অবসর নিয়ে কবিতা লেখার অনুরোধ আসতে থাকে। ভাললাগে। আসলে কবিতা লিখতে পারি না। তবু কিছু মানুষ যারা বলতেই পারেন না, তারাও কিছু কথা সরলতায় জানতে চান। এই কবিতার ভাবনা তো বিনোদন নয়। এই কবিতার ভাবনা বেঁচে থাকা। এই কবিতার চেতনা কলমের মুন্সিয়ানা নয়, এই কবিতা হল অক্সিজেন। এই ভাবনাদের বুঝতে হবে। গভীর ভাবে পাঠককে বুঝতে হবে।
কেউ কেউ বলেন কম কথায় লিখুন। কেউ বলেন কবিতার গভীরে গিয়ে ভাবুন। আমি বলি কবিতা তো গভীর বিষয়কে সহজ সরল করে বলতে শেখা। যদি বলাটাই কঠিন হয় তবে সরল ভাবে পাঠক বুঝবে কী করে। সব পাঠক তো বুদ্ধিজীবী নন। সব পাঠক সেলিব্রেটি নন। কবিতা লিখে আজকাল কেউ কেউ সেলিব্রেটি হচ্ছেন বটে তবে সবটাই নিজের ট্যাকের জোর। তাই কবিতার সেই ভাবনারা কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। এই বিমূর্ত কবিতাগুলি আবৃত্তি করতে বলুন কবিকেই। দেখবেন সে বলবে আজ থাক। মুশকিল হল সকলে কবি হয় না। যতই যুগ স্মার্ট হোক না কেন কবিতার যুগ, কবিতার উপত্যকার আলাদা মানে রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাটুকু বুঝতে হবে কবিকেই।
মানলাম বাংলা ভাষার ইতিহাসে কবিতার গূঢ় অর্থ থাকত। সকলে তা বুঝত না। তবে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে। তাই তো সহজ পাঁচালি রীতির কবিতা ঘরে ঘরে পঠিত হয়। এই চিন্তাগুলোকে কবিতার মধ্যে আনতে হবে। তবেই কবিতার সফলতা ও উন্নতির শিখর ছুঁতে পারবে মন।
কবিতার এই ভাবনা থেকেই ভাষা এগিয়ে চলে। এখন অবশ্য গূঢ় অর্থ কবিতা, বিমূর্ততা, কোটেশন ও শেষের দুই লাইনে পাঞ্চ। এভাবে এগোচ্ছে সময়। তবে এই সমস্ত ঝড় একদিন থামবে। মানুষ কবিতায় না বলা কথাগুলো শুনতে চাইবে। সরল ভাষায় রাজা তুই উলঙ্গ এই সাহস একদিন মানুষের ফিরবেই। সেদিন জঙ্গী থেকে ধর্মের নিজস্ব যুক্তিহীনতা মুক্ত হবে সমাজ। আর সেদিন থেকেই কবিতা কবিতার উপত্যকা খুঁজে পাবে। পাবেই।