আলো হাতে এগিয়ে আসছে আলোলিকা
বুকেতে রবি-বুক নেই, নেই ইচ্ছা-জেদ
সে কেবল উজ্জ্বলতার সমাহার
সে কেবল উন্নত নাম হতে চায়, জ্যোতিষ্ক।
স্টারডম এক অসুখে দুনিয়ার তুতেনখামেন সিনড্রোম...
প্রাচীন মিশর যে সৌন্দর্য বাঁচিয়ে রাখতে পারেনি
ক্লিওপেট্রিও আধুনিকতা সে সুখ ফেরাবে!
এমন জেদ নিয়ে যে মেয়ে বাসে ওঠে,
উবের বা স্কুটি এদিক ওদিক গাছপালা হয়
তারা আদরবাসার জন্য মরীচিকা খোঁজে
কেবল না পাওয়া ঐশ্বর্য,
শান্তিহীন এক রাগ সম্বলিত মোক্ষ
এক অজানা ক্ষণ স্পর্শের রাজনীতি।


সেই মেয়ে রান্না জানে না, অথবা জানে
শ্বশুরের ভিটাকে তাচ্ছিল্য করে, অথবা দোষ খোঁজে
অথবা নিজের লোন-ফ্ল্যাটে সেলফি সুন্দরী হয়ে
প্রাচীন মাটির গন্ধ খুঁজে পায়, নুপূরে।
আলতা পায়ের এক দুই দিনের পোজ শ্যুট
তারপর সিঁদুর বড্ড ক্লিশে এ হিন্দুত্বে।
এখন কেবল কাজল বাহারের প্রাচ্য।
মেয়েটির মস্তিষ্ক, বড্ড জটিল।


সে কী চায়, না চায়, ত্যাগ খোঁজে, না-খোঁজে
সব কেমন দীগন্ত স্রোতে
উপন্যাস হতে চায়।
অথচ দু-তিন পাতার গল্পেই মেয়েটি
হারিয়ে যায়।
লিবারেল হওয়ার লক্ষণ মনে করায়
সূর্পণখার জেদও কমেছিল লক্ষ্মণের তুণ থেকে।


সেই মেয়ের সাথেই দেখা হয়েছিল কোন এক বৈশাখে।
উদযাপনের রবিক্ষণে।
সে হারমোনিয়ামের গানে মাতিয়েছিল উচ্চ কর্ডে।
অথবা আসমানী কোমল কোনও রা, নি...


আমি অবাক। আমি প্রেমিক।
রাগহীন এক চোখ আমাকে গিলে খেল
গানের সমুদ্রে।
রবি ঠাকুর অনেকবার পেরেছে,
এবারও সে হারল না।
সেই মেয়েটি কোনও এক বৃষ্টি সন্ধ্যায়
আমার পকেটের চুমু হয়ে রইল
কৃষ্ণচূড়াকে সাক্ষী করে।
এরপর শরতের থিম দুর্গায় সেই মেয়ে
আমায় বধ করল পুজো প্যান্ডেলে।
পুজো পেরিয়ে কালী রাত, রাত পেরিয়ে বড়দিন
গীর্জা সাক্ষী করে যে ফুল দিলাম
পরের শীতে বইমেলায় সে ফুল শুকিয়ে
অপেক্ষা করতে লাগল
বসন্তের।
মেয়েটি কটা চোখে বসন্ত পেলো
রাগ জেদের ভ্যালেন্টাইনে নতুন বাইক।
নতুন সিগারেট, নতুন পুরুষ গন্ধ।


আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম রবি সন্ধ্যার দাবদাহে।
স্বামী এখন তপস্যার প্রতীকী চরিত্র।
যুগটাই দুর্গা ফ্রেমিং।
সেই মেয়ে আবার ফিরে এলো
কোন এক বর্ষা রাতে।
ভুল বুঝে বলল ‘আমি এক স্বাধীন পাখি।’


উত্তরে বললাম ‘আমি খাঁচা নই, প্রাচীন পুরুষ গুহা।
এসো স্তব করি ভালোবাসার। ভালোবাসার অপর নাম ত্যাগ।’


কিছু আদর্শ চিরকালীন, সেই মেয়ে নারী-মা হলে
বুঝেছিল টান ভয়ের ভালোবাসাকে।
এখন সংসারে সে অনেকটা শান্ত।
প্রাচীন আলতামিরে মেদহীন এক বনমানুষের সাথেই
সংসার ক্যানভাস আঁকছে।
জটিল সংসার-সমাজ করে। বিকিকিনি করে সত্তা।
সেই মেয়ে সে সব মোহ মৌমাছিদের পেরিয়ে
অনেক আগেই বুঝেছিল – সে ভালো নেই।
তাই কালো হাতে কৃষ্ণ মেঘ পেল। পেল গহ্বর।
গহ্বরের গভীরে কৃষ্ণ নয়, কবিতার বাস।


সেই মেয়ে হেঁটে চলেছে, তার মেয়ের হাত ধরে
কোনও এক প্লে স্কুলে,
দাঁড়িয়ে রয়েছি আমি বাস টার্মিনাসে আমি।


আমায় এবার কাব্যগ্রন্থ হতে হবে, রবি ঠাকুরের পাশে।