সেদিনও ছিল পহেলা বৈশাখ
নতুন বছরের নতুন দিন,
তাই সবাই চেয়েছিল এই দিনটাকে
স্মরনীয় করে রাখতে।
অম্রমুকুলের মতো সবার স্বপ্ন কুঁড়ি হয়েই
ঘুমিয়ে ছিল গোটা বছরের অপেক্ষায়।
নতুন বস্ত্র পরিধান করার সাথে সাথেই
হালখাতার মতো সেই স্বপ্ন পূরনের দিকে
এগিয়ে চলে মাতৃহারা আবিরেরও।
অন্য সকলের মতো তারও
সারাটা দিন নববর্ষের শুভেচ্ছায় কেটে যায়।
কিন্তু সন্ধ্যের পর হঠাৎ টেলিফোনে
শুনতে পায় কালবৈশাখীর সাক্ষাৎ।
না, এটা আর অন্য পাঁচজনের মতো নয়।
ছোট্টো আবিরও নিজের কানকে যেন
বিশ্বাস করতে পারছে না কোনোভাবেই।
সে যেটা শুনল সেটা কি সত্যি?
তার মেলেটারী বাবা নাকি শহিদ হয়েছেন।
সে কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে গেল।
পিছন থেকে ঠাকুমার ডাকে হুশ ফিরল তার।
নিজের অজান্তেই কখন থেকে তার দুচোখ দিয়ে
অঝোরে জল ঝরছে।
এই জল শুধু দুঃখের নয়, গর্বেরও ....
দুই দিন পরে তার বাবার নিথর দেহ বাড়িতে আসে
কিন্তু আবিরের সেদিন আর বিন্দুমাত্র দুঃখ নেই।
তার মনে হচ্ছে এটাই তার সবচেয়ে গর্বের দিন।
সেদিনই আবির তার বাবার মৃতদেহের
সামনে দাঁড়িয়ে প্রথম স্বপ্ন দেখে
বাবার মতো মেলেটারী হওয়ার।


পিতৃমাতৃহারা আবির ঠাকুমার ভালোবাসায়
আজ অনেক বড়ো,সুপুরুষ হয়েছে।
আজও আবার সেই পহেলা বৈশাখ।
অ্যাপায়ন্টমেন্ট লেটার হাতে নিয়ে
আবির যাচ্ছে মেলেটারীতে যোগ দিতে,
আজ তার নতুন বস্ত্র মেলেটারীর খাকি ড্রেস।
নতুন স্বপ্ন দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ।
শুধু কালবৈশাখী আজ আর এলো না।