বড়বাবু-মেজোবাবু-ছোটবাবু একে একে
সকলেই এলেন,খবরের গন্ধে হাজির
একদল রিপোর্টারও।কি হয়েছে?ধর্ষণ?
একজন না অনেক?ও,অনেক?
তাহলে বল্ গণধর্ষণ?থাকিস কোথায়?
-ফুটপাতে?চল্-ডাক্তারের কাছে,
রিপোর্ট চাই-রিপোর্ট!
ডাক্তারবাবুর কাছে ভীড় করে রিপোর্টাররা।
জানতে চায় সমস্ত ঘটনা।
খবরের কাগজের প্রথম পাতায় ছাপা হবে-
“ফুটপাতে গণধর্ষণ”।
আর্কষণ আনতে বক্স করে দেওয়া হবে।
পাবলিক ট্যারা চোখে ঠিক খবরটা গিলে খাবে।
সমান তালে উঠেপড়ে লাগে রাজনৈতিক নেতারা;
প্রতিযোগিতা চলে-কে আগে ধর্ষিতার গায়ে তার
দলের ষ্ট্যাম্প লাগাতে পারে!
দাবী ওঠে:তদন্ত চাই-তদন্ত চাই।
চাপে পড়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দিয়ে সরকার
গড়লো-তদন্ত কমিশন!
চলল অবিশ্রান্ত তদন্ত!
মাস যায়,বছর পেরিয়ে যায়-
সরকারী কোষাগার থেকে অক্লেশে পাশ হয়ে
বেরিয়ে যায় কত বিল-প্লেন,ফাইভ স্টার হোটেল,
রঙ্গিন জল,আরও কত কি!
কমিশনের রিপোর্ট আর জমা পড়ে না।
ধর্ষণকারীরা সাজা পাবে ভেবে ধর্ষিতার মনে
বেড়ে ওঠা আশার চারাগাছটি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে লাগলো।
নতুন ঘটনা পেয়ে রিপোর্টাররা তাকে যেন বেমালুম ভুলে গেল।
দাদারা নিজেদের দলের স্বার্থে ভাইদের ছোট ভুলকে চাপা দেওয়ার
জন্য উঠেপড়ে লাগলো।
ডান-বাম মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল!
বেচারা মেয়েটি চিনলো কঠোর বাস্তব ও নির্মম সত্যকে,
মনের সমস্ত আব্রু ধর্ষণকারীদের কাছে হারিয়ে এক
গলিতে চায়ের দোকান খুলে বসে;পিছনে চলে
দেশী মদের রমরমা কারবার ও রাতভর দেহব্যবসা।
বিনামূল্যে হারানো আব্রুর বদলা নিতে দেহব্যবসা করে
সমাজের কাছ থেকে সে আদায় করে তার পারিশ্রমিক!
হায় রে-আমার স্বদেশ!
সত্য সেলুকাস-কি বিচিত্র এই দেশ!