বিন্দু বিন্দু বৃষ্টিতে নত হয়ে বসি
স্মৃতির অলৌকিক মায়ায়
আঁকা তুলির অনুপ্রাস পরে আছে আমার বিহঙ্গে।
তুলিতে লেগে ক্ষত বিক্ষত আয়ুর ঘটনাবলী।
আজ বর্ষা চোখে
কী হবে সে সব কথা
বারংবার তোমায় বলে।
ঐ যে টিনের চালে
শব্দ অনুরণিত হচ্ছে ফাঁকা চেয়ারের।
বাজার থেকে ইলিশ এনে মাকে ডেকে বলতেন
আজ অনেকদিন পর পদ্মার ইলিশটা পেয়েছি।
আমি চেঁচিয়ে বলতাম ইলিশের তেল দিয়ে
এক থালা ভাত খাবো।
এখন সে সব ভাবলে বৃষ্টিবিন্দু আসে চোখে।
কেন জানি না, সেই মা গন্ধ
বাবার বকুনি
ডাকনামের পিসেমশাই
আমার রাতের স্বপ্নকে কুয়াশা মাখিয়ে
শেষ করে পরিবারের স্বপ্ন।
পরিবারই তো আমার কাছে সব।
ফিরে যাই মেঘের কাছে
বাঁশ পাবদার গন্ধে
বোরোলি পাতলা ঝোলে
শিঙ্গি মাছের পথ্যে।


বৃষ্টি মাখানো জলছবিতে
আজও ভেসে ওঠে-
ওখানেই বাবা বসতেন
মা এনে দিতেন চায়ের কাপ।
মক্কেলরা আসতেন
কথা হতো।
আমি তখন নৌকো কাগজ ছেড়ে
নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি মঞ্চে
ভুল করলে আবার
নাটকের কথা তো উপন্যাসে থাকে
আমি তখন জীবন যুদ্ধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আমাকে টপ হতেই হবে
সবার উপরে আমার নাম থাকবে
বাবাকে সকলে আমার জন্য চিনবে।


বৃষ্টির বন্যায় সে সব কবেই মুছে গ্যাছে।
মুছে গ্যাছে অলৌকিক বাবার কণ্ঠস্বর
তবু জেগে আছে বাড়ির সেই উঠোন,
আবার বৃষ্টি শেষে রোদ্দুর এলে
একবার দেখে আসবো
বাবার ছায়াটা বটগাছের মতো
আমার চায়ের পিয়ালা দেখতে পাচ্ছি কিনা!