে দুর্গার বুকে...’