বিতারিত শয়তান থেকে আল্লার কাছে আশ্রয় চাইছি,
পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লার নামে শুরু করছি


মুখোমুখি  মানুষের নিন্দা যারা করে
আর গীবত কারী যে দুর্ভোগ তাদের                     ১  
সম্পদ অর্জন করে তা হিসাব করে
রাখছে যারা দুর্ভোগ হবেই তাদের  ।                     ২
অর্জিত সম্পদ তাকে চিরস্থায়ী করে
রাখবে ভুবনে আছে তার ভাবনায় ,                        ৩
জেনে রাখো কখনও তা হবার নয়
নিশ্চিত তারা নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায় ।                     ৪


কি করে জানবে তুমি রূপ হুতামার                       ৫
সে আল্লার প্রজ্জ্বলিত এক হুতাসন  ,                     ৬
যে টি করবে তোমার হৃদয়কে  গ্রাস                     ৭
করবে চতুর্দিক থেকে তা পরিবেষ্টন ।                    ৮
সঙ্গী হবে তাদের ঐ উঁচু উঁচু স্তম্ভ
উজ্জল অগ্নিশিখার লেলিহান তীব্র ।                       ৯


গীবত ---পরনিন্দা
হুতামা ---চূর্ণবিচূর্ণ কারী স্থান
হুতাসন ---অগ্নি / হেমাগ্নি / অনল
সূরা হুমাযাহ মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১০৪ তম সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৯ টি। এ সূরাটিতে তিনটি জঘন্য গোনাহের কথা বলা হয়েছে। গোনাহ্‌ তিনটি হল গীবত, সামনাসামনি দোষারোপ করা ও মন্দ বলা এবং অর্থলিপ্সা।


সুরা হুমাযায় অন্যদের দোষ-ত্রুটি অন্বেষণকারী বা পরচর্চাকারী ও মুমিনের গিবতকারী, দরিদ্রদের নিন্দুক বা বিদ্রুপকারীদের ও একের কথা গুপ্তচর হিসাবে অন্যের কাছে তুলে ধরার বা চোগলখুরির  এবং ধন-সম্পদ-পূজারী বা সম্পদ জমাকারীদের নিন্দা করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই সুরায় এই শ্রেণীর লোকদের জন্য নির্ধারিত দোযখ বা জাহান্নামের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হয়েছে। এই শ্রেণীর লোকদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক পরিণতি এবং তাদেরকে অপমানজনকভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। আর জাহান্নামের আগুন সবকিছুর আগে তাদের হৃদয়ের ওপর চেপে বসবে এবং তাদের প্রাণ ও আত্মাকে পুড়তে থাকবে।


কোনো কোনো মুফাসসির মনে করেন সুরা হুমাযাহ্ নাজিল হয়েছে ওলিদ বিন মুগাইরা সম্পর্কে। এই লোকটি মহানবী (সা) সম্পর্কে তাঁর অনুপস্থিতিতে অপপ্রচার চালাত এবং তাঁর সামনে ও পেছনে উপহাস আর বিদ্র্রুপাত্মক অঙ্গভঙ্গি করত। আবার কেউ কেউ মনে করেন এই সুরা নাজিল হয়েছিল কঠোর ইসলাম-বিদ্বেষী কুখ্যাত মুশরিক আখনাস বিন শারিক্ব, উমাইয়্যাহ বিন খালাফ ও আ'স বিন ওয়ায়েল সম্পর্কে।  তবে এটা স্পষ্ট সব যুগের নিন্দুক, বিদ্রুপকারী, গিবতকারী ও  চোগলখোর শ্রেণীর সব মানুষের জন্যেও প্রযোজ্য সুরা হুমাযার বক্তব্য।