দুগ্গা ঠাকুর,দুগ্গা ঠাকুর,রাখবে একটা প্রার্থনা ?
তোমার অলীক স্বর্গরাজ্য বিশ্বাস করি, গল্প না
সেখানে রয়েছে আমার মা ; প্রিয়
ফিরে গিয়ে তাঁকে প্রণাম জানিও,
বোলো খোকা তাঁর সুখে আছে খুব,যদিও তা বাস্তবে না
সত্যি ঠাকুর,মা যেন আর আমার জন্যে ভাবে না ll


জ্ঞান হয়ে শুনি বাপটা বলেছে আমি এক আস্ত রাক্ষস
জন্মেই নাকি মা'কে খেয়েছি,এমন আমার ভাগ্যদোষ,
চরিত্রহীন মা'য়ের অংশ
দুবেলা কেবল অন্ন ধ্বংস,
আজ কতকাল তাড়িয়ে দিয়েছে,ফেরা সম্ভব হবে না
মিছিমিছি খালি মা যেন আর আমার জন্যে ভাবে না l


দুগ্গা ঠাকুর,তুমি তো জানোই,কতদিন উঠে মাঝরাতে
অসহ্য ক্ষিদে উপেক্ষা করে ইঁটে মাথা রাখি ফুটপাতে,
যত্সামান্য যা জোটে যখন
পেয়ে খুশি,হোক অতি সাধারণ
আস্তাকুঁড়ের জঞ্জালদের পাত পেড়ে কেউ সাধে না,
দোহাই ঠাকুর,মা যেন আর আমার জন্যে কাঁদে না l


আজ ফুটপাত আলো করে তুমি,নীরবে করেছি স্থান বদল
বরাতে আঁধার,হাড় কাঁপা শীত,চোত-বোশেখ আর ঝড়-বাদল
আলোকোৎসবে বেমানান আমি
নোংড়া পোশাক ছেঁড়া, কম দামী,
"হাঁ-ভাতে ঘরের ছোটলোক যত",বলতে কারোর বাঁধে না
অনেক দুঃখে বলছি ঠাকুর,মা যেন আর কাঁদে না l


দুগ্গা ঠাকুর,বোলো গিয়ে তাঁকে আজকাল খুব ভালো আছি
দিন ফুরালেই যত শিগগির পারি যাব তাঁর কাছাকাছি,
একবার,একবার মা ডাকে
কেঁদে সে আমায় টেনে নেবে বুকে,
ততদিন থাক অপেক্ষাটুকু,যার দাম কেউ দেবে না,
দিব্যি ঠাকুর,মা যেন আর আমার জন্যে ভাবে না ll