টেবিলের উপর দু-চারটে বই, বইয়ের উপর খাতা, তার উপর পেন্সিল
পাশে নেই কোনো কলম।
থাকবেই বা কিরে! সে’যে কাঁচা,ওর নাম বেলা
মায়ের আদরের সোনামনি,বাবার লক্ষ্মীমেয়ে
এত কাঁচা বেলাতেই চলে গেলি মা?
আসবি না? কেনো রাগ করেছিস? উত্তর নেই!
থাকবেই বা কি করে?, সে’যে পৃথিবীতেই নেই
মায়ের আচল টেনে শত কেচ্ছা করে’ই পড়ত মায়ের পাশে,
নাওয়া-খাওয়া সবকিছুতেই সেছিল একদম কেচ্ছুটে।
মা পিছুপিছু ছুটতো সবসময়, পাছে মেয়ের কিছু হয়।
মেয়ে সেটা পছন্দ করত না মোটেও।
বাবা বাড়ি এলে ভাঙত ওর খুশির বাঁধ।
মায়ের উপর শত নালিশ করত যেন বানিয়ে বানিয়ে,
তাই শুনে মা ওর বকা খেতো সেকি,
দেখে খুকুমনি মেকী হাঁসি দিতো বৈকি!
পরক্ষণেই আবার মাকে জরিয়ে ধরতো যেন আর ছাড়বেই না।
কিন্তু ছাড়তে তো হলই, শুধু মাবাবাকেই নয়, এই পৃথিবীকেও।
কথা বলতাম ওর সাথে আগে বন্ধুত্বপূর্ণ কুশলতার ছলে,
কথার রেশে আমি এখন স্পষ্টবাদিতার ছাপ পাই, ওর বিদায়ের পরে-
যদিও আগে তা খেয়াল করিনি কখনো।
অদ্ভুত এক আকর্ষণ ক্ষমতা ছিল ওর, যাকিনা আসেপাশে কাউকেই বশ করার ক্ষমতা রাখে নিমিষেই।
স্বাধীন হবার এক অদম্য আচ্ছাদন যেন কুরেকুরে খেতো ওকে,
কিন্তু এই আচ্ছাদন যে এভাবে স্বাধীন হবার তা আগে বুঝিনি।
এতো কাঁচা বেলাতেই অত্যয়ের জন্যই কি ইচ্ছা, বোধ-হয়।
দুচোখ আমার ভরে আসে তখন, যখন চিন্তায় বেলাকে পাই।
স্মৃতির পাতায় বোধ-হয় চিরন্তন একটি নাম রয়েই যাবে আমার, বেলা!
ছোট্ট হাসমুখ চঞ্ছল চিরসতেজ সেই মেয়েটি
আমার হৃদয়কে তোলপাড় করে দিয়েছিল, ওর সতেজতা ও বুদ্ধিদীপ্ততা দিয়ে।
অধিষ্ঠিত এই হৃদয়টি মাঝে-মাঝেই তোলপাড় হয় আজও,
বুকের মধ্যে হঠাৎই অতৃপ্তির এক আচ্ছাদন পাই যখন ওকে আমার হৃদয়ের মণিকোঠায় নিয়ে আসি অজান্তেই।
========
২৩-১২-২০১৩
স্টেপ