তোমার মনে আছে চশমা চোখ
ঐ রাস্তার ধার থেকে আমায় তুলে এনে
টবে যখন বসিয়েছিলে
আমি ভয় পেয়েছিলাম,
ঠিক মতো আমি জল আলো পাবো তো!
আজ তাহলে ট্রান্সফার হয়েছ বলে
কবি, আমাকে নিয়ে ভাবছ কেন,
ফেলে দাও ঐ দূরে রাস্তায়
অথবা উপহার দিয়ে যাও
রাস্তার ডেনড্রাইট খাওয়া যীশুকে
আমাকে।
তখন চারা ছিলাম, এখন বনসাই।
চিন্তা নেই
বাঁচতে শিখে নিয়েছি, নিজ মেরুদণ্ডে।
এখন আলো জল আমায় খুঁজে নেয়,
সমুদ্রের সাথে মেশে পাহাড়।


বাহ বাহ গাছ
তুমি তো আমার মতো কাব্য করছ।
তুমি তো আমায় কটাক্ষ, তাচ্ছিল্যে বলছ
রক্তকরবী কেবল তোমার কথা শোনে
আমার কথা এক বারও শুনবে না,
আমার যাওয়া আটকে দেবে না সে।


সে তো দেবেই না।
তুমি তোমার কলমে
নানা বাহানায় তাকে প্রেয়সী করে তুলেছ
গাছের ফুল, কুঞ্জন, গন্ধ, খাদ্য সবকিছু।
চুরি করে লিখছ প্রকৃতিকে।
সবটাই বড্ড কৃত্রিম।
কখন প্রকৃতির কান্না
আমার শরীর জুড়ে ব্যথা অনুভব করোনি।
কখনও ভাবনি তোমায় যদি ছোট্ট স্থানে
বেঁধে রেখে হাত পা কেটে দেওয়া হত
কেমন লাগত।


কবি এখন চুপ।
একটু পরে কবি বনসাইটি নিজে হাতে
পার্কের এক পাশে লাগিয়ে দিল।


বনসাই বলল, এখন আমার হাতপা নেই।
কিছুদিন হয়তো থাকব।
তারপর বসন্তের কালবৈশাখী এলে...
শিকড়ের সেই বাঁধন ছিন্ন হবে হয়তো।


কবি হেসে বলল, ভয় নেই রক্তকরবী আছে
ও তোমাকে আগলে রাখবে।
পাখিরা বলে দেবে পূর্বাভাস
তখন তুমি শিকড়কে বলো
পাশের কৃষ্ণচূড়াকে আঁকড়ে ধরতে।


তুমি থাকবে, আমাকেই স্থানান্তরিত হতে হবে।
সমুদ্র থেকে পাহাড় ভেসে যাব
পরিযায়ী হয়ে।


কবি তুমি তো দেশের জন্য কাজ করছ,
তাতেও এত হিসেব লুকিয়ে,
সংসারের টান নয়, তোমার কাছে দেশ
দেশ মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাই আসল
তুমি ভেবো না,
তোমার মেয়ে তো থাকল
সে ঠিক আসবে,
আগের মতো জল দেবে
সকলে মোবাইলে যুগে যন্ত্র হয় না,
অনন্ত যে বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ বাস করে।