সূরা আল-ইনফিতার
বিতারিত শয়তান থেকে আল্লার কাছে আশ্রয় চাইছি,
পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লার নামে শুরু করছি ।  


যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে, নক্ষত্রসমূহ ঝরে পড়বে,  
যখন সমুদ্রকে উত্তাল  হবে, কবর উম্মোচিত হবে ।  
তখন প্রত্যেকে জানবে সে কি অগ্রে প্রেরণ করেছে      
এবং পশ্চাতে কি ছেড়ে এসেছে ,    
হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম
পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করেছে ?    
যিনি তোমাকে সৃষ্টি করে সুঠাম করেছেন  
এবং সুবিন্যস্ত করেছেন,  
তিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছেমত
আকৃতি দিয়ে গড়েছেন ।    
না কখনই না, বরং তোমরা শেষ বিচারকে
মিথ্যা মনে করে থাক ,
অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক
নিযুক্ত আছে জেনে রাখ ।
সম্মানিত লেখকবৃন্দ ,তারা জানে যা কর তোমরা  ,
সৎ লোক থাকবে জান্নাতে , দোজখে যাবে দুষ্টরা ।
শেষ বিচারের দিনে সেটাই হবে তাদের ঠিকানা ,
ইচ্ছেমত সেখান থেকে পালাতে ও পারবে না ।
বিচার দিবস সম্পর্কে আপনি কি জানেন ?  
আবারও বলছি, আপনি বিচার দিবস কি জানেন  ?
যেদিন কেউ কারও কোন উপকার করতে পারবে না ,
সেদিন আল্লাহ ব্যাতিত কারও কোন কতৃত্ব থকবে না ।


                  *************



সূরা আল-ইনফিতার‌ (আরবি ভাষায়: الانفطار‎) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৮২ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ১৯; । সূরা আল-ইনফিতার‌ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
সূরা আল-ইনফিতার বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ- সূরা আল-ইনফিতার কোরআন মাজিদের ৮২ তম সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ১৯ টি। তবে এতে কোন রূকু তথা অনুচ্ছেদ নেই , সূরা আল-ইনফিতার এর বাংলা অর্থ - বিদীর্ণ করা ।  সূরা আল-ইনফিতার মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
নামকরণ ও শানে নুযূল
এই সূরাটির প্রথম আয়াতের اِ نْفَطَرَتْ বাক্যাংশ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরাটিতে نفطار (‘ইনফিতার‌’) শব্দটি রয়েছে এটি সেই সূরা।
এই সূরা আর সূরা আত্‌ তাকভীর এর বিষয়বস্তুর মধ্যে গভীর ভাবে মিল খূঁজে পাওয়া যায়। এ থেকে বোঝা যায়, এই সূরা দুটি প্রায় একই সময়ে নাযিল হয়েছে...। সুতরাং এটি মক্কা মু'আয্‌যামার প্রথম যুগের নাযিল হওয়া সূরাগুলোর অন্তরভূক্ত।
বিষয়বস্তুর বিবরণ
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে আখিরাত। আখিরাত (আরবি: الآخرة‎‎) একটি ইসলামী শব্দ যেটির দ্বারা মৃত্যু পরবর্তী জীবনকে বোঝানো হয়। মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী আখিরাত বা পরকালের জীবনের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। আখিরাতে মানুষের দুনিয়ার কাজকর্মের হিসাব নেওয়া হবে এবং অতঃপর ভালো কাজের জন্য পুরস্কার এবং মন্দ কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া হবে।  মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী, ইবনুল মন্‌যার,তাবারানী হাকিম ও ইবনে মারদুইয়ায়, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর এর একটি বর্ণনা উদ্ধৃত হয়েছে। তাতে রসূলুল্লাহ বলেছেনঃ "যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিনটি নিজের চোখে দেখতে চায়, সে যেন সূরা তাকভীর, সূরা ইনফিতার ও সূরা ইনশিকাক পড়ে নেয়।" কিয়ামত শব্দের অর্থ উঠে দাঁড়ানো। এটি আরবি শব্দ কিয়াম থেকে আগত যার অর্থ উঠা, দাঁড়ানো ইত্যাদি(ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত)। ইসলামী আকীদা অনুসারে,ইসরাফীল (আ.) শিঙ্গায় ফুৎকার দিলে কিয়ামত হবে, অর্থাৎ বিশ্বজগৎ ধ্বংস হবে। প্রথম ফুৎকার দেওয়ার সাথে সথেই আকাশ ফে‌টে যা‌বে, তারকাসমূহ খ‌সে পড়‌বে, পাহাড়-পর্বত ছিন্ন-‌বি‌চ্ছিন্ন হ‌য়ে তুলার মত উড়‌তে থাক‌বে। সকল মানুষ ও জীব-জন্তু ম‌রে যা‌বে, আকাশ ও সমগ্র পৃ‌থিবী ধ্বস যা‌বে। দ্বিতীয় ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথেই পৃথিবী সৃষ্টি থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত সৃষ্টজীবের আর্বিভাব হয়েছিল, তারা সকলেই জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। তখন থেকে শুরু আখেরাতের ।