মায়ের কোলে মাথা দিয়ে শুলে
ছোট্টবেলার কথা মনে পড়ে।
বুঝতে পারি, সেদিনের দুষ্টুটা
এত্তোটা বড় হয়ে গেছি।
হাসি পায়, কষ্টও হয়। আমি যদি…
উফ, আমি থাকতে পারবো না
মাকে ছাড়া।
আমার যে কি হবে, সেটাই তো ভাবি।
আমার মতো কেবলিকে যতই সুন্দর লাগুক
আমি তো জানি, আমি আসলে কী...
একটা...যাক সে সব।
ও মা....মা গো...
মা এতো কাজ করে সারাদিন
এভাবেই ঘুমিয়ে পরে চুপকথায়...


আজ আকাশটা কত্ত সুন্দর,
আজ নীল, সাদা পেঁজা মেঘ
মনটা –
আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জী
করে উঠছে।
মা শুনছো, সেবার আমি আর তুমি
ঐ যে গো -- বেহালার নতুন দলে
ঠাকুর দেখতে গিয়ে কোন দিক দিয়ে
আমাদের যে বের করে দিলো,
তখন তো ছোট, মোবাইল ছিল না
সে এক হুলুস্থুলু কান্ড।
আমি তোমায় আঁকড়ে ধরেছিলাম
মা, তুমি সে সব মনে রেখেছো
অনেক ছোট তখন।


তারপর থেকে অনেকদিন আর
ঠাকুর দেখতে যায়নি ভিড়ে।
ভয় পাই,
যদি মা, তুমি হারিয়ে যাও...


মা, হাসছো কেন!
তুমি জানো না,
তোমার প্রতিটি দুঃখ, কষ্ট, ভালোলাগা
সবটুকু আমি জানি, বুঝি।
এও জানি আমার কেরিয়ারের কথা ভেবে
তুমি আঁতকে ওঠো।
ভয় পাও।
তাই তো আজ আমার ছোটবেলার
ছবি উল্টাতে পাল্টাতে গিয়ে
তোমার চোখের কোণে জল।


মা, আমি কোনও দিন তোমার মতো
ভালো মা হতে পারবো না।
তবু বলি, আমার জন্য কষ্ট পেও না।
আমি তোমারই থাকবো
আমি তোমায় ছেড়ে
কোত্থাও যাবো না।


মা তুমিও আমাকে ছেড়ে যেও না...


ও মা...
মাগো তুমি দেবী দুর্গার বুকে মিলিয়ে যেও না
প্লিজ মা,
ফিরে এসো মা,
আমার মা তুমি,
মা গো...


অবাক হই না।
বিয়ের পরে এমন স্বপ্ন
অনেকবার দেখেছি।
এভাবেই স্বপ্ন মায়ের আঁচলে
আমি নিজেকে খুঁজে পাই।


মাকে হারানোর ভয়ে অনেক আশ্বিন
এভাবেই কেটেছে।
এ সব কথা ঝুমঝুমিকে বললে--
ও কিছুই বুঝতে পারে না।
শুধু হু, হা..হি হি...উ ...উ...এসব করে।
ঝুমঝুমির ফটো তুলতে তুলতে
আজ মনটা কেমন করে উঠলো
নিজের ছোটবেলা দেখছি অ্যালবামে
ঝুমঝুমির পাশে ঘুমু করছে।
আজ সকালে ওষুধ খেয়েছে কিনা
ভেবে আর ফোন করা হয়
মা এখন ঘুমাচ্ছে,
এই দুপুরে আর ফোন করব না।
শুধু তোমার কথাই ভাববো...
আমার এখন খুব রবি ঠাকুর পাচ্ছে—
“মনে করো যেন বিদেশ ঘুরে,
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে,
তুমি যাচ্ছ পালকিতে মা চড়ে
দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে”