ইচ্ছে ছিল হারিয়ে যাব গ্রাম বাংলার মাঠে প্রান্তরে,
দেখি শুকনো ঝরা পাতা জমে আছে পথের দুধারে ;
যেখানে ফসলের মাঠ আজ রৌদ্রতাপে ফেটে চৌচির,
শুকনো নদীর বালুকাবেলায় ঘুরে বেড়াই হয়ে অধির।


পালতোলা নৌকা দেখিনা শুধু বট বট মটরের শব্দ,
ঢেউয়ের ফাকে হঠাৎ শিষ দেয়না কেউ নদীতট স্তব্ধ ;
পানকৌড়ি গাং শালিকেরা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে,
কচুরিপানার ফুল গুলো দলবেঁধে ম্লাণ হয়ে ফুটে আছে।


নদীতিরে নেই দামাল কিশোরদের লাফঝাপ দাপাদাপি,
হোগলার বনে নেই কিশোরীর পাতা ছোট মাছের ছাপি ;
জেলেদের আনাগোনা খুব কম মুখে নেই তৃপ্তির হাসি,
গ্রামের মাঠে ঘাটে আজ আর বাজেনা রাখালিয়া বাশী।


ইচ্ছে ছিল শুনবো ভাটিয়ালি ভাওয়াইয়া সুরের গান,
যাত্রাপালা জারি সারি গম্ভীরা গানে ভরাবো এই প্রাণ;
সে সব কিছু আজ আর পাইনা খুঁজে শুধুই নিরবতা
নেই প্রেম ভালবাসা উচ্ছাস আছে শুধু স্বার্থপরতা।


ইচ্ছে ছিল হেমন্তের নবান্নে কোন কৃষকের মেহমান হব,
ছেলেবেলার মত পিঠা পুলি পায়েস খেয়ে মন ভরাবো ;
ধান কাটা ক্ষেতে ঘুড়ি উড়াবার উৎসবে উঠবো মেতে,
শীতের ভোরে খুব ভোরে ছুটে যাব খেজুরের রস খেতে।


মন চায় গ্রাম‍্য মেলার তালপাতার বাশীর সুর শুনতে,
কালবোশেখী ঝড়ের শেষে মন চায় আম কুড়োতে ছুটতে;
ইচ্ছেগুলো মনের মাঝে অবিরত করছে বড্ডো জ্বালাতন,
আজও বাংলার গাঁয়ের পথে হাটতে এ মন হয় উচাটন।