সূরা আন নাবা


বিতারিত শয়তান থেকে আল্লার কাছে আশ্রয় চাইছি,
পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লার নামে শুরু করছি ।  


লোকেরা কোন বিষয়ে একে অন্যের কাছে
জিজ্ঞাসাবাদ করছে?
ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সেই মহা সংবাদের
বিষয়েই ভাবছে !
যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে , কখনই না
তাদের ধারণা অবাস্তব, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে ,
আবার বলছি, কক্ষনো না তাদের ধারণা একেবারে
অলীক ও অবাস্তব, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে ।


আমি কি পৃথিবীকে শয্যা রূপে নির্মাণ করিনি?
এবং পর্বতমালাকে পেরেক বানাইনি ?
আমি তোমাদের জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি,
তোমাদের নিদ্রাকে ক্লান্তি দূরকারী করেছি ,
রাতকে করেছি আবরণ,জীবিকা অর্জনের সময়  করেছি দিনকে,
নির্মান করেছি তোমাদের মাথার উপর মজবুত সপ্ত-আকাশকে ।
সৃষ্টি করেছি একটি প্রদীপ্ত প্রদীপ সূর্য ,
আর বর্ষণ করেছি মেঘ হতে প্রচুর বৃষ্টি ;
যাতে তদ্দ্বারা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ
এবং পাতাঘন উদ্যান করেছি সৃষ্টি ।    


নিশ্চয় বিচার দিবস নির্ধারিত,যেদিন শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে,
তখন তোমরা দলে দলে সমাগত হবে ;
আকাশ বিদীর্ণ হয়ে; তাতে বহু দরজা সৃষ্টি হবে ,
এবং পর্বতমালা চালিত হয়ে মরীচিকা হয়ে যাবে ।


নিশ্চয় জাহান্নাম প্রতীক্ষায় থাকবে,
সীমালংঘনকারীদের আশ্রয় দেবে
শতাব্দীর পর শতাব্দী তারা অবস্থান করবে সেথা ,
কোন শীতল এবং পানীয় আস্বাদন করবে না যেথা ।
কিন্তু ফুটন্ত পানি ও পূঁজ পাবে
পরিপূর্ণ প্রতিফল হিসেবে ।
নিশ্চয় তারা হিসাব-নিকাশ হবে না ভাবতো
এবং আমার বাণীকে পুরোপুরি মিথ্যারোপ করত ।
সব কিছুই আমি সংরক্ষণ করেছি লিখিতভাবে ,
অতএব, তোমরা স্বাদ নাও শাস্তির ,যা শুধু বৃদ্ধি হবে ।


পরহেযগারদের জন্যে রয়েছে সাফল্য ,
উদ্যান, আঙ্গুর, সমবয়স্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী ;
এবং পূর্ণ পানপাত্র , তথায় তারা শুনবে না
কোন অসার ও মিথ্যা বাক্য বা কাহিনী ।
এসব পালনকর্তার তরফ থেকে যথোচিত দান,
যিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এদের মধ্যবর্তী
সবকিছুর পালনকর্তা, দয়াময়, রহমান রহীম ,
কেউ তাঁর সাথে কথার অধিকারী হবে না একরত্তি ।


যেদিন রূহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে ,
দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দিবেন, সে ব্যতিত কেউ
কথা বলতে পারবে না এবং সে সত্যকথা বলবে।
এ দিনটি সত্য, সুনিশ্চিত, অতএব যার ইচ্ছে সে তার
প্রতিপালকের দিকে আশ্রয় গ্রহণ করুক।


আমি সতর্ক করলাম আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে
যেদিন মানুষ দেখবে নিজ কর্মফল,
আর সেদিন প্রত্যাশা করবে মাটি হয়ে
হারিয়ে যেতে অবিশ্বাসীর দল ।


            ********************
সূরা আন-নাবা কোরআন মাজিদের ৭৮ তম সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৪০ টি। সূরা আন-নাবা এর বাংলা অর্থ- মহা সংবাদ। সূরা আন-নাবা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
নামকরণ :
সূরার দ্বিতীয় আয়াতের বাক্যাংশের ‘আন নাবা’ শব্দটিকে এর নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। আর এটি কেবল নামই নয় , এই সূরার সমগ্র বিষয়বস্তুর শিরোনামও এটিই। কারণ নাবা মানে হচ্ছে কিয়ামত ও আখেরাতের খবর। আর এই সূরায় এরি ওপর সমস্ত আলোচনা কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে।
নাযিলের সময় কাল:
সূরা আল মুরসালাতের ভূমিকায় আগেই বলে এসেছি , সূরা আল কিয়ামাহ থেকে সূরা আন নাযিআ’ত পর্যন্ত সবক’টি সূরার বিষয়বস্তু পরস্পরের সাথে একটা মিল আছে এবং এ সবগুলোই মক্কা মুআয্‌যমার প্রাথমিক যুগে নাযিল হয়েছিল বলে মনে হয়।
বিষয়বস্তু ও আলোচ্য বিষয়
সূরা আল মুরসালাতে যে বিষয়ের আলোচনা করা হয়েছে এখানেও সেই একই বিষয়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থাৎ এখানেও কিয়ামত ও আখেরাত অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রমাণ এবং তা মানা ও না মানার পরিণতি সম্পর্কে লোকদের অবহিত করা হয়েছে।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথম দিকে মক্কা মুআযযমায় তিনটি বিষয়ের ভিত্তিতে ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এক , আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ও কর্তৃত্বে কাউকে শরীক করা যাবে না। দুই তাঁকে আল্লাহ নিজের রসূলের পদে নিযুক্ত করেছেন। তিন , এই দুনিয়া একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। এরপর শুরু হবে আর এক নতুন জগতের। সেখানে আগের ও পরের সব লোকদের আবার জীবিত করা হবে। দুনিয়ার যে দৈহিক কাঠামো ধারণ করে তারা কাজ করেছিল সেই কাঠামো সহকারে তাদের উঠানো হবে। তারপর তাদের বিশ্বাস ও কাজের হিসেব নেয়া হবে। এই হিসেব নিকেশের ভিত্তিতে যারা ঈমানদার ও ফাসেক প্রমাণিত হবে তারা চিরকালের জন্য প্রবেশ করবে জাহান্নামে।
এই তিনটি বিষয়ের মধ্য থেকে প্রথমটি আরবদের কাছে যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন তারা আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বীকার করতো না। তারা আল্লাহকে সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ও সর্বশ্রেষ্ঠ রব এবং স্রষ্টা ও রিজিকদাতা বলেও মানতো। অন্য যেসব সত্তাকে তারা ইলাহ ও মাবুদ গণ্য করতো তাদের সবাইকে আল্লাহরই সৃষ্টি বলেও স্বীকার করতো । তাই আল্লাহর সার্বভৌমত্বের গুণাবলী ও ক্ষমতায় এবং তাঁর ইলাহ হবার মূল সত্তায় তাদের কোন অংশীদারীত্ব আছে কি নেই এটিই ছিল মূল বিরোধীয় বিষয়।
দ্বিতীয় বিষয়টি মক্কার লোকেরা মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না। তবে নবুওয়াতের দাবী করার আগে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মধ্যে চল্লিশ বছরের যে জীবন যাপন করেছিলেন সেখানে তারা কখনো তাঁকে মিথ্যুক , প্রতারক বা ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অবৈধ পন্থা অবলম্বনকারী হিসেবে পায়নি। এ বিষয়টি অস্বীকার করার কোন উপায়ই তাদের ছিল না। তারা নিজেরাই তাঁর প্রজ্ঞা , বুদ্ধিমত্তা , বিচক্ষনতা , শান্ত প্রকৃতি , সুস্থমতি ও উন্নত নৈতিক চরিত্রের স্বীকৃতি দিয়েছিল। তাই হাজার বাহানাবাজী ও অভিযোগ — দোষারোপ সত্ত্বে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব ব্যাপারেই সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ছিলেন। কেবলমাত্র নবুওয়াতের দাবীর ব্যাপারে নাউযুবিল্লাহ তিনি ছিলেন মিথ্যুক এ বিষয়টি অন্যদের বুঝানো তো দূরের কথা তাদের নিজেদের পক্ষেও মেনে নেয়া কঠিন হয়ে পড়ছিল।
এভাবে প্রথম দু’টি বিষয়ের তুলনায় তৃতীয় বিষয়টি মেনে নেয়া ছিল মক্কাবাসীদের জন্য অনেক বেশী কঠিন। এ বিষয়টি তাদের সামনে পেশ করা হলে তারা এর সাথে সবচেয়ে বেশী বিদ্রূপাত্মক ব্যবহার করলো। এ ব্যাপারে তার সবচেয়ে বেশী বিস্ময় প্রকাশ করলো। একে তারা সবচেয়ে বেশী অযৌক্তিক ও অসম্ভব মনে করে যেখানে সেখানে একথা ছড়াতে লাগলো যে তা একেবারে অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয় । কিন্তু তাদেরকে ইসলামের পথে নিয়ে আসার জন্য আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসকে তাদের মনের গভীর প্রবেশ করিয়ে দেয়া অপরিহার্য ছিল। কারণ আখেরাতের প্রতি বিশ্বসী না হলে হক ও বাতিলের ব্যাপারে চিন্তার ক্ষেত্রে তারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারতো না , ভালো মন্দ ও ন্যায় অন্যায়ের ব্যাপারে তাদের মূল্যমানে পরিবর্তন সূচিত হওয়া সম্ভবপর হতো না এবং দুনিয়া পূজার পথ পরিহার করে তাদের পক্ষে ইসলাম প্রদর্শিত পথে এক পা চলাও সম্ভব হতো না। এ কারণে মক্কার প্রাথমিক যুগের সূরাগুলোতে আখেরাত বিশ্বাসের মনের মধ্যে মজবুতভাবে বদ্ধমূল করে দেয়ার ওপরই বেশী জোর দেয়া হয়েছে। তবে এ জন্য এমনসব যুক্তি প্রমাণ পেশ করা হয়েছে যার ফলে তাওহীদের ধারণা আপনা আপনি হৃদয়গ্রাহী হতে চলেছে। মাঝে মাঝে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও কুরআনের সত্যতা প্রমাণের যুক্তিও সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ যুগের সূরাগুলোতে আখেরাতের আলোচনা বারবার আসার কারণ ভালোভাবে অনুধাবন করার পর এবার এই সূরাটির আলোচ্য বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেয়া যাক। কিয়ামতের খবর শুনে মক্কার পথেঘাটে অলিগলিতে সর্বত্র এবং মক্কাবাসীদের প্রত্যকটি মাহফিলে যেসব আলোচনা , সমালোচনা , মন্তব্য ইত্যাদি শুরু হয়েছিল এখানে সবার আগে সেদিকে ইংগিত করা হয়েছে। তারপর অস্বীকারকারীদের জিজ্ঞেস করা হয়েছে , তোমাদের জন্য যে জমিকে আমি বিছানা বানিয়ে দিয়েছি তা কি তোমাদের নজরে পড়ে না ? জমির মধ্যে আমি এই যে উঁচু উঁচু বিশাল বিস্তৃত শ্রেণী গেঁড়ে রেখেছি তা কি তোমাদের নজরে পড়ে না। তোমরা কি নিজেদের দিকে ও তাকাও না , কিভাবে আমি তোমাদের নারী ও পুরুষকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি ? তোমরা নিজেদের নিদ্রাকে দেখো না , যার মাধ্যমে দুনিয়ার বুকে তোমাদেরকে কাজের যোগ্য করে রাখার জন্য আমি তোমাদের কয়েক ঘন্টার পরিশ্রমের পর আবার কয়েক ঘন্টা বিশ্রাম নিতে বাধ্য করেছি ? তোমরা কি রাত দিনের আসা যাওয়া দেখছো না , তোমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যাকে যথারীতি ধারাবাহিকভাবে জারী রাখা হয়েছে। তোমরা কি নিজেদের মাথার উপর মজবুতভাবে সংঘবদ্ধ আকাশ ব্যবস্থাপনা দেখছো না ? তোমরা কি এই সূর্য দেখছো না , যার বদৌলতে তোমরা আলো উত্তাপ লাভ করছে ? তোমরা কি বৃষ্টিধারা দেখছো না , যা মেঘমালা থেকে বর্ষিত হচ্ছে এবং যার সাহায্যে ফসল , শাক সবজি সবুজ বাগান ও ঘন বন জংগল সৃষ্টি হচ্ছে ?এ সব জিনিস কি তোমাদের একথাই জানাচ্ছে যে , যে মহান অপ্রতিদ্বন্দী শক্তিধর এসব সৃষ্টি করেছেন , তিনি কিয়ামত অনুষ্ঠান ও আখেরাত সৃষ্টি করতে অক্ষম ? এই সমগ্র কারখানাটিতে যে পরিপূর্ণ কলাকূশলতা ও বুদ্ধিমত্তার সুস্পষ্ট ষ্ফূরণ দেখা যায় , তা প্রত্যক্ষ করার পর কি তোমরা একথাই অনুধাবন করছো যে , সৃষ্টিলোকের এই কারখানার প্রতিটি অংশ , প্রতিটি বস্তু ও প্রতিটি কর্ম একটি উদ্দেশ্যের পেছনে ধাবিত হচ্ছে কিন্তু মূলত এই কারখানাটি নিজেই উদ্দেশ্যবিহীন ? এ কারখানায় মানুষকে মুখপাত্রের দায়িত্বে নিযুক্ত করে তাকে এখানে বিরাট ও ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী করা হয়েরছ কিন্তু যখন সে নিজের কাজ শেষ করে কারখানা ত্যাগ করে চলে যাবে তখন তাকে এমনিই ছেড়ে দেয়া হবে না এবং ভালোভাবে কাজ করার জন্য তাকে পুরস্কৃত করা হবে না ও পেনশন দেয়া হবে না এবং কাজ নষ্ট ও খারাপ করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা এবং শাস্তি দেয়া হবে না। এর চাইতে অর্থহীন ও বাজে কথা মনে হয় আর কিছুই হতে পারে না। এ যুক্তি পেশ করার পর পূর্ণ শক্তিতে বলা হয়েছে , নিশ্চিতভাবে বিচারের দিন তার নির্ধারিত সময়ে অবশ্যি আসবে। শিংগায় একটি মাত্র ফুঁক দেবার সাথে সাথেই তোমাদের যেসব বিষয়ের খবর দেয়া হচ্ছে তা সবই সামনে এসে যাবে। তোমরা আজ তা স্বীকার করো বা না করো , সে সময় তোমরা যে যেখানে মরে থাকবে সেখানে থেকে নিজেদের হিসেব দেবার জন্য দলে দলে বের হয়ে আসবে। তোমাদের অস্বীকৃতির সে ঘটনা অনুষ্ঠানের পথ রোধ করতে পারবে না।


এরপর ২১ থেকে ৩০ পর্যন্ত আয়াতে বলা হয়েছে , যারা হিসেব নিকেশের আশা করে না এবং যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে তাদের প্রত্যেকটি কথা ও কাজ গুণে গুণে আমার এখানে লিখিত হয়েছে। তাদেরকে শাস্তি দেবার জন্য জাহান্নাম ওঁৎ পেতে বসে আছে। সেখানে তাদের কর্মকাণ্ডের পুরোপুরি বদলা তাদেরকে চুকিয়ে দেয়া হবে। তারা ৩১ থেকে ৩৬ পর্যন্ত আয়াতে এমন সব লোকের সর্বোত্তম প্রতিদানের বর্ণনা দেয়া হয়েছে যারা নিজেদেরকে দায়িত্বশীল ও আল্লাহর কাছে নিজেদের সমস্ত কাজের জবাবদিহি করতে হবে মনে করে সবার আগে দুনিয়ার জীবনে নিজেদের আখেরাতের কাজ করার কথা চিন্তা করেছে। তাদের এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে যে , তাদের কার্যবলীর কেবল প্রতিদানই দেয়া হবে না বরং তার চাইতে যথেষ্ট বেশী পুরস্কার ও দেয়া হবে। সবশেষে আল্লাহর আদালতের চিত্র আঁকা হয়েছে। সেখানে কারোর নিজের জিদ নিয়ে গ্যাঁট হয়ে বসে যাওয়া এবং নিজের সাথে সম্পর্কিত লোকদের মাফ করিয়ে নেয়া তো দূরের কথা , অনুমতি ছাড়া কেউ কথাই বলতে পারবে না। আর অনুমতি হবে এ শর্ত সাপেক্ষে যে , যার জন্য সুপারিশ করার অনুমতি দেয়া হবে একমাত্র তার জন্য সুপারিশ করা যাবে এবং সুপারিশে কোন অসংগত কথাও বলা যাবে না। তাছাড়া একমাত্র তাদের জন্য সুপারিশ করার অনুমতি দেয়া হবে যারা দুনিয়ায় সত্যের কালেমার প্রতি সমর্থন দিয়েছে এবং নিছক গুনাহগার আল্লাহর বিধানের প্রতি বিদ্রোহভাবাপন্ন কোন সত্য অস্বীকারকারী কোন প্রকার সুপারিশ লাভের হকদার হবে না।


তারপর এক সাবধানবাণী উচ্চারণ করে বক্তব্য শেষ করা হয়েছে। বলা হয়েছে , যে দিনের আগমনী সংবাদ দেয়া হচ্ছে সেদিনটি নিশ্চিতভাবেই আসবে। তাকে দূরে মনে করো না । সে কাছেই এসে গেছে। এখন যার ইচ্ছা সেদিনটির কথা মেনে নিয়ে নিজের রবের পথ অবলম্বন করতে পারে। কিন্তু এ সাবধানবাণী সত্ত্বেও যে ব্যক্তি তাকে অস্বীকার করবে একদিন সমস্ত কর্মকাণ্ড তার সামনে এসে যাবে । তখন সে কেবল অনুতাপই করতে পাবে। সে আফসোস করে বলতে থাকবে , হায় ! যদি দুনিয়ার আমার জন্মই না হতো । আজ যে দুনিয়ার প্রেমে সে পাগলপারা সেদিন সেই দুনিয়ার জন্যই তার মনে এ অনুভুতি জাগবে