==========================
বাঁশবুনিয়া নদ তুমি রেখেছো কি মোরে মনে?
পনেরো বছর পরে এসেছি আমি, দেখা করবার সনে।
কতো শত দিন, কতো নিশিদিন এসেছি ভাঁটির ঘোনে,
মাছ ধঁরিতে আর তোমারে জড়িতে, আছে কি এখন মনে?
তুমি ছিলে মোদের মনের আনন্দ, ডুবিতাম তোমার জলে,
পিছলা খেতে বিভোর ছিলাম, স্নান করিবার কালে।
তোমার জলে তৃষ্ণা মিটাতাম, রন্ধনও তোমারই জলে
চিনিতে কি পেরেছো, হে নদ! না কি গিয়েছো আমায় ভুলে?
তোমার তটে গড়েছে কতো বসত, আরও কতো হলো সৃজন,
তোমার জলে কতো লোকে করেছিলো, জীবিকার অন্বেষন।
মোস্তফা, মোসারেফ, খালেক, বারেক আরও ছিলো শ্রী-মেগা
তোমার বুকে দিয়েছিলে তাদের, জীবিকার জন্য জায়গা।
বসতো প্রতি শনিবার বিকেলে তোমার তীরে হাঁট,
গয়না নৌকায় সওদা নিয়ে, আসতো মোহন ভাট।
বেঁদের দল এসে, ডিঙি বাঁধিত কষে, আনন্দ পেতাম মনে,
বিকেলের বেলা আসিতাম দেখিতে, খেলা দেখিতাম ধানে।
ধলু মাঝি ভাই পাড়াতে নাহি দিতো, আট আনা নাহি দিলে,
কতদিন খেঁয়া নিয়েছিলে তলিয়ে, আবার দিয়েছো পরে তুলে।
সব কিছু কি ভুলিয়া গিয়েছো? সব হারিয়েছো কি চরে?
সাঁজের বেলা শিয়ালরা ডাকিতো, আসিতাম না একা ডরে।
সতত হে নদ! পরে তোমায় মনে, ঝরে অশ্রু জল,
তোমারই কৃপায় বড় হয়েছি মুই, দেহে পেয়েছিলাম বল।
নিকুঞ্জ বনানী তোমার তটে, ছিলো কতো শত,
আজ নাহি দেখি তোমারই স্রোত, চলিছেনা আঁটসাঁটো।
হারিয়েছো সব তোমার প্রলাপ, আধ মরা হয়ে আছো,
হয়তো কোনদিন তোমারে দেখিবো এসে!
নিঃশেষ হয়ে পুরোটাই গেছো।
==========================
১৯/০৪/২০, বিকাল- ৫ঃ৩০
আমতলী, বরগুনা।