তবে আজ এই টুকু থাক। আজ তবে বিরত হোক সমস্ত বিবাদ। শান্ত হোক শ্বাস, শান্ত হকে আশ, শান্ত হোক বিপন্ন সংবাদ।
বিরতি দিলাম আজ সমস্ত সংশয়। পরাজয় যত, এ জীবনের যত ব্যর্থ মনস্কাম, সুতীব্র যত কিছু লাঞ্ছনা ভার,
তোমার দরবারে আজ হোক তার নিশ্চিত বিরাম।
বিশ্বাসে ফিরাও আজ। তোমার বিশ্বাসে প্রভু, আমার অপার সংশয়, অন্তহীন প্রশ্নভার, নিমজ্জিত আশাতরী, মেলাও মেলাও আজ।
ললাটলিখনে ছিল আবেগ-হিমালয়, দিয়েছিলে বক্ষ ভরে সমুদ্র হৃদয়।
মিলাব কেমন করে যদি বৃষ্টি নাহি দাও - ?
আকাশ পরিব্যাপ্ত করি সীমাহীন গাম্ভীর্য ভরি, ভ্রূকুটি কুটিল টঙ্কার ধরি, যদি মেঘ নাহি দাও প্রভু ,
ব্যর্থ হবে সব।
ভুল হয়েছিল -
বৃষ্টি খুঁজে ক্লান্ত দেহে ফিরেছি যখন, তখন মধ্যাহ্ন ক্ষণ, তপ্ত বালুরাশি, তৃষ্ণা তপ্ত কণ্ঠ জুড়ে হাহাকারে ভাসি , দেখি আমাকে নির্বান্ধব রাখি চলে সবে, যাদের তৃষ্ণার লাগি এতদিন ঘুরেছি ।
ছেড়ে গেছে সেও -!, ভুলেছে কি সেও ! সমস্ত প্রতিজ্ঞা দিয়ে বেঁধেছিলাম যাকে -
চলে গেল অচেনার সাথে, চিরচেনা ফেলে, দুস্তর মরুদেশে আমাকে একাকী রেখে মৃত্যুর মুখে, চলে গেছে সেও !
সেদিন --
আমার আকাশ জুড়ে, গুরু গুরু গুরু রবে ঝড় এনেদিলে প্রভু, এনে দিলে মেঘ।
"অভিমান" বলে যাকে করেছি সংক্ষেপ । তারপর বৃষ্টি হল শুরু , কোটী কল্প যুগ ধরে
অঝোর ধারায় বর্ষা ঝরে গেল । মহাপ্লাবনে ভাসল পৃথিবী । সেদিন সমস্ত জল ভাগ করে দিলে ,
দিলে তাকে কান্নার মোড়কে ভরে। সে কান্নার লোনা জল দুচোখের সমুদ্রে সঞ্চিত হয়ে গেল।
সে যে ফুরায় না কখনও।
এখন আমার কুঁড়ে বান ভাসি হয়ে আছে, চালার উপর বসে আকাশ খুঁজেছি,
তোমার করুণার কাছে, দুহাত পেতেছি ,
ক্লান্ত হয়ে যাই , আর কতকাল এমন অপেক্ষায় ---
শ্যাওলা জমেছে হাতে, যে করপুট পাতার মতন মেলে প্রার্থনায় বসেছি ,
বাঁধন আলগা হয়, অন্ধকার ঘন হয়, চারপাশে অবিশ্বাস, মোহিনী স্বপ্নের বেশে ডাক দিতে থাকে -
রঙিন রঙিন স্বপ্ন, রঙিন রঙিন সুখ, চারদিকে সাজাতে থাকে লোভ, ভয়ঙ্কর অন্তহীন লোভ হাতছানি দিতে থাকে, বারুদের গন্ধ যেন তাতে,
ক্লান্ত হয়ে যাই , প্রভু, হাত ছেড়ে যেতে থাকে
আলগা হতে থাকি প্রভু -
ক্লান্ত হয়ে থাকি ,
পিছল হয়ে যাই, প্রভু,
-----------শ্রীতরুণ (৯.৯.২০১৪)