জগতের আঁধার ঘুচাতে এলেন যে নবী,
মুহাম্মদ মোস্তফা তিনি যে ধ‍্যানের ছবি।
তওরাত ইঞ্জিলে আছে যার আগমনী বাণী,
আরবের মক্কায় আমিনার কোলে আসিলেন তিনি।
হেরা গুহায় আল্লাহর রাহে ধ‍্যান করে নবুয়ত পেলেন চল্লিশে,
আল্লাহকে দেখার  ডাক পান নবুয়তের নবম বছর শেষে।
হিজরতের দুই বছর আগে ছাব্বিশে রজবের দিবাগত রাত,
নিদ্রিত নবীকে জিবরাইল ফেরেশতা দিলেন দাওয়াত।
একাগ্র চিত্তে নবী চলিলেন আল্লাহর সাক্ষাতে,
প্রথমে তার দেহ ও অন্তর শুদ্ধ করা হল জমজমের পানিতে ;
অতঃপর বোরাকে হলেন সওয়ার সঙ্গী ফেরেশতা জিবরাইল,
নিমিসে পার হয়ে গেলেন তারা মাইলের পর মাইল।
যাবার পথে চার স্থানে থামেন,
সেখানে দু রাকাত করে নামাজ পড়েন ;
নিজ হিজরতের শহর মদিনাতে,
ফেরাউনের স্ত্রী বিবি আছিয়ার মিশরেতে,
মুসা নবীর তুর পর্বতে, আবার থেমে
ঈসা নবীর জন্মস্থান বেথেলহেমে।
নামাজ শেষে বায়তুল মোকদ্দেসে আসেন,
বায়তুল মোকাদ্দেসেও নবী নামাজ পড়েন।
অতঃপর তিনি আল্লাহর দরবার পানে রওয়ানা দিলেন
আল্লাহর দরবারে যেতে নবীজি সাতটি আসমান পারি দেন।
প্রথম আসমানে হযরত আদমের সাক্ষাত পান,
দ্বিতীয় আসমানে হযরত ইয়াহিয়া ও হযরত ঈসার দেখা পান
তৃতীয় আসমানে হযরত ইউসুফকে দেখেন,
চতুর্থ আসমানে হযরত ইদ্রিসের দেখা পেলেন ;
পঞ্চম আসমানে হযরত হারুনকে দেখেন,
ষষ্ঠ আসমানে হযরত মুসাকে পেলেন ;
সপ্তম আসমানে হযরত ইব্রাহিম সাক্ষাত দিলেন।
পরে সাত আসমান পার হয়ে পৌছালেন  সীদরাতুল মুনতাহায়,
সেখান থেকে বায়তুর মামুরে যেখানে মদ ও দুধ পান করতে দেয়া হয় ;
নবীজি সেখানে দুধ পান করে প্রশংসিত হলেন,
জিবরাইল বলেন দুধ পান করে আপনি উম্মতদের বিভ্রান্তি থেকে বাচালেন ।
সেখান থেকে দেখনো হল বেহশতের পুরস্কার আর দোযখের শাস্তি,
দেখানো হয় কোন পুণ‍্যের কোন পুরস্কার আর কোন পাপের কি শাস্তি।
তারপর আরও উর্ধাকাশে চললেন পথে জীবরাইল থেমে গেলেন,
বললেন এখান থেকে আপনি একা যাবেন বাহনেরও হল পরিবর্তন,
বোরাকের বদলে এল রাফ রাফ আরও দ্রুতযান।
নবীজি পৌছে গেলেন আল্লাহর আরশে,
আল্লাহর সাথে হল কথা বিনিময় প্রেমের আবেশে।
আল্লাহ দিলেন মুসলমানদের জন‍্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের বিধান,
পরে হযরত মুসার পরামর্শে ও নবীর আবেদনে এলো পাঁচ ওয়াক্তের বিধান।
তারপর রফ রফে চড়ে এক নিমিসে ফিরে আসেন নিজের বিছানায়,
মেরাজের মাধ‍্যমে যে শিক্ষা দেয়া হয় ,
মুসলমানদের জন‍্য তা অবশ‍্য করনীয় বলে মানা হয়।


                   ***********************


ইসলাম ধর্মমতে লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রাত (যা সচরাচর শবেমেরাজ নামে অধিকতর পরিচিত) হচ্ছে যে রাতে ইসলামের নবি মুহাম্মদ (সা:) ঐশ্বরিক উপায়ে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং স্রষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। অনেক মুসলমান এবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এই রাতটি উদ্‌যাপন করেন। আবার অনেক মুসলমান এই রাত উদ্‌যাপন করেন না বরং এই রাত উদ্‌যাপন করাকে বিদআত বলেন। ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামাজ, মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক (ফরজ) করা হয় এবং এই রাতেই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করার বিধি মুসলমানদের জন্য নিয়ে আসেন নবি মুহাম্মদ (সা:)।