উমাইয়া খলিফার আফ্রিকা শাসক
আরবের বীর মুসা বিন নূমাইর ,
তার দরবারে এল রাজা জুলিয়ান
শাসক ছিলেন তিনি সিউটা নগরে ।
হিসপানিয়ার রাজা রডরিক ছিল
তাহার শাসক প্রভু লম্পট কামুক ,
জুলিয়ান কন্যা ছিল তাহার জিম্মায়
রডরিক তারে করে গোপনে ধর্ষন ।
খবর শুনিয়া ক্ষিপ্ত জুলিয়ান এল
মুসার কাছে করতে নিবেদন, যেন
সে নেয় দখল করে হিসপানিয়া ;
মেয়ের অপমানের চায় প্রতিশোধ ।


তারেক বিন জিয়াদ বীর শ্রেষ্ঠ সেনা
সেনাপতি পদে তিনি নিয়োগ পেলেন,
মুসা তাকে পাঠালেন হিসপানিয়ায়
লম্পট রডরিককে করতে দমন ।
তারেক চললো পারি দিয়ে জিব্রাল্টার
লক্ষ্য একটাই হিসপানিয়া বিজয় ,
সমুদ্রের তীরে এসে সকল নৌযান
দিলেন পুড়িয়ে তিনি হতবাক করে ।
বিস্ময়ে চাহিয়া থাকে তার সঙ্গী সাথী
অনলে গরলে ধিরে কহে সেনাপতি ,


"নবিজী দিয়েছে মোরে স্বপ্নে দরশন
দিয়েছেন বিজয়ের সুসংবাদ আর
হে আমার সৈন্যগণ, কোথায় পালাবে ?
পেছনে সাগর, আর সামনে শত্রুরা
তোমাদের কাছে আছে কেবল দৃঢ়তা ,
আর খোলা তরবারী আছে দুঃসাহস
সম্মূখে অগুন্তি শত্রু অস্রধারী সেনা ।
বাঁচার উপায় শুধু হতে হবে জয়ী
হাতে হাতিয়ার মুখে কোরানের বাণী ,
ভয় পাও কেন ভাই আল্লার সেনানী
ঝাপিয়ে পড়ো সংগ্রামে অত্যাচারী ধ্বংসে ।
আল্লাহ আছে সহায় জয় আসবেই ,
আমি আছি তোমাদের সম্মুখ সারিতে
শাহাদাৎ মেনে নেব হলে ফয়সালা"।


তারেকের আহবানে উজ্জেবিত সেনা
ঝাপিয়ে পড়লো যুদ্ধে হিসপানিয়াতে ,
হিসপানিয়ার রাজা দুষ্ট রডরিক
লম্পট কামুক সে হিংস্র অত্যাচারী ;
প্রজারা করতো দোয়া হোক তার ধ্বংস ।
লাজান্দ্রা উপত্যকার সিনেদি প্রান্তরে ,
রাজা রডরিক আর মুসলমানের
বাঁধলো লড়াই হল রক্তাক্ত প্রান্তর ;
যুদ্ধ শেষে পরাজিত হয় রডরিক
পালাতে যেয়ে সে মরে নৌকা ডুবে ।


বিজয় উৎসব নয় হয়েছে সেদিন
আর্ত মানুষের লাগি উদাত্ত প্রার্থনা ,
শহর নগর কত হল পদানত
হয়নি কোন ধর্ষন আর গণহত্যা ,
ইসলামের শিক্ষায় উজ্জেবিত সেনা
মানবিক হয়ে জেতে সকলের মন ;
তারকের জয়ে খুশী সমগ্র দুনিয়া
ইউরোপে ইসলাম পেল প্রতিষ্ঠা ।


*হিসপানিয়া-স্পেনের পূর্বনাম
* স্পেনের কাদেজ শহরের লাজান্দ্রা উপত্যকার সিনেদিয়া নামক প্রান্তরে রাজা রডারিকের বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ হয় মুসলিম বাহিনীর।
* স্পেনে মুসলিম বিজয়ের পর যে লুটতরাজ ধ্বংসযজ্ঞের কাহিনী প্রচার করা হয় তা আসলে ইউরোপের খৃষ্টান ঐতিহাসিকদের বিদ্বেষমূলক প্রচারনা ।